আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে অন্যতম পরিচিত শব্দবন্ধটি হলো সাইবার সিকিউরিটি বা সাইবার নিরাপত্তা। এটি আমাদের ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করে। প্রতিনিয়ত পত্রিকা ও অন্যান্য গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে সাইবার অপরাধগুলোর সংখ্যা ক্রমাগত আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিজীবনে। সাম্প্রতিক সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা স্বয়ংক্রিয় বুদ্ধিমত্তা নামক এমন এক প্রযুক্তির কথা ছড়িয়ে পড়েছে, যা শুধু তথ্যপ্রযুক্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে তা নয়, এটি আধুনিক বিশ্বকেই পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে।
দুঃখজনক ব্যাপার হলো এআইয়ের অপব্যবহারের কারণে সাইবার সিকিউরিটি আরও হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক নারীর ডিপফেক ও নগ্ন ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে এআইয়ের মাধ্যমে। কিছুদিন আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ ধরনের ভয়ংকর নানা তথ্য উঠে এসেছে। এমনকি শিশুরাও ইন্টারনেট ব্যবহারে অসতর্কতার কারণে অনলাইনে নানা ধরনের সমস্যা অনুভব করছে। শিশু, তরুণ-তরুণীদের ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফি বর্তমানে অন্যতম সামাজিক ব্যাধি। একটা অসাধু চক্র ও বিকৃত রুচির মানুষেরা এ ব্যাধিতে আক্রান্ত। অনেক অল্প বয়সী ও তরুণ-তরুণীরা না বুঝে এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন।
এ ছাড়া নারীরা অনলাইনে নানা ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আর উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া তো আছেই। আর এসব অপরাধই সংঘটিত হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটির অভাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুরা। দেশে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইন থাকলেও আইনের বাস্তবায়ন সেই অর্থে হচ্ছে না।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করার প্রধান দুটি উপায় হলো ব্যবহারকারীদের সচেতন থাকা ও সাইবার অপরাধ দমন করা। ব্যবহারকারীদের সচেতন করার জন্য যেমন ক্যাম্পেইন/সামাজিক আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে, ঠিক তেমনি সরকারকেও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
খুশনূর বিনতে খাইরুল
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়