রংপুরের প্রধান হাসপাতালের দুরাবস্থা

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাকেন্দ্র। এখানকার অধিকাংশ মানুষ চিকিৎসার জন্য এই প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। অথচ বর্তমানে এ হাসপাতালটি রোগীদের জন্য সুস্থতার পরিবর্তে নতুন রোগের ঝুঁকি তৈরি করছে। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা ও তদারকির অভাবে এর পরিবেশ চরম অবহেলার শিকার হয়েছে। ভেতরের দুর্গন্ধময় ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ হাসপাতালটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে।

হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড ও করিডরে ময়লা জমে থাকে। ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, গ্লাভস ও অন্যান্য চিকিৎসাবর্জ্য সঠিকভাবে বিনষ্ট না করে খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়। এসব বর্জ্য শুধু রোগীদের নয়, হাসপাতালের স্টাফ ও দর্শনার্থীদের জন্যও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষত টয়লেট ও ড্রেনেজব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। রোগীদের ব্যবহৃত জিনিস এবং খাবারের উচ্ছিষ্ট যেখানে–সেখানে ফেলার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে, যদিও এর জন্য রোগীর স্বজনেরাও কিছুটা দায়ী।

এ অব্যবস্থাপনার পেছনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও তদারকির অভাব প্রধান কারণ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য নিয়োজিত কর্মীরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন না এবং পর্যাপ্ত জনবল ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে সমস্যাগুলো দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এ পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। যেসব রোগী সুস্থতার আশায় হাসপাতালে আসেন, তাঁরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু করা এবং পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। একই সঙ্গে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সচেতনতা বৃদ্ধিও জরুরি।

  • সজল চৌহান শিক্ষার্থী, রংপুর নার্সিং কলেজ।