মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার এ কেমন সার্কুলার

বাংলাদেশের বিজ্ঞান বিভাগের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর স্বপ্ন মেডিকেল কলেজে পড়ার। কিন্তু বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমঅ্যান্ডডিসি) মেডিকেল ভর্তি নীতিমালা ২০২৩-২৪ অনুযায়ী এইচএসসিতে এক বছরের গ্যাপ থাকলে (অনিয়মিত) ভর্তি পরীক্ষায়ই অংশগ্রহণ করা যাবে না। প্রাইভেট মেডিকেলে পড়ার জন্যও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪০ নম্বর পেতে হবে।

আর্মড ফোর্সেস মেডিকেলে পড়ার জন্যও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মাঝখানে ২ বছরের বেশি গ্যাপ থাকা যাবে না। আবার কেউ যদি বিদেশে মেডিকেলে পড়তে চায়, তাহলেও তাকে দেশের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪০ নম্বর পেতে হবে। অর্থাৎ কোনোভাবে যদি একজন ছাত্রের এইচএসসিতে এক বছর গ্যাপ হয়ে যায়, তাহলে সে আর ডাক্তার হতে পারবে না। কিন্তু এইচএসসির পর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে এই ইয়ার গ্যাপ বিষয়ে কোনো নিয়ম নেই।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), প্রকৌশলের গুচ্ছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জিএসটি গুচ্ছ, বিইউপি, কৃষি গুচ্ছসহ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের গ্যাপ নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায়। কিন্তু কিছু অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে অনেকেই মেডিকেল কলেজের মতো বড় একটি পরিসরে ভর্তি পরীক্ষায়ই অংশগ্রহণ করতে পারে না।

একজন শিক্ষার্থীর ইয়ার গ্যাপের অনেক কারণ থাকতে পারে। গুরুতর অসুস্থতা, বড় কোনো অস্ত্রোপচার, মা-বাবা বা পরিবারের কোনো সদস্য মারা যাওয়া বা অন্য যেকোনো কারণে কেউ একটি বিষয়ের পরীক্ষা না দিতে পারলে তার ইয়ার গ্যাপ হয়ে যায়। কেউ ইচ্ছা করে গ্যাপ দেয় না। এটা শিক্ষার্থীর কোনো বিশেষ অযোগ্যতা নয়, যার জন্য সে অন্তত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না; যেখানে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে এ নিয়ম নেই।

একটি সার্কুলার প্রণয়নের ক্ষেত্রে সব ফাঁকফোকর নজরে রাখা উচিত। মেডিকেলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায়। ভর্তি পরীক্ষায় পাস ও ভর্তির সুযোগ না পেলে পরের বছর আবার পরীক্ষা দেওয়া যায়। যেখানে একজন দুবার পরীক্ষা দিতে পারে, সেখানে শুধু এক বছর গ্যাপ গেলে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায় না। অন্তত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া উচিত। সাদা অ্যাপ্রনের স্বপ্নটা অন্য রকম। একটা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত একজন মানুষের সারা জীবনের লালিত স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিতে পারে। সুতরাং সার্কুলারে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অনিয়মিতদেরও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।

আহনাফ সাবিত
নটর ডেম কলেজ, ময়মনসিংহ
সদর, ময়মনসিংহ