ভারত বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চেয়েছিল। ভারতের চাওয়া ছিল বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা। বাংলাদেশের সেই নির্বাচন ভারতের চাওয়া কি পূরণ করেছে?
শ্রীরাধা দত্ত: ভারতের ধারণা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশ চালাচ্ছেন, তাতে দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ এবং এই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। তিনি স্থিতিশীলতা এনেছেন। ১৫ বছর ধরেই মোটামুটি একই রকম আছে দেশের পরিস্থিতি। একটা-দুটো ঘটনা বাদে ভোটটাও একরকম শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে গেছে।
ভারত মনে করে, বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা থাকলেই ভারতের জন্য ভালো। শেখ হাসিনার পক্ষে সেটা সম্ভব। তিনি সেটা করে দেখিয়েছেন। ফলে ভারতের জন্য শেখ হাসিনার সরকার ভালো। তিনি যত দিন ক্ষমতায় আছেন, ভারতের স্বার্থ উনি দেখবেন।
আমি ভারতের অফিশিয়াল পজিশন কী, তা বলতে পারছি না। নির্বাচনের আগে ভারতের দিক থেকে যেসব বিবৃতি এসেছে, সেগুলো দেখেছি। ভারত চেয়েছিল বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়ে যাক।
সত্যি বলতে কি, বাংলাদেশে যখন সেনাশাসন ছিল, তখনো ভারতের সঙ্গে একরকম সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সরকারের ধরনের কারণেই ভারতের মধ্যে একটু দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। ওখান থেকে আমরা তো বেরিয়ে এসেছি।
ভারত সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ। গণতন্ত্রের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান?
শ্রীরাধা দত্ত: দেখুন, ভারতের সঙ্গে চীনের ব্যবস্থা মেলে না। কিন্তু চীনের সঙ্গে তো ভারত কাজ করেছে। আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে। মোটামুটিভাবে ভারতের স্বার্থ যে সরকার দেখবে, সেটাই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘গণতন্ত্র’ এখন ভারতের কাছে মুখ্য নয়।
ভারতের কাছে তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা আমাদের নিরাপত্তার জায়গাটা দেখেছেন। সে ক্ষেত্রে ভারত সরকার তো জোরদার সমর্থন পাচ্ছে, সেই দিক থেকে ভারত গণতন্ত্রের বিষয়টা দেখে না। আমরা যাঁরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, লেখাপড়ায় আছি বা করাই, তাঁদের হয়তো অন্য ভাষ্য থাকবে।
আমার নিজের কথা যদি বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিভ্রম ঘটেছে, আদৌ যদি এটাকে গণতন্ত্র বলা যায়।
দুই বছর আগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ভঙ্গুর। সেই অবস্থা আরও খারাপ হলো। এইখানে যেটা আমি দেখছি কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনের অধীনে যা যা হয়ে থাকে, তা–ই চলছে। অন্তত দু-তিন বছর ধরে তো বটেই।
নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হলো? এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে গেল?
শ্রীরাধা দত্ত: সরকার বলছে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে, আন্তর্জাতিক সূত্র ও সাংবাদিকেরা বলছেন ২৭ শতাংশ।
কিন্তু আওয়ামী লীগপন্থী আমাদের পরিচিত অনেকে বলেছেন, ভোট পড়েছে ২০ শতাংশের নিচে। নির্বাচনের দিন ফাঁকা রাস্তা দেখা গেছে, হরতালের মতো। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক আছে।
অনেকেই বলে থাকেন, গ্রামের তুলনায় শহরে ভোট পড়ে বেশি। আমার চেনাজানাদের মধ্যে খুব কম মানুষই ভোট দিয়েছেন, ১০ শতাংশের বেশি তো ভোটই দেয়নি।
আমেনা মহসিন: যাঁরা আওয়ামী লীগ করেন, তাঁদের কাছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য। যদিও বলা হয়েছে, ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু ভোটার উপস্থিতি আমরা কম দেখেছি।
নির্বাচন হয়ে থাকে প্রতিযোগিতামূলক। এখানে নিজেদের সঙ্গে নিজেদের প্রতিযোগিতা হলো। ভোটের ফল কী হবে, তা–ও ছিল প্রত্যাশিত। যদি অন্য দলগুলো অংশগ্রহণ করত, তাহলে পরাজিত দলের কাছে হয়তো ভোটের ফল গ্রহণযোগ্য না-ও হতে পারত। তখন সাধারণ মানুষের ভাষ্য আসলে মুখ্য হয়ে উঠত না।
আর পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কাছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য কি না, সেই আলোচনার আগে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা জরুরি। আপনি শুধু মনোনয়নপ্রক্রিয়াটা যদি বিবেচনা করেন, তাহলেই বুঝবেন।
এবার সংবাদমাধ্যমগুলোর নিবিড় দৃষ্টি ছিল এ প্রক্রিয়ার দিকে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র যাঁরা দাঁড়িয়েছেন, তাঁরাও একই দলের। আগে মনে হতো আমরা গণতন্ত্রের পথে এগোচ্ছি। চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা উন্নতি করছি, কিন্তু ২০১৪ সালের পর আর মনে হয়নি। মানুষের প্রত্যাশার জায়গাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করুক বা না করুক, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের নানামুখী তৎপরতা থাকে। অতীতে কিছু প্রকাশ্য তৎপরতাও দেখা গেছে। বিরোধীদের অনেকে মনে করেন, ভারতের সমর্থনের কারণে সরকার ক্ষমতায় আছে। আপনার মন্তব্য কী?
শ্রীরাধা দত্ত: আমি, আমার অনেক বন্ধু, সাংবাদিক ও ছাত্র এই মত পোষণ করেন। তাঁরা ২০১৪ সালের নির্বাচনের উদাহরণ দেন। তবে আগেও দেখেছি, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও অনেকে ভারতের দোষ দেন।
আমি সরকারের অংশ নই। তবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভোটে ভারতের আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক। তা ছাড়া নরেন্দ্র মোদি এই অঞ্চলে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নীতি বাস্তবায়ন করতে চাইছেন, তা সফল করতে বাংলাদেশের সমর্থন দরকার। সেদিক থেকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে ভারতের আগ্রহ ছিল। চীনের দিকে যেন বাংলাদেশ ঝুঁকে না পড়ে, সেদিকেও নজর রাখতে হয়েছে।
এবারের নির্বাচন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল। বিশেষ করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানগত পার্থক্য বেশ স্পষ্ট ছিল। ভারত বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেশি চাপ দিলে বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকবে। এই ধারণা কতটা যৌক্তিক?
শ্রীরাধা দত্ত: আমি মনে করি, দক্ষিণ এশিয়া ইস্যুতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এক জায়গায় আছে, চীনের অবস্থান আলাদা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে চীনের যুক্ততা নিয়ে ভারত কিছু কথা বলেছে। কোনো কোনো প্রকল্প হয়তো আর মাঠে গড়ায়নি। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত ও চীন এক জায়গায়।
খবরের কাগজ পড়ে যেটা বুঝি, বাংলাদেশ একটা অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে। এই সংকটে বাংলাদেশ কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে একটা ঋণ পেয়েছে। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের একটা প্রভাব আছে।
তৈরি পোশাকের কথা যদি বলি, এর মূল গন্তব্য কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র। আর্থিক খাতে ভারত হয়তো চীনের মতো প্রভাব রাখতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার উদাহরণ তো পরিষ্কার। মালদ্বীপ ও নেপালও একই দিকে এগোচ্ছে। বাংলাদেশ সে জায়গায় একটু সাবধানে পা ফেলবে।
কিন্তু শ্রীলঙ্কা যখন বিপদে পড়েছে, তখন সবার আগে ভারত এগিয়ে গেছে। চীন কিন্তু দেরি করেছে। বাংলাদেশ খুব কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। চীন সেই সুযোগ নেবেও। সেদিক থেকে চীনের ব্যাপারে একটা সন্দেহ ভারতের দিক থেকে থেকেই যাচ্ছে। তবে কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার সক্ষমতা ভারতের আছে।
বলা হয় যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে ভারত-নির্ভরতা কমাতে চাইছে। বাংলাদেশ প্রশ্নে সে কারণে দুই দেশ ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। ভারত যে অবস্থান নিয়েছে তাতে মনে হয়, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাববলয়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাববলয় বিস্তারের চেষ্টাকে ভারত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে। আপনার মন্তব্য কী?
শ্রীরাধা দত্ত: আমার ধারণা, চীনকে নিয়ে ভারতের শঙ্কা আছে, আমেরিকাকে নিয়ে নয়। যদিও পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে ভারতের অস্বস্তি আছে। সেখানে ইসলামপন্থীদের উত্থানে আমেরিকার যুক্ততার কথা বলা হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক হয়নি। পশ্চিমের তরফে কোনো বাড়তি চাপের আশঙ্কা আছে?
শ্রীরাধা দত্ত: কিছু চাপ থাকবেই। কিন্তু এখানেও প্রশ্ন আছে। গণতন্ত্রের ব্যাপারে পাকিস্তানের ব্যাপারে তেমন একটা উচ্চবাচ্য তো আমরা দেখছি না, বাংলাদেশে কেন। বাংলাদেশ ইস্যুতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের অবস্থান কিন্তু এক জায়গায়।
আমার মনে হয় তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনই ঘাঁটবে না। তবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এক্ষুনি না হলেও মাস ছয়েক পরে হবে।
আমেনা মহসিন: কিছুটা হয়তো চাপ থাকবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নানা মাত্রিক বিষয় থাকে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, রাশিয়াও। বিষয়গুলো খুব জটিল।
যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে কোনো চাপ আসবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু তার মাত্রা কতটা হবে, চাপ কার ওপর, সেটাও ভাবার বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র বলছে তৈরি পোশাক শ্রমিকের বেতন বাড়াতে হবে, কিন্তু তারা কি এই পোশাকের জন্য বেশি দাম দিতে প্রস্তুত?
পুঁজিবাদী সমাজে শ্রমিক শোষণ হয়, যুক্তরাষ্ট্র এই সমাজের অন্যতম প্রতিভূ এবং এই ব্যবস্থা থেকে লাভবান হচ্ছে। আমাদের দেশ থেকে বহু ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়তে যাচ্ছে। তারা গণতন্ত্রের নামে এই দিকগুলো নষ্ট করবে না।
আমরা আমাদের মনোনয়নপ্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলছি। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প কীভাবে মনোনয়ন পেলেন? তিনি তো রিপাবলিকান ছিলেন না। ফিলিস্তিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী? তাদের নৈতিক অবস্থান নিয়েই তো প্রশ্ন আছে।
ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্যটি বাংলাদেশ কীভাবে রক্ষা করবে?
আমেনা মহসিন: ভারসাম্যের বিষয়টা বুঝতে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ভারত ও চীনের সঙ্গে সরকারের ভারসাম্যটা কীভাবে হয়, সেটাই দেখার বিষয়।
চীন তিস্তা প্রকল্প করতে চাইছে, ভারত যদি করতে না দেয়, সেটা কোন দিকে মোড় নেবে, এখনই বলা যাচ্ছে না। আর সাধারণ মানুষের একটা চাহিদা আছে। তারা বলবে ভারত যদি তিস্তা চুক্তি না করে, তাহলে কেন চীনের সঙ্গে আমরা প্রকল্প করব না। ভারত নিজেই তো চীনের সঙ্গে বাণিজ্য করছে।
বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, ভারতের কারণে তারা গণতান্ত্রিক চর্চা করতে পারছে না। অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন, বাংলাদেশের ভারতকে দেওয়ার পাল্লা ভারী, ভারতের দিক থেকে প্রাপ্তি সেই তুলনায় কম। এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
শ্রীরাধা দত্ত: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান প্রকল্পগুলো থেকে কিন্তু সাধারণ মানুষ লাভবান হচ্ছে। বাণিজ্য ও জ্বালানি খাত কিংবা ত্রিপুরা থেকে সরবরাহকৃত গ্যাসের সুবিধা তো মানুষের কাছেই যাচ্ছে। যোগাযোগ খাতেও উন্নতি হয়েছে। বাস, ট্রেন চলছে। এর উপকারভোগী তো সাধারণ মানুষই।
দুটো জায়গায় ঐক্যে পৌঁছানো যায়নি। একটা হলো অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, মানে যৌথ ৫৪ নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা ও অন্যটি সীমান্ত সমস্যা।
তিস্তা চুক্তি কেন হচ্ছে না, সেটাই বুঝি না। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ওই সময় বিরোধিতা করেছিল, কারণ পানি যে পরিমাণে সরবরাহ করার কথা ছিল, সে পরিমাণ পানি পশ্চিমবঙ্গেই থাকে না। অনেক পুরোনো ডেটার ভিত্তিতে ওই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
২০১০-এ দুই দেশের যে যৌথ বিবৃতি এসেছিল, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক কিন্তু তার ভিত্তিতেই এগিয়েছে। ওই বিবৃতিতেই কিন্তু বলা হয়েছিল, অববাহিকাভিত্তিক নদী ব্যবস্থাপনা হবে। কুশিয়ারায় কাজ এগোচ্ছে। পানির বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া বেশি হয়।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হলেও আগের চেয়ে কমেছে। এ নিয়ে দুই সরকারের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা ও যোগাযোগ আছে।
বাণিজ্য–ঘাটতি নিয়ে কথা আছে। এখন তৈরি পোশাক বিনা শুল্কে প্রবেশের সুযোগ তৈরি হয়েছে। নিষিদ্ধ বস্তু ছাড়া যেকোনো কিছুই এখন ভারতে যেতে পারে। ভারত যতগুলো প্রকল্প করেছে, সবগুলোরই সুবিধা ভোগ করছে মানুষ।
আমেনা মহসিন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতার কথা বললেন, কিন্তু জনমত অন্য কথা বলে। পেঁয়াজের দাম বাড়ানো নিয়ে অসন্তোষ দেখা গেছে। প্রায়ই এটা-ওটা ভারতে চলে যাচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠে। মানুষের এই ধারণাটা বিবেচনায় নেওয়া কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।
যোগাযোগের কথা যদি বলি, একটা সময় শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, গবেষকদের মধ্যে একটা যোগাযোগ ছিল। আমরা একত্রে বিভিন্ন প্রকাশনা, বই বের করেছি, লিখেছি। এখন হয়তো প্রযুক্তি, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য খাতে যোগাযোগ বেড়েছে, কিন্তু মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ আর আগের মতো নেই।
ধারাবাহিকভাবে বর্তমান সরকারকে সমর্থন দেওয়ার পেছনে ভারত বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানের আশঙ্কার যুক্তি দেয়। এটাকে কতটা যৌক্তিক মনে করেন?
আমেনা মহসিন: এটা নিয়ে ভারতের বড় উদ্বেগ আছে। কিন্তু ভারতের কারণে বাংলাদেশের মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে—এই ধারণা থেকে অসন্তোষ তৈরির ঝুঁকিও বাড়ছে।
ভারত মৌলবাদীদের উত্থানের যে কথা বলছে, তার সঙ্গে আমি একমত নই। বাংলাদেশ সন্ত্রাস প্রতিরোধে খুবই সফল। বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।