একটি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবা ২৫ দিন ধরে বন্ধ! এটা ভাবা যায়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২৫ দিন ধরে এভাবেই চলছে। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা খুব স্বাভাবিকভাবেই দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। বোঝা যায়, কতটা হেলাফেলাভাবে আর দায়িত্বহীনতার মধ্য দিয়ে আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম চলছে।
অ্যাম্বুলেন্স বন্ধের কারণ পেট্রলপাম্প থেকে তেল বন্ধ করে দেওয়া। প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে পেট্রলপাম্পটি থেকে তেল নিত সেখানে গত অক্টোবর পর্যন্ত বকেয়া পাওনা হয়েছে ১৭ লাখ টাকারও বেশি। বকেয়া পরিশোধের জন্য পাম্প কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছে এবং পাওনা পরিশোধ না করা হলে ১ নভেম্বর থেকে তেল দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও তারা জানিয়ে দিয়েছিল। ফলে পাম্প কর্তৃপক্ষকে এ জন্য দায়ী করার সুযোগ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এই চিঠি পাওয়ার পর কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিল না?
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে টাকা বরাদ্দ না পাওয়ায় দুই বছর ধরে এই টাকা বকেয়া পড়েছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, পাম্প কর্তৃপক্ষের চিঠি পাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং সে অনুযায়ী পাম্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
যেকোনো হাসপাতালের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স সেবা। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে আনা বা অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য অ্যাম্বুলেন্স দরকার। রোগী বা তাদের স্বজনদের দুর্ভোগের বিষয়টি যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে গুরুত্ব পেত তবে ২৫ দিন একটি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকার কথা নয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ ধরনের নানা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই চলছে আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলো। এ ঘটনার মূল দায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্স সেবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত না করার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম আলো পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর শনিবার আবার অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে সরকারি একটি হাসপাতাল চলতে পারে না।