১৯৮১ সালে সিলেটে শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়, কিন্তু একাডেমির নিজস্ব কোনো ভবন নেই। সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকার কবি নজরুল অডিটরিয়ামের দোতলায় শিশু একাডেমির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এখানে চারটি কক্ষ রয়েছে। এসব কক্ষ জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা, গ্রন্থাগার, কম্পিউটার প্রশিক্ষণকক্ষ ও অফিস সহকারীদের বসার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই বারান্দার মেঝেতে শিশুদের সাংস্কৃতিক পাঠদান করা হয়। ৩৮ বছর ধরেই এ অবস্থা চলছে। বর্তমানে একাডেমিতে প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২০০ জন। আলাদা কক্ষের অভাবে চিৎকার ও হইচইয়ের মধ্যে প্রশিক্ষকেরাও পড়াতে বিব্রত হন। এ ছাড়া নিচে অডিটরিয়াম থাকায় প্রায়ই নানা অনুষ্ঠান লেগে থাকে। এতে প্রশিক্ষণ দিতে ও নিতে সমস্যা হয়। এ ছাড়া এখানে মাত্র একটি টয়লেট রয়েছে। সেটিও আবার শিশুবান্ধব নয়। সারাক্ষণ দুর্গন্ধ লেগেই থাকে। এটি শিশুদের ভোগাচ্ছে। গ্রন্থাগার কক্ষ ছোট হওয়ায় বইপত্র রাখা হয়েছে গুদামে।
একটি শিশু একাডেমির এমন দুরবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ রকম পরিবেশে কি কোনো শিশুর সাংস্কৃতিক বিকাশ বা সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ হতে পারে? বোঝাই যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই। মাথাব্যথা থাকলে এত দিনে সিলেটে শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন গড়ে উঠত।
প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, ২০১৩ সালে নগরের পূর্ব শাহি ঈদগাহ এলাকায় শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য ৫০ শতক জায়গা স্থায়ীভাবে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে এখানে ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জেলা শিশু একাডেমির পক্ষ থেকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের এ রকম গা–ছাড়া মনোভাব উদ্বেগজনক। তাহলে জেলায় জেলায় শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে লাভ কী, যদি তাতে শিশুদের প্রতিভার বিকাশে অনুকূল পরিবেশ না থাকে। আমরা চাই, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সিলেটে শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন গড়ে তোলার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। শুধু ভবন গড়লেই হবে না, সেখানে যাতে শিশুদের প্রতিভা বিকাশে সহায়ক পরিবেশ থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।