লোহাগাড়ার রাস্তাটি উন্নত করুন

সম্পাদকীয়

শহুরে বর্ষাকাল মানে ভোগান্তির। বৃষ্টির মৌসুমের সৌন্দর্য ধরা দেয় মূলত গ্রামগঞ্জে। পল্লিবাংলার বর্ষা উপভোগের বিষয়টি বাংলা সাহিত্যেও বারবার ধরা দিয়েছে। তবে বর্ষাকালে গ্রামের ভোগান্তির বিষয়টিও এখানে বলতে হয়। বর্ষায় শহর ও গ্রাম উভয় জায়গাতেই বড় ভোগান্তির বিষয়টি জলাবদ্ধতা ও সড়ককেন্দ্রিক। শহর এলাকায় কয়েক দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতার সাময়িক সমস্যা মিটে গেলেও গ্রামগঞ্জে সেটি অন্য পর্যায়ে চলে যায়। বিশেষ করে সংস্কারহীন বা কাঁচা রাস্তাগুলো কাদাজলে বেহাল হয়ে যায়। তখন মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে।

বর্ষাকালে এমন দুর্ভোগে নাকাল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার একটি গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ। উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে পুটিবিলা এম চর হাট, সেখান থেকে আরও পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে পুটিবিলা ইউনিয়নের পহরচান্দা গ্রামে অবস্থিত সড়কটি। ১৫ বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদ সড়কটি নির্মাণ করে। পরে সেটি এলজিইডির তালিকাভুক্ত হয়। সড়কটি দিয়ে পহরচান্দা গ্রামের আশ্রয়ণপাড়া, নতুনপাড়া, হানিফারপাড়া, আদর্শপাড়া, খনিরপাড়া ও মাঝেরপাড়া এলাকার বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। সাড়ে ৭ কিলোমিটার সড়কের মাত্র ৩০০ মিটারে ইট বিছানো হয়েছে। বাকিটা এখনো কাঁচা রাস্তাই থেকে গেছে।

বৃষ্টিতে ইতিমধ্যে সড়কটির বিভিন্ন স্থানের মাটি সরে গেছে। কোনো কোনো অংশে হাঁটুসমান কাদা। সড়কে যানবাহন চলাচল দূরে থাক, হেঁটে চলাও দায়। বর্ষার পর আবার শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালু লেগেই থাকে। ফলে সড়কটিতে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগই নিত্যসঙ্গী হয়ে আছে। বর্ষাকালে, বিশেষ করে রোগীদের সড়কটি দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই সড়ক দিয়ে সরকারি-বেসরকারি আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত চলাচল করে।

কৃষিনির্ভর এলাকা হওয়ায় সড়কটি সংস্কার হওয়া জরুরি। সেখানকার কোনো কোনো গ্রামের ৯০ শতাংশই কৃষক পরিবার। আবাদি জমির পাশাপাশি অনেক গবাদিপশুর খামার, মৎস্য খামার ও ফলদ বাগান রয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে কৃষকদের কৃষিপণ্য আশপাশের হাটবাজারে নিয়ে যেতে হয়। সড়কের দুরবস্থার কারণে কৃষকেরা তাঁদের ফসল সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েন। যথাসময়ে উৎপাদিত ফসল বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। সড়ক বেহালের কারণে কৃষকদের পরিবহন ব্যয় হয় চার গুণ বেশি। এতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন, সড়কটি চলাচল উপযোগী করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর বক্তব্য, বরাদ্দ পেলে সড়কটির কাজ শুরু করা যাবে। আমরা আশা করব, দ্রুত সড়কটি উন্নত করা হবে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।