সাতটি স্টেশনে লোকবলসংকট দূর করুন

সম্পাদকীয়

দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসা পদ্মা সেতু দিয়ে এবার শুরু হয়েছে রেল চলাচলও। তবে এ রেলপথে কিছু স্টেশন ভুগছে লোকবলসংকটে। পদ্মা সেতু দিয়ে এখন মাত্র দুটি ট্রেন চলাচল করছে। সামনে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়বে। ফলে স্টেশনগুলোয় লোকবলসংকট না মেটালে রেলপথটিতে ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হবে।

১ নভেম্বর থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেন খুলনা থেকে রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছে। বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের আরেকটি ট্রেন বেনাপোল থেকে রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছে। এ ট্রেন দুটির চলাচলের মধ্যে পড়ে রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ১২টি স্টেশন। এসব স্টেশন দিয়ে মধুমতি এক্সপ্রেস নামের একটি আন্তনগর ট্রেন ও রাজবাড়ী এক্সপ্রেস নামের একটি লোকাল ট্রেনও প্রতিদিন চলাচল করে।

দেখা যাচ্ছে, ১২টি স্টেশনের মধ্যে ৭টিতেই কোনো স্টেশনমাস্টার নেই। কোনো স্টেশনে পদটিই নেই, আবার পদ থাকলেও সেটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। এর মধ্যে রয়েছে রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ভাঙ্গার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনও। একজন স্টেশনমাস্টার ছাড়া একটি স্টেশন কোনোভাবেই পূর্ণতা পায় না। কারণ, একজন স্টেশনমাস্টারকে অনেকগুলো দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর মধ্যে ট্রেন পাসিং ও সিগন্যালিং কার্যক্রম পরিচালনা করা তাঁদের প্রধান দায়িত্ব।

স্টেশনমাস্টারের অনুমতি ছাড়া কোনো ট্রেন কোনো স্টেশনে ঢুকতে বা বের হতে পারে না। তবে কোনো স্টেশনে স্টেশনমাস্টার না থাকলে সেটি বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে পাশের স্টেশনের স্টেশনমাস্টারকে দেখতে হয়। এ ছাড়া যাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়া, কোনো যাত্রী অসুস্থ হলে পদক্ষেপ নেওয়া, রেলস্টেশনে কোনো ঝামেলা হলে তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়াও স্টেশনমাস্টারের দায়িত্ব।

পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা চলছে। স্বাভাবিকভাবেই মাত্র দুটি ট্রেন এ সেতু দিয়ে চলাচল করবে না। এখন ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে গেলে স্থানীয় স্টেশনগুলোর সংস্কার ও উন্নয়ন করতে হবে। বিশেষ করে লোকবলসংকটের দ্রুত সমাধান জরুরি। নয়তো যাত্রীসেবা চরমভাবে ব্যাহত হবে।

এ ছাড়া ট্রেন পাসিং এবং সংকেত দেওয়ার কার্যক্রমও বিঘ্নিত হবে। এতে এই রেলপথে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরি হবে। বিভাগীয় রেল পরিবহন কর্মকর্তা নিজেই সে কথা বলছেন। এখন রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কি এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে?