বন বিভাগ দায় এড়াতে পারে না

সম্পাদকীয়

বারবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হওয়া সত্ত্বেও সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ হচ্ছে না। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ, এর প্রভাব বহুমুখী ও সুদূরপ্রসারী। বিষপ্রয়োগের ফলে শুধু চিংড়ি ও সাদামাছই নয়, অন্যান্য প্রাণীও দেদার মারা পড়ছে। এতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি, বাস্তুসংস্থান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার সেই মাছ যাঁরা খাচ্ছেন, তাঁদের স্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

বন্য প্রাণী এবং নদী-খালের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ সময়ে পর্যটক, সাধারণ মানুষ বনে প্রবেশ করতে পারবে না, সেখানে মাছ-কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ। অথচ নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতেই সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে একটি চক্র। সুন্দরবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করে বিষ দিয়ে চিংড়ি ও সাদামাছ শিকার করছে। বলা চলে, সুন্দরবনের ভেতরে রীতিমতো নিরাপদ আবাস গড়ে তুলে বিষ দিয়ে ধরা মাছ শুকিয়ে শুঁটকি বানাচ্ছে।

 আমরা মনে করি, সুন্দরবনের খালে বিষ দিয়ে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের দায় বন বিভাগ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। সরকার যেভাবে টাস্কফোর্স গঠন করে বন দস্যুমুক্ত করেছে, সেভাবে বিষদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বন বিভাগের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা জরুরি। বাংলাদেশের মহাপ্রাণ সুন্দরবন রক্ষার বিকল্প নেই।