ঢাকা–ময়মনসিংহ সড়কে শৃঙ্খলা ফেরান

সম্পাদকীয়

মহাসড়কে দুর্ঘটনার বড় একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অবাধে ছোট যানবাহন চলাচল। ছোট যানবাহন বলতে বোঝানো হচ্ছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মিশুক, ভ্যান। মহাসড়কে এ ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই মহাসড়কগুলোয় দাবড়ে বেড়াচ্ছে ছোট যানবাহন। ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে, তা রোধে পুলিশের যতটা তৎপর হওয়া দরকার, তা দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি হতাশাজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে ছোট যানবাহন চলাচল করায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। যানজটের পাশাপাশি প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহনচালকদের ভাষ্য থেকে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কটিতে আগে থেকেই চলত তিন চাকার যানবাহন। তবে ২০২২ সালে মহানগর পুলিশ উদ্যোগ নিয়ে সড়কটিতে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই গত বছর সেপ্টেম্বরে আবারও সড়কটিতে ধীরে ধীরে তিন চাকার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর মোড় থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ঘুরে দেখেন প্রথম আলোর স্থানীয় প্রতিনিধি। দেখা যায়, সড়কটিতে চলাচল করছে অসংখ্য দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন। এর মধ্যেই পাল্লা দিয়ে চলছে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন, ভ্যানগাড়িসহ প্যাডেলচালিত রিকশা। এসব যানবাহন একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে কখনো মাঝ সড়ক দিয়ে চলছে। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে কোনোটি আবার উল্টো পথে ছুটছে। মাঝেমধ্যেই দেখা দিচ্ছে যানজট। এই বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কোথাও পুলিশের ভূমিকা চোখে পড়েনি।

মহাসড়কগুলো ঝুঁকিমুক্ত রাখতে হলে ছোট যানবাহন চলতে দেওয়ার সুযোগ নেই। সেটি নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকেই। তবে মহাসড়কে অবাধে ছোট যান চলাচলের ঘটনায় পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নানা সময় প্রশ্নের জন্ম দেয়। দায়িত্বে অবহেলার পাশাপাশি অতীতে ঘুষ বা উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে ছোট যান চলাচলের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগও পুলিশের বিরুদ্ধে পাওয়া যায়।

ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিশৃঙ্খলার বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসানের বক্তব্য, ‘আমরা এ বিষয়ে সব সময়ই ট্রাফিক বিভাগকে বলি। আমি আবারও ট্রাফিক বিভাগকে বলব, যেন সড়কে এসব তিন চাকার যানবাহন উঠতে না পারে।’ আমরা আশা করব, গাজীপুর মহানগর পুলিশসহ ট্রাফিক বিভাগ আরও সক্রিয় হবে।