দ্রুত জনভোগান্তি দূর করুন

সম্পাদকীয়

নদীমাতৃক দেশে সড়ক যোগাযোগে একটি সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। যদিও নদী ‘মেরে ফেলার’ জন্য অনেক সময় দায়ী করা হয়ে থাকে সেতুকেই। সেখানে অবশ্যই যথাযথ পরিকল্পনার অভাব ও অনিয়মের বিষয়টিও চলে আসে। তবে একটি সেতু পাল্টে দিতে পারে একটি লোকালয়ের গোটা জনজীবন। আবার সেই সেতু যখন আচমকা ভেঙে পড়ে, সেখানে যে স্থবিরতা নেমে আসে, তা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায়। সেখানে আচমকা একটি সেতু ভেঙে গিয়ে সাত গ্রামের মানুষের মধ্যে বড় দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের বড়হরপাড়া খালের ওপর ছিল এ সেতুর অবস্থান। সাধুর ব্রিজ নামে পরিচিত লোহার সেতুটি প্রায় ২০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। এর ফলে পুরোনো হতে হতে সেটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। গত রোববার পিকআপ ভ্যানসহ সেতুটি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে যায়।

যদিও সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে লোহার সেতুটি ভেঙে পড়ায় বড়হরপাড়া, মম্বিপাড়া, মিশ্রিপাড়া, পৌরগোজা, নতুনবাজারসহ সাতটি গ্রামের ১০ হাজার মানুষ চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি, রোগী ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে বেশ অসুবিধা তৈরি হলো।

কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হচ্ছে মিশ্রিপাড়া এলাকার বৌদ্ধমন্দির। মম্বিপাড়া গ্রামের সড়ক ও এই সেতু দিয়েই সেই বৌদ্ধমন্দিরে যেতে হয়। এখন সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় পর্যটকেরাও বৌদ্ধমন্দিরে যেতে পারছেন না।

তবে এরই মধ্যে ভেঙে পড়া সেতুটি দেখতে গিয়েছেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এলাকার মানুষের ভোগান্তি তিনি দেখেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের সঙ্গেও কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ভেঙে পড়া সেতুটি দ্রুত অপসারণ করা হবে।

তা ছাড়া ওই খালের ওপর একটি নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ স্থানীয় মানুষ যাতে চলাচল করতে পারেন, সে জন্য আপাতত ভেঙে পড়া সেতুর পাশেই একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে আমরা সাধুবাদ জানাই, তাঁরা দ্রুত বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। এখন শিগগিরই কাঠের সাঁকোটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে, সেটিই আমরা আশা করছি। তবে সেখানে আরেকটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত থাকুক।