বিশ্বের গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের কুলপঞ্জিতে যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্বার্ষিক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি বিশেষ স্থান ও গুরুত্ব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র। বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ব্যাপক ও বহুমুখী। পৃথিবীর একাধিক স্পর্শকাতর অঞ্চলে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র উপস্থিতি। সেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি নির্বাচিত হন প্রতি চার বছর পর, নভেম্বর মাসের একটি নির্ধারিত দিনে। ১৭৯২ সাল থেকে তা ব্যতিক্রমহীনভাবে হয়ে আসছে। তথ্যপ্রযুক্তির নাটকীয় অগ্রগতি বৈশ্বিক ঘটনাবলির ওপর মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে বহগুণ। এখন ঢাকায় বাড়িতে বসে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রতিটি ধাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারি খোদ ওয়াশিংটনবাসীরই মতো। পৃথিবী এখন ছোট হয়ে এসেছে।
১৯৫৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়ে আমি বোস্টনের ফ্ল্যাচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসিতে অধ্যয়নরত। কিছুটা প্রত্যাশিতভাবেই আইজেন আওয়ার-নিক্সন যুগল পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে আমার জন্য রোমাঞ্চকর ছিল আমাদের ছাত্রাবাসের নাতিদীর্ঘ সাদাকালো টেলিভিশনের পর্দায়, জীবনের প্রথমবারের মতো, একটি নির্বাচন প্রত্যক্ষ করা। তারপর থেকে প্রতি চার বছর পর, যখন যে দেশে কার্যব্যপদেশে অবস্থান করেছি, বিভিন্ন অবস্থায়, আগ্রহ নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের খোঁজখবর রেখেছি।
১৯৬৪ সালের নির্বাচনটির কথা বিশেষভাবে মনে পড়ে। সেই সময়ে আমি চীনের পিকিং, অর্থাৎ বর্তমান বেইজিংয়ে পাকিস্তান দূতাবাসে নিযুক্ত ছিলাম। সেই নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ছিলেন প্রেসিডেন্ট কেনেডির মর্মান্তিক হত্যার পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত উপরাষ্ট্রপতি লিনডন জনসন। জনসনের রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কট্টর ডানপন্থী ব্যারি গোল্ডওয়াটার। গোল্ডওয়াটার বলেছিলেন, ‘মুক্ত জীবনযাত্রা (লিবার্টি) রক্ষায় কট্টরবাদিতা কোনো অন্যায় নয়, যেমনি ন্যায়বিচার রক্ষার জন্য উদারতা নয় কোনো গুণ।’ সেই বছর রিপাবলিকান দলের মনোনয়নযুদ্ধে গোল্ডওয়াটার মধ্যমপন্থী উইলিয়াম স্ক্রেনটনকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেছিলেন। যেমনি এই ২০১৬ সালে, কট্টরবাদী কোটিপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রাইমারিতে তাঁর সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে ধরাশায়ী করে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন লাভ করলেন। আমি ২০১৬ সালের ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাঝে ১৯৬৪ সালের ব্যারি গোল্ডওয়াটারের প্রেতাত্মা খুঁজে পাই।
একটি ঘটনা মনে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সেই বছর চীনের তদানীন্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্শাল চেন ই, সেই সময়কার পাকিস্তানের খ্যাতিমান সাংবাদিক এবং পরবর্তীকালে ঢাকার ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এস এম আলিকে একটি বিরল সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি মনে মনে কামনা করেন যে নির্বাচনে গোল্ডওয়াটার জয়ী হোন! বিস্মিত এস এম আলির প্রশ্ন, কেন চেন ই এ কথা বললেন। উত্তরে চেন ই বলেছিলেন যে তাহলেই ‘সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের’ আসল রূপটি উন্মোচিত হবে। চেন ই তাঁর এই ব্যক্তিগত মন্তব্য প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন এস এম আলিকে। বলা বাহুল্য, করাচির ডন পত্রিকায় ঘটা করে প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারটিতে এই মন্তব্য অন্তর্ভুক্ত ছিল না। কট্টরবাদী ডানপন্থী গোল্ডওয়াটার সেই নির্বাচনে লিনডন জনসনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিণতি যে গোল্ডওয়াটারের মতো হবে, সেই অতি কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যদ্বাণীটি নিশ্চিতভাবে এখনো করা যাচ্ছে না।
সবে সমাপ্ত হলো নির্বাচন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্ব, রিপাবলিকান আর ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় কনভেনশন। রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন লাভ করলেন। তাঁর মনোনীত ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন ইন্ডিয়ানা রাজ্যর গভর্নর মাইক পেন্স। তিনিও একজন রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ।
রিপাবলিকান দলের কনভেনশনটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য সমস্যামুক্ত ছিল না। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জাতীয় পর্যায়ের রিপাবলিকান নেতা এই কনভেনশনে অংশ নেননি, ট্রাম্পের সমর্থনে দেননি কোনো বক্তব্য। দুই সাবেক রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি পিতা বুশ আর তাঁর সন্তান বুশ কনভেনশনে ছিলেন না। অনুপস্থিত ছিলেন শীর্ষ রিপাবলিকান, প্রবীণ কূটনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জার ও দলটির সাবেক রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী মিট রমনি। কনভেনশনে ভাষণ প্রদান করলেন পরাজিত মনোনয়নপ্রার্থী টেড ক্রুজ। কিন্তু তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন জানালেন না। ব্যাখ্যায় বললেন, ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় তাঁর পিতা এবং স্ত্রী সম্বন্ধে অপমানজনক মন্তব্য করছেন, আর যিনি তা করেছেন, তিনি তাঁকে সমর্থন জানাতে অপারগ।
কনভেনশনটি ছিল মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণনির্ভর। তাঁর ইতিপূর্বে দেওয়া অনেক ভাষণের মতোই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থার একটি ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরলেন। অপ্রাসঙ্গিক হলেও রবীন্দ্রনাথের কবিতার একটি পঙ্ক্তির উদ্ধৃতিতে ট্রাম্পের মনোভাব ব্যক্ত করা যায়। তা হলো ‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস...’! ট্রাম্প বললেন, আগামী জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের কার্যভার গ্রহণ করার পরপরই তিনি এই দুঃসহ অবস্থার অবসান ঘটাবেন। বললেন, লাগামহীন অভিবাসন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান আইনশৃঙ্খলাহীনতার জন্য দায়ী এবং সন্ত্রাসকবলিত সব দেশ থেকে তিনি অভিবাসন বন্ধ করবেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গন নিয়ে তাঁর দৃষ্টিপাত ছিল হতাশায় ভরা। ইরাক ও সিরিয়ায় যুদ্ধ, আইসিস ও ইউরোপমুখী অভিবাসনপ্রার্থীরা এই দুঃসহ অবস্থার সৃষ্টি করেছেন। এই অবস্থার অবসান তিনি ঘটাবেনই। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বাণিজ্যিক অবস্থা গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদ্যমান অনেক বাণিজ্য চুক্তির তিনি পুনর্বিবেচনা করবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে একটি শক্তিশালী, গর্বিত, নিরাপদ ও মহান রাষ্ট্রে পরিণত করবেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের লক্ষ্য ভোটদাতাদের মধ্যে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে তাঁদের সমর্থন লাভ করা। আর দ্বিতীয়ত, এই প্রচারণায় তিনি দেশের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ, ১৭ শতাংশ হিস্পানিক ও ১ শতাংশ মুসলমানের বিশেষ তোয়াক্কা করেননি। তাঁর লক্ষ্য, দেশের জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ জনসাধারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রাজনৈতিক দল দুটির কনভেনশন, উৎসব, নাটকীয়তা, উচ্ছ্বাস, মিষ্টিকথা, কটুকথা, বিতর্ক, হইহুল্লোড়, জ্ঞানগর্ভ ভাষণ, কৌতুক আর কখনো বা আবেগমিশ্রিত অশ্রুর সংমিশ্রণে একটি উপভোগ্য রাজনৈতিক কার্নিভাল। এবারের কনভেনশন দুটিও তা-ই ছিল। কিন্তু তুলনামূলকভাবে ফিলাডেলফিয়ায় অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনটি ছিল মার্জিত, তথ্যসমৃদ্ধ, সুপরিকল্পিত ও সুচারুভাবে উপস্থাপিত জমকালো ঐতিহাসিক একটি অনুষ্ঠান।
ঐতিহাসিক এই জন্য যে দেশের ২৪০ বছরের ইতিহাসে হিলারি ক্লিনটন তাঁর মনোনয়ন গ্রহণ করে নারী হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। এর আগে প্রধান দুটি দলের কোনোটিই একজন নারীকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির পদের জন্য মনোনীত করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি, সিনেটর, সেক্রেটারি অব স্টেট, আইনজ্ঞ আর সমাজকর্মীর বিশাল অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে হিলারি ক্লিনটন মনোনীত হয়েছেন। কিন্তু এই অভিজ্ঞতার একটি নেতিবাচক দিকও আছে। বিভিন্ন দায়িত্ববান পদে তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে মতামত রয়েছে, তাঁর কিছু সিদ্ধান্ত লোকমনে প্রশ্নবিদ্ধ। কোনো কোনো মহলে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতায় ঘাটতি রয়েছে। তিনি অপরিচিত বা স্বল্পপরিচিতের রহস্যাবৃত নন।
যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তাশীল মানুষের একটি বিরাট অংশ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ডানপন্থী, জাতব্যবসায়ীর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা সম্বন্ধে চিন্তিত রয়েছেন। তাই তাঁরা তাঁদের মৌনতা ভেঙে এই কনভেনশনে হিলারির সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। বর্তমান মুসলিমবিদ্বেষী এই পরিবেশে কনভেনশনে মাইক্রোফোনের সামনে এসে সস্ত্রীক দাঁড়ালেন একজন প্রবীণ ব্যক্তি, খিজির খান। সজল নয়নে তিনি বর্ণনা করলেন কীভাবে তাঁর ছেলে, আমেরিকান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হুমায়ুন খান, ইরাকে সাহসী মৃত্যুবরণ করেছেন, পেয়েছেন মরণোত্তর ‘পারপল হার্টের’ সম্মান। কনভেনশনে পিনপতন নীরবতার মধ্যে কোটের পকেট থেকে তিনি বের করলেন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের একটি চটি বই। পরম একাগ্রতায় প্রশ্ন রাখলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প! আপনি কি এই বইটি পড়েছেন?’ হাততালিতে ভেঙে পড়ল কনভেনশন। অনেকের চোখেই জল। ঘটনাটি স্বতঃস্ফূর্তই হোক অথবা পরিকল্পিত, দেশের কোটি কোটি মানুষের মনে দাগ কেটেছে নিশ্চয়ই।
হিলারি ক্লিনটনের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন মিশেল ওবামা, বিল ক্লিনটন, প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং রাজনৈতিক ও সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের গণ্যমান্য সুপরিচিত অনেক ব্যক্তি। প্রেসিডেন্ট ওবামা বললেন, রাষ্ট্রপতি পদের জন্য হিলারি ক্লিনটনের রয়েছে তাঁর চেয়ে, এমনকি তাঁর স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের চেয়েও বেশি অভিজ্ঞতা। হিলারি ক্লিনটন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন ভার্জিনিয়ার সিনেটর টিম কেইনকে। তিনি ইতিমধ্যে মেয়র, গভর্নরের সিনেটরের পদ অলংকৃত করেছেন। রাজনৈতিক বিচারে তিনি হিলারি ক্লিনটনের মতোই একজন মধ্যপথযাত্রী।
কনভেনশনে ডেমোক্রেটিক দলের অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্সের সমর্থকেরা স্লোগান আর প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে ভালোভাবেই তাঁদের উপস্থিতি ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এই বার্নি স্যান্ডার্স মনোনয়নের জন্য হিলারি ক্লিনটনের নাম প্রস্তাব করলেন এবং তাঁর সমর্থনে জোরালো মন্তব্য রাখলেন। এতে করে হিলারির বিরুদ্ধে তাঁর সমর্থকদের অবস্থানের ধার অনেকটাই কমে গেছে। হিলারির দ্বিতীয় সমস্যা ছিল, উইকিলিকস হাজার হাজার ই-মেইল ফাঁস করল, যাতে দেখা গেল যে ডেমোক্রেটিক জাতীয় কমিটি, যার নিরপেক্ষ থাকার কথা, তা হিলারির মনোনয়ন পাওয়ার সপক্ষে গোপন অবস্থান নিয়েছে। এখন অভিযোগ উঠেছে যে পুতিনের রাশিয়া ট্রাম্পের বিজয় নিশ্চিত করতে ই-মেইলগুলো হ্যাক করেছে। আর কনভেনশনের পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে তারা যেন অপ্রকাশিত আরও ৩০ হাজার ই-মেইল হ্যাক করে। ব্যবসায়িক কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া ও পুতিনপ্রীতি এখন লোকমুখে চালু হয়েছে এবং নিয়তির পরিহাস এই যে এই ফাঁসরত ই-মেইল তার সঙ্গে রাশিয়া ও পুতিনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ, নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের অনুকূলেই যেতে পারে।
প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় ইতিমধ্যে নেমে পড়েছেন। সামনে রয়েছে দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্যে তিনটি টেলিভিশন বিতর্ক এবং দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে একটি বিতর্ক। সেই বিতর্কে প্রার্থীদের অবস্থান ও বিতর্কক্ষমতা নির্বাচনকে প্রভাবান্বিত করবে নিশ্চয়ই। তা ছাড়া আগামী এক শ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অথবা বহির্বিশ্বে যেকোনো ঘটনা এই নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে দুই প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে মতামত আর অবস্থানের মৌলিক ব্যবধান। নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থান প্রভাব ফেলবে। ভুললে চলবে না যে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবার পরপর তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হতে চাইছে। এই নির্বাচনে দেশের মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতি ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য সহায়ক হতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সত্যিকার রিপাবলিকান পার্টির প্রতিনিধিত্ব করেন, নাকি তিনি স্লোগাননির্ভর সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী ধনকুবের একজন রাজনীতিবিদ। আগামী এক শ দিন-রাত্রির নির্বাচনী প্রচারণায় বহুলাংশে অচেনা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সত্যিকার পরিচয় উন্মোচিত হবে। বিশ্ববাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবে ২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফলের জন্য।
ফারুক চৌধুরী: সাবেক পররাষ্ট্রসচিব। কলাম লেখক।