পাবলিক পরীক্ষার শুদ্ধতা রক্ষা সবচেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার র্যাব একটি প্রশংসনীয় অভিযান চালিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে অভিযান চালিয়ে দৃশ্যত চলমান মেডিকেল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগেই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা লক্ষণীয় যে, শুক্রবারে পরীক্ষা হলো, শনিবার সরকারি বন্ধ, আর কিনা রোববারেই ফল বেরোল। র্যাবের বরাতে মিডিয়ায় খবর বেরিয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। সেই খবরের সত্যতা র্যাব অস্বীকার করেনি। অথচ এখন কার্যত সেটা নাকচ করে দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক। আজ কিছুক্ষণ আগে তিনি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। পরীক্ষা অত্যন্ত সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এ ধরনের পরিস্থিতি ইস্যু তৈরির পথ করে দেয়। আর ইস্যু সৃষ্টি মানেই একটা অস্থিরতা, পুলিশের ওপর চাপ বৃদ্ধি এবং যানজটের তীব্রতা বৃদ্ধি। আজ হাইকোর্টে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ তিনটি বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে একটি রিট আবেদন জমা দিয়েছেন। পরীক্ষার ফল বাতিল, নতুন করে পরীক্ষা গ্রহণ এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্ত চেয়েছেন তিনি। এই রিটের শুনানিতে কী হবে জানি না, তবে সরকারি কর্তৃপক্ষ যদি কথিতমতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার কোনো উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা না দিতে পারে, তাহলে ওই তিনটি বিষয়ের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন বাড়তে পারে।
রিটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী যদিও আশ্বস্ত করেছেন যে, তাঁরা আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। কোর্ট অর্ডার মেনে চলবেন। কিন্তু সত্যি বলতে কি, সরকারের দিক থেকে এ রকম একটি জনগুরুত্বসম্পন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে এ রকম যুক্তি দেওয়া সমীচীন নয়। সরকারকে মনে রাখতে হবে, মেডিকেল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগে র্যাব যাঁদের গ্রেপ্তার করেছে, তাঁদের সুষ্ঠু বিচার হওয়া উচিত। এর সঙ্গে কোনো আপস করা চলে না। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যেভাবে সাফাই বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বেকসুর খালাস পাওয়ার আশঙ্কা জাগতে পারে।
মেডিকেল পরীক্ষার স্বচ্ছতা প্রশ্নে সংবাদ সম্মেলনে যেসব যুক্তি দেওয়া হয়েছে, তা বেশ দুর্বল এবং পর্যাপ্ত নয় বলেই প্রতীয়মান হয়। সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা প্রদান করা। আমরা এ বিষয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাই।