বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি বিষয়ে মাঠপর্যায়ের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ

গত ৯ জুলাই ২০১৭, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি বিষয়ে মাঠপর্যায়ের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

* বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান বাধ্যতামূলক করা

* ব্যাংক ছাড়াও ডাকঘর অথবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে

* উপকারভোগীর তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ইউনিয়নভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরি করতে হবে

* অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াটি তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া

* স্বামী বা স্ত্রীর যেকোনো একজনের মৃত্যুতে অপরজন যেন উত্তরাধিকারসূত্রে ভাতাটা পান, সেই ব্যবস্থা করতে হবে

* অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির বিবেচনায় ব্যাংক হিসাব নিয়মিত ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করা

* গ্রামীণ-পৌর-নগরভেদে জনপ্রতি ভাতার পরিমাণ পৃথক করা

 আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম: আমাদের দেশের বয়স্ক মানুষের মধ্যে যাঁদের মানসম্মতভাবে বেঁচে থাকার উপায় নেই এবং যাঁদের প্রকৃতপক্ষেই বয়স্ক ভাতা প্রয়োজন, তাঁদের কাছে যেন এ সুবিধাটি পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করা দরকার। এ ছাড়া বয়স্ক ভাতা যে কোনো দান-খয়রাত নয়, এটি যে একটি অধিকার, সে বিষয়টি সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কী কার্যক্রম গ্রহণ করা উচিত, সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা আমাদের আজকের এই গোলটেবিল বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।

মো. হাবিবে মিল্লাত
মো. হাবিবে মিল্লাত

মো. হাবিবে মিল্লাত: শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই এখন বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল পঞ্চাশের নিচে, কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সত্তরের ওপরে। সুতরাং এই বয়স্ক জনগোষ্ঠীর প্রতি আমাদের অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। এই লক্ষ্যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ক্ষমতায় এসে এই বয়স্ক ভাতার প্রকল্পটি চালু করেছিলেন।

তখন বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল নারীর জন্য ৬২ বছর আর পুরুষের জন্য ৬৫ বছর। এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয় যে নারীদের গড় আয়ু পুরুষের তুলনায় বেশি। কিন্তু নারীরা যেহেতু অনেক ক্ষেত্রেই অনগ্রসর আর পুরুষেরা অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকেন, সে কথা ভেবেই হয়তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন এই বয়সসীমা নির্ধারণ করেছিলেন।

এ বছরের বাজেটে বয়স্ক ভাতা প্রকল্পে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মাসিক ভাতার পরিমাণ ৫০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। গত বছর পর্যন্ত আমরা ৩১ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে বয়স্ক ভাতা দিয়েছি এবং এ বছর আরও দেড় লাখ বয়স্ক মানুষকে নতুন তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।

আমাদের বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়িয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

শাহীন আনাম
শাহীন আনাম

শাহীন আনাম: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন মূলত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় কাজ করে। সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে আমরা ইউকেএইডের সহযোগিতায় একটি তিন বছরের প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে কতগুলো কার্যকর সংগঠন তৈরি হয়েছে। প্রকল্পটিতে মূলত আমাদের কাজ ছিল, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষেরা আমাদের এই সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে কীভাবে দেখছে, এর ব্যবস্থাপনা কেমন হচ্ছে, ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁক রয়েছে কি না, তা চিহ্নিত করে সেগুলো নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরা। আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, তৃণমূল পর্যায়ে এই প্রকল্পের ভীষণভাবে একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। বিশেষভাবে আমাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই প্রকল্পকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।

আমরা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন এই তিনটি স্তরে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা ফোরাম তৈরি করে দিয়েছি। এই ফোরামগুলোর দায়িত্বে আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলো থাকলেও পুরো কাজ কিন্তু সেখানকার জনগণের স্বেচ্ছা উদ্যোগ থেকে হয়েছে।

এই প্রকল্পে কাজ করার সময় আমরা লক্ষ করেছি, সরকারের অভিযোগ সমাধান–প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার মানুষের অধিকাংশ অভিযোগেরই সমাধান করা গেছে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকেও আমাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই প্রক্রিয়া কার্যকর করতে তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সোমা দত্ত
সোমা দত্ত

সোমা দত্ত: বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি। এই হার ক্রমাগত বাড়ছে, ২০৩০ সালে এই হার ১২ শতাংশ এবং ২০৫০ সালে ২৩ শতাংশে উন্নীত হবে। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক মানুষ রয়েছে। এই বয়স্ক মানুষের মধ্যে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।

আজকের আলোচনায় যত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হবে, তা আমরা দেশের ১২টি জায়গায় আমাদের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পেয়েছি। এই পর্যবেক্ষণে দেখেছি যে ১৮ শতাংশ পুরুষ এবং ১২ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে সঠিক বয়স বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। সঠিক বয়স নির্ধারণ করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা জরুরি।

৫০-৬০ লাখ টাকা পারিবারিক আয় রয়েছে এমন ব্যক্তিও বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে উপকারভোগীর ব্যক্তিগত আয়ের পাশাপাশি পারিবারিক আয়কেও বিবেচনায় আনা এবং জমির মালিকানার পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে শহর-পৌর-গ্রামীণ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া দরকার।

নাম তালিকাভুক্তির আগে নীতিমালা অনুযায়ী প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং ইউনিয়ন পরিষদকে প্রয়োজনীয় সময় ও খরচ প্রদান করা দরকার। গ্রামীণ-পৌর-নগরভেদে জনপ্রতি ভাতার পরিমাণ পৃথক করা যায় কি না এবং ৮০ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের জন্য বিশেষ ভাতা বা পরিষেবা চালু করা।  সর্বোপরি একটি সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রবর্তন করা জরুরি।
ভাতা পরিশোধপদ্ধতির ক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংক ছাড়াও ডাকঘর অথবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ব্যাংকে হয়রানি কমাতে একটি ভাতা বিতরণ ক্যালেন্ডার করা যেতে পারে।

মো. আলাউদ্দিন খান
মো. আলাউদ্দিন খান

মো. আলাউদ্দিন খান: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আমরা সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প করেছি। এই সময় বয়স্ক ভাতা দেওয়ার জন্য তালিকা প্রণয়ন থেকে শুরু করে ভাতা দেওয়া পর্যন্ত অনেক ত্রুটি আমরা লক্ষ করেছি। তালিকা তৈরির সময় যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করা হয় না।

হয়তো ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের ডেকে এনে একটি তালিকা তৈরি করে দিয়েছেন। এর ফলে তালিকায় এমন অনেকের নাম চলে এসেছে, যা তিনি হয়তো জানেনই না, আবার অনেকে ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে তালিকায় নাম না থাকায় টাকা পাননি।

আবার এমনও দেখা গেছে, যে চেক বই দিয়ে টাকা তোলেন, সেই বইয়ের পাতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন বই সংগ্রহ করতে হয়রানি হতে হচ্ছে।
পরবর্তী সময়ে স্থানীয়ভাবে সামাজিক সুরক্ষা ফোরাম তৈরি করে দেওয়ার পর এই অব্যবস্থাপনাগুলো আমরা দূর করতে পেরেছি। আমরা দেখেছি তাঁরা সম্মিলিতভাবে অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে কাজ করেছেন।

কিন্তু আমাদের প্রকল্পটি শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয়ভাবে এই ফোরামগুলো সচল রাখতে। এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে সহায়তা পেলে স্থানীয় জনপ্রশাসনের মাধ্যমে অভিযোগ ও  অব্যবস্থাপনাগুলো দূর করা সম্ভব।

শরীফা বেগম
শরীফা বেগম

শরীফা বেগম: তালিকা তৈরির সময় নীতিমালা মানা হয় না, চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নিজেদের মতো করে একটি তালিকা তৈরি করে দেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলেন, টাকার পরিমাণ এত কম এবং চাহিদা এত বেশি যে ঘোষণা করলে তাঁরা টাকা দিয়ে কুলাতে পারবেন না। তা ছাড়া তাঁদের পরবর্তী নির্বাচনে জিততে হবে, ঘোষণা করে টাকা না দিতে পারলে তাঁরা ভোট হারাবেন। সুতরাং তাঁদেরও সীমাবদ্ধতা আছে।

৩৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩০ শতাংশ নারী এই ভাতার আওতায় এসেছেন এখন পর্যন্ত। সুতরাং বয়স্ক মানুষের বড় একটি অংশ কিন্তু এ সুবিধাটা পাচ্ছে না। ত্রুটিপূর্ণ অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে, ৮ থেকে ২১ শতাংশ পুরুষ এবং ৫ থেকে ১৭ শতাংশ নারী নীতিমালার নির্দেশনাবহির্ভূতভাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

গ্রামীণ অঞ্চলে ৬ শতাংশ প্রবীণ একা বসবাস করেন, ১৩ শতাংশ প্রবীণ শুধু স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে বসবাস করেন। তার মানে গ্রামীণ অঞ্চলে প্রায় ২০ শতাংশ প্রবীণ পরিবারে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য ছাড়া বসবাস করেন, এটা প্রবীণদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ । মাসিক ৩০০ টাকা বা ৫০০ টাকা খুব সামান্য। কিন্তু এটা বয়স্ক মানুষের চিকিৎসা ও ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবদান রাখছে।

আমাদের গড় আয়ু ৭০ বছর আর ৬৫ বছর হলেই তো একজন ভাতা পাওয়া শুরু করে দেন না, সব প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই বা তিন বছর লেগে যায়। ফলে টাকা পাওয়ার এক বছরের মধ্যেই দেখা যায় ভাতাভোগকারী ব্যক্তি মারা যান। তাই আমাদের ভাতাপ্রাপ্তির বয়সসীমা কমানো দরকার।

অনেক সময় দেখা যায় যে স্বামী ভাতা পেতেন, সেই টাকায় স্বামী-স্ত্রী দুজনই চলতেন। কিন্তু স্বামী মারা গেলে বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী স্ত্রীকে আবার ভাতার জন্য আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যদি স্ত্রী উত্তরাধিকারসূত্রে টাকাটা পেতেন, তাহলে বিষয়টি তাঁর জন্য সহজ ও কার্যকর হতো।

সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী
সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী

সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী: সামাজিক নিরাপত্তাকে সরকার বা রাষ্ট্রের দান-খয়রাত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এটা বয়স্ক মানুষের অধিকার।

এ সমস্যার সমাধান হলো এই ভাতাকে সর্বজনীন করা। কিন্তু আমাদের সরকারের সম্পদ সীমিত হওয়ায় তা এখনই করা হয়তো সম্ভব হবে না। ফলে এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সুবিধা গরিবদের দেওয়া হচ্ছে। সারা দেশে সর্বজনীন বয়স্ক ভাতা দেওয়া সম্ভব না হলেও দেশের ৫০টি সবচেয়ে গরিব উপজেলা যা ইতিমধ্যে চিহ্নিত আছে, সেখানে এই ভাতা কার্যক্রমকে সর্বজনীন করা যায়। এরপর ধাপে ধাপে সামনে এগিয়ে যাওয়া যাবে।

ভাতার টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রে ভাতাভোগকারীকে পছন্দ দেওয়া যেতে পারে যে তিনি কোন প্রক্রিয়ায় টাকাটা নিতে চান। তিনি কি ব্যাংক থেকে নিতে চান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিতে চান, নাকি ডাকঘর থেকে নিতে চান।

সঠিক বয়স নির্ধারণের জন্য একটি ডেটাবেইস তৈরি করতে হবে এবং এই ডেটাবেইসকে জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। এখন যে ৩৮ শতাংশ প্রবীণ বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে ১২ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের নিচে। অর্থাৎ তাঁদের বয়স সঠিকভাবে নির্ধারিত হয়নি। ডিজিটাল ডেটাবেইস তৈরি হলে এ সমস্যা দূর হবে।

আবুল হাসিব খান
আবুল হাসিব খান

আবুল হাসিব খান: বয়স্ক ভাতা প্রদানের সমস্যাগুলো দূর করার জন্য যাঁদের জন্য এই প্রকল্প, তাঁদের এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে। অর্থাৎ যে প্রবীণদের ভাতা দেওয়া হবে, তাঁদের সংগঠিত করতে হবে। তালিকা তৈরি থেকে শুরু করে ভাতা পরিশোধ পর্যন্ত সব কাজ প্রবীণদের সংগঠন তৈরি করে দিয়ে তাঁদের মাধ্যমে করা যেতে পারে।

প্রবীণদের যে টাকাটা দেওয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু এই সুবিধার আওতায় যদি প্রবীণদের সংগঠিত করে দেওয়া যায়, তাহলে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো আদায় করে নেবেন। এই অগ্রগতি টেকসই এবং তাঁরা নিজেরাই এর ব্যবস্থাপনা করেন এবং টিকিয়ে রাখেন।

প্রতিটি ইউনিয়নে একটি প্রবীণবিষয়ক স্থায়ী কমিটি করে দেন এবং তাঁদের সহায়তায় প্রবীণদের সংগঠিত করার ব্যবস্থা করেন, তাহলে তাঁরাই বয়স্ক ভাতাসহ আরও অনেক বিষয়ে সরকারকে সহায়তা করতে পারবেন।

মহসিন আলী: জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের ২০১৫ সালের জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে যে বয়স্ক ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে তালিকা তৈরিতে ৩৮ শতাংশ ভুল (মিস টার্গেটিং) হচ্ছে। এ বিষয়টি অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। হয়তো আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে, কিন্তু আছে।

ভাতাভোগকারী নির্বাচন প্রক্রিয়ার নীতিমালা আছে, মানদণ্ড ঠিক করে দেওয়া আছে—সবই আছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণেরও বিধি আছে। এই পর্যবেক্ষণ যেন সঠিকভাবে এবং গুরুত্বসহকারে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

মহসিন আলী
মহসিন আলী

মাসিক ৫০০ টাকা করে ভাতা যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা, এই দুটি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি রেখে আমাদের বয়স্ক ভাতার পরিমাণ যৌক্তিক হারে বাড়ানো উচিত।

রেজাউল করিম চৌধুরী:
রেজাউল করিম চৌধুরী:

রেজাউল করিম চৌধুরী: আমরা বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলো নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, বিশেষ করে দ্বীপগুলো বছরের প্রায় ছয় মাস জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকে। আর বর্তমানে আমাদের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে তেমন কোনো সমর্থ পুরুষ থাকেন না, থাকেন শুধু বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুরা। উপকূলীয় এলাকাগুলোর যে জনপ্রতিনিধিরা আছেন, তাঁরা এলাকায় থাকেন না, তাঁরা শুক্র ও শনিবার এসে অফিস করেন। উপকূলীয় এলাকার ব্যাংকগুলোও অনেক দূরে অবস্থিত।
এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমাদের ভাবতে হবে যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলো ভবিষ্যতে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তাই এই বয়স্ক ভাতাটা উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্য আরও বাড়ানো যায় কি না, সে বিষয়টি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। সরকারের বাজেটের ১২ থেকে ১৯ শতাংশ সামাজিক নিরাপত্তার জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। তার মধ্যে দরিদ্র বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ভাতা নিশ্চিত করা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই উদ্যোগকে আরও কার্যকর এবং অংশগ্রহণমূলক করার জন্য সরকার ও এনজিওগুলোর একসঙ্গে কাজ করা উচিত।

 রাবেয়া সুলতানা: আমরা ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীণদের জন্য সর্বজনীন ভাতার ব্যবস্থা করতে পারি কি না, সে বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। কারণ, যেহেতু আমাদের আয়ু বাড়ছে, সেহেতু ৭০ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যাটা কিন্তু একেবারে কম নয়।

রাবেয়া সুলতানা
রাবেয়া সুলতানা

আমাদের সমতল ভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রবীণেরা কিন্তু এই বয়স্ক ভাতা প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছেন। আবার আমাদের চা-বাগান এলাকাগুলোতে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরাও কিন্তু কোনো প্রকার বয়স্ক ভাতাই পাচ্ছেন না।

বয়স্ক ভাতা সুবিধা থেকে বঞ্চিত আরেকটি গোষ্ঠী হচ্ছে আমাদের যৌনকর্মীরা। বয়স্ক যৌনকর্মী যাঁরা রয়েছেন, যাঁরা বয়সের কারণে আর তাঁদের গ্রাহকদের সেবা দিয়ে উপার্জন করতে পারছেন না, তাঁরা কিন্তু আমাদের এই বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না।

আমাদের বর্তমান বয়স্ক ভাতা প্রকল্পগুলো অনেক বেশি গ্রামকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। ফলে শহর অঞ্চলে যে বয়স্ক মানুষগুলো ঝুঁকির মুখে আছেন, তাঁরা কিন্তু নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছেন।
গ্রামের অনেক প্রবীণ, বিশেষ করে বয়স্ক নারীর কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়নি। তাঁরা অসচেতনতার কারণে পরিচয়পত্র করেননি অথবা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের পরিচয়পত্র করাননি। ফলে ডেটাবেইস তৈরির সময় বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত।

 

মঞ্জুর হোসেন
মঞ্জুর হোসেন

মঞ্জুর হোসেন: আমরা বয়স্ক ভাতার চাহিদা অংশটির অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি; কিন্তু এই প্রকল্পের সরবরাহ অংশের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা উচিত বলে আমি মনে করি।

আমাদের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে লোকবলের সংকট রয়েছে। যার ফলে বয়স্ক এবং দরিদ্র ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির সময় তাঁরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হন।

এখানে বলা হচ্ছে আয়ের ভিত্তিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তালিকা তৈরি করার কথা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর এই তালিকা করার সক্ষমতা নেই। ফলে সম্পদের পরিমাণের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করাটাই সবচেয়ে উপযোগী বর্তমানে।

যেহেতু আমাদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম, সেহেতু কিছু ফাঁক এবং কিছু মিস টার্গেটিং রয়ে গেছে। আমি মনে করি না যে আমরা এখনই সর্বজনীন ভাতাব্যবস্থা চালু করার মতো অবস্থায় আসতে পেরেছি। আমরা ভাতাটাকে কয়েকটা ভাগে বিভক্ত করে দিতে পারি। যাঁরা সবচেয়ে বেশি দরিদ্র, তাঁদের হয়তো ১ হাজার টাকা, যাঁরা তার চেয়ে কম দরিদ্র, তাঁদের ৭০০ টাকা, যার কিছু করার সামান্য সক্ষমতা আছে, তাঁকে হয়তো ৫০০ টাকা করে দেওয়া যেতে পারে।

এম এম আকাশ
এম এম আকাশ

এম এম আকাশ: বয়স্ক ভাতা কারা পাবেন, সে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় একটি ম্যানুয়াল তৈরি করে দিতে পারে, যেখানে তারা তালিকা তৈরির ধাপগুলো উল্লেখ করে দিতে পারে। দুটি ধাপ এখানে গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো নির্বাচনের জায়গাটা কোথায়। স্বাভাবিকভাবেই এটি হবে ওয়ার্ডগুলো। আর আরেকটি হলো কোন সময়ে আপনি সভা ডাকবেন। এমন একটা সময় নির্ধারণ করতে হবে, যখন ওই ওয়ার্ডের সবাই উপস্থিত থাকতে পারবেন।

এ সভায় প্রথমেই আপনি জাতীয় পরিচয়পত্রের বয়সের ভিত্তিতে বাছাই করে নিতে পারেন। এরপর তাঁদের মধ্য থেকে ২৮ শতাংশকে ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত করতে পারেন। কারণ, আগেই আপনি ঠিক করেছেন যে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে ২৮ শতাংশ দরিদ্র। আর যদি উপজেলাভিত্তিক কোনো দারিদ্র্য হার থাকে, তাহলে আপনি সেই হার অনুযায়ী এই সংখ্যাটা ঠিক করতে পারেন।

তারপর তাঁদের বলতে পারেন এবার আপনারা ঠিক করে নেন যে কারা ভাতা পাবেন। তাঁরা আপনাকে একটা তালিকা দিলে আপনি পরের দিন সেই তালিকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে দিতে পারেন এবং দুদিন সময় দিতে পারেন কোনো ধরনের অভিযোগের জন্য।

এই অভিযোগ তাঁরা কার কাছে করবেন। তাঁরা এই অভিযোগ স্থানীয় সাংসদ ও জেলা প্রশাসকের কাছে করতে পারেন। তাঁরা দুজন মিলে সমন্বিতভাবে এই অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি করবেন।

শেষ পর্যন্ত কিন্তু আমাদের সর্বজনীন ভাতা প্রকল্পে যেতেই হবে, তা না হলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে সরকার একটি স্বেচ্ছাকৃত পেনশন পরিকল্পনার কথা ভাবতে পারে।

এখন থেকে যাঁরা যুবক, চাকরিজীবী বা ছাত্র আছেন, তাঁরা তাঁদের আয়ের একটা অংশ এই পেনশন ফান্ডে দিতে থাকবেন। যখন তাঁদের বয়স হবে, তখন সরকার এই টাকার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটা টাকা যোগ করে তাঁদের দিতে পারে। আমি মনে করি এটা শুরু করে দেওয়া তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়।

মো. আশফাকুল আমিন
মো. আশফাকুল আমিন

মো. আশফাকুল আমিন: আমাদের কৌশলপত্রে প্রবীণদের জন্য চারটি বিষয় সুপারিশ করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে বয়স্ক ভাতা, তবে এখানে বলা হয়েছে যে বয়স্ক ভাতা কার্যক্রমটি ৬০ বছর বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তিদের জন্য দেওয়া হবে। ৬৫ বা ৬২ বছর নয়, ৬০ বছর থেকেই ভাতা দেওয়া হবে। এটা কবে থেকে শুরু হবে, তা সরকার ঠিক করবে।

কৌশলপত্রে আরও বলা হয়েছে, বয়স যখন ৯০ বছর বা তার চেয়ে বেশি হবে, তখন তাঁদের জন্য আলাদা ভাতা দেওয়া হবে এবং সেটি ৩ হাজার টাকা হওয়া উচিত বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এবং সরকারি চাকরির যে পেনশন রয়েছে তা সরকার চালিয়ে যাবে।

আমাদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি জাতীয় সামাজিক বিমা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তারা এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি গবেষণা করেছে এবং একটি নীতি প্রণয়নের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই আমাদের একটি ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাকৃত পেনশন শুরু হতে যাচ্ছে। সরকার সময় ও সুযোগ বুঝে হয়তো একসময় সর্বজনীন ভাতার দিকে যাবে; কিন্তু প্রাথমিকভাবে এই চারটি কৌশলের মাধ্যমে সরকার বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছে।

গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির: ভাতা প্রদানের পুরো প্রক্রিয়াটিকে ডিজিটালাইজ করা শুরু করে দিয়েছি। ইতিমধ্যেই আমরা ৩০ হাজার ভাতাভোগকারীকে ডিজিটালি ভাতা পরিশোধ করেছি। আরও ১৮ হাজার ভাতাভোগীর তথ্য আমরা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) মাধ্যমে সংগ্রহ করছি।

ভাতা পরিশোধব্যবস্থাকে আমরা ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি এবং যাঁরা একেবারেই চলনশক্তিহীন, তাঁদের ভাতার টাকা পয়েন্ট অব সেলিং মেশিন নিয়ে গিয়ে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আপনারা অনেকেই বলেছেন ভাতার পরিমাণ বাড়াতে। প্রতি তিন মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা প্রতীকী একটি বিষয়। এই টাকা পেলে প্রবীণদের জন্য তাঁদের পরিবার ও সমাজে একটি ক্ষমতায়ন হয়, তাঁদের সামাজিক স্বীকৃতি তৈরি হয়।

গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির
গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁদের কোনো না কোনো বিষয়ে কাজ করার মতো সূক্ষ্মতা ও সক্ষমতা আছে। তাঁদের আমরা আমাদের যে আরবান কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার রয়েছে, সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। তাঁদের প্রস্তুতকৃত পণ্যের বিপণনের ব্যবস্থা করে দেব, তাঁরা শুধু উৎপাদন করবেন।

এভাবে তাঁদের একটি উৎপাদনমুখী সম্পদে পরিণত করতে চাই আমরা। ইতিমধ্যে ডেটাবেইসে ৩৫ লাখ মানুষের ডেটা সংযুক্ত হয়ে গেছে, আরও ১৫ লাখ ডেটা সংযুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের নতুন এমআইএসে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি পৃথক উইন্ডো আছে, যেখান থেকে দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

মো. হাবিবে মিল্লাত: ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হলো চাহিদা অনেক বেশি, কিন্তু সরবরাহ অনেক কম।

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই তাঁদের সঠিক বয়স জানেন না। ২০০৭-০৮ সালে আমাদের দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়েছে। এটিও কিন্তু শতভাগ ত্রুটিমুক্ত নয়। ফলে বয়স্ক ভাতা প্রদানের সময় বয়স নির্ধারণ করতে আমাদের একটু সমস্যায় পড়তেই হবে।

আমার মনে হয়, আগামী ১০ বছর পর আমাদের আর এ সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে না। কারণ, বর্তমানে সরকার বয়সসহ সব তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষণ করছে।

আজকের আলোচনায় আপনাদের কাছ থেকে যে পরামর্শ ও সুপারিশগুলো আমরা পেয়েছি, সেগুলো অবশ্যই আমরা আগামী স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা করব।

 শাহীন আনাম: আমরা সবাই বয়স্ক ভাতা কার্যক্রমটি যেন আরও ভালোভাবে ও কার্যকরভাবে চলে, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি এবং আজকের আলোচনায় সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে অংশগ্রহণ করেছেন।

আমরা আশা করব, এই আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলো নিয়ে মাননীয় সাংসদ এবং মহাপরিচালক তাঁদের পরবর্তী সভায় আলোচনা করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

 আব্দুল কাইয়ুম: সরকার ইতিমধ্যে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং সেগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।

বিভিন্ন জায়গায় কাজের মাধ্যমে যে মডেলগুলো তৈরি হয়েছে, সেখান থেকেও আশা করি নীতিনির্ধারকেরা অনেক কিছুই গ্রহণ করবেন।

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

যাঁরা অংশ নিলেন

মো. হাবিবে মিল্লাত           :  মাননীয় সাংসদ এবং সদস্য সমাজকল্যাণ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির    :     মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর

মো. আশফাকুল আমিন      :  উপসচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

শাহীন আনাম                  :  নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, কো–কনভেনর, এনএফএসপি

এম এম আকাশ               :  অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আবুল হাসিব খান             :  নির্বাহী পরিচালক, রিক, কো–কনভেনর, এনএফএসপি

মঞ্জুর হোসেন                   :  সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, বিআইডিএস

মহসিন আলী                   : নির্বাহী পরিচালক, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, সদস্য, এনএফএসপি

সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী     :  টিম লিডার, এসপিএফএম এসপি প্রকল্প,ম্যাক্সওয়েল স্ট্যাম্প

শরীফা বেগম                  :  সহসভাপতি, ফোরাম ফর দ্য রাইটস অব এল্ডারলি পিপল

রাবেয়া সুলতানা               : অন্তর্বর্তী দেশীয় পরিচালক, হেল্প এইজ ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, সদস্য এনএফএসপি  

মো. আলাউদ্দিন খান         :  নির্বাহী পরিচালক, এনডিপি, সদস্য এনএফএসপি

রেজাউল করিম চৌধুরী      :  নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট ট্রাস্ট

সোমা দত্ত                       : ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম               : সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো