পুতিন হাঁটার সময় তার ডান হাতটা পুরো স্থির থাকে কিংবা খুব সামান্যই নড়ে। এর ব্যাখ্যায় সবচেয়ে গৃহীত তত্ত্ব হচ্ছে, তাঁর কেজিবির জীবন। কেজিবির একটি ট্রেনিং ম্যানুয়ালে দেখা গেছে, যে মানুষটি যে হাতে অস্ত্র চালায় হাঁটার সময় সেই হাতটি কম নাড়াবেন, যাতে প্রয়োজনে বুকের কাছে রাখা (শোল্ডার হোলস্টার) অস্ত্রটি খুব দ্রুত বের করে আনা যায়। শুধু তা-ই নয়, প্রতিপক্ষকে প্রতারিত করার মতো ভীষণ শীতল দৃষ্টিতে তাকানো পুতিনকে দেখলে এখনো একজন কেজিবি এজেন্টই মনে হয়, যিনি স্বার্থসিদ্ধির জন্য করতে পারেন যেকোনো কিছু। জানি, গোয়েন্দা এজেন্ট ছিলেন, তাই তিনি যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন, এটা বলা ভীষণই সরলীকরণ। তাই দেখা যাক, ক্ষমতা পেতে এবং সেটা ধরে রাখতে তিনি ঠিক কী কী করেছেন।
বেকার গোয়েন্দা এজেন্ট থেকে অতি ক্ষমতাশালী প্রেসিডেন্ট
কারও পারিবারিক উত্তরসূরি হিসেবে রাজনীতিতে না এসেও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বেকার হয়ে পড়া কেজিবি এজেন্টের মাত্র ১০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে রাশিয়ার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়া কল্পকাহিনিকেও হার মানায়।
দেশে ফিরে আসার পর পুতিন সেন্ট পিটার্সবার্গে যান এবং কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে সেখানে ডেপুটি মেয়র হন। সেন্ট পিটার্সবার্গে গিয়ে পুতিন সেখানকার অতি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন এবং তাদের রক্ষাকারী হয়ে ওঠেন। এরপর পুতিনের ডাক পড়ে ক্রেমলিনে। এখানেও কিছু ধাপ পেরিয়ে তিনি অতিদ্রুতই রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান। এমনকি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন পুতিনকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে পছন্দ করার কথা জানান।
স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘদিন ইয়েলৎসিনের ক্ষমতা কাঠামোর কাছাকাছি থাকা ক্ষমতাশালী লোকজন এতে চরম নাখোশ হয়। ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ পুতিনকে ঠেকাতে অনেকেই এককাট্টা হয়ে ওঠেন।
এই পরিস্থিতিতে পুতিনের ‘ত্রাণকর্তা’ হয়ে আসে মস্কোসহ আরও কয়েকটি শহরের বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টে বোমা হামলা, যাতে অন্তত ৩০০ লোক মারা যান আর আহত হন কমপক্ষে ১০০০ জন। অসুস্থ এবং পাঁড় মাতাল ইয়েলৎসিনকে ছাপিয়ে কার্যত দেশ চালাচ্ছিলেন পুতিন। তিনি মুহূর্তের মধ্যেই এই বোমা হামলার জন্য চেচনিয়ার ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের’ দায়ী করেন এবং চেচনিয়া আক্রমণ করেন। সেই আক্রমণে অন্তত ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। সেই আক্রমণ রুশদের মধ্যে তীব্র জাতীয়তাবোধ তৈরি করে এবং পুতিনের প্রতি জনগণের সমর্থন রাতারাতি বেড়ে যায়। কিছুদিন পরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হন।
পৃথিবীর আরও অনেক দেশেই ভ্লাদিমির পুতিনরা আছেন। সেই পুতিনরা দেশের বাইরে কিছু করবেন কি না, কিংবা দেশের মধ্যেও কতটা করবেন—সেটা নির্ভর করে তার দেশের আকার, অর্থনৈতিক-সামরিক সক্ষমতা এবং ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের ওপর। এই পার্থক্যটুকু বাদ দিলে পৃথিবীর সব দেশের ভ্লাদিমির পুতিনরা ক্ষমতায় আসেন এবং সেটা টিকিয়ে রাখেন মোটামুটি একই পথে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, শক্তিশালী তত্ত্ব আছে— পুতিনের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য এই বোমা হামলা আসলে চালিয়েছিল রাশিয়ার প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস। এই তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে এটা—রাশিয়ায় এই বোমা হামলা নিয়ে স্বাধীন তদন্ত করতে গিয়ে খুন হয়েছেন অন্তত পাঁচজন তদন্তকারী। গ্রেপ্তার হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
ক্ষমতায় এসে সেটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভ্লাদিমির পুতিন যা করেছেন, সেটা তিনজন আলোচিত ব্যক্তির সঙ্গে ঘটা ঘটনা জানলে আমাদের কাছে একেবারে স্পষ্ট হয়ে যাবে।
মিখাইল খোদরকভস্কি
রাশিয়া তার জন্মের সময় থেকে একধরনের গোষ্ঠীতন্ত্রের (অলিগার্কি) মধ্যে ঢুকে পড়তে বাধ্য হয়। সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পতনের পর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প, খনি, যোগাযোগের মতো প্রায় ৪৫ হাজার প্রতিষ্ঠান কিছু ব্যক্তির মালিকানায় চলে যায় অত্যন্ত কম মূল্যে। এমন মানুষের একজন মিখাইল খোদরকভস্কি।
ব্যক্তিগতভাবে উদারনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী খোদরকভস্কি তাঁর বিরাট সম্পদের একটা বড় অংশ জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করতেন। ২০০১ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘ওপেন রাশিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি নাগরিকদের মধ্যে উদার গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা—এসব নিয়ে সচেতনতা তৈরির কাজ করতে থাকেন। খোদরকভস্কি বিশ্বাস করতেন, তথাকথিত ‘নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র’ আদতে কোনো গণতন্ত্রই নয়।
বলাবাহুল্য, খোদরকভস্কি যা যা করেছেন, তার প্রায় সবকিছুই সরাসরি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের স্বার্থের চরম পরিপন্থী। স্বাভাবিকভাবেই পুতিনের মনে অসন্তোষের বারুদ জমা হতে থাকে। আর সেটাতে স্ফুলিঙ্গ হয়ে ওঠে একটি ঘটনা। ২০০৩ সালে ক্রেমলিনে আয়োজিত একটি সভায় তিনি পুতিনকে টিভি ক্যামেরার সামনে দুর্নীতি নিয়ে দায়ী করেন। তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রশ্রয়ে প্রশাসনের উচ্চ থেকে নিম্ন—সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিশাল পরিমাণের ঘুষ নিচ্ছেন।
এরপর তেল খনিসহ খোদরকভস্কির সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দখল নিয়ে সেগুলো নিজের সমর্থক অলিগার্কদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। এতেই শেষ নয়, মামলা দিয়ে (বলাবাহুল্য মিথ্যা অভিযোগে) তাঁকে জেলে নেওয়া হয়। দীর্ঘ নয় বছর জেল খেটে নানা আন্তর্জাতিক চাপে তিনি মুক্ত হয়ে এখন নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।
সার্গেই ম্যাগনিটস্কি
সম্প্রতি র্যাব এবং এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্টের অধীন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারির প্রেক্ষাপটে আমরা অনেকেই ম্যাগনিটস্কির কথা জেনেছি। ২০০৮ সালে রাশিয়ার আইনজীবী সার্গেই ম্যাগনিটস্কি রাশিয়ান সরকারের উচ্চপর্যায়ের যোগসাজশে ২৩ কোটি ডলার বা প্রায় ২০০০ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করেন। বিষয়টি জেনে গিয়ে পুলিশ ম্যাগনিটস্কিকে ধরে নিয়ে যায়। কারাগারে ভীষণ নির্যাতনের শিকার হন তিনি। নির্যাতনে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসা পাননি, কারাগারেই মারা যান।
অনুমিতভাবেই রাশিয়ান সরকার কোনো দায় স্বীকার করেনি এ ঘটনার। তবে আমাদের অবাক করবে এ তথ্য-রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার কমিশন (ক্রেমলিনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল) তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে বলে, ‘জীবনের শেষ মুহূর্তে ম্যাগনিটস্কিকে চিকিৎসাসেবা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হয়েছে। সঙ্গে এটা বলার মতো যথেষ্ট যৌক্তিক ভিত্তি আছে যে ম্যাগনিটস্কির মৃত্যুর কারণ প্রহার এবং নির্যাতন।’
এরপর তৎকালীন মার্কিন সরকার রাশিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য ম্যাগনিটস্কির নামে আইন প্রণয়ন করে এবং প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্ট নামকরণ করে আইনটির অধীনে দুর্নীতি এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিশ্বব্যাপী নানা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
অ্যালেক্সেই নাভালনি
রাশিয়ার মূলধারার সব সংবাদমাধ্যম শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের যুগে এই নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই ফসকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোর ব্যবহার করে অনেক মানুষ তাদের দর্শক এবং শ্রোতার কাছে পৌঁছে যেতে পারছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে কোটি কোটি রাশিয়ানের কাছে পুতিনের অলিগার্কদের দুর্নীতি উন্মোচন করতে শুরু করেন নাভালনি। এই তালিকায় ছিলেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভও। এর সঙ্গে জনগণের জীবনের জন্য অতি জরুরি স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অতি সামান্য রাষ্ট্রীয় ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনগণকে তাদের অধিকার সচেতন করেন। জনগণের কাছে উদারনৈতিক রাজনৈতিক ধারণা প্রচার করেন।
নাভালনির কার্যক্রম শুধু অনলাইনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ২০১১ সালে রাশিয়ার সংসদ নির্বাচনে চরম কারচুপির অভিযোগে খুব বড় প্রতিবাদ হয় রাজপথে, যার প্রধান সংগঠক এবং নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে নাভালনিও ছিলেন। ২০১৩ সালে নাভালনি মস্কোর মেয়র নির্বাচনে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন। তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ বছরের শাস্তি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে আবার হাজারো মানুষ মস্কোর রাস্তায় নেমে আসে। তখন সরকার তাঁকে মুক্তি দেয় এবং পুতিন নিয়ন্ত্রিত মূলধারার সংবাদমাধ্যমের চরম অসহযোগিতা সত্ত্বেও মস্কোর মেয়র নির্বাচনে নাভালনি দ্বিতীয় হন।
এরপরও তিনি তাঁর আগের কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন, দুর্নীতির অনুসন্ধান ও প্রকাশ হতে থাকে নিয়মিত। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাভালনি নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু নাভালনির আগের মামলাটি দেখিয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। পুতিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কিংবা পার্লামেন্ট নির্বাচনে তাঁর পছন্দের বাইরের কোনো মানুষের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এখন কার্যত অসম্ভব।
এই সময় থেকেই পুতিনের পর নাভালনি হয়ে ওঠেন রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য পতনের পর থেকে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ার প্রেক্ষাপটে পুতিনের জনপ্রিয়তা কমছিল দ্রুতগতিতে। তাই এবার শুরু হয় নাভালনির ওপরে শারীরিক আক্রমণ। একবার জনসংযোগের সময় তার মুখে অ্যাসিডজাতীয় পদার্থ ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তার ডান চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি হয়েছিল। স্পেনে গিয়ে অস্ত্রোপচার করে সেই চোখ রক্ষা হয় তার। এতেও দমানো যায়নি তাঁকে, ভয় না পেয়ে ফিরে আসেন রাশিয়ায়।
এরপরের যে ভয়ংকর ঘটনা, সেটা সারা বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করার কারণে আমরা অনেকেই জানি। নাভালনিকে সোভিয়েত আমলে কেজিবির ব্যবহৃত নার্ভ এজেন্ট নভিচক (ভয়ংকর বিষ) প্রয়োগ করা হয়। তিনি কোমায় চলে যান। তারপর তাঁ জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে চিকিৎসায় তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে ওঠেন। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরই তিনি অবিশ্বাস্যভাবে ঘোষণা করেন নিজ দেশে ফিরে যাবেন, যদিও তিনি নিশ্চিতভাবেই জানতেন দেশে ফিরলেই তিনি গ্রেপ্তার হবেন এবং আবারও তাঁকে হত্যাচেষ্টা হতেই পারে। দেশে ফিরে এসেই তিনি গ্রেপ্তার হন।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশটির (বাংলাদেশের তুলনায় ১১৫ গুণ বড়) একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী পুতিন। দেশটি জীবাশ্ম জ্বালানিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজে সমৃদ্ধ, তার চেয়ে জরুরি কথা তাঁর কমান্ডে আছে প্রচলিত কিংবা পারমাণবিক উভয় ক্ষেত্রেই এক ভয়ংকর ধ্বংস ক্ষমতা। রাশিয়ার পুতিন তাই করতে পারেন অনেক কিছু, নিজের দেশে কিংবা দেশের বাইরে। পৃথিবীর আরও অনেক দেশেই ভ্লাদিমির পুতিনরা আছেন। সেই পুতিনরা দেশের বাইরে কিছু করবেন কি না, কিংবা দেশের মধ্যেও কতটা করবেন—সেটা নির্ভর করে তার দেশের আকার, অর্থনৈতিক-সামরিক সক্ষমতা এবং ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের ওপর। এই পার্থক্যটুকু বাদ দিলে পৃথিবীর সব দেশের ভ্লাদিমির পুতিনরা ক্ষমতায় আসেন এবং সেটা টিকিয়ে রাখেন মোটামুটি একই পথে।
নাভালনি পুতিনের বিরুদ্ধে জিতে জনগণের প্রতিনিধিত্বের সরকার তৈরি করতে পারবেন কি না জানি না, সেই সম্ভাবনা খুব কম। কিন্তু পুতিনরা যেসব রাষ্ট্র পরিচালনা করে তার নাগরিক, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের শিক্ষণীয় হচ্ছে—একটা স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নাভালনিদের মতো মানুষই দরকার।
ডা. জাহেদ উর রহমান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষক