বাংলাদেশে পড়াশোনা করা এই ফিলিস্তিনির পাশে দাঁড়াবেন কি কেউ

আজ্জম ফাতিহ আলমাশহারাওয়িছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

আজ্জম ফাতিহ আলমাশহারাওয়ি নামের এক ফিলিস্তিনি তরুণ ২০১১ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে। এরপর তিনি তাঁর ‘দেশে’ ফিরে যান।

বিশ্বের বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার গাজা উপত্যকায় তিনি যথাসম্ভব স্বাভাবিক জীবন নির্মাণের চেষ্টা করেন। চাকরি করছিলেন, বাসস্থান ছিল, বিয়ে করেছেন, তিনটি সন্তান আছে তাঁর। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এখন তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত আল শিফা হাসপাতালের কাছে আলজাওয়াইদা নামক স্থানে খোলা আকাশের নিচে এক তাঁবুতে অবস্থান করছেন।

তাঁর অবস্থা কেমন জানতে চাইলে আজ্জম ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশি বন্ধুকে জানিয়েছেন, ‘আমরা এখনো নিশ্বাস নিচ্ছি। তবে বাচ্চাদের অবস্থা অতটা ভালো নয়—ক্ষুধার্ত, আর অপুষ্টিতে ভুগছে।’ তিনি আকুল আবেদন করেছেন, রাফা সীমান্ত দিয়ে তাঁর পরিবারকে কোনোভাবে মিসরে পার করে দেওয়া যায় কি না। গত ২৪ ঘণ্টায় তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।

আরও পড়ুন
প্রশ্ন হতে পারে, আজ্জম ও তাঁর পরিবার তো আলাদা কেউ নন, এমন লাখো পরিবার আছে গাজায়, যারা একই পরিস্থিতির সম্মুখীন। ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণে, তার মধ্যে অন্তত ১২ হাজার ৩০০টি শিশু। যারা জীবিত আছে, তাদের সবাইকে কি এরূপ সাহায্য করা সম্ভব? সেটা সম্ভব শুধু সারা বিশ্ব এক হলে। কিন্তু আজ্জম যে সাহায্য চেয়েছেন, তাঁর বাংলাদেশি বন্ধুদের কাছে, আকুতি জানিয়েছেন তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা ছিল গাজার সব ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে মিসরের সিনাই উপদ্বীপে ঠেলে দেওয়া। মিসর এতে রাজি না হওয়ায় এ পরিকল্পনা সফল হয়নি। তবে রাফা ক্রসিং দিয়ে কিছু কিছু ফিলিস্তিনি সিনাই তথা মিসরে পাড়ি জমাতে সফল হয়েছে।

এখন যে পদ্ধতি চালু আছে, তা হচ্ছে ভিসা নিয়ে মিসরে ঢোকা। রাফা ক্রসিংয়ের কাছে হালা নামক স্থানে একটা ইমিগ্রেশন পোস্ট আছে, যেখানে ভিসার দরখাস্ত করা যায়।

আজ্জম ফাতিহ ২০১১ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

কাজটি বেশ ব্যয়সাপেক্ষ, আর আজ্জমের কাছে কোনো অর্থ নেই। তাঁর বন্ধুরা উদ্যোগ নিয়েছেন এই অর্থের সংস্থান করতে।

প্রশ্ন হতে পারে, আজ্জম ও তাঁর পরিবার তো আলাদা কেউ নন, এমন লাখো পরিবার আছে গাজায়, যারা একই পরিস্থিতির সম্মুখীন। ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণে, তার মধ্যে অন্তত ১২ হাজার ৩০০টি শিশু। যারা জীবিত আছে, তাদের সবাইকে কি এরূপ সাহায্য করা সম্ভব? সেটা সম্ভব শুধু সারা বিশ্ব এক হলে।

কিন্তু আজ্জম যে সাহায্য চেয়েছেন, তাঁর বাংলাদেশি বন্ধুদের কাছে, আকুতি জানিয়েছেন তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার।

কেউ আছেন কি ঢাকা, কায়রো, ওয়াশিংটন বা তেল আবিবে, যিনি বা যারা এই বাচ্চাগুলোকে মৃত্যুপুরী থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারেন, তারা যুদ্ধের পরিসংখ্যানে পরিণত হওয়ার আগে? আছেন কেউ?

আরও পড়ুন

আজ্জমের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র: Facebook profile:  https://www.facebook.com/abualeezmash, LinkedIn profile: https://www.linkedin.com/in/azzam-almashharawi-7828b3221/. ই-মেইল: [email protected]

  • মো. তৌহিদ হোসেন সাবেক পররাষ্ট্রসচিব