কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ যুগে তরুণসমাজকে বিজ্ঞানে চৌকস হতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির কলাকৌশল ব্যবহারে এগিয়ে থাকাই এখন তরুণদের সবচেয়ে বেশি দরকার। সর্বাধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়া, রোবোটিকস, ডিজিটাল জগৎ করায়ত্ত করা তরুণদের জন্য অপরিহার্য। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এখন জীবনের অঙ্গ।
সাত বছর আগে বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা প্রকাশের সময় প্রথম আলো এদিকেই মনোযোগ দিয়েছে। আমরা তরুণদের কাছে আহ্বান জানিয়েছি যেন সবাই সব সময় হাতের কাছে বিজ্ঞানচিন্তা ম্যাগাজিনটি রাখে। আধুনিক বিজ্ঞান জানতে-বুঝতে ও বিশ্বের অগ্রগতির সঙ্গে মিলেমিশে এগিয়ে যেতে এ ধরনের বিজ্ঞান ম্যাগাজিন আমাদের সাহায্য করে।
কেউ হয়তো বলবেন, শুধু বিজ্ঞান কেন; সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, ভূগোল—সবই তো দরকার। সেটা ঠিক। কিন্তু পাশাপাশি চাই বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাভাবনায় দক্ষতা অর্জন। তা না হলে কোনো কোনো সময় আমাদের হয়তো সমস্যায় পড়তে হবে। বিজ্ঞানচিন্তা ম্যাগাজিন চায় তরুণ বয়স থেকেই সবাই বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাভাবনায় অভ্যস্ত হয়ে উঠুক।
দেশের তরুণদের অনেক প্রতিভা। বিজ্ঞানচিন্তার প্রতিটি সংখ্যায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, রসায়নসহ সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়েও অনেক লেখা ছাপা হয়। সেই সঙ্গে থাকে ধাঁধা, কার্টুন, বিজ্ঞানকল্প–গল্পসহ অনেক কিছু।
এ ছাড়া বিজ্ঞান উৎসব আয়োজন করা হয় তরুণদের হাতে-কলমে বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দিতে। দেশে যখন তরুণদের জন্য গণিত, ফিজিকস ও জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়, বিজ্ঞানচিন্তা সেখানে সহযোগী হিসেবে কাজ করে। দেশের তরুণসমাজ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে। বিজয়ী হয়ে স্বর্ণ-রৌপ্যপদক জয় করে আনে। এখন বাংলাদেশের তরুণসমাজ বিশ্বের বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত।
স্কুল-কলেজের লেখাপড়া তো চলবেই। পাশাপাশি বিজ্ঞানচর্চাও অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলেই আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। বর্তমান বিশ্বে মহামারি, অভাব-অনটন, অর্থনৈতিক মন্দা, একই সঙ্গে বিশ্ব পরিসরে যুদ্ধের হুমকি দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশের তরুণসমাজ বুদ্ধি খাটিয়ে অনলাইন যোগাযোগব্যবস্থায় বিশ্ব পরিসরে গড়ে তুলছে নতুন ধরনের আধুনিক আন্তর্জাতিক ব্যবসা। দেশে হয়তো নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না, কিন্তু তরুণসমাজ নিজ উদ্যোগে ঘরে বসে মোবাইল-ল্যাপটপ ব্যবহার করে গড়ে তুলছে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য। নতুন ধরনের ডিজিটাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এটা আমাদের একটা বড় প্রাপ্তি।
এই নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হচ্ছে ডিজিটাল জগতের কল্যাণে। সেখানে বিজ্ঞানচিন্তার মতো ম্যাগাজিনও অবদান রাখছে। বিজ্ঞানচিন্তা ও এ ধরনের ম্যাগাজিন পড়ার চর্চা যত বাড়বে, দেশের মানুষও তত আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানে সৃষ্ট নতুন সুযোগগুলো নিজেদের কল্যাণে ব্যবহার করতে পারবে।
বিজ্ঞানচিন্তা শুধু বিজ্ঞানের একটি তাত্ত্বিক ম্যাগাজিন নয়, দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় তরুণদের যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টিরও একটি মূল্যবান উপাদান। নিয়মিত বিজ্ঞানচিন্তা ম্যাগাজিনটি পড়ুন। আরও স্মার্ট হোন। দেশের সামনের সারিতে স্থান করে নিন।
আব্দুল কাইয়ুম সম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা; সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো