সবাইকে নিয়ে, সবার সঙ্গে থাকতে আমি ভালোবাসি। ভয় পাই নিঃসঙ্গতা। এর চেয়েও বেশি ভয় পাই উপেক্ষা ও অবহেলাকে। আর সেই উপেক্ষা যদি কাছের মানুষ ও প্রাণপ্রিয় সন্তানের কাছ থেকে আসে, তাহলে মানুষের দুঃখ আরও বহুগুণ বেশি হয়ে বাজে। মানুষের বয়স যত বাড়ে, ততই মানুষ সব দিক থেকে হয়ে পড়ে পরনির্ভরশীল। আয় থাকে না বা কমে যায়, মাথার ওপর আশ্রয়ে ঘুণ ধরতে শুরু করে, অসুখ-বিসুখ ভর করে, প্রিয়জনেরা দূরে সরে যেতে থাকেন এবং একসময় পাশে থেকে হাত ধরে থাকা মানুষটিও হারিয়ে যায়।
তখন মানুষের একমাত্র ভরসা হতে পারে তার পরিবার। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই তা হয় না। বিকল্প হিসেবে আসে বৃদ্ধাশ্রমের নাম। যাঁরা নিজেদের বাড়িতে থাকেন, খানিকটা টাকাপয়সার মালিক, তাঁরা নার্স রেখে সেবা নিতে পারেন। কিন্তু নার্স, সহকারী ও ওষুধের খরচ জোগানোর জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। যাঁরা ভাগ্যবান, তাঁরা সন্তানের আশ্রয়ে থাকার ও সেবা পাওয়ার সুযোগ পান। আর যাঁরা অর্থ-বিত্তহীন হন, যাঁদের পাশে তাঁদের সন্তান থাকে না, তাঁদের আশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রমে।
আজকাল তরুণ প্রজন্মকে বলতে শুনি, মা-বাবার কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকে না কেন? তারা খুব কঠিন ভাষায় বলেই ফেলে, মা-বাবাকে জানতে হবে শেষ বয়সে এসে নিজেদের চলার জন্য টাকা লাগবে। তাঁদের চালানোর মতো টাকা সন্তানেরা এখন কীভাবে পাবে? কী ভীষণ স্বার্থপর মানসিকতা।
এ দেশের ‘বোকা মা-বাবারা’ তাঁদের জীবন বাজি রেখে সন্তানকে লালন-পালন করেন। যাঁর যতটুকু আছে, তার প্রায় সবটা দিয়েই সন্তানের চাহিদা পূরণ করেন। একদম দরিদ্র মা-বাবাও চান সন্তানের মুখে প্রতিদিন খাবার তুলে দিতে। অসৎ মা-বাবার কথা ভিন্ন, কিন্তু সৎ পথে যেসব মা-বাবা আয় করেন, তার প্রায় পুরোটাই ব্যয় করেন সংসার চালাতে, সন্তানের উচ্চশিক্ষায় ও নিজেদের কিছু শখ ও প্রয়োজন মেটাতে। সংসার চালাতে গিয়েও আমরা আমাদের মা-বাবার জন্য সামান্যই ব্যয় করেছি বা করি, এর চেয়ে বেশি ব্যয় করি সন্তানের পেছনে।
পরবর্তী সময় এসব সন্তান যখন বড় হয়, নিজেদের সংসার হয়, সন্তান হয়, তখন কেউ কেউ মা-বাবার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই কেন জানতে চায়। কেউ কেউ বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে চালিয়ে নিতে বলে, কেউ মা-বাবাকে ছেড়ে পালিয়ে বাঁচে, কেউ বনে-বাদাড়ে বা পথের পাশে রেখে আসে, আর কেউ কেউ বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসে মুঠোফোনের সিম পাল্টে ফেলে। আবার অনেকেই নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মা-বাবাকে নিয়ে থাকে। বয়স্ক মা-বাবার দায়িত্ব নেওয়া খুব বড় কাজ। আর আশঙ্কার কথা হলো, বড় কাজটা করতে যে সময় ও মানসিকতা লাগে, তা সন্তানদের মধ্যে ক্রমেই কমে আসছে।
আমরা আমাদের রাজপুত্র-রাজকন্যা ও চাঁদের কণাদের বড় করে তোলার জন্য মা-বাবারা যে টাকা ও সময় ব্যয় করি, এর সিকিভাগও সন্তানেরা আমাদের পেছনে করে না বা করবে না। যেমনটা আমরা করতে পারিনি বা করিনি আমাদের মা-বাবার জন্য। আমার বাবা বলতেন, স্নেহ নিম্নগামী। কিন্তু এখন সময়টা এমন হয়েছে যে নিজেদের কপর্দকশূন্য করে ¯স্নেহ দেখাতে গিয়ে, মা-বাবা নিজেরাই নিরাপত্তাহীন ও স্নেহ-ভালোবাসাহীন এক জীবনে প্রবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। থাকতে বাধ্য হচ্ছেন একা একা বা বৃদ্ধাশ্রমে।
আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রমে যাঁরা থাকেন, তাঁরা নিজের মনের ভেতরে ভীষণ একা জীবন কাটাতে বাধ্য হন। মোটামুটি মানের বৃদ্ধাশ্রমে থাকা একজন বৃদ্ধা আমাকে কয়েক বছর আগে বলেছিলেন, ‘জানো মা, আমার পাঁচ সন্তান। প্রথম প্রথম বাচ্চারা খোঁজ নিত। এখন দেখতেও আসে না, খোঁজও নেয় না। বেশির ভাগ সময়ই ফোন ধরে না। বড় ছেলে তো মনে হয় আমি ফোন দিতে পারি, এই ভয়ে সিমই বদলে ফেলেছে।’
এ দেশে বৃদ্ধাশ্রমের ধারণা খুব বেশি দিনের নয়। অধিকাংশই চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এবং কম সুযোগ-সুবিধা নিয়ে। দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত মা-বাবার জন্য এগুলোই আশ্রয়। অনেককে এখানে রাখার পর সন্তানেরা আর টাকা দেন না। যাঁরা ভাই-বোন মিলে টাকা দিতেন, তাঁরাও নিজেরা নিজেদের মধ্যে হিসাব করতে গিয়ে হাত তুলে নেন। কারও কারও কাছে মনে হয় মা-বাবাকে ঘাড় থেকে নামাতে পেরেছি, এখন আর খোঁজ নেওয়ার দরকার কি। নিজেদেরই সংসার চলে না, এর ওপর আবার মা-বাবার জন্য ব্যয়, অন্তত একটা খরচ তো কমল।
বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনার খরচ অনেক। এখানে বসবাসরত প্রবীণদের থাকা-খাওয়া, স্বাস্থ্যকর খাবার, চিকিৎসাব্যয়, হেল্পিং হ্যান্ড বা সহায়তাকারীর বেতন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, তেল-সাবান-সোডা, বিনোদন, বিছানা-বালিশ, আসবাবসহ অনেক কিছুর জন্য ব্যয় করতে হয়। পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে একটা বৃদ্ধাশ্রমে কাজে গিয়ে মনে হলো যেন একটা বিবর্ণ বস্তিগৃহ। টিমটিমে আলো, বাইরে কাঁচা উঠান, সেখানে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা। দেখে মনটা খুব খারাপ হলো, সঙ্গে আতঙ্কও হলো। ভাবলাম আমাদের মতো অনেকেরই ভবিষ্যৎ হয়তো এমনই কোথাও লেখা আছে, হয়তো আরও একটু ভালো কোনো বৃদ্ধাশ্রমে।
ভাবলাম আমাদের বাবা-মায়েরা আমাদের জন্য যা কিছু করেছেন বা যতটুকু করতে পেরেছেন, তাতে কি শেষ জীবনে এ রকম একটা পরিবেশে বসবাস তাঁদের প্রাপ্য? এতটা আতঙ্কিত হতাম না, যদি না জানতে পারতাম এখানে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁরা অধিকাংশই মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। কেউ পেশায় ছিলেন শিক্ষক, কেউ চিকিৎসক, কেউ সরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও কেউ কৃষক। মায়েদের মধ্যেও আছেন সাবেক চাকরিজীবী ও গৃহিণী। তাঁরা সবাই কাছেপিঠে করে সন্তানদের বড় করেছেন। তাঁদের কারও কারও সন্তান প্রতিষ্ঠিত। সন্তানদের কেউ কেউ মা-বাবাকে টাকাপয়সা দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে রেখেছেন, অনেকেই অনিয়মিত খরচা দেন, আবার কেউ কেউ পালিয়ে গেছেন।
ধনী পরিবারের বাবা-মায়েদের জন্যও কিছু ভালো বৃদ্ধাশ্রম আছে। সেখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি, কিন্তু একাকিত্বটা একই রকম। বৃদ্ধাশ্রমগুলোয় হয়তো গল্প করার মতো, মনের কষ্ট ভাগাভাগি করার মতো সমব্যথী আছেন, কিন্তু সন্তানের স্নেহ ও ভালোবাসা নেই। সন্তানের সময় নেই কথা বলার, খাইয়ে দেওয়ার, মায়ের কোলে মাথা রাখার, মা-বাবাকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার।
আমরা অদ্ভুত এক স্বার্থপরতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছি। যত দিন মা-বাবা কর্মক্ষম থাকেন, যত দিন তাঁদের কাছে অর্থকড়ি, সহায়-সম্পত্তি থাকে, যত দিন তাঁরা আমাদের কিছু দিতে পারেন, তত দিনই যেন ভালোবাসা চলমান। খুব অপ্রিয় হলেও সত্যি কথা।
কয়েক বছর আগে প্রথম আলোতে একটা ফিচারে এই একই ছবি উঠে এসেছিল। ফিচারটি পড়ে বহুদিন মনটা অসাড় হয়ে ছিল। লেখক লিখেছেন, বারান্দায় প্রথম পা ফেলতেই তিনি শিউরে উঠেছিলেন। পুরো শরীর যেন অসাড় হয়ে যাচ্ছিল বারবার। মনে হচ্ছিল, এ তিনি কোথায় এসেছেন? মলিন, অথচ আয়নার মতো চকচকে ত্বক, বিবর্ণ ধূসর চোখের এসব মানুষ মুখে একটা অভিমানে ভরা হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছেন। কারও মুখে কোনো কথা ছিল না। সেখানেই এ মায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তার। কান্নাভেজা চোখ নিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন সেই মা। কিন্তু মুখে কোনো কথা নেই।
কেয়ারটেকার জানিয়েছিলেন, তিনি কথা বলতে পারেন না। সাত বছর আগে তাঁর ছেলেরা এখানে রেখে গেছেন, আজও নিতে আসেননি। তাঁর সন্তানেরা কোথায় আছেন, আমরা তা-ও জানি না। সন্তানদের জন্য কাঁদতে কাঁদতে তার চোখ এখন অন্ধ হওয়ার পথে ছিল। আজ এত বছর সেই মায়ের কথা আবার মনে হলো। সন্তান হিসেবে নিজেকে নিষ্ঠুর মনে হচ্ছে, মা হিসেবে নিজেকে আরও অসহায় মনে হচ্ছে।
এসব বৃদ্ধাশ্রমে যাঁরা আছেন, সবাই যে সহায়-সম্বলহীন, তা কিন্তু নয়। কেউ নিজের সম্পত্তি সন্তানদের ভাগ করে দিয়েছেন, কেউ জমি বিক্রি করে সন্তানকে বিদেশে পাঠিয়েছেন, কেউ জায়গা-জমি বিক্রি করে ছেলেমেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, কেউবা সন্তানের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন। তাঁরা সবাই ভেবেছিলেন, সন্তান স্বাবলম্বী হলে বা সন্তানের পরিবার হলে সেখানে তাঁদের ঠাঁই হবে। তাঁরা ভালোবাসায় জড়াজড়ি করে থেকে যাবেন। কিন্তু জীবন তাঁদের সে স্বপ্ন পূরণ করেনি, তাঁরা ঠিকানাহীন হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় পেয়েছেন। অথচ এই সব একলা মানুষেরও কোনো ঠিকানা আছে বা ছিল এই পৃথিবীতে।
ভিটেমাটি ও সহায়-সম্বলহীন এবং সন্তানের ভালোবাসাহীন এসব মানুষের অনেকের জীবনের শেষ ইচ্ছা, মৃত্যুর পর তাঁর লাশটা যেন প্রিয় সন্তানদের কাছে তুলে দেওয়া হয়। তবে কোথায় পাওয়া যাবে সন্তানদের ঠিকানা? যদি পাওয়াও যায়, সন্তানেরা আসে না। এমনকি মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরও আসে না, যদি শেষকৃত্য করতে টাকা খরচ হয়।
আমরা যেভাবে দেখছি বা ভাবছি, বৃদ্ধাশ্রম বা ওল্ডহোম সে রকম খারাপ কোনো ধারণা নয়। উন্নত বিশ্বে এটা জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র। বয়স হয়ে গেলে বৃদ্ধাশ্রমে বা অ্যাসিস্টেড লিভিং ফ্যাসিলিটিতে যাওয়া খুব সাধারণ একটি ব্যাপার। বিশেষ করে কেউ যখন অসহায় হন, কাজ করার ক্ষমতা হারান, সন্তানের কাছ থেকে দূরে থাকেন। সেখানে রাষ্ট্র তাঁদের দেখভালের দায়িত্ব নেয়, নেয় চ্যারিটি হোম ও করপোরেটগুলো তাদের সিএসআর ফান্ড থেকে। সেই সব দেশে বৃদ্ধাশ্রমের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে ওঠে খুব পেশাদারিভাবে, সাধারণের আধুনিক সুবিধাদিসহ। বয়স বেড়ে গেলে মানুষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বৃদ্ধাশ্রমে নিজের ইচ্ছাতেই যান। পরিবারের অন্য কারও ওপর নির্ভরশীল হতে চান না।
সেই সব দেশে সন্তান ও মা-বাবার সম্পর্কটা একটা আত্মকেন্দ্রিক সামাজিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। সাধারণত সন্তানের দায়দায়িত্ব ১৮ বছর পর্যন্ত মা-বাবা বহন করেন। এমনকি বয়স হয়ে গেলে নিজেকে শূন্য করে সব সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়ারও রেওয়াজ নেই।
রাষ্ট্র পেনশন দেয়, চিকিৎসাসুবিধা দেয়, থাকার মতো জায়গা দেয়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেখাশোনা করার জন্য সহযোগী দেয়। ফলে সেখানকার বৃদ্ধ বা প্রবীণেরা কারও ওপর নির্ভরশীল না হয়েও বাঁচতে পারেন। যেহেতু বেশ কম বয়স থেকেই সন্তানেরা মা-বাবার বা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে এবং নিজেই নিজের দায়িত্ব পালন করতে শেখে, তাই মা-বাবার প্রতি তাদের বন্ধন ও দায়িত্ববোধ এতটা শক্ত থাকে না।
নির্দিষ্ট দিনে বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবেরা আসেন দেখা করতে। সঙ্গে করে নিয়ে আসেন পছন্দের খাবার বা অন্য কোনো উপহার। মাঝেমধ্যে এখান থেকে বেড়াতে নিয়ে যান, পরিবারের কাছে নিয়ে যান। এভাবেই অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন সেখানকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। এ জন্য তাঁরা নিজেদের বিচ্ছিন্ন ও অপাঙ্ক্তেয় মনে করেন না।
আমাদের সমাজ ২৫ থেকে ৩০ বছর আগেও এমনটা ছিল না। সেখানে ছিল যৌথ পরিবার। মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-চাচি, ফুফু-খালা, চাচাতো-ফুপাতো ভাইবোন সবাই একসঙ্গে থাকতেন। যার ফলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা, ভালোবাসা, ঐক্য ও শেয়ার করার মানসিকতা সৃষ্টি হতো। আমৃত্যু মা-বাবা ছিল সেই সংসারের কান্ডারি।
এখন জীবনযাপনের ধরন বদলেছে। আমরা একক পরিবারের দিকে ঝুঁকেছি। শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও একক পরিবার জায়গা করে নিয়েছে। আমরা এখন পশ্চিমা বিশ্ব ও বাংলাদেশের গ্রামীণ মানসিকতার মধ্যখানে পড়ে আছি। আমরা পারছি না যথাযথভাবে বৃদ্ধ মা-বাবার যত্ন নিতে, তাঁদের সময় দিতে, তাঁদের শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক সহায়তা দিতে। অন্যদিকে আমাদের সমাজে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোকে সন্তানের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা বলে মনে করা হয়।
দিন বদলেছে, আবেগ কমেছে, আধুনিকতা ও ঝামেলা বেড়েছে। কাজেই সেভাবেই আমাদের মানসিকতা ও সমাজ-কাঠামোর পরিবর্তন করতে হবে। বৃদ্ধাশ্রম ধারণাটিকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মনে করে সরকার, এনজিও, হাসপাতাল ও করপোরেটগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, যেন এগুলোর মান ভালো করা যায়। অনুপযুক্ত অবকাঠামো, নার্স, পরিচর্যাকারীসহ প্রশিক্ষিত কর্মীদের ঘাটতি, নিম্নমানের খাদ্য, অপর্যাপ্ত শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদনমূলক ও সামাজিক কার্যক্রমের ঘাটতি দূর করে বৃদ্ধাশ্রমগুলোকেই উন্নত করার উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ, আমরা যতই অসহায় বোধ করি না কেন, দিনে দিনে এর প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।
শাহানা হুদা যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক