একজন তরুণ কেন উদ্যোক্তা হবে

বিবিএ পড়ার সময় ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন’ শিরোনামের কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, শিক্ষাজীবন শেষে তুমি কি একজন উদ্যোক্তা হতে চাও? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

আমি কেন উদ্যোক্তা হতে চাই না, তা ব্যাখ্যা করতে ১৭টি যুক্তি দেখিয়েছিলাম। তার মধ্যে একটি ছিল, পড়ালেখা শেষে উদ্যোক্তা হলে পছন্দের মানুষটিকে বিয়েও করতে পারব না। কারণ, হবু জামাই পরিচয় দেওয়ার মতো একটা পেশায় না থাকলে কন্যাপক্ষ সমাজে মুখ দেখাবে কেমন করে?

এটা প্রায় ২৫ বছর আগের কথা। বাস্তবতা খুব একটা বদলেছে তা বলা যাবে না। বরং তা আরও সংকীর্ণ হয়ে বিসিএস বা সরকারি চাকরিতে ঠেকেছে। এর চেয়ে কম হলে পিতা-মাতা তো দূরের কথা, অধিকাংশ কন্যা (নিজেও) দ্বিধায় পড়ে যায়।

ফলে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার চেয়ে হার্ভার্ডে অ্যাডমিশন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকলেও আজকের তরুণেরা প্রথম পথই বেছে নেয়। কারণ, তাদের এই সমাজ ও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে চলতে হয়। এমনকি মা–বাবা শুরুর দিকে সন্তানদের ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানাতে মরিয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁদের সরকারি চাকরিজীবী হিসেবেই দেখতে চান। আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত চাকরিতে প্রবেশের আকাঙ্ক্ষা কতটা তীব্র, তা কোটা সংস্কার আন্দোলনে স্পষ্ট হয়।

এর আগে ২০১৮ সালের আন্দোলনের ফল সাময়িক অনুকূলে গেলেও পরবর্তী সময়ে তারা নিজেদের ‘প্রতারিত’ ভাবতে শুরু করে। হয়তো সে কারণেই ২০২৪ সালে এসে তারা চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ‘জাস্টিস’ পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন সফল হয় এবং নতুন সরকার গঠনে তাদের মতামত প্রাধান্য পায়।

তবে মজার ব্যাপার হলো চাকরির আন্দোলনের ফসল হিসেবে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তরুণদের দৃষ্টি চাকরি থেকে অন্যদিকে ঘোরাতে বললেন!

চাকরি পাওয়া যে লেখাপড়ার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়, সেটাও তিনি ব্যাখ্যা করলেন। শিক্ষিত তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানালেন। এ ক্ষেত্রে যে প্রশ্নটি খুবই সংগত, তা হলো, কেন একজন তরুণ উদ্যোক্তা হবে?

আমাদের দেশে ব্যবসার পরিবেশের কি অনুকূল? বিগত দিনগুলোতে সরকারি দলের আশীর্বাদপুষ্ট না হয়ে স্বাধীনভাবে কোনো ব্যবসায় উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা কি সম্ভব ছিল? ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কি তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়ক ভূমিকায় ছিল?

তারা ভুয়া, অখ্যাত এমনকি বেনামি প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিলেও একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে কি হাজারো ভোগান্তির মধ্যে ফেলত না? স্থানীয় প্রশাসন, চাঁদাবাজ-সন্তানদের দৌরাত্ম্য কি তাদের টিকে থাকার মতো অবস্থা রেখেছিল?

সরকারি অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা উদ্যোক্তা উন্নয়নে কাজ করার জন্য নিয়মিত বাজেট পায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীতে ভরা, কত শত প্রকল্প হয়। কিন্তু সত্যিকার কাজের কাজ কিছু হয়েছে?

সৃজনশীল একটা আইডিয়া নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো জায়গা কি ছিল, যারা সন্তুষ্ট হয়ে সেখানে বিনিয়োগ করবে? বিদেশে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে প্রাপ্য অর্থ দেশে আনার অনুকূল পরিবেশ কি তৈরি করা হয়েছিল? এক ‘পেপাল’ আনার জন্য আমাদের লাখ লাখ ফ্রিল্যান্সার বছরের পর বছর দাবি জানাচ্ছেন। কেউ কি তাতে কান দিয়েছে?

উদ্যোক্তাদের জন্য অতি আবশ্যকীয় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ কি নিশ্চিত করা হয়? অন্য সাপোর্ট সার্ভিসগুলো কি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেলে? সম্ভাবনাময় প্রকল্পে বিদেশি (বা প্রবাসী) ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে চাইলে তা কি সহজে সম্পাদন করা যায়?

আপনারা জানেন, এর কোনোটির জবাব ইতিবাচক নয়। তাহলে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় অনুরোধ করলেই শতসহস্র তরুণ নিজেদের ক্যারিয়ার তথা ভবিষ্যৎ বিপন্ন করে উদ্যোক্তা হতে যাবে কেন?

বিগত দিনগুলোতে যারা শত প্রতিকূলতা মাথায় নিয়ে একটা কিছু শুরু করেছিল, তাদের অভিজ্ঞতা কি সুখকর? যাদের পরিবারের বিপুল অর্থবিত্ত, রাজনৈতিক প্রভাব বা অন্য কোনো কানেকশন ছিল, তারা ব্যতীত কতজন দীর্ঘ মেয়াদে টিকে আছে?

অধিকাংশই পারেনি। কারণ, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি আর লুটেপুটে খাওয়ার সিস্টেমে মেধাবী, সৎ ও আন্তরিকভাবে চেষ্টাকারীদের কোনো গুরুত্ব নেই। তাদের বহু ক্ষেত্রে ‘বোকা’ ভাবা হয়।

বিপুল জনগোষ্ঠীর এই দেশে সবার জন্য সরকারি চাকরি বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে কর্মসৃষ্টি সম্ভব নয়। তার পরও সিস্টেমটা এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যেন সবাই সোনার হরিণরূপী চাকরির পেছনে ছুটতে থাকে। অতি সামান্য অংশ সফল হয়।

একটা বড় অংশ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় সীমাহীন যন্ত্রণা সয়ে কোনোমতে টিকে থাকে। বাকিরা দেশ ছেড়ে পালাতে সচেষ্ট হয়। স্বল্পসংখ্যক স্টুডেন্ট ভিসায় যায়। অবশিষ্টরা মরুভূমি-সাগর-জঙ্গল পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো এক দেশে পাড়ি জমায়।

তারা নিজেরাও জানে বিদেশে যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, তার চার ভাগের এক ভাগ দেশে করলেও অনেক ভালো করা সম্ভব।

কিন্তু চারপাশের পরিবেশটা এতটাই অসহনীয় করে তোলা হয় যে তারা নিজ দেশে কিছু করার কথা ভাবতেই পারে না।

একটা ব্যবসায় উদ্যোগ সফল হতে বহু বছর লাগে। তত দিনে নানা ঝামেলায় টিকে থাকার আত্মবিশ্বাস পায় না। ফলে উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তাটা মনে স্থান পায় না। বহু ক্ষেত্রে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে এমএ পাস প্রার্থী সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাইটগার্ড হতে চায়!

এমন অর্থহীন উচ্চশিক্ষা ও বেকার তৈরিতে রাষ্ট্র যুগের পর যুগ বিনিয়োগ করে আসছে। কারও মাথাব্যথা হয় না। সে ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বানটি ব্যতিক্রম। শুনতে চিত্তাকর্ষক হলেও বাস্তবতা অত্যন্ত কঠিন।

তাই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা তরুণদের সত্যিই উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাইলে সর্বপ্রথম ব্যবসায়িক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে হবে। একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ নিতে গেলে হয়রানির শিকার হবেন না, অনুমোদন বা লাইসেন্স পেতে ভোগান্তিতে পড়বেন না, চাঁদাবাজদের হুমকি আসবে না—এ বিষয়গুলো অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট অফিসে হয়রানি, ঘুষ বা স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে দোষী ব্যক্তিদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তাদের গড়ে তুলতে রাষ্ট্র অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহী হতে হবে।

কয়েক বছর ধরে আমরা যেকোনো দুর্নীতি বা কারসাজিতে হাজার কোটি টাকার গল্প শুনছি। অথচ রাষ্ট্র সৎভাবে বছরে মাত্র পাঁচ শ কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করলেও মাত্র ১০ বছরে সমগ্র দেশে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়া সম্ভব।

সেটা সত্যিকারের টেকসই উন্নয়নও নিশ্চিত করবে। নানাভাবে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। তবে বোঝার সুবিধার্থে একটা উদ্যোগ কল্পনা করি:

আমাদের দেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট বের হয়। পাবলিক সার্ভিস কমিশন তাদের হাফ পার্সেন্টকে চাকরির সুপারিশ করে। সাড়ে নিরানব্বই পার্সেন্টের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিকল্প নেই বললেই চলে। সে ক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি ‘উদ্যোক্তা কমিশন’ গঠন করা জরুরি।

সেই কমিশন বছরের নির্দিষ্ট সময়ে গ্র্যাজুয়েটদের কাছ থেকে ‘বিজনেস আইডিয়া’ আহ্বান করবে।

নিজ এলাকার বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে তারা প্রকল্প–সম্ভাবনা জমা দেবে। সে ক্ষেত্রে তাদের বেশ কিছু ক্রাইটেরিয়া আগেই বলে দেওয়া হবে।

যেমন তাদের উদ্যোগ পরিবেশবান্ধব হতে হবে। স্থানীয় কাঁচামালের সর্বোত্তম ব্যবহারে মনোযোগী থাকতে হবে। স্থানীয় নারীদের কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিতে হবে। তা ছাড়া প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে নিজ জেলায় (স্থায়ী ঠিকানায়) প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। এতে শহরের ওপর চাপ কমবে। দেশের ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের পথ প্রশস্ত হবে।

নির্ধারিত সময় শেষে প্রস্তাবগুলো প্রাথমিক যাচাই–বাছাই শেষে নিজ নিজ আইডিয়া উপস্থাপনের জন্য তারা বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সামনে হাজির হবে। ব্যবসার প্রাথমিক ধারণা রাখে, নেতৃত্বের গুণাবলি রয়েছে, জেনুইন আইডিয়া...এমন নানা দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভাব্য উদ্যোক্তাদের বাছাই করা হবে।

এরপর তাদের ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ছয় মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের আইডিয়াকে আরও বাস্তবসম্মত ও প্রয়োগযোগ্য করতে ওই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা হবে। এমনকি সেই বিশেষজ্ঞ বাস্তবায়ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তার মেন্টর হিসেবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

শুরুতে প্রতিটি জেলার জন্য গড়ে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও চলবে। একজন উদ্যোক্তাকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা সুদে ১৫-২০ বছর মেয়াদে ঋণ দেওয়া যেতে পারে। তাতে প্রতিবছর প্রতিটি জেলায় অন্তত ১০ জন করে উদ্যোক্তা বেরিয়ে আসবে।

সারা দেশে প্রায় সাত শ (কারণ সবারই ৫০ লাখ লাগবে না)। ১০ বছরে সাত হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিজ এলাকার কল্যাণে কাজ করতে থাকবে।

তাদের প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে। অন্যরা তার সাপ্লাই চেইনে অবদান রাখবে। ফলে উপকারভোগীর সংখ্যা হবে অনেক।

এর বাইরে আরেকটা ক্যাটাগরি হতে পারে। ওই প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ নয় কিন্তু তাদের আইডিয়া সম্ভাবনাময়। তাদের বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া যেতে পারে।

তাদের ন্যূনতম সুদহারে (অথবা সরকারি ভর্তুকিতে ) অর্থায়ন করা যেতে পারে। তা ছাড়া মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার পৃথিবীর নানা প্রান্তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে বিনিয়োগ করে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানকে তিনি যদি বাংলাদেশে আহ্বান জানান, তারা এখানে তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কাজ করতে খুশিই হবে।

নবীন উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে একজনও যদি নাটোরের আমজাদ খান চৌধুরীর মতো সফল হন, তবে প্রাণ-আরএফএলের মতো বিশাল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে। এই প্রকল্পের সবাই সফল হবে না। কিন্তু কিছু মানুষ তো হবে।

অন্যরা প্রথমবার ধাক্কা খেয়ে যা শিখবে পরেরবার তার ওপর ভর করে দাঁড়াবে। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, তারা টাকা মেরে দিলে? আমার মতে, মেরে দিলেও টাকাটা দেশের মধ্যেই থাকবে, পাচার হবে না।

তারা আরও দশজন মানুষের কর্মসংস্থানের উপলক্ষ হবে। তাই আমরা ইতিবাচকভাবে বিষয়টা দেখতেই পারি।

পরিশেষে বলব, আমাদের অন্যান্য সীমাবদ্ধতা থাকলেও মেধার দিক থেকে আমরা মোটেও পিছিয়ে নই। আমি নিজে একসময় ২৪ দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পড়াশোনা করেছি। নিজেকে কখনো তাদের চেয়ে পিছিয়ে পড়া মনে হয়নি। তা ছাড়া আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কৃতিত্বের সঙ্গে নানা দায়িত্ব পালন করছে।

তাই আমাদের মেধাবীদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারলে দেশপ্রেমিক তরুণেরা আরেকটা বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হবে। এমন উদ্যোগের সফলতায় ব্যাপক কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশের প্রান্তিক পর্যায়েও টেকসই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগা খুবই সম্ভব।

  • ড. মো. আব্দুল হামিদ অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট