বিশ্লেষণ
ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাতে পারে প্রযুক্তি
দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রায়ই বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে। এই চুরি ঠেকাতে পাহারা বসানোসহ নানা চেষ্টা করেও কোনো ফল হচ্ছে না। চুয়েটের এক শিক্ষার্থীসহ তিন ব্যক্তি চুরি ঠেকাতে উদ্ভাবন করেছেন প্রযুক্তি।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের তৈমুরনগরে আবদুস সালামের শ্বশুরবাড়ি। নতুন বিয়ে, স্ত্রীর বড় ভাই ফোনে ডেকে পাঠান তাঁকে। তাই গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তিনি ঢাকা থেকে সেখানে ছুটে যান। শাশুড়ির যায় যায় অবস্থা। গিয়ে দেখেন শাশুড়ির অক্সিজেন চলছে। বিদ্যুৎ নেই, পাওয়ার ব্যাংকের চার্জে চলছে ফ্যান, জ্বলছে একটা বাল্ব। অন্য সব ঘরে–বারান্দায় চার্জার। সবাই বলছে, ‘এই বিদ্যুৎ এল বলে।’
একে একে সব চার্জারের দম ফুরিয়ে যায়। শাশুড়ির ঘরের ফ্যানটাও বন্ধ হয়ে যায়। অনেক খুঁজে একটা তালপাতার পাখা পাওয়া যায়। সেটাই তখন বাড়ির একমাত্র পাখা। রাতে আর বিদ্যুৎ আসেনি। সকালে জানা যায়, লোডশেডিংয়ের সুযোগে রাতে কে বা কারা পাশের ট্রান্সফরমারটি হাপিশ করে দিয়েছে। সালামের শাশুড়ির শেষ ইচ্ছা ছিল, স্বামীর ভিটায় শেষ দমটা ফেলার। সেটা তাঁর ভাগ্যে ছিল না। বিদ্যুৎ না থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বারান্দাতেই তাঁর দমটা চলে যায়।
দেশের আর দশটা উপজেলার মতো সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা প্রায় ডাল–ভাত। চলতি বছরের জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, উপজেলায় আগের ২ মাসে ১৭টি বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে আটটি পাথর ভাঙার স্টোন ক্রাশার মিলে লাগানো ছিল। বাকি নয়টি ছিল আবাসিক গ্রাহকদের। সালামের শ্বশুরবাড়ির কাছের ট্রান্সফরমারটি ছিল এগুলোর একটি। রনিখাই ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন থেকে বেশির ভাগ ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছিল।
চুরির খেসারত/কাফফারা কী
ট্রান্সফরমার চুরি হলে নতুন ট্রান্সফরমার পেতে গ্রাহককে অর্ধেক ও পল্লী বিদ্যুৎকে বাকি অর্ধেক টাকা দিতে হয়। দ্বিতীয়বার চুরি হলে পুরো টাকাই গ্রাহককে দিতে হয়। এতে পল্লী বিদ্যুতের চেয়ে গ্রাহকের ঝুঁকি ও ক্ষতি বেশি। ট্রান্সফরমার ৫, ১০, ১৫, ২৫, ৩৭ ও ১০০ কিলো ভোল্ট (কেভি) ক্ষমতাসম্পন্ন হয়। শক্তিভেদে দামও ভিন্ন। ট্রান্সফরমারে মূল্যবান তামার কয়েলসহ নানা সরঞ্জাম থাকে। মূলত দামি কয়েলের জন্যই ট্রান্সফরমার চুরি করা হয়। চোর চক্র তামার কয়েল নিয়ে বাকি অংশ ফেলে যায়। ট্রান্সফরমার চুরির পর নতুন সংযোগ পেতেও বেগ পেতে হয়। সাধারণ গ্রাহক হলে পুরো এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে ট্রান্সফরমারের জন্য টাকা তোলেন। সেই টাকা পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে দিলে নতুন ট্রান্সফরমার পাওয়া যায়। ট্রান্সফরমার না বসা পর্যন্ত বাসিন্দাদের অন্ধকারে কাটাতে হয়। তা ছাড়া বারবার ট্রান্সফরমার কিনতে গিয়ে কৃষকেরা লোকসানে পড়েন।
কারা করে চুরি
ভুক্তভোগীদের ধারণা, ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের অসাধু চক্র জড়িত থাকতে পারে। অনেকেই বলে থাকেন, ‘যারা ওঠায়, তারাই নামায়।’ এঁরা মনে করেন, ট্রান্সফরমার ‘নাড়ানো’ যার–তার কাম নয়। এলেম না থাকলে এত বড় ঝুঁকি কেউ নেয় না। তবে আজ পর্যন্ত এমন ধারণার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এযাবৎ যাঁরাই বমাল ধরা পড়েছেন বা সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হয়েছেন, তাঁদের কারও সঙ্গেই পল্লী বিদ্যুতের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
সব সময় যে এলেমদার চোরেরাই কাজটি করে থাকে, সেটা বলা যাবে না। চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হতাহতের ঘটনা নেহাত কম নয়। নেশার পয়সা জোগাড় করতে মরিয়া মানুষ এমন কাজে করতে পারে। গত ২৯ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। খুঁটি থেকে নামানো ট্রান্সফরমারসহ ওই ব্যক্তিকে সকালে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। এর আগে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে (শিবপাশা বাজার এলাকায়) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছিল। এঁদের একজন কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার লাইমপাশা বড়হাটির মো. সালমান। অন্যজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
একইভাবে পটুয়াখালীর মহিপুরের লতাচাপলি ইউনিয়নের খাজুরা বাহামকান্দা গ্রামে খুঁটির নিচে এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। মরদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে ট্রান্সফরমার চুরির কাজে ব্যবহৃত রশি ও সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্র। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কলাবাড়ি গ্রামে ট্রান্সফরমার চুরির পর গরু চুরির ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ কলাবাড়ি গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছয়টি ও মুহিবুর রহমানের পাঁচটি গরু চুরি হয়।
গত বছর প্রথম আলোর প্রতিনিধি মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবু রায়হানের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বিদ্যুৎ খাতে চাকরি করছেন। তাঁর কথায়, ‘ট্রান্সফরমার চুরিতে জড়িত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পেশাদার চোর।’ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যে সব সময় থানা–পুলিশের কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা পান, সেটা হলফ করে বলা যাবে না। কোনো কোনো চুরির ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে দেরি হয়ে যায়। ফলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে চোরের দল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কিছু জানতে গেলে থানার ওসিরা গৎবাঁধা বাণী শুনিয়ে দেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি; আশা করছি, দ্রুত চুরির রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারব।’
অভিযোগ আছে, থানায় জিডিতে চুরির বদলে হারানোর কথা লিখতে বলা হয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কৃষকেরা সে রকমই বলেছেন। গত বছরের এপ্রিলে সিরাজগঞ্জে এক রাতে কৃষকদের ফসলের মাঠের বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র থেকে চারটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। কৃষকদের অভিযোগ, তখন দিশেহারা কৃষক থানায় ছুটে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা হারানোর অভিযোগ দিতে বলেছিলেন। গত বছরের এপ্রিলের আগের ১৪ মাসে ফসলের মাঠ থেকে কৃষকের ৪৮টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। সেগুলোর একটিও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে সব জায়গার ছবি এক নয়। চুরির ফেলে যাওয়া মালামাল অথবা অন্য হাত ঘুরে ভাঙারির দোকানে আসা মালামাল উদ্ধারের ঘটনাও আছে। গত ১৭ জুলাই ফেনীর দাগনভূঞায় ট্রান্সফরমার চুরির মূল হোতাসহ চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নোয়াখালীর সুধারাম থানা এলাকার ভাঙারি দোকান থেকে ছয়টি ট্রান্সফরমার উদ্ধার করা হয়। ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা দাগনভূঞা থানায় জিডি করেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দাগনভূঞা, সোনাগাজী, সেনবাগ, সোনাইমুড়ি এলাকায় ট্রান্সফরমার চুরি করে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করেন। পরে সেগুলো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় বিক্রি করত।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে র্যাব চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানার চৌডালা ইউনিয়নের লাইনপাড়া বোমভাতর গ্রাম থেকে চোরাই কৃষি ট্রান্সফরমার, সরঞ্জামাদিসহ দুজনকে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ট্রান্সফরমারের তিনটি ঢাকনি (কভার), ১৮ কেজি অ্যালুমিনিয়াম তার, ৪৫ কেজি তামার তার, ২০ কেজি তামার ও মেইন তার, ২০ কেজি অ্যালুমিনিয়াম ও রডের টুকরা এবং ৩ কেজি আয়রন তারের টুকরাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
চুরি প্রতিরোধে পদক্ষেপ
কোথাও শিকলে বেঁধে রাখা হচ্ছে, কোথাও পাহারা বসানো হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না ট্রান্সফরমার চুরি। ট্রান্সফরমার চুরি রোধে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারপত্র বিলি ও মাইকিং করে থাকে। জনসচেতনতায় আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সভা। কিন্তু এসবে কাজ হচ্ছে না।
চুরি রোধে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর দুওসুও ইউনিয়নের সরলিয়া গ্রামের একটি ট্রান্সফরমার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি সেটিও চুরি হয়ে যায়। ট্রান্সফরমার চুরি রোধে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চালবন্দ গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে পাহারা বসিয়েছেন।
পুঠিয়া থানার ওসি ফারুক হোসেন ট্রান্সফরমার চোর ধরে দিতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। পাশাপাশি প্রতিটি এলাকার মানুষকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান।
চুরি বন্ধের উপায় কী
শিকল দিয়ে বেঁধে, পাহারা বসিয়ে, পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে বা তথাকথিত জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচারপত্র বিলি আর মাইকিং করেও কাজ হচ্ছে বলে মনে হয় না। গত বছরের এপ্রিলে সেচ মৌসুমের সময় প্রথম আলো বাংলাদেশের ১২টি উপজেলার তথ্য যাচাই করে দেখেছিল, ১২ মাসে অন্তত ৪১৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসবের দাম প্রায় আড়াই কোটি টাকা। কোথাও কোথাও একই রাতে ছয়টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়।
শিক্ষার্থী রফিকের আবিষ্কার
রফিক তখন সবে ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট)। ছুটিতে বাড়িতে এসে বাবা নাজমুল হকের পেরেশানি দেখে তিনি ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। বাবা একজন কৃষক। তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকা লো-লিফ্ট পাম্প (এলএলপি) ১০ কেভি তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ। মরার দশা প্রায় ৫০ একর জমির ফসল।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কৃষক নাজমুলকে সাফ বলে দেওয়া হয়, চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের মূল্য বাবদ প্রায় দুই লাখ টাকা জমা দিলে সংযোগের কথা ভাবা যাবে। এতে ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর বিমর্ষ অবস্থা দেখে ছেলে রফিক লেগে যায় উদ্ভাবনের কাজে। একপর্যায়ে রফিক ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকানোর যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। ট্রান্সফরমারে সর্বনিম্ন ৬০ ডেসিবল মাত্রার কম্পন সৃষ্টি হলে কোনো ধরনের সংকেত তৈরি ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনট্যাক্ট নম্বরে ফোন যাবে।
গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে এই ডিভাইসটি স্থানীয় এলএলপি প্রকল্পের (পীরগঞ্জের সাগুনী গ্রাম) ট্রান্সফরমারে স্থাপন করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে একদল চোর ডিভাইসযুক্ত ট্রান্সফরমার চুরির চেষ্টা করলে ডিভাইস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাবা নাজমুলের মোবাইল নম্বরে কল যেতে থাকে।
তিনি প্রতিবেশীদের নিয়ে ট্রান্সফরমারের দিকে এগোতে থাকলে চোররা সব সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে যায়। ডিভাইসটি মোবাইল সিম কার্ড ও সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করে। ট্রান্সফরমারের হ্যাঙ্গারে একটি ওয়াটার প্রুফ মাস্টার বক্স লাগানো থাকে। সেখান থেকে চিকন তারের সাহায্যে ট্রান্সফরমারের তলায় সেন্সর লাগানো হয়। সেগুলোও ওয়াটার প্রুফ। এটি মূলত ফোন নম্বরের সঙ্গে কানেক্ট থাকে। ডিভাইসটি তৈরিতে খরচ পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা।
এর আগে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আঞ্চলিক শাখার কনিষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান আরেকটি কৌশল উদ্ভাবন করেন, যার নাম দিয়েছেন ‘ট্রান্সফরমার নিরাপদ যন্ত্র’। টঙ্গিবাড়ী সদর ইউনিয়নের মারিয়ালয় গ্রামে এটি স্থাপন করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সমিতির এক কর্মী একটি বিশাল লাঠি দিয়ে ট্রান্সফরমারটি স্পর্শ করামাত্রই বাতি জ্বলে ওঠে, বিকট শব্দে আওয়াজ শুরু হয়। প্রায় ৩০ সেকেন্ডের মতো ওই আওয়াজ হয়।
গত ৭ ও ৮ মে রাজশাহী বিভাগীয় উদ্ভাবনী মেলায় অংশ নিয়ে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর লাইনম্যান মো. সাজেদুর রহমান সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। তাঁর উদ্ভাবিত প্রযুক্তি রাজশাহী বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়। তিনি ব্যবহার করেছেন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেভা (জিএসএম) প্রযুক্তি।
কোনো দুষ্কৃতকারী ট্রান্সফরমার চুরির চেষ্টা করলে জিএসএম সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল ফোনে কল আসবে। এ ছাড়া এলইডি বাল্ব জ্বলে উঠবে ও অ্যালার্ম বাজতে থাকবে। খরচ হবে চার হাজার টাকা।
চুয়েটের শিক্ষার্থী রফিক, কনিষ্ঠ প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান, লাইনম্যান সাজেদুর রহমানদের উদ্ভাবনগুলো আমাদের নামজাদা বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। প্রায় সব কটিই মাঠপর্যায়ে কমবেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রয়োজন ধারাবাহিক গবেষণা আর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিই। তবেই না একটা প্রযুক্তিবান্ধব স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
লেখক ও গবেষক
ই–মেইল: nayeem 5508 @gmail. com