অভিমত
নির্বাচনী রোডম্যাপের জন্য প্রস্তাবিত ১০টি ধাপ
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা সমুন্নত রাখতে এবং মানুষের আর্থসামাজিক আশা পূরণে প্রয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক নেতৃত্ব। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ তুলে ধরেছে সৈয়দ মুনির খসরু
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক স্থবিরতা—সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল পার করছে। গত বছরের জুলাই মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্থানের পর জাতির মনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে আশা জেগে ওঠে।
নতুন বর্ষ ২০২৫-এ জাতি হিসেবে আমরা ক্রমান্বয়ে একটি অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যাতে করে জনমনে একটি অস্বস্তি কাজ করছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক অঙ্গনে একধরনের অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি করছে, যা কাম্য নয়; বিশেষত যেখানে একটি স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর জনমনে গণতন্ত্র, সুশাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপারে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।
নির্বাচনী সংস্কার ও গণতন্ত্রায়ণের ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আশ্বস্তমূলক বক্তব্য সত্ত্বেও জনমনে একধরনের সন্দেহ–সংশয় থেকেই যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যদিও বলেছেন, ২০২৫–এর শেষে অথবা ২০২৬–এর শুরুতে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হবে। বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল এ ব্যাপারে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না। একটা নির্বাচনমুখী রোডম্যাপ এবং তা বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়ের অভাবে ব্যাপারটা ক্রমান্বয়ে জটিলতার দিকে এগোচ্ছে।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠন করা হলেও তাদের কাজের অগ্রগতি নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আসছে। অন্যদিকে মুদ্রাস্ফীতি, সুদের উচ্চ হার, স্থবির বিনিয়োগ পরিস্থিতি—সবকিছু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়ী সম্প্রদায় নতুন কোনো উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে একটি সতর্কতামূলক অবস্থানে আছে, যার সঙ্গে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যুক্ত হয়ে বিনিয়োগ বা বাণিজ্য—কোনোটাতেই কোনো গতি সঞ্চালন হচ্ছে না। একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের উত্তরণ ছাড়া আমরা একটা দীর্ঘ অনিশ্চতার দিকে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, যাতে করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন দুটিই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।
যে অন্তর্বর্তী সরকারের উত্থানই হয়েছিল একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য, কী কারণে সেই সরকার একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে পারছে না, তা সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্য নয়। নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং সংস্কারকে এগিয়ে নেওয়া কোন সাংঘর্ষিক বিষয় নয় এবং কেন অন্তর্বর্তী সরকার এই দুই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে এক কাতারে এনে সমন্বয় করতে পারছে না, তা অনেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ।
উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে এই প্রবন্ধের লেখক একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রস্তাব করছেন, যা সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে আসীন ব্যক্তিদের এগিয়ে যেতে আশা করি সাহায্য করবে। অতীতে যে চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮—সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্তগুলো বিশ্লেষণের ভিত্তিতে রোডম্যাপটি প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চিত্রাকারে তুলে ধরা হয়েছে।
২০২৫ নির্বাচনের প্রস্তাবিত ১০ ধাপ
১৫ জানুয়ারি ২০২৫–এ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের (বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন ছাড়া) সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর প্রস্তাবিত রোডম্যাপটি সক্রিয় করা যেতে পারে এবং জানুয়ারি ১৫ থেকে অক্টোবর ১০–এর মধ্যে প্রস্তাবিত ১০টি ধাপ সম্পূর্ণ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে এগিয়ে যেতে পারি।
প্রথম ধাপ (জানুয়ারি ১৫-২৩): সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট
প্রাথমিক এই পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট ও সুপারিশগুলো পরীক্ষা–নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করার জন্য তাদের প্রতিনিধি পাঠাবে। প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারে অতীতের গ্রহণযোগ্য চারটি নির্বাচনে (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮) রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে একটি ফর্মুলা প্রয়োগ করা যেতে পারে। যেমন যেসব দল ওই চারটি সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ আসনে জয়যুক্ত হয়েছিল, তারা প্রতিটি সংস্কার কমিটির সঙ্গে আলোচনার জন্য সর্বোচ্চ তিনজন প্রতিনিধি পাঠাতে পারে। অন্য দলগুলো, যাদের সংসদে প্রাপ্ত আসন সংখ্যাগরিষ্ঠ দলগুলোর তুলনায় অনেক কম ছিল, তারা একজন করে প্রতিনিধি পাঠাতে পারে।
উল্লেখ্য, প্রতিটি সংস্কার কমিশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন করে প্রতিনিধি আছেন। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, সেটা অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। পাঠকদের সুবিধার জন্য নিচের টেবিলে গত চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরা হলো।
ওপরের সুপারিশগুলো একটি সহজবোধ্য কাঠামোর মাধ্যমে প্রস্তাব করা হয়েছে, যা প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা যেতে পারে। সংস্কারের প্রক্রিয়ায় সব পক্ষের কার্যকরী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা যেমন প্রয়োজন, একই সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ না করলে সংস্কার কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা অহেতুক জটিল ও অকার্যকর করে তুলতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপ (জানুয়ারি ২৬–৩০): পরামর্শপ্রক্রিয়া
রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের সঙ্গে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো নিয়ে আলোচনা করবে। এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো, সংস্কারের ব্যাপারে একটি জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ও সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবিত সংস্কারের পদক্ষেপগুলো পরবর্তী সংসদে পাস না করা হলে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টগুলো বাস্তবে খুব একটা কাজে আসবে না।
তৃতীয় ধাপ (ফেব্রুয়ারি ২–৬): সংস্কার চূড়ান্তকরণ
এ পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকার সম্মিলিতভাবে ঠিক করবে কোন সংস্কারগুলো কখন, কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে চূড়ান্ত সংস্কারগুলোয় সই করবে এবং প্রতিশ্রুতি দেবে যে নির্বাচনের পর তারা ক্ষমতায় এলে এসব সংস্কার কার্যকর করতে উদ্যোগ নেবে।
চতুর্থ ধাপ (ফেব্রুয়ারি ১০): সংস্কারপ্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা
সরকার আনুষ্ঠানিক গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারিসহ সংস্কার প্রস্তাবের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে। এর মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাবে এবং এগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।
পঞ্চম ধাপ (ফেব্রুয়ারি ১১ থেকে চলমান): সংস্কারপ্রক্রিয়া শুরু
অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করবে। পরবর্তী সংসদ আইনানুগ প্রক্রিয়া মোতাবেক, ১০ ফেব্রুয়ারির ঘোষণায় অনুমোদিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করবে।
ষষ্ঠ ধাপ (ফেব্রুয়ারি ১–আগস্ট ৩০): নির্বাচন কমিশন
একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে—
ভোটার তালিকা হালনাগাদ: নির্বাচন কমিশন বায়োমেট্রিক আইডি ব্যবহারপূর্বক ও প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত যাচাই করে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবে। নতুন ভোটারদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে ও জালিয়াতি প্রতিরোধের জন্য ডুপ্লিকেট এবং মৃত ব্যক্তিদের নাম বাদ দিতে হবে।
২০০৮ সালে ভোটার তালিকা পুনর্গঠনের মাধ্যমে আট কোটির বেশি ভোটার নিবন্ধিত হয়েছিল। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ও পদ্ধতি প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ ও দ্রুত করে তুলবে বলে আশা করা যায়।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও সমন্বয়করণ: নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় অর্থায়ন ও সরঞ্জাম বরাদ্দ নিশ্চিত করবেন। বিশেষভাবে দুর্গম এলাকার ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
মাঠপর্যায়ে নিয়োগ: প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধীকরণ এবং স্থানীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ: নির্বাচনসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন, যাতে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা আস্থা ও সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়।
নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণা: সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর ইসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। এটি রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে ও ভোটারদের কাছে তাদের ইশতেহার তুলে ধরার সুযোগ দেবে।
সপ্তম ধাপ (এপ্রিল ১): সশস্ত্র বাহিনী
প্রয়োজন ছাড়া বেসামরিক কাজে সশস্ত্র বাহিনীর দীর্ঘ সময় জড়িত থাকা কখনোই কাম্য নয়। সশস্ত্র বাহিনী ব্যারাকে ফিরে যাবে ও প্রয়োজনে স্ট্রাইক ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত থাকবে। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে সেনা মোতায়েন করা যেতে পারে। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজন অনুযায়ী সেনা মোতায়েন করা হবে।
অষ্টম ধাপ (অক্টোবর ১): ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের জন্য ১৩তম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে করে বহুদিন পর বাংলাদেশের জনগণ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। এখন থেকে প্রস্তাবিত নির্বাচনের তারিখ পর্যন্ত প্রায় ১০ মাসের মতো সময় আছে, যা আগের সংবিধান মোতাবেক তত্ত্বাধায়ক সরকারের জন্য নির্ধারিত তিন মাস সময়ের তিন গুণেরও বেশি সময়।
নবম ধাপ (অক্টোবর ৩–৯): নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা
নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ফলাফল গণনা করে আনুষ্ঠানিক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবে।
দশম ধাপ (১০ অক্টোবর): ১৩তম জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরু
নবনির্বাচিত সংসদ অধিবেশন বসবে, যা গণতান্ত্রিক শাসনের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে এবং অনুমোদিত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
সামনের পথচলা
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা সমুন্নত রাখতে এবং মানুষের আর্থসামাজিক আশা পূরণে প্রয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক নেতৃত্ব। প্রস্তাবিত রোডম্যাপটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ তুলে ধরেছে, যা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সরকারের নেতৃত্বে একটি সমন্বিত রাজনৈতিক প্রয়াস। কোনো কারণ ছাড়া অহেতুক এই প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত বা প্রলম্বিত করা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
একইভাবে প্রয়োজনীয় সংস্কারপ্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন, অংশগ্রহণ ও বাস্তবায়ন না করা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য হবে আত্মঘাতী এবং জুলাইয়ের শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা। ১৯৯১ সালে পটপরিবর্তনের পর তিন দশকের বেশি সময় ধরে আমরা জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সুবিচার করতে পারিনি। ২০২৫-এ এসে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করার সুযোগ বা সামর্থ্য কোনোটাই আমাদের নেই।
অধ্যাপক সৈয়দ মুনির খসরু আন্তর্জাতিক থিঙ্কট্যাংক দ্য ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের চেয়ারম্যান