ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী ১৯৯৯-২০০০ সালে দ্বিতীয় চেচনিয়ার যুদ্ধে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিকে প্রায় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিল। তারা কয়েক লাখ চেচেন মুসলমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।
তখন গোটা রাশিয়ায় মুসলমানদের কাছে পুতিন ছিলেন আতঙ্কের নাম। আরব তথা মুসলিম বিশ্বের কাছে ছিলেন দানবের মতো মানুষ।
কিন্তু মুসলিম বিশ্বে গত এক দশকে পুতিনের সেই ভাবমূর্তি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি আরব তথা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। মুসলিম বিশ্বে তুলনামূলকভাবে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তার কিছু কারণও আছে।
২০২১ সালে বড়দিনের আগের দিন বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেছিলেন, ইসলামের নবী (মুহাম্মাদ সা:)-এর অবমাননাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলা যায় না।
পুতিন বলেছিলেন, ‘নবী মুহাম্মদ (সা.)–এর অবমাননা আসলে কী? এটি কি সৃজনশীল স্বাধীনতা? আমি তা মনে করি না। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন, এটি মুসলমানদের পবিত্র অনুভূতির লঙ্ঘন।’
তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে রাশিয়ার জাতীয় সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে পুতিন পবিত্র কোরআনের সুরা আশ শু’আরার ২৩ নম্বর আয়াত এবং সুরা আন নাহলের ১২৮ নম্বর আয়াত পড়ে শোনান।
এই দুটি আয়াতের রাশিয়ান ভাষায় তরজমা উদ্ধৃত করে তিনি সৎকর্ম, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্ব এবং এর পুরস্কার সম্পর্কে কথা বলেন।
তারও আগে ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় পুতিন পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে সুরা আলে ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন:
‘তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ কর; তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করলেন। ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে গেলে।’
এর বাইরে চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটানোর পরও তাঁকে সুরক্ষা ও সমর্থন দিয়ে যাওয়া, গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার ভেতরে মস্কোয় হামাস নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো; তাতার মুসলমান পরিবার থেকে আগত নারী আলিনা কাবায়েভাকে নিজের সঙ্গিনী হিসেবে বেছে নেওয়া, ইত্যাদির মধ্য দিয়ে তিনি সম্ভবত মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের কৌশল নিয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর গত ৩০ অক্টোবর রাশিয়ার দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রের বিমানবন্দরে ইসরায়েল থেকে একটি ফ্লাইট আসছে—এমন গুজবে সেখানকার মুসলমানেরা তুমুল বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়। ওই সময়ও পুতিন দাগেস্তানের মুসলমানদের দোষারোপ করেননি।
এর বাইরে আরব ও তুরস্কসহ গোটা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার সদ্ভাব এখন আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক ভালো।
ঠিক এমন একটি সময়ে গত শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরে ক্রাসনোগোর্স্ক অঞ্চলে ক্রোকাস সিটি হলে আয়োজিত কনসার্টে হামলা হলো।
গান শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে সশস্ত্র ব্যক্তিরা থিয়েটারে ঢুকে পড়ল। তাঁরা নির্বিচার গুলি ছুড়ল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৩৩ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এ ঘটনার পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, রাশিয়া যখন মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পথ ধরেছে, সে মুহূর্তে উগ্রপন্থী আইএস–কে কেন মস্কোতে এ ধরনের নৃশংস হামলা চালাতে গেল?
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, পুতিনের রাশিয়া সিরিয়ায় আইএস নির্মূলে ভূমিকা রেখেছে। সে কারণে প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।
কিন্তু এত সরল সোজা উত্তর সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না। এমনকি পুতিনকেও না। এই হামলায় শুধু যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসকে-র হাত আছে, তা তিনি মেনে নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে না। অন্তত তিনি এ বিষয়ে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা থেকে তা-ই মনে হচ্ছে।
ক্রেমলিনের দিক থেকে বলা হচ্ছে, ঘটনা আইএস-কে ঘটিয়ে থাকলেও এর নাটের গুরু পশ্চিমারা। ক্রেমলিন মনে করছে, পশ্চিমারা ইউক্রেনের ভেতরকার শক্তি ব্যবহার করে এই হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির কর্মকর্তা আন্দ্রে পোপভের মতে, মস্কোয় এই নৃশংসতার নির্দেশ দিয়েছে কিয়েভ সরকার। আর এতে ‘নিশ্চিতভাবে’ অর্থায়ন করেছে ওয়াশিংটন।
রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুতনিকের মূল প্রতিষ্ঠান রোসিয়া সেগোদনিয়ার প্রধান সম্পাদক মার্গারিতা সিমোনিয়ান বলেছেন, হামলাকারীরা এমনভাবে হামলা চালিয়েছেন যেন পশ্চিমারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝাতে পারে, এই হামলার পেছনে আইএসের হাত রয়েছে। তবে হামলায় সন্ত্রাসী সংগঠনটি জড়িত নয়। এই হামলা চালিয়েছেন ইউক্রেনীয়রা।
যেহেতু মার্কিন গোয়েন্দারা এ মাসের শুরুতেই মস্কোতে বড় হামলা হতে পারে বলে আগাম সতর্কতা দিয়েছিলেন, সেহেতু এ বিষয়ে তারা খুব ভালোভাবেই জানতেন। ফলে রাশিয়ার অভিযোগের আঙুল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দিকেই রয়েছে।
রাশিয়ার একজন পার্লামেন্ট সদস্য বলেছেন, ইউক্রেনের এই অপচেষ্টার জবাব যুদ্ধক্ষেত্রে দেওয়া হবে।
এ অবস্থায় মস্কোবিরোধী ও ইউক্রেনের প্রতি সহমর্মী বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইউক্রেনে রাশিয়া বড় ধরনের আগ্রাসী অভিযান চালানোর একটা অজুহাত খুঁজছিল। সেই অজুহাত বা ছুতো হিসেবে এই ঘটনার সঙ্গে ইউক্রেনকে জড়াচ্ছে ক্রেমলিন।
পাল্টা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হলো, মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠছে, তা ভেঙে দেওয়ার জন্য; বিশেষ করে রাশিয়ার জনগণ যাতে পুতিনকে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাপ দেয়, সে জন্য পশ্চিমারা আইএসকে দিয়ে এই হামলা চালিয়েছে।
এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কে নিজের নীতি থেকে পুতিন সরে আসেননি। ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর তুরস্কের আঙ্কারায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কারলোভ একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় একজন তুর্কি পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে সবার সামনে পর পর নয়টি গুলি করে হত্যা করেছিলেন।
সিরিয়ার আলেপ্পোতে রাশিয়ার বিমান হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই পুলিশ অফিসার রুশ কূটনীতিককে হত্যা করেছিলেন। তখন অনেকে মনে করেছিলেন, এ ঘটনায় তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়ার কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হবে। কিন্তু পুতিন এ বিষয়টিকে সম্পর্কে ফাটল ধরার কোনো ইস্যু হিসেবেই তখন নেননি।
দাগেস্তানের বিমান বন্দরের ঘটনা নিয়ে পুতিন বলেছিলেন, এই দাঙ্গা রাশিয়ার শত্রুরা, ইউক্রেন এবং পশ্চিমা এজেন্সিগুলো মিলে ঘটিয়েছে। তার বদলে তিনি এর পেছনে ‘পশ্চিমা নব্য উপনিবেশবাদী রাজনীতি’র হাত আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন।
পুতিন বলেছিলেন, ইসরায়েল ফেরত বিমানটিকে যারা হামলা করেছে, তাঁরা ‘পশ্চিমা নব্য ঔপনিবেশিক রাজনীতির শিকার’।
তখন অনেক উদারপন্থী সংবাদমাধ্যম বলেছিল, রাশিয়া সরকারের ইসরায়েলবিরোধী ভাষ্য এবং মস্কোয় হামাসের নেতাদের সফরকে উগ্রপন্থী মুসলমানদের কাছে এই বার্তা দেবে যে, ইহুদিদের ওপর আক্রমণ চালালে রাশিয়া তাতে বাধা দেবে না।
সর্বশেষ মস্কোতে যে হামলা হয়ে গেল, তার জের ধরে পুতিন যে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে যাচ্ছেন না, এটি মস্কো ভালোভাবেই স্পষ্ট করেছে। মস্কোয় আইএসকের সন্ত্রাসী হামলার পরপরই ইউক্রেনের খারকিভে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।
পুতিনের এই ইউক্রেন অভিযানের পেছনে যত কারণ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ সম্ভবত আদর্শিক কারণ। লেনিন বা স্তালিনের যে কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা রাশিয়া এক সময় একটি ‘ধর্মহীন’ বস্তুবাদী সমাজ গঠনের প্রত্যয় নিয়ে এগিয়েছিল, সেই প্রত্যয় থেকে বেরিয়ে এসেছেন পুতিন।
আজ থেকে হাজার বছর আগে রাশিয়ানদের জাতির পিতা ভ্লাদিমির দ্য গ্রেট রাশিয়ায় যে অর্থোডক্স খ্রিষ্টান সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, পুতিন সেই ধর্মভিত্তিক ধারায় ফিরে যেতে চান।
তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণের পথে প্রধান বাধা ইউরোপ আমেরিকাভিত্তিক পুঁজিবাদপুষ্ট ও উদারপন্থী ক্যাথলিক দর্শন।
রুশ দার্শনিক আলেকসান্দর দুগিনের মতো তিনিও বিশ্বাস করেন, ধর্মভীরুতা, পারিবারিক বন্ধন, নৈতিক মূল্যবোধই হবে নতুন রাশিয়ার মূল চেতনা যার একেবারে উল্টো পথে হাঁটছে ইউরোপ আমেরিকার বস্তুবাদী পুঁজিবাদী সমাজ।
মূলত এই ইস্যুতে উদারপন্থী পশ্চিমের সঙ্গে পুতিনের রক্ষণশীল রাশিয়ার নীতিগত বিরোধ রয়েছে। আর পুতিনের অনুসৃত অর্থোডক্স খ্রিষ্টিয়ানিটি পারিবারিক বন্ধনের ওপর গুরুত্ব দেয়, বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ককে অনুমোদন দেয় না, সমকামী সম্পর্কের বিরোধীতা করে।
ইউরোপ আমেরিকাসহ পশ্চিমা উদারপন্থী সমাজের মানবাধিকারের মানদণ্ডকে সর্বাংশে পালনীয় বলে তারা মনে করেন না। তাদের এই ভাবধারার সঙ্গে আরব বিশ্ব তথা মুসলিম সমাজের এক ধরনের আর্দশগত নৈকট্য রয়েছে। হয়তো সে কারণেই রুশ সমাজে মুসলিমদের আগের চেয়ে যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে পশ্চিমকে মোকাবিলায় পুতিন মুসলিম দুনিয়ার একটি বড় অংশের নৈতিক সমর্থন পাচ্ছেন।
পুতিন বুঝতে পারছিলেন, যদি পশ্চিমারা বাশারকে ফেলে দিতে পারে, তাহলে ইউরোপকে আর জ্বালানির জন্য রাশিয়ার তেল-গ্যাসের দিকে চেয়ে থাকতে হবে না। সিরিয়ার মধ্য দিয়ে পাইপলাইন বসিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তারা সে জ্বালানি আনতে পারবে। এ কারণে পুতিন বাশার আল আসাদকে তার সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়েছেন। অস্ত্র দিয়েছেন। অর্থ দিয়েছেন। সেই অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে বাশার পশ্চিমা মদদপুষ্ট বিদ্রোহী এবং আইএস গোষ্ঠীকে দমন করেছেন।
প্রশ্ন হতে পারে, মুসলিম সমাজের ভাবধারার সঙ্গে পুতিনের অর্থোডক্স ভাবধারার মিল থাকার পরও কেন তিনি সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের সমর্থনে মুসলিম বসতিতে বোমা ফেলেছিলেন?
এখানেও ইউরোপের স্বার্থের সঙ্গে পুতিনের স্বার্থের সংঘাত কাজ করেছে।
ইউরোপের দেশগুলো বহুদিন ধরেই রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে। এর জন্য তাদের সবার আগে দরকার মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি।
যদি ইউরোপ সিরিয়া দিয়ে পাইপলাইন বসাতে পারে, তাহলে সহজেই তারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি আনতে পারবে, রাশিয়ার কাছে আর তাদের হাত পাততে হবে না।
বারোশো কিলোমিটার দীর্ঘ নর্ড স্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়া তার সেন্ট পিটার্সবার্গের কাছের উপকূল থেকে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে উত্তর-পূর্ব জার্মানি পর্যন্ত জ্বালানি পৌঁছে দিচ্ছিল। অবশ্য যুদ্ধের কারণে এখন সে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
কিন্তু তাতে বাশার আল আসাদের সায় মেলেনি। কারণ তিনি পুতিনের পুরোনো বন্ধু। তিনি যদি ইউরোপকে পাইপলাইন বসাতে দেন এবং সেই লাইন দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি ও কাতার থেকে ইউরোপ গ্যাস আনা শুরু করে তাহলে ইউরোপে রাশিয়ার বাজার ধ্বংস হয়ে যাবে।
বাশার আল আসাদ যেহেতু পশ্চিমের প্রস্তাবে রাজি হবেন না, সেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা আসাদবিরোধীদের মদদ দিচ্ছিল যাতে তারা আসাদকে নামিয়ে দেয়। অনেকে মনে করেন, সে সময় আইসএকেও বাশারবিরোধী লড়াইয়ে পশ্চিমারা মদদ দিয়েছিল।
পুতিন বুঝতে পারছিলেন, যদি পশ্চিমারা বাশারকে ফেলে দিতে পারে, তাহলে ইউরোপকে আর জ্বালানির জন্য রাশিয়ার তেল-গ্যাসের দিকে চেয়ে থাকতে হবে না।
সিরিয়ার মধ্য দিয়ে পাইপলাইন বসিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তারা সে জ্বালানি আনতে পারবে। এ কারণে পুতিন বাশার আল আসাদকে তার সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়েছেন।
অস্ত্র দিয়েছেন। অর্থ দিয়েছেন। সেই অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে বাশার পশ্চিমা মদদপুষ্ট বিদ্রোহী এবং আইএস গোষ্ঠীকে দমন করেছেন।
এখন ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে পশ্চিমারা রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে সৌদিসহ আরব দেশগুলোর সঙ্গে পুতিন ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন।
এসব কারণে অনেকে ধারণা করছেন, মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা যত পোক্ত হবে, ইউরোপের জন্য ইউক্রেনকে বাঁচানো তত কঠিন হবে। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের সম্পর্কের মধ্যে বিষ ঢেলে দিতেই এই হামলার আয়োজন করা হয়ে থাকতে পারে।
সারফুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক
[email protected]