ভারী দরজা খোলার চাবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কি বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে? এর এককথায় উত্তর, বদ্ধ দরজার তালা ভাঙা হয়েছে অবশ্যই, কিন্তু ভারী লোহার মরচে পড়া ভারী দরজা আমরা খুলতে পারিনি। গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে বটে, কিন্তু জনগণের ‘পূর্ণ বিজয়’ হয়নি। যদি হতো, তাহলে আমরা লোকভোলানো ভুলভুলাইয়া অন্তঃসারশূন্য ‘সংস্কার’-এর কথা না বলে ‘জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি’-কে রূপ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে নতুনভাবে ‘গঠন’ করার কথা বলতাম। সর্বস্তরে জনগণের অভিপ্রায়কে সামষ্টিক রূপ দেওয়ার জন্য অবিলম্বে একটি গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করতাম। জনগণকে ইতিহাসের কর্তা গণ্য করে তাদের সামষ্টিক অভিপ্রায়কে বর্তমান করে তুলতাম, যেটা হাজির হয় বাংলাদেশের নতুন কনস্টিটিউশন বা ‘গঠনতন্ত্র’ হিসেবে, সেটা তো করিনি।

কিন্তু তালা ভাঙাটাও ছিল কঠিন কাজ। অতএব বড় অর্জন। কেন? কারণ এই তালা ভাঙার কাজটা একজন ফ্যাসিস্ট শাসককে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উৎখাত করে দিল্লিতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারমাত্র ছিল না। নাহিদ ইসলাম যখন সরকার পতনের পাশাপাশি ‘ফ্যাসিবাদ বিলোপ’ করার দাবিও তুলেছিলেন, তার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের গণ-আকাঙ্ক্ষাটাই ব্যক্ত হয়েছিল। তবে সেই আকাঙ্ক্ষা ছিল অস্ফুট, পরিষ্কার নয়। সম্ভাবনার দ্বার খুলতে হলে সবার আগে এখন তাহলে দরকার গণ-অভিপ্রায়কে স্পষ্ট করে তোলা, গণ-অভিপ্রায়ের মর্ম ধারণ করতে পারে, তার বয়ান তৈরি করা এবং সঠিক রণনীতি, রণকৌশল ও রণধ্বণি তৈরি করা। চলুন, শুরু করি।

মরচে পড়া পুরোনা ভারী দরজা খুলতে হবে। কীভাবে? লড়াইটা কি শুধু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে চলছে? না। ‘ফ্যাসিবাদ বিলোপ’-এর লড়াইকে সুনির্দিষ্টভাবে ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে হাজির করতে হবে। ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা মোটেও এককথা নয়। ধারণা হিসেবে তারা ভিন্ন এবং তাদের মোকাবিলার নীতি এবং কৌশলও ভিন্ন।

জনগণ বিপুল আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছে ঠিকই। কিন্তু শেখ হাসিনার হাতে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রশক্তি ও রাষ্ট্রব্যবস্থাই অক্ষুণ্ন রয়েছে। সামরিক কিংবা বেসামরিক আমলাতন্ত্রে কোনো আঁচড় লাগেনি। মুশকিলগুলো কোথায় কোথায়, সেই গিঁটগুলো শনাক্ত করা এবং বোঝা জরুরি। জনগণ এখনো বুঝতে পারে না, সরকার বদল মানে রাষ্ট্রের কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থার বদল নয়। তাই এটাও তারা বুঝতে অক্ষম যে হাসিনা নেই, কিন্তু কেন জিনিসপত্রের দাম কমছে না? কেন দুর্নীতি ও দখলবাজি কমছে না? জীবন ও জীবিকার সংগ্রাম কেন আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে? ইত্যাদি।

অবাধ কাছাখোলা বাজারব্যবস্থার যুগে এসবের সমাধান কোনো পরজীবী গণবিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র কিংবা সরকার করবে না, করতে পারবেও না। সেটা জনগণকেই করতে হবে। ক্ষমতাকে রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক রাষ্ট্র নামক যন্ত্রে কেন্দ্রীভূত না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। সবার আগে দরকার জনগণকে ‘গণশক্তি’ হিসেবে গঠন করা। সেই শক্তির রূপ ইতিমধ্যেই আমরা গণ-অভ্যুত্থানে দেখেছি। কিন্তু সেই শক্তিকে কীভাবে জনগণের ‘গাঠনিক শক্তি’ হিসেবে খোদ জনগণকেই ক্ষমতাসম্পন্ন করে তুলতে হয়, সেটা আমরা জানি না বা শিখিনি। এখানেই জং ধরা ভারী দরজা খোলার চাবি। নিজেদের নতুনভাবে গঠন করার প্রধান বাধাটা ঠিক এখানেই।

আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা প্রকট। জনগণের নিজেদেরই গাঠনিক শক্তি বা ‘কনস্টিটুয়েন্ট পাওয়ার’ হিসেবে নিজেদের তৈরি ও প্রতিষ্ঠিত করাটাই যে রাজনৈতিক ও আইনি সাহিত্যে গণতন্ত্র—এই অতি সাধারণ সত্য আমরা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আমরা এখনো গণতন্ত্র বলতে নির্বাচন বুঝি। সেটা আবার শুধু জাতীয় সংসদ ও সরকার নির্বাচন। তা–ও আদৌ যদি আমরা কলোনিয়াল ইংরেজের পার্লামেন্টারি সরকারব্যবস্থাকেই আদর্শ গণ্য করি। প্রেসিডেনশিয়াল সরকারে কী অসুবিধা? কিংবা অন্য কোনো সরকারব্যবস্থা? গোড়ার এই ধরনের বিস্তর বিষয়ের মীমাংসা দরকার আগে।

কিংবা আরও গোড়ার বা গভীর প্রশ্নও রয়েছে। যেমন তথাকথিত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বনাম জনগণের সার্বভৌমত্বসংক্রান্ত তর্ক। দুইয়ের কী চাই আমরা? একালে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নামক সোনার পাথরবাটিজাতীয় কিছু নেই। কারণ, পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য যে নিউ লিবারেল ইকোনমিক পলিসি চালু রয়েছে, সেখানে রাষ্ট্রমাত্রই আন্তর্জাতিক বা বহুজাতিক পুঁজির স্ফীতি ও পুঞ্জীভবনের হাতিয়ার। দুনিয়া এলন মাস্ক, বিল গেটস আর জাকারবার্গ নামক ব্যক্তিদের মালিকানায় অল্প কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করে।

পুঁজির প্রান্তিক দেশও বহুজাতিক স্বার্থ এবং মাফিয়া ও লুটেরা শ্রেণির লুণ্ঠন ও মুনাফা কামানোর হাতিয়ার। অবাধ বাজারব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল মানেই লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণির দল। তা ছাড়া বহুদিন আগে থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অধীনে এবং তাদের নির্দেশের বাইরে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাধীন কোনো অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না, এখন আরও নেই। সেই ক্ষেত্রে প্রচলিত নির্বাচনবাদী দল জনগণের জন্য কী অর্জন করবে? তাহলে কাকে আমরা রাজনৈতিক দল বলব আর কাকে বলব না, সেটাও গঠনতান্ত্রিক তর্কবিতর্কের বিষয় হয়ে পড়েছে।

জনগণের প্রতিনিধি কথাটার মানে আমাদের নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে।

আমরা বহুকাল আগে থেকেই অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব হারিয়ে বসে আছি। তাহলে এই রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণাও তো ফাঁপা কলস হয়ে গেছে। সেটা দিয়ে আমরা কী করব? কীভাবে আমাদের জীবন ও জীবিকার সমস্যার সমাধান হবে? কীভাবে তথাকথিত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব দিয়ে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের উন্নয়ন বা উন্নতি হবে? হবে কি? কেউ কেউ পরিসংখ্যানে দেখাবে, জিডিপি বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু জনগণের অবস্থা ঠনঠন। যদি এই রাষ্ট্র দিয়ে উন্নতি অসম্ভব হয়ে ওঠে, তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব দিয়ে আমরা কি করব?

কী করা? এ জন্যই বিশ্বব্যাপী কথা উঠেছে গণসার্বভৌমত্বের। জনগণের সামষ্টিক রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ এবং গণসার্বভৌমত্বের ধারণা পরিচ্ছন্ন করে তোলা রাষ্ট্রের দরকার আছে অবশ্যই; কিন্তু সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের, এই প্রাচীন ধারণা থেকে আগে মুক্ত হওয়া দরকার। সার্বভৌম ক্ষমতা থাকতে হবে জনগণের হাতে। রাষ্ট্রের নামে সেই ক্ষমতা যেন কোনো সামরিক বা বেসামরিক আমলা হরণ করতে না পারেন এবং সাধারণ জনগণ যেন প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে তাদের গণতান্ত্রিক শাসন, অর্থাৎ জনগণের অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করতে পারে, তার জন্য উপযুক্ত রাষ্ট্রকাঠামো আবিষ্কার আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ও ১ নম্বর কর্তব্য। কারণ, রাষ্ট্র নয়, জনগণই সার্বভৌম।

যে ভারী দরজা আমরা খুলতে পারিনি, সেটা খোলা যাবে, যদি পপুলার সভরেন্টি বা গণসার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আমাদের রাজনৈতিক ডিসকোর্স এবং রাষ্ট্র পরিগঠনের কেন্দ্রে আমরা আনতে পারি। কীভাবে আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে পারি, যেখানে ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকবে, তার চরিত্র হবে বিকেন্দ্রীকৃত এবং নীতিনির্ধারণে ও প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে জনগণ সরাসরি অংশ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী না করলে এবং জনগণের গাঠনিক শক্তি অর্জন করতে না পারলে রাষ্ট্র কি আমরা ধুয়ে খাব?

ঔপনিবেশিক আমল থেকেই ঔপনিবেশিকতার ঔরসে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের এলিট বা অভিজাত শ্রেণি প্রাণপণ জনগণের ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে ওঠার বিরোধিতা করেছে। অতএব এই লড়াইয়ের শ্রেণিগত মর্মও রয়েছে। গণশক্তি গাঠনিক শক্তি হয়ে নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠন করুক, এলিট বা অভিজাত শ্রেণি এই নীতি বা দর্শনের বিরোধিতা করেছে। তাই গঠনের কথা না বলা তারা কেবলই ‘ফাঁপা’ সংস্কারের কথা বলে বেড়াচ্ছে। অথচ স্রেফ সরকার বদল নয়, তথাকথিত ‘সংস্কার’-ও নয়, বরং নতুনভাবে বাংলাদেশ ‘গঠন’ করাই জনগণের অভিপ্রায়।

কলোনিয়াল শাসকদের মতো ওপর থেকে লিখে দেওয়া, ‘পুনর্লিখন’ করা কিংবা তথাকথিত গণবিচ্ছিন্ন কমিশন বানিয়ে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ‘সংবিধান’ নয়, গণ-অভ্যুত্থানের অভিপ্রায় ছিল নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে জনগণই পরস্পরের সঙ্গে নৈতিক, সাংস্কৃতিক, আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক নির্ধারণ ও নির্ণয় করবে এবং নতুন চিন্তা, আদর্শ ও অভিপ্রায়ের আলোকে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের গঠন করার ‘গঠনতন্ত্র’ প্রণয়ন করবে। জনগণ নিজেই হবে নিজের কর্তা।

আগে রাষ্ট্র ‘গঠন’ করতে হবে, তারপর নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে ‘সরকার’। কিন্তু সমাজের এলিট বা ক্ষমতাবান শ্রেণি চাইছে, জনগণ আগের মতোই হবে শাসিত আর শুধু তারা হবে শাসক। গঠনের বিপরীতে তারা শুধু তাই সংস্কার চায়। সংস্কারের রাজনীতি আর গঠনের রাজনীতি—এই দুই ধারায় আমাদের রাজনীতির মেরুকরণ ঘটছে। এটা ইতিবাচক।

এটা পরিষ্কার যে নতুন সম্ভাবনার দ্বার আমরা খুলতে পারব, যদি আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক বর্গের অন্তর্গত মর্ম ধরতে পারি। আগামী রাজনীতির জন্য নতুন ভাষা তৈরির প্রশ্ন সরাসরি জড়িত। সেটা যে নিছকই ভাষার কচকচানি নয়, সেটা সবার আগে বোঝা দরকার। ফ্যাসিস্ট শক্তির অধীন থাকার কারণে আমাদের চিন্তাশক্তিও খোয়া গেছে। আমাদের জীবন, জীবিকা, সমাজ, রাজনীতি, সংস্কৃতি—সবকিছু নিয়ে আমাদের নতুনভাবে ভাবতে হবে। নতুন পরিকল্পনা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জানতে হবে। নইলে গঠনের রাজনৈতিক ধারার মধ্যেও বিরোধ, ব্যবধান এবং বৈরী সম্পর্ক বাড়বে।

আধুনিক জাতিবাদ বা পরিচয়বাদের নানান রূপ আছে; সেক্যুলার, ধর্মীয়, পপুলিস্ট ইত্যাদি। সেক্যুলার জাতিবাদের ক্ষয়ের পর এখন মাথা তুলেছে উগ্র ধর্মীয় জাতিবাদ। যুগপৎ হিন্দু ও মুসলিম জাতিবাদ। উগ্র ধর্মীয় জাতিবাদ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। আধুনিক ও সেক্যুলার বাঙালি জাতিবাদ ফ্যাসিস্ট শক্তি ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা হিসেবে কায়েম ছিল। মতাদর্শ হিসেবে কি তাকে পুরোপুরি পরাস্ত করা গেছে? ফ্যাসিস্ট শক্তি তো আছে, রয়ে গেছে এবং তারা সক্রিয়। এমনকি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থাও তো রয়ে গেছে। এমন একটি সরকার কায়েম করা হয়েছে, যা সংবিধানে নেই।

শুধু তা–ই নয়, বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে সেটা বদলানোর বা তথাকথিত সংস্কার করার কথা বলা হচ্ছে, তা–ও এক স্ববিরোধিতা। সংস্কারের জন্য নানান কমিশন ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা শহুরে, এলিট, সমাজের সুবিধাভোগী ক্ষমতাবান শ্রেণিরই অংশ। কেউ কেউ সেনা-সমর্থিত এক-এগারোর সরকারেরও সহযোগী ছিলেন।

বিপজ্জনক দিক হচ্ছে, রাজনীতিতে শ্রমিক বা মেহনতজীবী শ্রেণির কোনো উপস্থিতি নেই। কৃষক নামক কোনো জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আদৌ আছে কি না, তার কোনো খবরই নেই। গণ-অভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিল সামনের সারিতে, তারা গণশক্তির নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু হঠাৎই যেন তারা রাজপথ থেকে হাওয়া হয়ে গেছে। জনগণের রাজনৈতিকভাবে সচেতন ভূমিকা পালন করার অভাবে ‘মব’ হয়ে যাচ্ছে। সুযোগ পেলেই তারা নিষ্ঠুর ও প্রতিহিংসাপরায়ণ।

সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষত নিরাময়ের কোনো প্রক্রিয়া নেই। নেলসন ম্যান্ডেলার ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস কমিশনের মতো কিছু করা জরুরি, কিন্তু করা হয়নি। তাহলে দরকার উপমহাদেশের বিগত ইতিহাসের প্রচলিত জাতিবাদী ও সাম্প্রদায়িক বয়ানকে নতুনভাবে গণপর্যালোচনার অধীনে আনা, নিজেদের নতুন ঐতিহাসিক কর্তাসত্তা হিসেবে ভাবা, ভাবতে শেখা এবং সেই ভাবনা অনুযায়ী কাজ করা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এই সুযোগ তৈরি করেছে। সম্ভাবনা বেড়েছে।

আমরা কি পারব?

শ্যামলী, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

  • ফরহাদ মজহার কবি ও ভাবুক