গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতেই ব্যস্ততম ক্যাম্পাস চোখে পড়ল। ছোট ক্যাম্পাসটির এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। আড্ডা, গ্রুপ স্টাডি, পরীক্ষায় বসার আগে শেষ প্রস্তুতি বা শিক্ষার্থীদের এদিক–সেদিক কত দৌড়াদৌড়ি। প্রাণোচ্ছল ক্যাম্পাসের একটি চিরায়ত ছবি।
কয় দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন এবং তাঁকে নিপীড়ন ও হেনস্তার দায়ে আরেকজন শিক্ষার্থী ও একজন সহকারী প্রক্টরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পত্রপত্রিকায় বা সংবাদমাধ্যমে কয়েক দিন ধরেই দেখছি অপমৃত্যুর এই ঘটনার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল। গোটা দেশের নজর ক্যাম্পাসটির দিকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও দখল করে আছে অবন্তিকার এই আত্মহত্যা। সেখানে পক্ষে–বিপক্ষে কত তর্কবিতর্ক।
কিন্তু ক্যাম্পাসে ঢুকে চারদিকে একনজর বোলাতে তার কোনো রেশই পাওয়া গেল না। তবে একটু এগিয়ে যেতে একটি ভবনে অবন্তিকার মৃত্যুর প্রতি শোক জানিয়ে দুটি ব্যানার দেখা গেল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে, আরেকটি অবন্তিকা যে বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন, সেই আইন বিভাগ থেকে। সেই ভবনেই একটি সম্মুখ–পিলারে যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত অভিযোগ বাক্স ঝুলানো। সেই বাক্সে খুব একটা অভিযোগ জমা পড়ে না বলে ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি।
আরও সামনে প্রশাসনিক ভবনের দিকে এগিয়ে যেতেই মনে হলো, এবার বোধ হয় ঠিক জায়গায় এসেছি। এখানে কিছু শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীর জটলা। নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য সাদেকা হালিমকে তাঁরা স্মারকলিপি দিতে যাচ্ছেন। অবন্তিকার মৃত্যুর পর এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিক্ষোভ–আন্দোলন করে যাচ্ছেন তাঁর বন্ধু, সহপাঠী ও অনুজ শিক্ষার্থীরা।
ভিসি অফিস থেকে তাঁদের বলা হলো ভিসি ম্যাডাম জরুরি মিটিংয়ে আছেন, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে এবং সংবাদমাধ্যমের লোকজন সঙ্গে থাকতে পারবেন না। অল্প সময় পর তাঁরা দোতলায় যেতে অনুমতি পেলেন।
ভিসিকে স্মারকলিপি দেওয়ার ছবি বা ভিডিও ফুটেজটুকু অন্তত নেওয়ার জন্য হলেও বলেকয়ে কিছু সংবাদকর্মী তাঁদের সঙ্গে গেলেন। তবে দেখলাম সাদেকা হালিম রূঢ় ভাষায় সংবাদকর্মীদের একপ্রকার বের করে দিলেন। এতে সংবাদকর্মীরা কিছুটা ক্ষোভও প্রকাশ করলেন।
যাক, নিচে নেমেই শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। তাঁদের স্মারকলিপিতে দাবিগুলোর মধ্যে ছিল—অবন্তিকার হত্যার সব প্রমাণ আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, দ্রুততম সময়ে প্রভাবমুক্ত যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ করতে হবে, অঙ্কন বিশ্বাসসহ পূর্বে দায়েরকৃত সব অভিযোগের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পূর্বতন প্রক্টরিয়াল বডির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
প্রায় আধা ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা নিচে নেমে এলে তাঁদের বক্তব্য শুনতে পাই। প্ল্যাটফর্মটির আহ্বায়ক শাহ সাকিব সোবহান জানালেন, সুষ্ঠু, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরির লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করবে বলে উপাচার্য তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন।
উপাচার্য বলেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্ত কমিটি গঠনসহ এখন পর্যন্ত যা যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এর আগের কোনো ঘটনায় এত দ্রুত এমনটি হয়নি। তবে উপাচার্যের আশ্বাসের পরও তাঁদের দাবিগুলো পূরণে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
এরপরই ছিল অবন্তিকার স্মরণে গ্রাফিতি আঁকার কর্মসূচি। বেলা দুইটার দিকে সেই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা। ফলে মাঝখানের এক–দেড় ঘণ্টা ক্যাম্পাস ঘুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। শুরুতে দুজন ছাত্রী একেবারেই চুপ। একটি শব্দও উচ্চারণ করতে চাইলেন না। চোখ একেবারে নিচে পায়ের দিকে রাখলেন, চেহারায় কিছুটা ভয়ের মিশেল। একজন দ্রুত সরে গেলেন, আরেকজন স্থির দাঁড়িয়ে রইলেন নিশ্চুপ।
তিনজনের আরেকটি দলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। অবন্তিকার ঘটনা ও ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে দুই ছাত্রী দ্রুত সটকে পড়লেন। তবে একজন ছাত্র প্রতিক্রিয়া দিলেন। তিনি বললেন, তাঁরা ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার আগে এ ঘটনার সূত্রপাত। ফলে এ ব্যাপারে তাঁরা তেমন কিছু জানেন না।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ওই শিক্ষার্থী অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টরের বিষয়ে ইতিবাচকই বললেন। বিভাগেরই শিক্ষক হিসেবে তাঁকে কাছ থেকে দেখেছেন। আবার এ–ও বললেন, বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে পছন্দের শিক্ষক হলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কারও সঙ্গে তিনি খারাপ আচরণ করবেন না, সেটিও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।
আন্দোলনকারীদের একজন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মনোভাব নিয়ে জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘সবার ভেতরেই ক্ষোভ আছে। তবে বিষয়টা মুখে প্রকাশ করছে না। অনেকে ভয়ে কিছু বলতে চায় না। এখানে ভিসি ম্যাডামের একটি কথা ভালো লাগেনি। ভিসি ম্যাডাম মিডিয়ায় বলেছেন, তিনিও বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন এবং ৩০ বছর ধরে তিনি তা সহ্য করে আসছেন। তাঁর মানে সব মেয়েকেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় এবং সেগুলো মেনে নিতে হয়। এমন বক্তব্য আসলে নেতিবাচক বার্তা দেয়।’
গ্রাফিতি আঁকার প্রস্তুতি তখনো চলছিল। আরেকজন শিক্ষার্থীকে পেলাম। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই কথা বললেন। গোটা পরিস্থিতির জন্য ক্ষোভ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির প্রতি। বললেন, প্রক্টর অফিসে কোনো শিক্ষার্থী অভিযোগ করতে যাবে কী, উল্টো তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হতো। গোটা ক্যাম্পাসে আগের প্রক্টরের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘জগন্নাথ থানার ওসি’ বলে।
ক্যাম্পাস প্রশাসনে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সব নিয়োগ রাজনৈতিক, যাঁদের বেশির ভাগই ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের হাতে সবাই জিম্মি। সেই ছাত্রসংগঠনের কেউ অন্যায় করলে বিচার পাওয়া যায় না, উল্টো ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আরও বেশি হেনস্তা হতে হয়। কিছুদিন আগে একটি বিভাগের প্রধানকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করেছেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের একজন নেতা। কেউ কিছু বলতে পারেনি।
ওই শিক্ষার্থী তাঁর আরও কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তাঁরাও বেশ খোলাখুলি কথা বললেন। তাঁরা বললেন, ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোকে দাঁড়াতে দেয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করলে এখানকার বাম সংগঠনগুলো তেমন কার্যক্রম চালাতে পারে না। অবন্তিকার ইস্যুর সুযোগে মূলত বাম সংগঠনের ছাত্ররাই আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
প্রক্টর অফিস ‘জগন্নাথ থানা’ হিসেবে পরিচিত হওয়ার প্রসঙ্গ আনলেন তাঁরাও। বললেন, শুধু প্রক্টর বা সহকারী প্রক্টরকে সরিয়ে লাভ নেই। ক্যাম্পাস প্রশাসনে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সব নিয়োগ রাজনৈতিক, যাঁদের বেশির ভাগই ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের হাতে সবাই জিম্মি। সেই ছাত্রসংগঠনের কেউ অন্যায় করলে বিচার পাওয়া যায় না, উল্টো ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আরও বেশি হেনস্তা হতে হয়। কিছুদিন আগে একটি বিভাগের প্রধানকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করেছেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের একজন নেতা। কেউ কিছু বলতে পারেনি।
এই শিক্ষার্থীরা মনে করেন, অবন্তিকার অপমৃত্যুর বিচার সহজে হবে না। তাঁদের যুক্তি, সরাসরি হত্যা বা খুনের ঘটনারই তো সহজে বিচার পাওয়া যায় না, সেখানে অবন্তিকার মৃত্যু তো ‘মানসিকভাবে হত্যা’, এর বিচার পাওয়া তো আরও কঠিন হবে।
সে সময় আরেকজন ছাত্রী যোগ দিলেন আলাপে। তিনি তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিলেন। বললেন, অবন্তিকার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি তাঁকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। মূলত ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার পর ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের এক নেতার কুনজর পড়ে তাঁর ওপর। সেই নেতা নানাভাবে তাঁকে ধারাবাহিকভাবে উত্ত্যক্ত করে গেছেন ও ভয় দেখিয়ে গেছেন। সম্পর্ক করতে রাজি না হওয়ায় উল্টো অপবাদও দেন তাঁর বিরুদ্ধে।
সেই ছাত্রী অন্য নেতাদের ধরে একটা সময় সমস্যার সমাধান করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর মতো আরও অনেকেই এমন হেনস্তার মুখে পড়েছেন, যাঁদের তিনি পরবর্তী সময়ে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছেন। জিজ্ঞাসা করলাম, প্রক্টর অফিসে অভিযোগ জানাননি কেন? তিনি বললেন, প্রক্টর অফিসের ওপর আস্থা নেই।
তাঁদের সঙ্গে আলাপ শেষ করতেই দেখলাম পাশে এক ছাত্রীর বক্তব্য নিচ্ছেন সংবাদকর্মীরা। মিডিয়া অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের সেই ছাত্রী, যিনি তাঁর বিভাগের শিক্ষক দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনেছেন। প্রায় দুই বছর ধরে বিচার চেয়ে আসছেন। অবন্তিকার আত্মহত্যার পর তিনি আবারও সোচ্চার হয়েছেন। উপাচার্যকে ভরসা করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মানে রাষ্ট্রপতির কাছেও বিচার চেয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
তিনি জানালেন, কীভাবে অভিযুক্ত শিক্ষককে ওই বিভাগের প্রধান আশ্রয়–প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন। বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে বিভাগীয় প্রধানের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে কীভাবে উল্টো দোষারোপ বা ভিকটিম ব্লেমিং করা হচ্ছে তাঁর তথ্য–উপাত্ত দিয়েও যুক্তি দিলেন।
ওই ছাত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বললাম। জিজ্ঞাসা করলাম, তাঁর এই সোচ্চার হওয়ার বিষয়টি পরিবার কীভাবে দেখছে? তিনি বললেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার পর তাঁর পরিবার সামাজিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ফলে শুরুতে পরিবারকে পাশে পাননি তিনি। তবে একপর্যায়ে পরিবারও বুঝতে পেরেছে, তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের বিচার হওয়া উচিত।
দুপুর পার হয়ে গেল। প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা অবন্তিকার গ্রাফিতি আঁকা শুরু করলেন। তার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিলেন তাঁরা। সেখানে তাঁরা উল্লেখ করলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘পটেনশিয়াল র্যাপিস্টদের’ আখড়া বানিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে বিচার চাইতে গেলে উল্টো ভিকটিম ব্লেমিংয়ের শিকার হতে হয়।
তাঁদের গ্রাফিতি আঁকা চলছিল। ক্যাম্পাসের দেয়ালে অবন্তিকাকে রঙে ফুটিয়ে তুলছিলেন তাঁরা। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীদের বাসগুলো একে একে বের হয়ে যাচ্ছে। আমিও ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে রাইড শেয়ারিংয়ের একটি বাইকে চড়ে বসলাম। রোজার মাসে বিকেলে ঢাকা শহরের রাস্তার পরিস্থিতি তো জানাই আছে। ভয়াবহ যানজটে আটকে পড়ে একটু একটু ঠেলে ঠেলে এগোচ্ছিল বাইক।
সে সময় একটি ফোন বেজে উঠল। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একটি অনুরোধ শুনতে পেলাম। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতার নিপীড়নের শিকার সেই ছাত্রীর নাম, পরিচয় ও বিভাগের নাম যাতে কোথাও প্রকাশ না করি। বলা হলো, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বোঝেনই তো!
‘জগন্নাথ থানার ওসি’ দিয়েই যখন বিশ্ববিদ্যালয় চালানো হয়, সেখানে আসলে আর কী আশা করা যায়। ফোন পকেটে ঢুকানোর পর অবন্তিকা ইস্যুতে আগের লেখার প্রথম লাইনটিই মনে পড়ল: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কী হয়েছে? ব্রিটিশ তাত্ত্বিক টেরি ইগলটন বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক বিদ্যাশিক্ষায় ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করে লিখেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু ঘটেছে।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে যে অরাজকতা চলছে, যেভাবে যৌন নিপীড়নের ঘটনা সামনে আসছে, তাতে আসলে ইগলটনের এমন বক্তব্যকে মেনে নিতে হয় আমাদের।
রাফসান গালিব প্রথম আলোর সম্পাদকীয় সহকারী। ই–মেইল: [email protected]