প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির দেশ ছেড়ে পালানোর মধ্য দিয়ে অবশেষে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিল তালেবান। অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে নতুন এক গৃহযুদ্ধে প্রবেশ করতে যাচ্ছে আফগানিস্তান। কিন্তু রক্তপাতহীনভাবে ক্ষমতা দখল ও এরপর সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে সেই আশঙ্কা অনেকটা নাকচই করে দিল তালেবান। কিন্তু আশরাফ গনির পালিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা হাজির করলেন নতুন এক দৃশ্যপট। দেশটির একেবারে শেষ প্রান্তে সবচেয়ে নিরাপদ এক প্রদেশ পানশিরে বসে ঘোষণা দিলেন, তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
অপ্রতিরোধ্য এক দুর্গের নাম পানশির
আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে একমাত্র পানশিরকেই এখনো দখলে নিতে পারেনি তালেবান। যাকে চারদিকে ঘিরে রেখেছে তারা। বাকি সব প্রদেশে তাদের সামনে আফগান সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লেও হিন্দুকুশ পর্বতমালা ঠেকিয়ে রেখেছে তাদের। দশকের পর দশক গৃহযুদ্ধে কখনো পরাস্ত হয়নি পানশির। আশির দশকে সোভিয়েত বাহিনী, এরপর নব্বই দশকে তালেবানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন পানশিরের যোদ্ধারা। যার নেতৃত্বে ছিলেন শাহ আহমদ মাসউদ। কমিউনিস্টবিরোধী যুদ্ধে অসমসাহসিকতার জন্য তাঁকে ‘পানশিরের সিংহ’ নামে ডাকা হয়। আফগানদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবেও তাঁর নাম উচ্চারিত হয়। তালেবানের আগের শাসনামলে তাদের মিত্রশক্তি আল–কায়েদার ছদ্মবেশী অনুচরের হাতেই নিহত হন তিনি। এর দুই দিন পরেই ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে হামলা।
ভৌগোলিক অবস্থানের রীতিমতো এক দুর্গ বলা যায় পানশিরকে। সে সুবাদে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে জাতিগত কয়েকটি যোদ্ধা বাহিনী মিলে তালেবানবিরোধী জোট সংগঠিত হয়েছিল পানশিরে। মাসউদের নেতৃত্বে নর্দান অ্যালায়েন্স নামে সেই জোট তখনকার তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল।
পানশির নদীর নামেই এই উপত্যকা, কাবুলের মাত্র ৬৫ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে হিন্দুকুশ পর্বতমালায় যার অবস্থান। পান্নার বিশাল খনি থাকলেও পানশির উপত্যকা হচ্ছে একেবারে কৃষিনির্ভর। সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর বিখ্যাত দেশে বিদেশে বইয়ে পানশিরের বরফ পড়ার মৌসুমের অপূর্ব বর্ণনা পাওয়া যায়। সেই বইয়ের বিখ্যাত চরিত্র আবদুর রহমান ছিলেন এই পানশিরেরই লোক, যিনি কাবুলে প্রবাসকালীন জীবনে মুজতবার গৃহকর্মী কাম বাবুর্চি ছিলেন। আফগানিস্তানের অন্যতম ছোট এই প্রদেশে ঢুকতে–বের হতে একটিই মাত্র সড়ক, যার চেকপয়েন্টটি মাত্র ছয় মিটার চওড়া। তালেবানের মার্কিনবিরোধী লড়াইকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধ ও সংঘাতের মাত্রা অনুসারে আফগান প্রদেশগুলোকে কয়েকটি রঙে (লাল, কালো, সবুজ, কমলা) ভাগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে সবুজ মানে হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ, যেখানে কোনো সংঘাত নেই। আর সেটি হচ্ছে পানশির। আবার সবুজ রত্ন পান্নার বিশাল মজুতও এ উপত্যকায়। শুধু ১৯৯০ সালেই সেখানকার খনি থেকে মাসউদের নেতৃত্বে ৮ মিলিয়ন ডলারের বেশি পান্না উত্তোলন করা হয় বলে দুই মার্কিন গবেষকের নিবন্ধে উঠে আসে।
ভৌগোলিক অবস্থানের রীতিমতো এক দুর্গ বলা যায় পানশিরকে। সে সুবাদে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে জাতিগত কয়েকটি যোদ্ধা বাহিনী মিলে তালেবানবিরোধী জোট সংগঠিত হয়েছিল পানশিরে। মাসউদের নেতৃত্বে নর্দান অ্যালায়েন্স নামে সেই জোট তখনকার তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল। পশতু জাতিগোষ্ঠীর তালেবানের বিরুদ্ধে সেই জোটে ছিল তাজিক, উজবেক, হাজারা, শিয়াসহ আরও জাতিগোষ্ঠীর যোদ্ধাদল। আল–কায়েদা ও তালেবান শাসনকে উৎখাতে মার্কিন বাহিনীর হামলার শুরুতে নর্দান অ্যালায়েন্সের যোদ্ধারাও হামলে পড়েছিল তালেবানের ওপর। সে সময় তাদের হাতে নিহত হয়েছিল বিপুলসংখ্যক তালেবান যোদ্ধা।
পাল্টা কেয়ারটেকার সরকার ও আমরুল্লাহ সালেহ
গনি সরকারের ভাইস–প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ পানশিরে বসেই আফগানিস্তানের কেয়ারটেকার সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তিনিই দেশের বৈধ ও সাংবিধানিক প্রেসিডেন্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিওতে দেখা গেছে, আমরুল্লাহর পাশে বসে আছেন গনি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী ও মাসউদের ছেলে আহমদ মাসউদ। নর্দান অ্যালায়েন্সকে আবার সংগঠিত করছেন আহমদ মাসউদ। বাবার মৃত্যুর সময় যিনি ছিলেন এক বালক। যুদ্ধশাস্ত্র ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এক বছর। বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত মাসউদ ফাউন্ডশনের মাধ্যমে বড় ধরনের সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশংসিত তিনি।
কিশোর বয়সে আমরুল্লাহ ছিলেন সোভিয়েতবিরোধী লড়াইয়ে মাসউদের সহযোদ্ধা। গত বছর মার্কিন ম্যাগাজিন টাইমকে তিনি বলেছিলেন, ১৯৯৬ সালে তালেবান কাবুল দখলের আগ পর্যন্ত তৎকালীন সরকারে কাজ করেছিলেন আমরুল্লাহ। সোভিয়েতপন্থী নাজিবুল্লাহ সরকারকে উৎখাত করে তখন ক্ষমতায় ছিল মুজাহিদিন গোষ্ঠী। সে সময় বুরহানউদ্দিন রব্বানি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন মাসউদ। পালিয়ে যাওয়ার সময় নাজিবুল্লাহকে আটক করে কাবুলের জাতিসংঘের অফিসে গৃহবন্দী করেছিল মুজাহিদিনরা। তালেবান কাবুল দখল করলে জাতিসংঘের অফিস থেকে নাজিবুল্লাহকে বের করে এনে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে। বুরহানউদ্দিন, মাসউদ, আমরুল্লাহরা দুর্গম পাহাড়ে পালিয়ে গিয়ে বাঁচেন। তালেবান আমরুল্লাহকে আটকের উদ্দেশ্যে তাঁর বোনকে নির্যাতন করেছিল। সেই থেকে চরম তালেবানবিদ্বেষী আমরুল্লাহ। স্বাভাবিকভাবে এবারের তালেবান শাসনকেও তাঁর পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
নর্দান অ্যালায়েন্সকে নিয়ে আমরুল্লাহর লড়াইয়ের যে মনোভাব দেখা যাচ্ছে, সহজে তিনি হাল ছেড়ে দেবেন না। পানশিরের এক বাসিন্দার বক্তব্যেও সেই রেশ পাওয়া গেল, যিনি এএফপিকে বলছেন, ‘আমরা তালেবানকে পানশিরে প্রবেশ করতে দেব না। আমরা সর্বশক্তি এবং ক্ষমতা দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করব এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়ব।’
কাবুল ছাড়ার আগে আমরুল্লাহ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘লাখ লাখ মানুষ যাঁরা আমাকে বিশ্বাস করেন, তাঁদের আমি হতাশ করতে পারব না। আমি কখনোই তালেবানের সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকব না। আমার মাটি ও আমার আদর্শ মহান কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসউদের স্মৃতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারব না।’ তার দুই দিন পর নিজেকে কেয়ারটেকার সরকারের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে আরেক টুইটে লেখেন, ‘আফগানিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী দেশের প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা পদত্যাগ করলে অথবা তাঁর অনুপস্থিতিতে ভাইস প্রেসিডেন্টই কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট হন। আমি এখন দেশের ভেতরেই আছি, ফলে আমি আইনত কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট।’
আবারও প্রতিরোধের কেন্দ্র হবে কি পানশির
আগের তালেবানি শাসনের দুঃসহ স্মৃতি আফগানিস্তানের অনেকেই এখনো ভুলতে পারেননি। যার প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে কাবুলের বিমানবন্দরে ও পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়ার জন্য হাজার হাজার আফগানের ঢল। এর মধ্যে ভয় কাটিয়ে উঠে তিন শহরে তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ করেছে মানুষ। পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে আফগান পতাকা সমুন্নত রাখতে গিয়ে তালেবান যোদ্ধারা গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহতও হয়েছেন। তালেবানবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে নারীদেরও দেখা গেছে রাস্তায়। ফলে তালেবান শাসন মানতে ইচ্ছুক নন জনগণের বিশাল একটি অংশ থেকেই যাবে আফগানিস্তানে। তাদের সঙ্গে পাওয়া যাবে কিছু জাতিগত যোদ্ধা বাহিনীকেও। বলা হচ্ছে, তালেবানবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপের জন্য নৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে পারে একমাত্র পানশির।
এর মধ্যে আমরুল্লাহকে সমর্থন জানিয়েছেন তাজিকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তা জহির আগবার। সরকারপ্রধান হিসেবে আমরুল্লাহর ছবিও দূতাবাসে টাঙানো হয়েছে। রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে আগবার বলছেন, ‘পানশিরকে কেউ দখলে নিতে এলে সেখানকার মানুষ রুখে দাঁড়াবে। তালেবান বাহিনী যুদ্ধে জিতেছে এটি আমি বলতে চাই না। এটি শুধু সরকারপ্রধান হিসেবে আশরাফ গনির দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া। তালেবানের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’ তবে যে মুহূর্তে তালেবান সরকারকে চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান স্বীকৃতি দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, সেখানে আমরুল্লাহর কেয়ারটেকার সরকারের প্রতি এমন সমর্থন নস্যিই বলা চলে। যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে আফগানিস্তানে কোনো যুদ্ধে জড়াবে না, সেটি পরিষ্কার হয়ে গেছে। কিন্তু নর্দান অ্যালায়েন্সকে নিয়ে আমরুল্লাহর লড়াইয়ের যে মনোভাব দেখা যাচ্ছে, সহজে তিনি হাল ছেড়ে দেবেন না। পানশিরের এক বাসিন্দার বক্তব্যেও সেই রেশ পাওয়া গেল, যিনি এএফপিকে বলছেন, ‘আমরা তালেবানকে পানশিরে প্রবেশ করতে দেব না। আমরা সর্বশক্তি এবং ক্ষমতা দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করব এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়ব।’
সমঝোতা নাকি লড়াইয়েই হবে সমাধান
দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছিলেন আহমদ মাসউদ। আফগানিস্তানে কোনো বিদেশি শক্তি থাকার পক্ষপাতীও তিনি নন। সেই সঙ্গে গনি সরকারের দুর্নীতিও বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের আলোচনাকে সমর্থন করলেও এককভাবে কাউকে ক্ষমতা হস্তাস্তরের পক্ষে ছিলেন না। কয়েক সপ্তাহ আগে আটলান্টিক কাউন্সিলের সাউথ এশিয়া সেন্টারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আফগানিস্তানের মতো একটি বৈচিত্র্যময় ও বহু জাতিগোষ্ঠীর দেশের বিকেন্দ্রীভূত রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং সশস্ত্র বাহিনী দরকার। সেটি নিশ্চিত করতে তালেবানকে আলোচনা ও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি আফগানিস্তানে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য আমার বাবার হত্যাকারীদেরও ক্ষমা করতে প্রস্তুত।’ ফলে বোঝা যাচ্ছে, তালেবানকে মেনে নিতে তাঁর কোনো আপত্তি ছিল না। তবে ক্ষমতার হিস্যায় পানশিরের ভাগ থাকতে হবে। কিন্তু একক শক্তি হিসেবে তালেবান কাবুল দখল নিলে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসায় আবার তিনি নর্দান অ্যালায়েন্সকে সংগঠিত করছেন এবং আমরুল্লাহর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সঙ্গে আছে আফগান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীও।
আগেরবারের শাসনে পানশিরকে পরাস্ত করতে না পারার খেদ তো তালেবানের ভেতরে আছেই। রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসেবেও নিজেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে এবার আরও শক্তিশালী হয়ে কাবুল মসনদে এসেছে তারা। ফলে পানশিরের অপ্রতিরোধ্য ইতিহাস থমকে যেতে পারে তালেবানের বিপুল শক্তির কাছে।
এরপরও পানশিরকে নিয়ে তাজিকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তালেবান চাইলে তাদের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে। তবে এর জন্য আফগানিস্তানে একটি জোট সরকার গঠন করতে হবে। যেখানে সব আফগান পক্ষকেই জায়গা দিতে হবে। এখন তালেবান এতে রাজি হবে কি না। যদিও আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠনে সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে তালেবান নেতাদের। দেশ ছাড়ার আগে আশরাফ গনি ক্ষমতা হস্তাস্তরের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করেন, যেখানে কারজাই ছাড়াও আছেন আফগান সরকারের হয়ে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ও মাসউদের একসময়ের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠা সাবেক মুজাহিদিন নেতা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার। এখন আমরুল্লাহসহ পানশিরের নেতারা চাইবেন নতুন আফগান সরকারে তাঁদেরও রাখা হোক। তাঁরা কোনোভাবেই চাইবেন না তালেবান যুদ্ধ করে অন্যান্য প্রদেশের মতো পানশিরকেও পতন ঘটাক। সে জন্য লড়াইয়ের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি জোট সরকার গঠনের পক্ষেও তাঁদের প্রস্তাব থাকতে পারে।
এখন তালেবান কি তাতে রাজি হবে? ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, সে ক্ষেত্রে লড়াই-ই হতে পারে একমাত্র সমাধান। আগেরবারের শাসনে পানশিরকে পরাস্ত করতে না পারার খেদ তো তালেবানের ভেতরে আছেই। রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসেবেও নিজেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে এবার আরও শক্তিশালী হয়ে কাবুল মসনদে এসেছে তারা। ফলে পানশিরের অপ্রতিরোধ্য ইতিহাস থমকে যেতে পারে তালেবানের বিপুল শক্তির কাছে। আবার এও স্পষ্ট হয়ে ওঠছে যে, আগের তালেবান শাসনের কট্টরপন্থী মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে চায় এবারের তালেবান। ফলে চাইলে পানশিরের দিকেও সমঝোতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে তারা। দেখা যাক, কী অপেক্ষা করছে সামনের দিনগুলোতে।
রাফসান গালিব প্রথম আলোর সহসম্পাদক