দারিদ্র্য কি লজ্জার? মানুষের সামনে যদি আমার দারিদ্র্য প্রকাশিত হয়, তাহলে আমি কি সমাজের সামনে ছোট হয়ে যাই? অন্তত অর্চনা ভদ্রের ছেলেদের সেটাই মনে হয়েছে। অর্চনা ভদ্রের কথা জানতে পেরেছি প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে। আমি বিশ্বাস করি, এ প্রতিবেদনের কিছু কথা আমাদের বর্তমান সমাজের এক অসাধারণ প্রতিচ্ছবি এবং এটা চমৎকারভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে বাংলাদেশ—কেন নানা ক্ষেত্রে এত ভয়ংকর পর্যায়ে চলে এসেছে সেটারও। এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে এর সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক আরেকটি বিষয়ে কিছু আলোচনা করে নেওয়া যাক।
যে বস্তু ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা অসম্ভব, সেই পানি অর্থের বিচারে প্রায় মূল্যহীন, অথচ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জন্য যে হীরা মূল্যহীন, আর্থিক মূল্যে সেটা ভীষণ দামি কেন—এ প্রশ্ন দীর্ঘকাল থেকে মানুষকে ভাবিয়েছে। বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ এটাকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেও প্লেটোর লেখায় এটার উল্লেখ আছে এবং এরপরও অনেকে এটার উল্লেখ করেছেন। হ্যাঁ, এটাই অর্থনীতিতে আলোচিত ‘প্যারাডক্স অব ভ্যালু’ বা ‘ডায়মন্ড-ওয়াটার প্যারাডক্স’।
কেন এটা হয়, এটার বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই দীর্ঘ আলোচনায় এখানে ঢোকার সুযোগ কম, কিন্তু এ কলামের আলোচনার স্বার্থে এটুকু আমরা জেনে রাখি, পানির মূল্য আমরা জৈবিকভাবেই বুঝে যাই, কিন্তু হীরা যে মূল্যবান, সেটা আমাদের শিখিয়ে দিতে হয়। তাতেই হয়ে যায় না, আমাদের সেই শেখানো বয়ান বিশ্বাস করতে হয়।
ইউভাল নোয়া হারারির অত্যন্ত আলোচিত বই ‘সেপিয়েন্স: আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব হিউম্যানকাইন্ড’ ওপরের ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দেয়। তিনি বলেন, বিবর্তনের একটা পর্যায়ে এসে মানুষ বয়ান তৈরি করার ক্ষমতা অর্জন করে। কোনো একজন মানুষ যদি একটা গ্রহণযোগ্য বয়ান তৈরি করতে পারে এবং সে যদি সক্ষম হয়, তাহলে আরও অনেক মানুষকে সে বয়ানের সমর্থনে নিয়ে আসতে পারে। বয়ান বিশ্বাস করিয়ে মানুষকে সংগঠিত করে অসাধারণ সব কাজ করানো যায়।
আবার পৃথিবীর যাবতীয় ধ্বংসাত্মক কাজও হয়েছে বয়ানকে সামনে রেখে। হারারি বলেন, সব রাজনৈতিক ব্যবস্থা (যেমন: গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র), নানা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, এমনকি রাষ্ট্র নিজেই একটা বয়ান। তাঁর বিবেচনায় মানুষের তৈরি করা সবচেয়ে স্মার্ট বয়ানটি হচ্ছে টাকা।
যখন একটা বয়ান সমাজের অনেক মানুষ বিশ্বাস করে, তখন সে বয়ানকে ভিত্তি করে নানা কিছুই হতে পারে। তৈরি হতে পারে নানা নতুন বাণিজ্য, নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক চর্চা। এটা সত্য, উল্টো দিক থেকেও বাণিজ্য কিংবা সমাজের বিভিন্ন নতুন চর্চা চালু করার জন্যই নানা নতুন বয়ান তৈরি করে আমাদের সামনে আনা হয়। এটুকু জেনে আমরা ফিরে যাই অর্চনা ভদ্রের কথায়।
করোনায় ভয়ংকর রকম আর্থিক চাপে পড়া মধ্যবিত্তরাও যখন টিসিবির স্বল্প মূল্যের পণ্য কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে লাইন দেন, তখন তাঁরা অনেকেই ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক’ হয়ে তাঁদের দুর্দশার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানান। তাঁরাও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হন, তাঁদের চেহারা প্রকাশ করতে চান না, কারণ তাঁরাও মনে করেন দারিদ্র্য লজ্জার।
শুরুতে যে প্রতিবেদনের কথা বলেছিলাম, সেটা প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছিল গত ২৬ জুলাই, শিরোনাম ‘সন্তানের লজ্জা, তাই মা দাঁড়িয়েছেন সাশ্রয়ী পণ্যের জন্য’। সেই প্রতিবেদনের একটা অংশ এ রকম—
‘অর্চনা ভদ্র থাকেন নিউ পল্টনের খালেক লেনে। সাত বছর হলো ঢাকায় এসেছেন। দুই ছেলের সংসার নিয়ে যৌথ পরিবার তাঁদের। ছেলেদের দোকান আছে নিউমার্কেটে। ভাড়ার দোকান। লকডাউনের জন্য বহুদিন ধরে বন্ধ। তবে আশপাশের মানুষজন ছেলেদের ভালোভাবে চেনে বলে তাঁদের টিসিবির লাইনে দাঁড়াতে লজ্জা হয়। আর ছেলেদের বাবাকে আসতে দেননি নিজেই। এই কড়া রোদ বুড়ো মানুষটার সহ্য হবে না বলে তাঁকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করে এসেছেন।’
ঠিক এভাবে না হলেও করোনার সময় বিভিন্ন পত্রিকার খবরের সূত্রে এমন ধরনের তথ্য আমরা জেনেছি। করোনায় ভয়ংকর রকম আর্থিক চাপে পড়া মধ্যবিত্তরাও যখন টিসিবির স্বল্প মূল্যের পণ্য কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে লাইন দেন, তখন তাঁরা অনেকেই ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক’ হয়ে তাঁদের দুর্দশার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানান। তাঁরাও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হন, তাঁদের চেহারা প্রকাশ করতে চান না, কারণ তাঁরাও মনে করেন দারিদ্র্য লজ্জার।
এবার প্রশ্নটা আমরা নিজেদেরই করি আবার—দারিদ্র্য কি লজ্জার? আমার মনে হয় আমরা প্রায় সবাই উত্তর দেব, আমাদের সমাজে বেশ অনেক বছর থেকেই দারিদ্র্য লজ্জার। তাহলে আসে পাল্টা অনিবার্য প্রশ্ন—এ সমাজে দারিদ্র্য কেন লজ্জার?
এর একটা তাৎক্ষণিক জবাব হতে পারে এ রকম—একটা পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে পরিচালিত রাষ্ট্রে টাকা থাকাটা যোগ্যতা এবং না থাকাটা বিরাট অযোগ্যতা। আমাদের এই যুক্তির বিরুদ্ধে যাবে এ তথ্য—ইউরোপ ও আমেরিকার মতো পুঁজিবাদী সমাজগুলোয় তো টাকাই একমাত্র সম্মান প্রতিপত্তির বিষয় হয়ে থাকেনি। সেসব দেশের নাগরিকেরা তো টাকা কম থাকা, এমনকি দারিদ্র্য নিয়ে আমাদের দেশের নাগরিকদের মতো লজ্জিত হয় না। সংকটে পড়লে নানা রাষ্ট্রীয় ভাতা চাইতে তো কেউ কুণ্ঠাবোধ করে না, যা আমরা করোনার সময়ও দেখলাম।
টাকা উপার্জন করা নিশ্চিতভাবেই ছোট কাজ নয়। অনেক টাকা উপার্জন করে ধনী হওয়া অবশ্যই কৃতিত্বের ব্যাপার। কারও জীবনের লক্ষ্যই হতে পারে ধনী হওয়া। একটা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে সত্যিকারের পুঁজিপতি থাকা জরুরি। পুঁজিপতিদের বিনিয়োগে অন্য শিল্প ও সেবা সার্ভিসের ব্যবসা হয়, মানুষের কর্মসংস্থান হয়। পুঁজিপতি এবং তার কর্মচারীদের ভোগে অর্থনীতির চাকা চলে। তাই পুঁজিপতিদের ছাড়া বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চলে না।
বিষয়টা এতই অনিবার্য যে ‘কমিউনিস্ট’ চীনও দেং জিয়াও পিংয়ের আমল থেকে ‘সোশ্যালিজম উইথ চাইনিজ ক্যারেক্টারিস্টিকস’ এবং ‘সোশ্যালিস্ট মার্কেট ইকোনমি’-এর মুখোশে বাজার অর্থনীতি চালু করতে বাধ্য হয়। পৃথিবীতে আজ চীনের যে অর্থনৈতিক প্রতিপত্তিজনিত ক্ষমতা, সেটা এ বাজার অর্থনীতিরই ফল। সে সময় থেকেই চীন পুঁজিপতি তৈরি হতে দিচ্ছে, পুঁজিপতিদের ব্যবসা দাঁড়ানোর জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সাহায্য করছে। ফোর্বস ম্যাগাজিনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ‘কমিউনিস্ট’ চীনের বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা (৬৯৮) তার ঠিক পেছনে তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতের ৪ গুণ আর এক নম্বরে থাকা নিও লিবারেল অর্থনীতির ‘মোড়ল’ আমেরিকার (৭২৪) ঠিক পরেই।
একটা বিকশিত পুঁজিতান্ত্রিক সমাজে অনেক টাকার মালিক হওয়ার জন্য চাকরি হোক কিংবা কোনো ব্যবসা, মানুষকে আইনি পথ অনুসরণ করতেই হয়। এমনকি আইনি পথে উপার্জিত টাকাও ধার্যকৃত কর এবং অন্যান্য শুল্ক দিয়ে সাদা রাখতে হবে। শুধু তা-ই না, আপাতদৃষ্টিতে অন্যায় না করেও বাজারে একচেটিয়া ব্যবসা করতেও বাধা দেয় রাষ্ট্র। এমন চেষ্টা আইনি দিক থেকে অবৈধ। প্রতিটি দেশে অ্যান্টিট্রাস্ট আদলের আইন আছে এবং সেগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে গুগল ও ফেসবুকের মতো টেক জায়ান্টগুলোর ইউরোপ-আমেরিকার অ্যান্টিট্রাস্ট আইনে মোটা জরিমানা গোনার তথ্য আমরা নিয়মিতভাবে মিডিয়ায় পাচ্ছি।
আমি জানি, উল্লিখিত সব কটি শর্ত আমাদের দেশে মানানো কঠিন। আমাদের সব কটি ক্ষেত্রে কিছু স্খলন মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত; সত্যি বলতে আমরা প্রস্তুত আছিও। কিন্তু সমস্যা হলো, এ দেশে স্খলনটাই নিয়ম। বেআইনি পথে ধনী হওয়া অনেক সহজ এবং প্রায় নিশ্চিত; সেটা হওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কোনো বাধা নেই। শুধু সেটাই নয়, এ রাষ্ট্রের চরিত্রে এখন ক্লেপ্টোক্র্যাসির অনেক আলামত স্পষ্ট, যেখানে চরম বেআইনি উপায়ে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে সরকার তো নিষ্ক্রিয় থাকেই, সঙ্গে কিছু মানুষের স্বার্থে অত্যন্ত অন্যায্য আইন তৈরি করে লুণ্ঠনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে পারে এর এক অসাধারণ ‘টেক্সটবুক এক্সামপল’।
চাকরি কিংবা ব্যবসার সূত্রে বেআইনি উপার্জনের মাধ্যমে ধনী হওয়ার ইতিহাস বাংলাদেশে নতুন নয়।
কিন্তু নিশ্চিতভাবেই অতীতের তুলনায় অবৈধ উপার্জন করে ধনী হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে অনেক গুণ। গত দেড় থেকে দুই দশকে একটা নতুন প্রবণতা যুক্ত হয়েছে, যা ভীষণ আশঙ্কার। এখন এ সমাজে একজন প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা, এমনকি তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারী হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে যখন গাড়ি-বাড়ি করে ফেলে, কিংবা বড় রাজনৈতিক নেতা তো বটেই, কোনো ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন অতি ছোট রাজনৈতিক কর্মীও রাতারাতি টাকাওয়ালা হয়ে যায়, কিংবা কোনো একজন ব্যবসায়ী ব্যবসা শুরুর খুব কম সময়ের মধ্যে রাতারাতি ফুলেফেঁপে ওঠে, তখনো আমাদের সমাজে সেগুলো প্রশ্ন তৈরি করে না। সেই টাকার উৎস সম্পর্কে আমাদের যৌক্তিক অনুমান থাকে, কিন্তু আমরা থাকি নির্বিকার।
আমি সমাজকে মোটামুটি বুঝতে শেখার পর থেকে মনে করতে পারি, তখনকার সমাজে দুর্নীতিবাজ মানুষ ছিল, কিন্তু মানুষের অবজ্ঞা, এমনকি ঘৃণা থাকত তাদের প্রতি। টাকা হয়তো তাদের ভোগ করার সুযোগ দিত, কিন্তু এটাও তাদের করতে হতো অনেক লুকিয়ে-চুরিয়ে; বীরদর্পে আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন ভোগ করা এত সহজ ছিল না তখনকার সমাজে। সেসব মানুষের সামাজিক সম্মান ও মর্যাদার ঘাটতি তো থাকতই।
কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ টাকাওয়ালাদের সমাজ। টাকা এলে, টাকা থাকলে, সেটা যে পথেই হোক না কেন, তাতে সমাজের কারও কিছু আসে-যায় না। সেই টাকা বর্তমান সমাজে পণ্য/সেবা তো কিনতে পারেই, কিনতে পারে সম্মান-প্রতিপত্তিও।
আগেই বলেছিলাম বয়ানের শক্তি নিয়ে। বয়ানই নির্ধারণ করে একটা সমাজে আমরা আসলে কী দেখব। আমাদের দেশের জন্য এটা এক ভয়ংকর অশনিসংকেত যে এই রাষ্ট্রে মানুষ টাকার অভাবে কম ভোগ করতে পারায় কিংবা সাময়িক কোনো দুর্বিপাকে টাকার সংকটে পড়ে কম দামে জিনিস কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে লাইন দিতে লজ্জা পায়।
আর্থিক সামর্থ্যের ঘাটতি আদৌ কোনো লজ্জার বিষয় হওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু এ সমাজে এখন এই বয়ান অসংখ্য মানুষ বিশ্বাস করে, কারও আর্থিক সংগতি কম থাকা মানে সে একেবারেই অযোগ্য-তুচ্ছ, তাই সে সমাজে মূল্যহীন। আবার এ সমাজ এই বয়ান তৈরি হয়েছে, যেকোনো মূল্যে টাকা থাকলেই যেকোনোভাবে যথেষ্ট ভোগ করতে পারলেই সমাজে মানুষের সম্মান-প্রতিপত্তিও তৈরি হয়। তাই সব নীতি-আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে কম টাকা থাকা কিংবা দারিদ্র্যের ‘লজ্জা’ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যেকোনো মূল্যে টাকা বানাতে যাবে না কেন মানুষ? অসৎ উপার্জনের বিরুদ্ধে যে সামাজিক বয়ানের বাধা ছিল, সেটা তো উবে গেছে বহুকাল আগেই।
আমরা বুঝতে পারছি তো আমাদের সমাজে তৈরি হওয়া বয়ানগুলো এ রাষ্ট্রকে কোথায় নিয়ে গেছে এবং আরও কোথায় নিয়ে যাবে? বয়ানগুলো আকাশ থেকে পড়েনি। আমরা কেউ এগুলো বানিয়েছি, কেউ রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এগুলো শিকড় গেড়ে বসার পরিবেশ তৈরি করেছি, কেউ প্রচার করেছি, কেউ পছন্দ না হলেও চুপ থেকে বয়ানকে পোক্ত হতে দিয়েছি; সর্বোপরি কেউ পাল্টা বয়ান তৈরি করে এই বীভৎস বয়ানগুলো বাধা দেওয়ার লড়াই করিনি।
ডা. জাহেদ উর রহমান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষক