নাগরিকদের তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে এগিয়ে নিতে বহু দেশ জনসমাগমস্থলে বিনা মূল্যের ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ নানা স্থানে ছোট পরিসরে অনেক আগেই এর যাত্রা শুরু হয়েছে। চমকে দেওয়ার মতো ভালো খবর হলো, সরকার সিলেট শহরকে বাংলাদেশের প্রথম ‘ওয়াই-ফাই সিটি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সংবাদমাধ্যমের সুবাদে জানা যাচ্ছে, সিলেট নগরের ৬২টি এলাকার ১২৬টি স্থানে ফ্রি ওয়াই-ফাই সেবা চালুর মধ্য দিয়ে এর বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১০০টি পয়েন্টে মঙ্গলবার থেকেই এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। নগরে বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় বাকি জায়গাগুলোতে আপাতত ওয়াই-ফাই সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুতের কাজ শেষ হলেই বাকি স্থানগুলোতেও এ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। নগরে থাকা যে কেউ এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সিলেটের ওয়াই-ফাই জোনগুলো তদারক করবে সিলেট সিটি করপোরেশন। এর আগে কক্সবাজার জেলা শহরের ৭৪টি স্থানে ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ধরা যেতে পারে। লক্ষণীয়, দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ১০ কোটির ওপরে এবং এদের সবাই সস্তা বিনোদনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত—সবকিছুর সঙ্গে ইন্টারনেটের সম্পৃক্ততা দিন দিন এতটাই সংশ্লিষ্ট হয়ে উঠছে যে এই সেবা প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠছে। সমস্যা হচ্ছে এই সেবা এখনো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। ধীরে ধীরে দেশের অন্য এলাকাগুলোকেও সিলেটের মতো ফ্রি ওয়াই-ফাই জোনে নিয়ে আসতে পারলে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে বহাল রাখা। জনতার তিক্ত অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেয়, এই দেশে বহু মহৎ উদ্যোগের শুরুটা ভালো হলেও তা রক্ষণাবেক্ষণ পর্যায়ে গিয়ে আটকে যায়। ওয়াই-ফাই সেবা নেওয়ার সময় সেবাগ্রহীতার ব্যক্তিগত তথ্য যাতে রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হাতিয়ে না নিতে পারে, সেদিকেও নজর দেওয়া জরুরি। একজন সেবাগ্রহীতাও যেন বিনা পয়সায় সেবা নিতে এসে স্পর্শকাতর তথ্য হারানোর ঝুঁকিতে না পড়েন, সেটি নজরদারি কর্তৃপক্ষ হিসেবে সিটি করপোরেশনকেই নিশ্চিত করতে হবে।