কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের ১৫০ কিলোমিটার নালা ও ৬টি খাল ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ জন্য যেমন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন দায়ী, তেমনি দায়ী নগরবাসীও।
সোমবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা চর্থা খাল, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ খাল, টমছম ব্রিজ খাল, রেসকোর্স জেলখানা খাল, সুলতানপুল ও নোয়াপাড়া খাল কয়েক মাস ধরে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ফলে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমেছে এসব খালে। একইভাবে পরিষ্কার না করায় ১৫০ কিলোমিটার নালা ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। আবর্জনার দুর্গন্ধে এ এলাকার মানুষের জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। পরিবেশও দূষিত হয়ে পড়েছে।
যেকোনো নগরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এ ক্ষেত্রে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন যে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না, তা তো স্পষ্ট। তাদের উচিত দ্রুত নালা ও খাল থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা। তবে সিটি করপোরেশনের মেয়রের বক্তব্য হচ্ছে সচেতনভাবে হোক আর অসচেতনভাবে হোক, নগরবাসীই ময়লা ফেলছে নালা ও খালে, যা কোনোভাবেই তাদের করা উচিত নয়।
কুমিল্লা সিটি মেয়রের এ বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি। নগরবাসীর নাগরিক সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে। তাদের এ সুবিধা দেওয়ার কর্তৃপক্ষ হচ্ছে সিটি করপোরেশন। কিন্তু তাই বলে নগরবাসীর যা খুশি তাই করার অধিকার নেই। তারা যেখানে খুশি সেখানে ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষিত করবে, আর সিটি করপোরেশন তা পরিষ্কার করবে, তা হতে পারে না। ময়লা–আবর্জনা ফেলার ব্যাপারে নগরবাসীকেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ময়লা–আবর্জনা ফেলার এ সমস্যা শুধু কুমিল্লা নগরেই নয়, রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য নগরেও বিদ্যমান। একদিকে বাসিন্দারা যত্রতত্র ময়লা ফেলছে, অন্যদিকে সিটি করপোরেশন তা সময়মতো অপসারণ করছে না। ফলে ময়লা–আবর্জনা জমে পরিবেশদূষণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন ও নগরবাসী উভয় পক্ষকেই সচেতন হতে হবে।
আমরা চাই কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাওয়া নালা ও খাল দ্রুত পরিষ্কার করবে। পাশাপাশি নগরবাসীও খাল, নালায় ময়লা না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলবে। সরকারের উচিত এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া।