২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ধোবাউড়া গারো পাহাড়

নয়নাভিরাম নৈসর্গিক আবহ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ তখনই একটি বড় সম্পদ হয়ে ওঠে, যখন পর্যটকেরা সেখানে সহজে যেতে পারেন। যখন কোনো জায়গার পর্যটনমূল্য থাকার পরও পর্যটকেরা সহজে সেখানে যেতে পারেন না, সেটি তখন আর সম্পদ হয়ে উঠতে পারে না। সে সম্পদ তখন হয়ে ওঠে দুর্গম অরণ্যের গুপ্তস্থানে রাখা সেই তাল তাল সোনার মতো, যার দাম আছে কিন্তু উপযোগিতা বা প্রয়োজন মেটানোর ক্ষমতা নেই। সে সম্পদ থাকা আর না থাকা—এ দুয়ের মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুর—গা ঘেঁষাঘেঁষি করা এই দুই উপজেলার অপার নৈসর্গিক দৃশ্যসম্পদের দশা এখন সেই আহরণ-অযোগ্য সোনার মতো।

এই দুই উপজেলার বিশাল অংশজুড়ে আছে দৃষ্টিনন্দন গারো পাহাড় ও চিনামাটির পাহাড়। আছে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর স্বচ্ছ পানির সুমেশ্বরী নদী। পর্যটনমূল্যের দিক থেকে এই জায়গার অপার সম্ভাবনা আছে। শুধু নিরাপদে ও ঝক্কিহীনভাবে সেখানে যাওয়ার মতো রাস্তা না থাকায় এই পর্যটন মূল্যসমৃদ্ধ দৃশ্য-সম্পদকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

ধোবাউড়া শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ভারত সীমান্ত। ধোবাউড়া ও দুর্গাপুর—এই দুই উপজেলায় যে গারো পাহাড়, চিনামাটির পাহাড় এবং স্বচ্ছ পানির সুমেশ্বরী নদী আছে, তা পর্যটকদের টানে। কিন্তু রোমাঞ্চপ্রিয় তরুণেরা ছাড়া বৃদ্ধ ও শিশুদের পক্ষে এই সৌন্দর্য উপভোগ করা খুবই দুরূহ। কারণ একটাই—সেটি হলো বেহাল সড়ক।

ধোবাউড়া হয়ে বা শ্যামগঞ্জ বাজার ও নেত্রকোনার পূর্বধলা হয়ে সড়কপথে গারো পাহাড়ে যাওয়া যায়। তবে দুটি পথই খুব দুর্গম। এসব সড়ক দিয়েই পর্যটকেরা গারো পাহাড়ে যান। সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ায় সেখানে হাতে গোনা কিছু পর্যটক আসেন। এ কারণে গারো পাহাড়ের আশপাশে এখনো পর্যটনশিল্প বিকাশ লাভ করেনি।

ময়মনসিংহ থেকে ধোবাউড়া শহর পর্যন্ত সড়কটির তারাকান্দা উপজেলার কেন্দুয়া বাজার থেকে ধোবাউড়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশ বেহাল। সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত। সঙ্গে ধুলার অত্যাচার। ধোবাউড়া শহর থেকে কলসিন্দুর বাজার হয়ে গারো পাহাড়ে যাওয়ার প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগই ভাঙাচোরা। হাতে গোনা কিছু তরুণ পর্যটক এসব ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে যান।

এ অবস্থায় এখানকার সড়ক যদি উন্নত করা যায়, তাহলে পুরো এলাকা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। যথার্থ পর্যটন এলাকা হলে স্থানীয় মানুষের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য তৈরি হবে। পর্যটনকে ঘিরে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সেখানকার সড়কব্যবস্থা উন্নত করা জরুরি।