মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহানের অভিমত-কলামে ‘সাংবাদিক রোজিনার কারাবাস আমাদের কী বার্তা দিল’ লেখাটি এ দেশের জনগণকে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দেবে। বিশেষ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহানের সুপারিশ ও আমার প্রত্যাশা এই যে ‘সরকার এবং সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা আলোচনার মাধ্যমে অচিরেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন করা এবং বর্তমানে প্রচলিত নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী বলে বিবেচিত বিভিন্ন আইনের ধারা বিলোপ করার ব্যাপারে একটা ঐকমত্যে আসতে সক্ষম হবেন এবং সরকার সে ব্যাপারে নিশ্চয়ই কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।’ ষাটের দশকে আইয়ুব-মোনায়েমের শাসন আমলে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর যে নিপীড়ন ও কালাকানুনের অপপ্রয়োগ ঘটেছিল, তার তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানের প্রথম অধ্যায়টি ছিল ‘মৌলিক অধিকার’। যার প্রথম অনুচ্ছেদেই বলা হয়েছে (২৬ অনুচ্ছেদ-১) ‘এই ভাগের বিধানাবলির সহিত অসামঞ্জস্য সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান প্রবর্তন হইতে সকল আইনের ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে।’ অধ্যাপক রওনক জাহানসহ এ দেশের সব মানুষের সেই প্রত্যাশা সংবিধানের প্রথম মৌলিক অধিকারই স্থান পেয়েছিল। তাই ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর official secrets act, 1923 (অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩) বাতিল হয়ে গেছে।
১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানের জন্মতারিখ থেকে ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ শাসনামলের সময়কার অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাংলাদেশের নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং অসামঞ্জস্য থাকার কারণে আইনটি অস্তিত্বহীন হয়ে গেছে বলে আমার ধারণা।