'মাদার সিরিয়াস কাম শার্প'
সেকালে মানুষের জরুরি যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল টেলিগ্রাম। আমাদের গল্প–উপন্যাস ও নাটক–সিনেমায় বারবারই এসেছে টেলিগ্রামের প্রসঙ্গ। খণ্ড খণ্ড স্মৃতির মধ্য দিয়ে এ রচনায় মূর্ত হয়েছে হারিয়ে যাওয়া এক কাল
সেই কবে, আমাদের অনতিতরুণ বয়সে আমরা প্রায় সবাই অভিনব ও বিচিত্র এক বইয়ের প্রেমে পড়েছিলাম। বইটির নাম দৃষ্টিপাত। লেখক হলেন যাযাবর। যাযাবর যে ছদ্মনাম, তা আমাদের জানা ছিল না। কী কারণে জানি না, বইটির কথা উঠলে আমরা বলতাম, যাযাবরের দৃষ্টিপাত।
এখন যাঁরা বৃদ্ধ কিংবা অতিবৃদ্ধ, তাঁদের কাছে এখনো বইটির পরিচয় দৃষ্টিপাত নয়, যাযাবরের দৃষ্টিপাত। বড় শহরের কথা জানি না,১৯৫৭-৫৮ থেকে ১৯৬৪-৬৫ পর্যন্ত মফস্বলের তরুণ, অনতিতরুণ, যুবক—সকলেই দৃষ্টিপাত-এ মজেছিলেন। দৃষ্টিপাত বইটিতে সুভাষিত বাক্য ছিল বেশ অনেক। সেগুলোর অধিকাংশই তখন তাঁদের মুখে মুখে ফিরত।
মফস্বলে তখন তারুণ্যের কালটা ছিল বিরহবিলাসী। রেডিওতে তখন বিরহের গানের আধিক্য। ‘চিঠি’ বলে একটা গান তখন অসম্ভব জনপ্রিয়। স্কুলের এক ছুটির দিনে খালেক ভাই নামে আমার ফুফাতো বড় ভাই আমাদের ডাকলেন ‘চিঠি’ গানটা শোনানোর জন্য। ভাই ক্লাস নাইনে আর আমরা সবাই সেভেন, এইটে। ভাই গান ধরলেন, ‘তুমি আজ কত দূরে’। বেশি দূরে যাননি, ফুফার আওয়াজ কানে এল,‘কে রে বারবার হেঁচকি তুলছে?’ ফুফা ছিলেন প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
বিরহের আরও তিনটি গান তখন খুব বিখ্যাত। যাঁদের কণ্ঠে খানিকটা সুর ছিল, ‘চিঠি’ ছাড়াও তাঁরা গাইতেন,‘আমি চলে গেলে, পাষাণের বুকে লিখো না আমার নাম’, ‘আজ দুজনার দুটি পথ ওগো দুটি দিকে গেছে বেঁকে’ কিংবা ‘এত সুর আর এত গান যদি কোনো দিন থেমে যায়’ ইত্যাদি।
বিরহ ব্যাপারটা বুঝে ওঠা এবং প্রেমে পড়ার আগেই আমাদের অদ্ভুত মানসিক সময়ে অকস্মাৎ আমাদের হাতে এসে গেল দৃষ্টিপাত বইটি। বইটিতে কী আছে, সেটা এখানে প্রাসাঙ্গিক নয়। তবে বইটি পড়তে গিয়ে কোথাও থামতে পারিনি। একটানা পড়ে গেছি। আমি একা নই, সবাই।
প্রেমের প্রবঞ্চনা কিংবা ব্যর্থ প্রেমের জ্বালা-সম্পর্কিত ধারণা থেকে আমরা তখনো অনেক দূরে। তবু দৃষ্টিপাত বইয়ের শেষ অনুচ্ছেদে আটকে গেলাম। মাত্র চারটি ছত্র। কিন্তু ওই চারটি ছত্রই ব্যর্থ প্রেমের বিচিত্র বিরহরহস্যে আমাদের আচ্ছন্ন করে ফেলল। অনেকের তো মুখস্থই হয়ে গেল পুরো অনুচ্ছেদটা। অনেকের মুখে তখন একটাই কথা, ‘প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ।’ অনেকেই এইটুকু বলে থেমে যেতেন। কেউবা গড় গড় করে বলে যেতেন পুরোটা।
দৃষ্টিপাত-এর অনেক কিছুই আমাদের প্রবলভাবে আকৃষ্ট করছিল। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বইটার ঠাঁই হয়নি, কিন্তু বইটা আসন গেড়েছিল আমাদের মনে।
পনেরো কি সতেরো বছর আগে পত্রিকায় খবর এল, বাংলাদেশে টেলিগ্রাম বন্ধ। সংক্ষিপ্ত সংবাদ—তবে টেলিগ্রামের মতো সংক্ষিপ্ত বার্তায় নয়। মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল। টেলিগ্রামের সঙ্গে অনেক দিন থেকেই সম্পর্ক নেই। তাতে কী? টেলিগ্রাম তো আমাদের জীবনের আবেগময় এক অনুষঙ্গ। টেলিগ্রাম আমাদের হাসিয়েছে, কাঁদিয়েছে, আনন্দের বার্তা এনে দিয়েছে, শোক-বিহ্বল করেছে। কী অসাধারণ প্রভাব ছিল টেলিগ্রামের। চার থেকে বড়জোর আটটি শব্দের টেলিগ্রাম বার্তা, তাতেই অনেক কিছু বলা হতো। বোঝা যেত অনেক কিছু। শব্দ গুনে হিসাব করা হতো টেলিগ্রামের মাশুল। মানুষের আবেগ তো বেহিসাবি। কিন্তু টাকার কাছে হার মানত আবেগ। তাই টেলিগ্রামের ভাষা ছিল আলাদা।
টেলিগ্রামের বিদায়ে সাতসকালে মনের মধ্যে যে বিষণ্নতা তৈরি হয়েছিল, অকস্মাৎ তার অবসান ঘটল দৃষ্টিপাত বইয়ের কল্যাণে। কেন জানি না, দৃষ্টিপাত কখনো মন থেকে হারিয়ে যায়নি। মনে এল, ‘আধুনিক বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ, কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ’। মনটা প্রশান্তিতে ভরে উঠল। কথাটা পড়েছি, আবার অনেকের মুখে শুনেওছি, কিন্তু জীবনের সঙ্গে কখনো মিলিয়ে দেখিনি। বলাবহুল্য, শুধু এই অতি সাধারণ কথাটার জন্যই দৃষ্টিপাত নিয়ে এত প্যাঁচাল পাড়া, যাকে বলে ধান ভানতে শিবের গীত।
টেলিগ্রামের ভাষার সংক্ষিপ্তি নিয়ে মজার মন্তব্য পাওয়া যায় রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্রে। ছিন্নপত্র-এর এক পত্রে তিনি লিখছেন, ‘...আজ তোর কাছ থেকে টেলিগ্রাম পেলুম যে: Missing gown lying post office। এক অর্থ হচ্ছে হারা গাত্রবস্ত্র ডাকঘরে শুয়ে আছেন। আরেক অর্থ হচ্ছে, গাউনটা মিসিং এবং পোস্ট অফিসটা লাইং।’
রবীন্দ্র-রসিকতা অথবা টেলিগ্রামের প্রতি রবীন্দ্রনাথের অনাসক্তির বিবরণও পাওয়া যায় একই পত্রে। তিনি লিখছেন, ‘...আর তারে চড়ে টেলিগ্রাফ এলেন—কোথাও পথশ্রমের কোনো চিহ্ন নেই,...হড়বড় তড়বড় করে যে দুটো বললেন...তার মধ্যে ব্যাকরণ নেই, ভদ্রতা নেই, কিছু নেই—একটা সম্বোধন নেই, একটা বিদায়ের শিষ্টতা নেই...কেবল কোনোমতে তাড়াতাড়ি কথাটা যেমন-তেমন করে বলে ফেলে দায় কাটিয়ে চলে যেতে পারলে বাঁচে।’
রবীন্দ্রনাথের এই পত্র ১৮৯৩ সালের মে মাসে লেখা। তখন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে টেলিগ্রামের মৃত্যু পর্যন্ত টেলিগ্রাম তার একই চরিত্র বজায় রেখেছিল। তার আগের অবস্থার কথা জানা নেই।
টেলিগ্রামের সংক্ষিপ্ত বার্তা নিয়ে কত রসিকতা, কত যে কাণ্ড ঘটেছে, তার ইয়াত্তা নেই। টেলিগ্রাম নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা রকমের চুটকি গল্প। ‘কাম শার্প’ কথাটি যে কতজনের মুখে ‘কাম সারা’ হয়ে গেছে, তারও কোনো হিসাব নেই।
টেলিগ্রামের যে ফরম, সেটা পূরণ করা ছিল মহা এক ঝামেলার ব্যাপার। ফরমের একটা ঘরে একটা শব্দ, এক ঘর থেকে আরেক ঘরে গেলেই বিপদ। ফরম বাতিল।
ঝামেলা ছিল আরও। বড় হাতের ইংরেজিতে পূরণ করতে হতো টেলিগ্রাম করার ফরম। আমরা ছোটবেলায় ইংরেজি ক্যাপিটাল লেটারকে বলতাম বড় হাতের ইংরেজি। কেন যে বলতাম, তার উত্তর তখন খুঁজিনি। খুঁজলেও যে উত্তর মিলত, এমন মনে হয় না। আর উত্তর এখন তো মাথা খুঁড়লে পাওয়া যাবে না।
যা-ই হোক, ইংরেজি ক্যাপিটাল লেটারে টেলিগ্রাম ফরম একবারে পূরণ করতে পেরেছেন এমন প্রতিভাবান মানুষের তখন সাক্ষাৎ পাওয়া ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। প্রায় প্রত্যেকেরই ক্যাপিটাল আর স্মল লেটারে জট পাকিয়ে যেত। জট ছাড়াতে গেলেই বাতিল হয়ে যেত ফরম। এ রকমটা যে ঘটবে, এমন কথা ভেবেই হয়তো টেলিগ্রাম ফরম কাঠের একটা ট্রেতে পাবলিকের হাতের নাগালে রাখা হতো। বারবার চাইতে হতো না।
টেলিগ্রাফের সঙ্গে প্রথম পরিচয় রেলস্টেশনে ১৯৫৬-তে। স্টেশনমাস্টার সাহেবের টেবিলের কোনায় ছোট্ট একটা যন্ত্র। পিতলের নানা আকারের ছোট-বড় পাতে তৈরি। ওপরে একটা চওড়া পাত ঢেঁকির মতো ওঠানামা করছে বিরামহীনভাবে। সেটারই সামনেটা বোতমের মতো গোলাকার। স্টেশনমাস্টার সাহেব মাঝেমধ্যে এসে সেটা টিপছেন আবার কান পেতে শব্দ শুনছেন। মনে পড়ে, রেলস্টেশনের টেলিগ্রাফ যন্ত্র অবিরাম ধ্বনি তৈরি করে যেত। ধ্বনিগুলো ছিল বিচিত্র ঢঙের।
বাবার কাছে শুনতাম, এই ধ্বনি সাধারণ ধ্বনি নয়। এ হলো টেলিগ্রাফের ভাষা—এ ভাষা ইংরেজি। কেবল পোস্ট মাস্টার সাহেবই বোঝেন এ ভাষা। এ ব্যাপারে তাঁর ট্রেনিং নেওয়া আছে। বাবার কাছ থেকেই জেনেছিলাম, একেকটা ধ্বনি একেক বর্ণ উচ্চারণ করে। বর্ণ উচ্চারণ এবং তা অনুধাবনের পদ্ধতিকে বলা হয় মোর্স কোড।
রেলের টেলিগ্রাফ ছিল শুধু রেলের জন্যই। টেলিগ্রামের জন্য ছিল তখন নিদেনপক্ষে মহকুমার সদর পোস্ট অফিস। টেলিগ্রাফের ধ্বনি শুনে পোস্ট মাস্টার একটা করে শব্দ লিখতেন। সেটাই ছিল টেলিগ্রাফ। লেফাফায় পুরে ডাকপিয়ন সেই টেলিগ্রাম প্রাপকের ঠিকানায় পৌঁছে দিতেন।
যে টেলিগ্রাফের কথা বলছি, তা ছিল টরে-টক্কা টেলিগ্রাফ। টেলিগ্রাফ যন্ত্রে বিবর্তন-পরিবর্তন বেশ ঘটেছিল। কিন্তু আমার মুগ্ধতাবোধ আটকে ছিল সেই টক্কা টরে টরেতেই। সেই কালে অপরেশ লাহিড়ির একটি গান বেশ বিখ্যাত হয়েছিল, ‘টক্কা টরে টরে খবর এসেছে ঘর ভেঙেছে দারুণ ঝড়ে, তারেরও ভাষায় সংকেতে টক্কা টরে...’।
এ কালের ছোটরা কেন জানি না খুব কম বিস্মিত হয়। মুগ্ধতার ঘোর তাদের সহজে অবিষ্ট করে না। অথচ আমাদের ছোটবেলা ছিল ক্ষণে ক্ষণে বিস্মিত হওয়ার। যা দেখতাম, তাতেই ঘোর লেগে যেত। কারও একার না, সবার। নতুন কিছু দেখে আমরা দারুণভাবে প্রভাবিত হতাম।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালীর অপু টেলিগ্রাফের তার ও খুঁটি দেখে মুগ্ধ হয়েছিল। বাড়ি ফিরে উঠোনে টাঙায় ‘টেলিগিরাপের তার’। পথের পাঁচালী তখনো পড়া হয়নি। অথচ আমিও স্টেশন থেকে বাড়ি ফিরে এসে একই কাজ করেছি।
টেলিগ্রামের আদান-প্রদান তখন হতো শহরে চাকরি করা ছেলে অথবা কলেজে পড়তে যাওয়া ছেলের পরিবারের মধ্যে। ‘মাদার সিরিয়াস কাম শার্প’ তখন প্রবাদতুল্য একটি টেলিফোন বার্তা। আমাদের সাদা-কালো যুগের সিনেমা এই বার্তাকে চমৎকারভাবে কাজে লাগিয়েছিল। অভিমানী প্রবাসীপুত্রের বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়িতে আনার জন্য পিতার টেলিগ্রাম, ‘মাদার সিরিয়াস...’। উদ্বিগ্ন পুত্র বাড়িতে এসে দেখে, মা দিব্যি বারান্দায় বসে উলের সোয়েটার বুনছেন।
এই বিখ্যাত বার্তা চাকরি করা ছেলের অফিসেও যেত, ছেলে যেন ছুটি পায় এই আশায়। জীবনে ট্র্যাজেডি-কমেডি দুই-ই আছে। সিনেমা ও জীবনে দুটোই অবশ্য ঘটত।
টেলিগ্রামের সংক্ষিপ্ত বার্তা তখন হরেক কিসিমের। বার্তার শব্দ নির্ভর করত উদ্দেশ্যের ওপর। চাকরিজীবীরা ছুটিতে বাড়ি এলে প্রায়ই ‘ইল’ হতেন। অফিসে টেলিগ্রাম যেত ‘সাডেনলি ইল এক্সটেন্ড লিভ’ অথবা ‘সিরিয়াসলি ইল লিভ সলিসিটেড’। বড় হয়েছি গ্রামে। এর চেয়ে বেশি উদাহরণ তাই বাড়ানো গেল না।
টেলিগ্রাম প্রাপকের কাছে পৌঁছানো হতোই। টেলিগ্রাম মানেই জরুরি বার্তা—আনন্দের হতে পারে, শোকেরও হতে পারে। তাই টেলিগ্রামের প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হতো। তবে ইংরেজ আমলে অবিভক্ত বাংলায় একটি জরুরি টেলিগ্রাম ‘অ্যাড্রেসি নট ফাউন্ড’ সিলসহ ফেরত এসেছিল। টেলিগ্রামটির প্রেরক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রাপকের নাম কাজী নজরুল ইসলাম। টেলিগ্রাম প্রেরণের তারিখ ২৩ মে ১৯২০। বার্তাটি ছিল: গিভ আপ হাঙ্গার স্ট্রাইক আওয়ার লিটারেচার ক্লেমস ইউ। বাঙালিমাত্রেই ঘটনাটি জানেন। বিবরণ প্রদান নিষ্প্রয়োজন।
যতটা সাধারণভাবে টেলিগ্রাম উঠে গেল, টেলিগ্রাম ব্যাপারটা কিন্তু অতটা সাধারণ ছিল না। শেষ পর্যন্ত মোবাইল ফোনের বেগের দাপটে আমাদের আবেগে মোড়ানো টেলিগ্রাম নিঃশব্দে বিদায় নিল। সেই যাযাবরের দৃষ্টিপাতকে টেনে আনছি আবার, ‘দূরকে নিকট এবং দুর্গমকে সহজাধিগম করেছে যে বিজ্ঞান তার জয় হোক।’
আবিষ্কার: ১৮৩৬ সালে মোর্স লিপি আবিষ্কার ও ১৮৩৭ সালে পূর্ণাঙ্গরূপে টেলিগ্রাফ আবিষ্কৃত হয়।
আবিষ্কারক: স্যামুয়েল মোর্স (যুক্তরাষ্ট্র)।
প্রথম টেলিগ্রাম: ১৮৪৪ সালে ওয়াশিংটন থেকে বাল্টিমোরে।
প্রথম বার্তা: what hath God wrought? (ঈশ্বর কী করেন?)
প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহার: ১৮৪৬ সালে (রেলওয়েতে)।
ভারতে প্রথম টেলিগ্রাম: কলকাতায় ১৮৫০ সালে।
অবলুপ্তি: ১৯৯৪ সালে মোর্স কোডের অবলুপ্তি ঘটে এবং কম্পিউটারে টেলিগ্রাম চালু হয়।
শেষ টেলিগ্রাম: সর্বশেষ টেলিগ্রাম ব্যবহার হয় ২৯ অক্টোবর ২০১৭ সালে বেলজিয়ামে। সূত্র: উইকিপিডিয়া