রাজকন্যার গোলাপ
অনেক দিন আগের কথা। এক রাজ্যে বাস করত এক রানি আর এক রাজা। সে রাজ্যে প্রজারা ইচ্ছেমতো চলতে পারত। রাজ্যে বেশির ভাগ এলাকায় বাগান ছিল। বাগানে অনেক রকম ফুল—বেলি, গাঁদা, ডালিয়া, গোলাপ। গাছে গাছে ফলও অনেক ধরত। আম, জাম, কমলা, কাঁঠাল। রাজা-রানিরা থাকত প্রাসাদে। প্রাসাদের পেছনেও সুন্দর একটি বাগান ছিল। বাগানের সামনে ছিল একটি দিঘি। দিঘিটাতে সব সময় পদ্ম আর শাপলা ফুল ফুটে থাকত।
রাজা-রানির ছিল এক মেয়ে। সবচেয়ে আদরের, সবচেয়ে প্রিয়। একদিন সেই রাজকন্যা বাগানের সব রকমের ফুল তুলছিল, মালা গাঁথবে বলে। সব রকমের ফুল তোলা হয়ে গেলে রাজকন্যা গিয়ে দাঁড়াল গোলাপগাছের সামনে। দেখল, লাল গোলাপগুলো দেখতে খুব সুন্দর। রাজকন্যা মনে মনে ভাবল, এগুলো দিয়ে মালা গাঁথলে তো মালাটা খুবই সুন্দর হবে। আপাতত এগুলো দিয়ে মালা গেঁথে দেখি।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ। রাজকন্যা কিছু গোলাপ ফুল নিয়ে বসল দিঘির পাড়ে। আর একটি ফুল হাতে নিতেই দেখল, ফুলটি হীরাখচিত! রাজকন্যা এর আগে কখনো এমন হীরাখচিত ফুল দেখেনি। রোদের আভা পেয়ে হীরাগুলো জ্বলজ্বল করছে। রাজকন্যা হাঁ করে চকচকে হীরাখচিত ফুলটির দিকে তাকিয়ে রইল।
এদিকে দুপুরের খাওয়ার সময় হয়ে গেছে। রাজকন্যা দুপুরের খাবারের কথা ভুলে গিয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে ফুলের দিকে তাকিয়ে আছে তো আছেই। অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে সে ভাবল, আরে, এগুলো বিক্রি করে তো অনেক টাকা আয় হবে। সেই টাকা রাজ্যের গরিব মানুষের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দিতে পারি।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। রাজকন্যা হীরাখচিত গোলাপ ফুলটি বিক্রি করে যে টাকা পেল, তা দান করে দিল গরিব মানুষের মধ্যে। রাজা–রানি তা দেখে খুব খুশি। তারা বুঝল, নিজের যা আছে তা অন্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া আন্তরিকতার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয়।
তৃতীয় শ্রেণি, মাহমুদুল হাসান স্যাপার প্রাইমারি স্কুল, নাটোর