এদুয়ার্দো গালিয়ানো
পৃথিবীর বিকল্প ইতিহাসের গডফাদার যিনি
পৃথিবীর ইতিহাস সম্পর্কে আমরা যা জানি, তার বাইরে গিয়ে যিনি অন্য এক ইতিহাস আমাদের সামনে হাজির করেছেন তিনিই এদুয়ার্দো গালিয়ানো। আজ লাতিন আমেরিকার এই লেখকের জন্মদিন। ফুটবল, রাজনীতি, ক্ষমতা কাঠামো ইত্যাদিকে তিনি দেখেছিলেন ভিন্ন দৃষ্টিতে। চলুন চোখ ফেরানো যাক তাঁর জগতে।
লাতিন আমেরিকার আর দশজনের মতোই তাঁর স্বপ্নটা ছিল ফুটবলার হওয়ার। নিজের ফুটবলীয় দক্ষতা নিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি বেশ ভালো খেলতাম। বলা যায়, দুর্দান্ত খেলতাম; কিন্তু সেটা রাতের বেলা যখন আমি ঘুমিয়ে থাকতাম।’
বলা বাহুল্য, স্বপ্নে ফুটবল খেলে তিনি ফুটবলার হতে পারেননি; বরং হয়েছেন লাতিন তথা বিশ্বের বিকল্প ইতিহাসের অনবদ্য এক ভাষ্যকার। আপনি চাইলে তাঁকে লাতিন প্রতি-ইতিহাসের গডফাদারও বলতে পারেন। ওহ, এখনো তো তাঁর নামটাই বলা হলো না৷ এতক্ষণ বলছিলাম এদুয়ার্দো গালিয়ানোর কথা।
১৯৪০ সালের আজকের দিনে উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিওতে গালিয়ানোর জন্ম। তাঁর জন্মের সময় গোটা দুনিয়া একটা বিশ্বযুদ্ধ পার করছিল। জন্মের ১০ বছরের মাথায় তিনি সাক্ষী হয়েছেন ‘মারাকানোজ্জো’র। মারাকানায় সেবার ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উরুগুয়ে।
বিশ্বযুদ্ধ ও ফুটবল বিশ্বকাপ দুটিই সম্ভবত ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল গালেয়ানোকে। গোটা জীবন অ্যান্টি–ওয়ার (ভিন্নার্থে শোষণ ও নিপীড়ন বিরোধিতা) ও প্রো-ফুটবলকে আঁকড়ে ধরেছিলেন এই লাতিন মায়েস্ত্রো। তাঁর প্রায় সব লেখাতেও মোটাদাগে এ দুটি বিষয়ের প্রভাবও ছিল স্পষ্ট।
‘আমি মনে করি না লেখকদের রাজনৈতিক হতেই হবে। আমি মনে করি, লেখককে সৎ হতে হবে, যা তাঁরা করছেন সে বিষয়ে সৎ। নিজেকে তাঁরা বিক্রি করবেন না। তাঁরা যেন নিজেদের কাউকে কেনার অনুমতি না দেন। নিজেদের শ্রদ্ধা করতে হবে তাঁদের। মানুষ হিসেবে এবং পেশাদার লেখক হিসেবে নিজেদের মর্যাদা বজায় রাখতে হবে তাঁদের। তাঁরা যা বলতে চান, তা যেন বলতে পারেন।’এদুয়ার্দো গালিয়ানো
একটা নির্দিষ্ট টাইমফ্রেমের ভেতর গালেয়ানোর জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং মৃত্যুর ব্যাপারগুলো ঘটলেও তিনি শেষ পর্যন্ত নিজেকে এসবের বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। সারা জীবন ধরে একটি লেখা তিনি লিখে গিয়েছিলেন। সেটি ছিল লাতিন চোখে দেখা পৃথিবীর ইতিহাস। যদিও সেই ইতিহাস আপনার–আমার চেনা-জানা পথ ধরে কখনোই এগোয়নি। ইতিহাস লেখার জন্য বিকল্প এক ভাষা, বিষয় এবং দৃষ্টিভঙ্গি তিনি আবিষ্কার করে নিয়েছিলেন। আর প্রতিবারই তা ভিন্ন দ্যোতনা নিয়ে সামনে এসেছে। যেখানে তার নায়ক গথাম সিটির সুপারম্যান নন, তাঁর নায়ক মেহিকো সিটির সুপারব্যারিও গোমেজ। একজন রিয়েললাইফ সুপারহিরো।
‘দ্য বুকস অব এমব্রেসেস,’ ‘মিরর’, ‘চিলড্রেন অব দ্য ডেজ’, ‘ফুটবল ইন সান অ্যান্ড শ্যাডো’, তিন খণ্ডের ‘মেমোরিজ অব ফায়ার’ এবং ‘ওপেন ভেইন অব লাতিন আমেরিকা’সহ প্রায় সব বইয়ে তিনি সেই ইতিাহসের গল্পটাই লিপিবদ্ধ করে গেছেন।
‘চিলড্রেন অব দ্য ডেজ’–এর কথাই ধরা যাক। লিপ ইয়ারসহ ৩৬৬ দিনের প্রতিদিনের জন্য আলাদা আলাদা এন্ট্রি লিখেছেন গালিয়ানো। প্রতিটি এন্ট্রি একেকটি রাজনীতি ও সামাজিক দলিল।
যেন একেকটি তিরে বিদ্ধ করেছেন প্রতিষ্ঠিত সত্যকে। যে বাস্তবতা এত দিন ধরে আমাদের সামনে গড়ে তোলা হয়েছে, তার ভিত নাড়িয়ে দিতেই যেন গালিয়ানোর এই প্রচেষ্টা। লিপ ইয়ারের সেই এন্ট্রিটি পড়া যাক। গালিয়ানোর ভাষায়, ‘বছরের সবচেয়ে অদ্ভুত দিন।’ ১৯৪০ সালের এই দিনে আটটি অস্কার পেয়েছিল ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’। ছবিটির দিকে তির ছুড়ে গালেয়ানো বলেছিলেন, অতীতের দাসপ্রথার মনোরম স্মৃতির কথা মনে করে নস্টালজিক হওয়াই ছিল এই ছবির মূল কথা। পৃথিবীর প্রতি হলিউডের মনোভাব কেমন, সেটিই আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চেয়েছেন গালিয়ানো।
এরপর ১০ নভেম্বরের এন্ট্রিতে গালিয়ানো ব্রাজিলীয় চিকিৎসক দ্রাউজিও ভ্যারেলাকে উল্লেখ করে লিখেছিলেন, ‘গোটা বিশ্বে আলঝেইমার রোগ নিরাময়ের খোঁজে যত পয়সা খরচ করা হয়, তার পাঁচ গুণ বেশি খরচ করা হয় পুরুষের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি আর নারীদের স্তন বৃদ্ধির জন্য সিলিকন ব্যবহারে।
তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘আর পাঁচ বছরের মধ্যে সুবিশাল স্তনধারী বৃদ্ধা আর ঋজু পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধ পাওয়া যাবে। কিন্তু মুশকিল হলো, তারা কিছুতেই মনে করতে পারবে না যে ওগুলো দিয়ে কী করা হয়।’
এভাবে চাইলে পুরো বইটাকেই উদ্ধৃতি হিসেবে তুলে দেওয়া যায়। যা এই লেখার পরিপ্রেক্ষিতে অপ্রাসঙ্গিক হওয়ায় সেদিকে আর গেলাম না। তবে তাঁর প্রতিটি বই এমন গনগনে আগুন যেন। ‘ওপেন ভেইনস অব লাতিন আমেরিকা’ লিখে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ক্ষমতাধর সব শক্তিকে। এই বই লাতিন দেশগুলোতে ৫০০ বছর ধরে হয়ে যাওয়া ডাকাতির এক দগদগে নথি।
এই বই নিয়ে চিলির সাহিত্যিক ইসাবেল আয়েন্দে লিখেছিলেন, ‘আপসহীন তীব্রতার সঙ্গে শোষণের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়েছেন গালিয়ানো, তবুও ঐক্য ও সংহতি এবং নিকৃষ্ট লুণ্ঠনের মধ্যে মানুষের বেঁচে থাকার বর্ণনায় বইটি প্রায় কাব্যিক। গালিয়ানোর গল্প বলার মধ্যে একটা রহস্যজনক ক্ষমতা আছে।’
হ্যাঁ গল্প বলার এই ক্ষমতায় গালিয়ানোকে গালিয়ানো করে তুলেছে। তিনি লেখালেখির জন্য সবচেয়ে কঠিন এক পথ বেঁচে নিয়েছিলেন। তীব্র রাজনৈতিক হওয়ার পরও স্লোগানে ভেসে না যাওয়া নিশ্চিত করতে হয়েছে তাঁকে। যদিও নিজের অনুভূতির প্রতি তাঁর সততা ছিল দৃঢ়।
তাই রাজনৈতিক লেখা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর উত্তরটা ছিল এমন, ‘আমি মনে করি না লেখকদের রাজনৈতিক হতেই হবে। আমি মনে করি, লেখককে সৎ হতে হবে, যা তাঁরা করছেন সে বিষয়ে সৎ। নিজেকে তাঁরা বিক্রি করবেন না। তাঁরা যেন নিজেদের কাউকে কেনার অনুমতি না দেন।
নিজেদের শ্রদ্ধা করতে হবে তাঁদের। মানুষ হিসেবে এবং পেশাদার লেখক হিসেবে নিজেদের মর্যাদা বজায় রাখতে হবে তাঁদের। তাঁরা যা বলতে চান, তা যেন বলতে পারেন। শব্দগুলো খাঁটি হতে হবে, আর তা যেন সরাসরি হৃদয় থেকে আসে, না হলেই কৃত্রিম হয়ে যাবে। যখনই তুমি রাজনৈতিক হওয়ার আদেশ জারি করবে, অমনি সেটা সর্বনাশের কারণ হয়ে উঠবে।’
সেই সততায় গালিয়ানোকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে অসামান্য সব রাজনৈতিক মাখান, যার সাহিত্যমূল্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ না থাকলেও এর জন্য গালিয়ানোকে কম মূল্য দিতে হয়নি। ১৯৭১ সালে ‘ওপেন ভেইনস অব লাতিন আমেরিকা’ প্রকাশিত হওয়ার পর নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয় তাঁকে। যেতে হয় নির্বাসনেও। যদিও এই বই তাঁকে এনে দিয়েছিল বৈশ্বিক খ্যাতিও।
২০০৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার হাতে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ এই বই তুলে দেওয়ার পর রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায়। বেস্টসেলারের তালিকাতেও উঠে আসে এই বই। যদিও এসব নিয়ে গালিয়ানোর কোনো মাথাব্যথা ছিল না। বইয়ের বিক্রি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে গালেয়ানো বলেছিলেন, ‘লেখক হিসেবে আমার চলে যাচ্ছে, এটাই যথেষ্ট। এটা সৎ কাজ। বড়লোক হওয়ার জন্য আমি বই লিখিনি। আমার কিছু কথা বলার ছিল।
কত কপি বিক্রি হলো বা বেস্টসেলার লিস্টের কোথায় তা থাকল, তাতে আমর কিচ্ছু যায় আসে না। কিচ্ছুমাত্র না।’ আর খ্যাতি নিয়ে গালিয়ানোর ভাবনাটা ছিল এমন, ‘খ্যাতি হচ্ছে নিমেষেই হারিয়ে যাওয়া সে নারী, যে যাওয়ার সময় একটা চিরকুটও রেখে যায় না।’
হ্যাঁ, বেস্টসেলার হওয়া নয়; বরং গালিয়ানোর হৃদয়–উৎসারিত সেই কথাগুলোয় আজ আমাদের সম্বল। একটা দমবন্ধ ও হাঁসফাঁস সময়ে তাঁর লেখা দিনপঞ্জি বা আয়নার সামনেই আমাদের দাঁড়াতেই হবে। মিরর বা আয়না নিয়ে গালেয়ানো নিজেই বলেছেন, ‘আমার বইগুলো, বিশেষ করে “মিররস” লিখেছি এটা দেখানোর জন্য যে বিশ্বের কোনো জায়গায় অন্য জায়গার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কোনো মানুষই অন্য মানুষের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দাবি করে না।’
ইতিহাসের খণ্ডচিত্রকে উপজীব্য করলেও গালিয়ানো নিজের সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন। ফুটবল নিয়ে তাঁর লেখাগুলোর দিকে চোখ রাখলে আমরা পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারব। ফুটবল যে আজ ক্রমেই পেট্রো–ডলারপুষ্ট বাণিজ্যের হাতিয়ার হয়ে উঠছে, সেই ভবিষ্যদ্বাণী অনেক আগেই করেছিলেন গালিয়ানো। ‘ফুটবল ইন স্যান অ্যান্ড শ্যাডো’ বইয়ের প্রথম লাইনটাই ছিল, ‘ফুটবলের ইতিহাস হচ্ছে, নন্দন থেকে বন্ধনের দিকে এক বিষাদময় যাত্রা।
যখনই খেলাটি শ্রমশিল্পে পরিণত হলো, তখনই খেলার আনন্দ থেকে প্রস্ফুটিত হওয়া সৌন্দর্যকে শিকড়সহ উপড়ে ফেলা হলো। আমাদের এই আধুনিক যুগে যা কিছু অপ্রয়োজনীয়, সেটিকেই খারিজ করে দেয় পেশাদার ফুটবল। আর অপ্রয়োজনীয় সংজ্ঞাত তো আমাদের জানায়, যেখান থেকে টাকাপয়সা কামানো যায় না।’
ঠিক যেন ফুটবলের বর্তমান সময়টাকেই লিখেছেন গালিয়ানো। যখন অর্থের হাতছানিতে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নান্দনিকতাকে পেছনে ফেলে সবাই ছুটে যাচ্ছে পেট্রোডলারের সন্ধানে। তবে এই কঠোর-কঠিন সত্যি কথাগুলোতেও নিজের কাব্যিক ঢংকে ছেড়ে দেননি গালিয়ানো।
কবিতার ভাষা ছুঁয়ে তিনি লিখেছেন ফুটবলের এই বিকল্প ইতিহাস। তবে এই বইয়ের বাইরেও গালিয়ানো ফুটবল নিয়ে দারুণ সব গদ্য লিখে গেছেন। গোলকিপারদের নিয়ে লিখেছেন, ‘লোকে বলে, তারা যেদিকে হেঁটে যায়, সেদিকে ঘাস ওঠে না।’ তবে ফুটবলকে গালিয়ানো কখনো সাধারণ একটি খেলা হিসেবে দেখেননি। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজসহ নানা বিষয়কে তিনি তলিয়ে দেখতে চেয়েছেন।
তেমনই একটি গদ্যে গালিয়ানো লিখেছিলেন, ‘যারা ফুটবলকে পিশাচায়িত করে এবং চূড়ান্ত অর্থে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করে, তারাও ফুটবল ফ্যানাটিকদের মতোই যুক্তিহীন ও উগ্র। তারাও উগ্র ফুটবল সমর্থকদের মতো একই ভুল করে—যাঁরা বিশ্বাস করেন ফুটবল হচ্ছে জনগণের জন্য আফিম। আর এটি ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদদের জন্য ভালো ব্যবসা।
তাঁরা মনে করেন, খেলার মাঠ একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। তাঁরা বুঝতে পারেন না যে তাঁরাও আসলে একই পৃথিবীর মানুষ। সত্যি কথা বলতে, এমন কোনো আবেগের কথা কি বলা যাবে, যা কি না আদৌ পৃথিবীব্যাপী কর্তৃত্বময় শক্তি দ্বারা ব্যবহার ও পরিচালিত হয় না?’
ইতিহাসের গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে গালিয়ানো লিখেছেন অসামান্য সব স্বপ্নের কথাও। ‘দ্য বুক অব এমব্রেস’ খুললে আমরা খুঁজে পাব তাঁর সেই স্বপ্নের গল্পগুলো। বইটিতে ইতিহাস, কল্পনা, স্বপ্ন ও বাস্তবতা সেখানে হাত ধরাধরি করে এগিয়েছে। গালিয়ানো কখনো চাননি তাঁর স্বপ্নগুলো হারিয়ে যাক। সব সময় চেয়েছেন স্বপ্নগুলোকে ফিতে দিয়ে বেঁধে কোনো নির্জন দ্বীপে ফেলে আসতে।
কে জানে, তিনি হয়তো চেয়েছিলেন পরবর্তী প্রজন্মের কেউ বয়ে নিয়ে যাক হেলেনার চোখ দিয়ে দেখা তাঁর স্বপ্নগুলো। গালিয়ানো আজ নেই। ২০১৫ সালে তিনি অন্য লোকে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বিকল্প ইতিাহসের প্রাসঙ্গিকতা খুব সহজেই শেষ হচ্ছে না। যখনই পৃথিবীতে একনায়ক, নিপীড়ক এবং অত্যাচার মাথা তুলে দাঁড়াবে, তখনই তাঁর শালপ্রাংশু বুকে আঘাত করার জন্য গালিয়ানোর লেখা প্রতিবিম্ব আকারে হাজির থাকবে।