ম্যাগনোলিয়ার ছায়ায় পুস্তক হাতে গ্রন্থকীট

গ্যারেজ বই বিক্রি। আমেরিকানরা তাদের পুরোনো অনেক দিনের ব্যবহার করা জিনিসপত্র ছুটির দিনে গ্যারেজে সাজিয়ে রেখে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছবি: লেখক

যুক্তরাষ্ট্রের আমহার্স্ট শহরের জোনস লাইব্রেরির ইমারতটি ভিক্টোরীয় ধাঁচের। বেলেপাথরের ভারী ফাউন্ডেশনের জন্য প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো দালানটিকে বাইরে থেকে দেখতে ধূসর ও রুখুসুখু মনে হলেও এর ভেতরে সম্পূর্ণে কাচের ছাউনি দেওয়া আঙিনায় বসে পত্রিকা বা ম্যাগাজিন পড়ার বন্দোবস্ত পড়ুয়াদের খুব প্রিয়। এ লাইব্রেরির করিডরে ঝোলানো আছে গেল শতকের বেশ কিছু চমৎকার তৈলচিত্র, শিশুদের খেলাধুলার জন্য স্বতন্ত্র পরিসর এবং অপর্যাপ্ত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন বৃদ্ধদের জন্য বড় ফন্টের বইপত্র নিয়ে নানান আকৃতির আঁতশি কাচের বিশাল আয়োজন। লাইব্রেরিতে এলে পরিচিত কিছু মানুষজনের সঙ্গে মোলাকাতও হয়। তাঁদের মধ্যে একজন আদেলফ্রেদো আলফানসো। আমি নিউইয়র্ক টাইমস পড়তে পড়তে দেখি, তিনি কাচের ক্যাসকেটে রাখা কবি রবার্ট ফ্রস্টের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির দিকে ধুন ধরে তাকিয়ে আছেন। পত্রিকা দেখা শেষ হলে পর অন্য একটি কামরায় কিছু বইপত্র ঘাঁটতে আসি। দেখি, পাশের টয়রুমে আদেলফ্রেদো কার্পেটে জানু বিছিয়ে বসে ছোট্ট এক ছেলেকে পড়ে শোনাচ্ছেন রূপকথার একটি সচিত্র বই। তা ছেলেটি কে? আদেলফ্রেদোর ঘরসংসার নেই, কোথাও কোনো কুটুমখেশ আছে বলেও কখনো কিছু শুনিনি। চোখাচোখি হলে তিনি খোশমেজাজে ভুরু নাচিয়ে ফিরে যান শিশুতোষ পাঠে। তাঁর অভিব্যক্তিতে আজ খেলছে চাপা উল্লাস। হাবভাবে মনে হয়, খোয়াবে তিনি পেয়ে গেছেন রোগ নিরাময়ের গায়েবি বটিকা! আদেলফ্রেদো আজ আনন্দে আছেন, ব্যস্ত আছেন। সুতরাং তাঁর সাথে আজ আর বাতচিৎ কিছু হবে বলে মনে হয় না।

একটু বেলা পড়তেই আমি বেরিয়ে আসি লাইব্রেরি থেকে। দেখি, এনট্রান্সের সামনে ছেলেটি পায়ে রোলার স্কেটের জুতা পরে দাঁড়িয়ে। একে না আদেলফ্রেদো একটু আগে রূপকথার বই পড়ে শোনাচ্ছিলেন! তো জানতে চাই, ‘হোয়্যার ইজ আদেলফ্রেদো?’ সে ম্যাগনোলিয়া গাছের দিকে ইশারা করে। দেখি, শ্যামল ছায়ায় নিরিবিলিতে বেঞ্চে বসে আছেন তিনি। মাঝবয়সী এই উড়নচণ্ডি গোছের মানুষের নাকের ব্রিজে ঝুলছে রিডিং গ্লাস, মুখে সাদাকালো দাড়িতে যেন লবণে গোলমরিচের ছিটা দেওয়া। তাঁর সাথে আমার পরিচয় অনেক বছরের। ফলে আমি কমবেশি ওয়াকিবহাল যে লাইব্রেরিতে বসে পড়াশোনা করতে তিনি ভালোবাসেন না একেবারেই। ম্যাকবেথ হাতে রিডিং রুমে বসলে তাঁর মনে হয়, তাঁকে যেন কেল্লার তলকুঠুরিতে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে। আদেলফ্রেদোর প্রেফারেন্স হচ্ছে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছের ছায়ায় বসে, আঙুলের ডগায় থুতু লাগিয়ে টি এস এলিয়টের ওয়েস্ট ল্যান্ড বা লাভ সং অব জে আলফ্রেড প্রুফ্রক–এর পৃষ্ঠা ওলটানো। আজ এ মুহূর্তে তাঁর পাশে বেঞ্চিতে রাখা খোলা একটি বই।

আদেলফ্রেদো পুস্তক পাঠ না করে মনোযোগ দিয়ে টাকা গুনছেন। তাঁর মানিব্যাগে টাকার চেয়ে ভাঙতি পয়সাই বেশি। বোধ করি অঙ্কে তাঁর দক্ষতা কম। তাই বারবার ডাইম, নিকেল, কোয়ার্টার বা দশ পয়সা, পাই ও সিকি গুনে গুনে কী যেন হিসাব মেলানোর চেষ্টা করেন। তাঁর সাথে আমার দীর্ঘদিনের জানাশোনা, তাই ‘হ্যালো, হাউ ডু ইউ ডু’ বলতে দাঁড়িয়ে পড়ি।

আমার দিকে তিনি তাকাচ্ছেন না, মশগুল হয়ে গুনছেন রেজকি পয়সা। অবশেষে বেঞ্চে তাঁর পাশে বসলে আদেলফ্রেদো কিন্তু মনক্ষুণ্নও হন না একেবারে। তিনি পার্ল এস বাকের গুডআর্থ বইটি পড়ছেন। আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, এলেন স্ট্রিটের এক গ্যারেজ সেল থেকে ঘণ্টাখানেক আগে কিনেছেন বইটি। আমেরিকানরা তাদের পুরোনো অনেক দিনের ব্যবহার করা জিনিসপত্র ছুটির দিনে গ্যারেজে সাজিয়ে রেখে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে। গ্যারেজ সেল থেকে দশ ডলারে টিভি, এক ডলারে স্লিপিং পায়জামা বা তিন ডলারে রকিং চেয়ার কিনতে পাওয়া যায়। পঁচিশ বা পঞ্চাশ সেন্টে পেপারব্যাক বই কিনতে পাওয়া বিচিত্র কিছু না। গুডআর্থ–এর এই সংস্করণ শোভন—হার্ড কভার ও চামড়ার মলাটে সোনালি কালি দিয়ে শিরোনাম লেখা। এ বই কিনতে আদেলফ্রেদোর ব্যয় হয়েছে মাত্র তিন ডলার। গ্যারেজ সেলে জেমস জয়েসের দুটি ও ভিক্টর হুগোর লা মিজারেবল নামের বইয়ের চামড়ায় বাঁধানো শোভন সংস্করণ বোধ হয় এখনো অবিক্রিত আছে। এই ধ্রুপদি গোছের বই তিনটি কিনতে হলে প্রয়োজন ৯ ডলারের। আদেলফ্রেদোর তাবৎ ভাঙতি পয়সা মিলিয়ে হাতে আছে কুল্লে সাত ডলার তেরো সেন্ট। তার ওপর সমস্যা হচ্ছে, বইয়ের পেছনে এ পয়সা খরচ করলে বিকেলে তিনি ডিনারের খাবার কিনবেন কী দিয়ে? আমাকে তিনি দ্রুত হেঁটে গ্যারেজ সেলে গিয়ে বইগুলো কিনে ফেলতে উৎসাহ দেন। বলেন যে আমার পড়া হয়ে গেলে বইগুলো তিনি ধার নিয়ে পড়তে পারবেন।

পুরোনো বই কেনার ব্যাপারে আমার খানিক আগ্রহ আছে। তাই আমহার্স্ট শহরে একটু ঘোরাঘুরি করে, কফি কিনে অতঃপর গ্যারেজ সেলের দিকে হাঁটতে শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে আদেলফ্রেদোর কথা ভাবি। মনে হয়, অনেক দিন হলো তিনি একই জিনস ও আধময়লা সুয়েট-শার্ট পরছেন। এগুলো লন্ড্রিতে দেওয়া দরকার। তাঁর স্বাস্থ্য মনে হয় ভালো যাচ্ছে না। চেহারা-সুরত কেমন যেন কোঁচকানো বিছানার মতো দেখায়। বোধ করি বেকার হালতে আদেলফ্রেদো অন্নকষ্টেও আছেন।

তাঁর সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় বছর দশ কিংবা বারো আগে। ছাত্রদের একটি ডরমিটরিতে তিনি নাইটগার্ড হিসেবে বহাল হন। আমি খুব রাত করে হলে ফিরতাম। আদেলফ্রেদো দুয়ারের পাশেই বাতির নিচে চেয়ার টেনে বসে চার্লস ডিকেন্সের বই পড়তেন। দরিদ্র ইতালিয়ান অভিবাসীর সন্তান তিনি। আনুষ্ঠানিক লেখাড়পায় তাঁর সফলতা আসেনি, পাস করতে পারেননি হাইস্কুলের আদনা সব পরীক্ষা। অঙ্কে তাঁর মাথা খুলত না একেবারেই, ব্যাকরণেও সবকিছু তালগোল পাকিয়ে যেত। স্কুলে বাড়ির কাজ না করে, ক্লাসের পেছন দিকের বেঞ্চে বসে প্রচলিত অর্থে নিষিদ্ধ বই পড়ার জন্য তিনি শাস্তিও পান বার কয়েক। একবার আমি আউটিং সেরে মিডনাইটের পর ফিরে এলে তিনি সমারসেট মমের বই থেকে বাছা বাছা কিছু বর্ণনা আমাকে পড়ে শুনিয়েছিলেন। ডরমিটরির নিরাপত্তার দিকে নজর না দিয়ে, রাজ্যের বইপত্র পড়ে পড়ে কাজে গাফিলতির জন্য পরদিন তাঁর চাকুরিচ্যুতি হয়।

জোনস লাইব্রেরি। এখানে বসে বসে পত্রিকা বা ম্যাগাজিন পড়ার বন্দোবস্ত পড়ুয়াদের খুব প্রিয়

বেকার হালতে আদেলফ্রেদো পার্কের বেঞ্চে আধশোয়া হয়ে বই পড়ে কাটিয়ে দিতেন। একদিন আমি তাঁর পাশে বেঞ্চে এসে বসলে দেখি তিনি কুড়িয়ে জড়ো করেছেন আধপোড়া সব সিগ্রেট এবং তা ফুঁকে ফুঁকে পড়ছেন ফটোস্ট্যাট করা কিছু কাগজ। কী পড়ছেন, তাতে কৌতূহল হলে কাগজটি দেখান তিনি। এতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ গল্পটির ইংরেজি তরজমা দেখে অ্যায়সা ইমপ্রেসড হই যে তৎক্ষণাৎ তাঁকে কিনে দিই এক প্যাকেট মার্লবরো সিগ্রেট। আমি তাবৎ গল্পগুচ্ছ–র সব কটি গল্প একাধিকবার পড়েছি শুনে তিনি বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন! তারপর একটু ফেনিয়ে আমি যে জিন্দেগিতে হাজারখানেক রবীন্দ্রসংগীত শুনেছি, তা বর্ণনা করলে— আমার দিকে তিনি এমন শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে তাকান যেন আমি শান্তিনিকেতনের শ্রী শান্তিদেব ঘোষ মহাশয়ের সাক্ষাৎ শাগরেদ।

কিছুদিন পর আদেলফ্রেদোর কপাল ফেরে। তিনি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস সেন্টারের ফ্লোরে মোমের গোল্লা দিয়ে ঘষামাজা করার ওয়্যাক্স পালিশের কাজ পান। অতঃপর কাজ ফাঁকি দিয়ে লাউঞ্জে আয়েশ করে বসে ভালোমন্দ, উত্তম-অধম হাবিজাবি সব ধরনের বই পড়তে থাকেন। আর আমার সাথে দেখা হলে রবীন্দ্রনাথের লেখার ইংরেজি অনুবাদ জোগাড় করে দিতে বলতেন। আমার কাজবাজের চাপ ছিল, তাই অনুবাদ জোগাড় করে দিতে পারিনি বটে; তবে তাঁকে পোকায় কাটা মাইকেল মধুসূদন দত্তের ক্যাপটিভ লেডি ধার দিয়েছিলাম। বইটা পড়ে তিনি এতই খুশি হয়েছিলেন যে আমার হাত চেপে ধরে বলেছিলেন, ‘আমার পয়সাকড়ি থাকলে তোমাকে ইতালিয়ান ডিনার খাওয়াতাম। কিন্তু সে সম্ভাবনা নেই। বুঝলে হে...আমার আবার চাকুরিচ্যুতি হলো। তবে তোমাকে জরুরি একটা খবর দিচ্ছি। আজই “বুকমিল” নামের বুকস্টোরে চলে যাও। জালালউদ্দিন রুমির মসনভি শরিফ–এর ইংরেজি তরজমা তারা মাত্র চার ডলার নাইনটি নাইন সেন্টে ছেড়ে দিচ্ছে।’

‘বুকমিল’ বলে পুরোনো বইয়ের আড়তটির অবস্থান মন্টিগিউ শহরে। আমি যেখানে বাস করছি সেখান থেকে বেশ দূরে। সুতরাং সাথে সাথেই ওখানে যাওয়া যায় না। তো দিন কয়েক পর আমি বুকমিলে এসে হাজির হই। রীতিমতো আধজংলা জায়গায় ছোট্ট এক খরস্রোতা নদীর পাড় পাথর দিয়ে বাঁধিয়ে তৈরি হয়েছিল মিল বা কারখানার ঘর, আজ থেকে দেড় শ বছর আগে। স্রোতের তোড়ে চাকা ঘুরিয়ে তার এনার্জিতে পেষাই করা হতো গম ও যব। এ জলশক্তিকে ব্যবহার করে উৎপাদন করা হতো আরও কিছু পণ্যও। তারপর দিন বদল হলে এ রকম চাকাফাকা ঘোরানো মিল-কলের যুগ তামাদি হয়। তত দিনে অবশ্য মিলমালিকের বিস্তর ধনদৌলত হয়েছে। তাঁর বালবাচ্চারা লেখাপড়া করে বিদ্বান হয়ে উঠেছে সকলে, ইউরোপের নানা দেশ ঘুরে তারা সংগ্রহ করছে বিবিধ রকমের বইপুস্তক। তারা মিলের পোড়ো বাড়িটিকে সাফসুতরা করে ওখানে সৃষ্টি করে পারিবারিক লাইব্রেরির। গেল সত্তর বছরে বুকমিলের হাতবদল হয়েছে চারবার। বর্তমানে এখানে বিক্রি হয় রাজ্যের সব পুরোনো বইপুস্তক। নিলামেও এখান থেকে কেনা যায় বিরল চিত্র ও কাব্যবিষয়ক কেতাবাদি।

বুকমিলে পৌঁছেই নদীর পাড়ে বুক স্টোরের এ বিচিত্র লোকেশন আমার খুব ভালো লাগে। আলমারি, শেলফ ও কাঠের ফ্লোরে এবং গালিচায় ছড়ানো স্তূপ করে রাখা হাজার–বিজার বইপুস্তক: পড়ুয়া খদ্দেররা হন্যে হয়ে কেতাবাদির শুমার করছেন। তো আমিও খোঁজাখুঁজি শুরু করি। আদেলফ্রেদোর দেওয়া তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক, রুমির কেতাবখানা আমি খপ করে কিনে ঘুরে দাঁড়াতেই দেখি, এককোণে অনেকগুলো বইপুস্তকের এলোমেলো ঢিবির আড়ালে বসে আছেন আদেলফ্রেদো। আমি ‘হ্যালো’ বলতে তাঁর কাছে আসি। দেখি, তিনি ‘নুট হ্যমসুন’ বলে নরওয়ের এক নামজাদা লেখকের লেখা হাঙ্গার নামের নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বইটি পড়ছেন, তাঁর দুচোখ ভিজে উঠছে অশ্রুতে। আমাকে দেখতে পেয়েই চোখের জল মুছতে মুছতে ম্লান হেসে বলেন, ‘নুট যেভাবে বর্ণনা করেছেন, বুঝলে হে... ঠিক এ রকমভাবে আমিও ক্ষুধায় কষ্ট পাই। খাবারদাবার জোগাড় করা আসলেই বড্ড কঠিন কাজ। চিন্তা করো, যদি প্রতিদিন একটু ব্রেড, পাস্তা, ট্যোমেটো সস আর সামান্য পামারাজান চিজ খেতে পারতাম, কত আনন্দেই না বইটই পড়া যেত!’

আদেলফ্রেদোর বিষয়–আশয় ভাবতে ভাবতে গ্যারেজ সেলে এসে দেখি, এখানে ছয়-সাতজন খদ্দের জুটেছে। তারা নেড়েচেড়ে দেখছে শিশুতোষ খেলনা, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, রাইস কুকার, সিরামিকের ফল, ছুরি-কাঁটা-প্লেট ও ডিশ। আমি বইগুলো খুঁজি। বেশ কিছু ন্যাশন্যাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন পড়ে আছে। তবে মনে হয় শোভন সংস্করণের বইগুলো সব ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে। এ পরিবার তাদের ব্যবহৃত কাপড়চোপড়ও এক ডলারে বিক্রি করছে। আলনার হ্যাঙ্গারে ঝুলছে কোট, জ্যাকেট, টাই, সোয়েটার ও ড্রেসিং গাউন। এগুলোর আড়াল অতিক্রম করে পেছন দিকে আসতেই দেখি, ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আদেলফ্রেদো পড়ছেন চামড়ায় বাঁধাই জেমস জয়েসের ইউলিসিস। তাঁকে না জোনস লাইব্রেরির ম্যাগনোলিয়া গাছের তলায় রেখে এলাম! মনে হয়, কোনাকুনি পথে তিনি এখানে এসে পৌঁছেছেন আমারও আগে। আমাকে দেখতে পেয়ে ফুটপাত থেকে কুড়ানো আধপোড়া সিগ্রেট ধরিয়ে তিনি বলেন, ‘ইউ আর টু লেট। একটু আগে ভিক্টর হুগোর লা মিজারেবল বিক্রি হলো। আমার কাছে ছিল সাত ডলার তেরো সেন্ট, ছ ডলারে আমি জেমস জয়েসের দুটো বই কিনলাম। ভিক্টর হুগোর বইটা আর এফোর্ট করতে পারলাম না। হাউ টেরিবল, পিটি মি।’