রুমানার নতুন সিম কার্ড
রোজ সকালে ঠিক ছয়টায় ঘুম ভেঙে যায় রুমানার। বহুদিনের অভ্যাস, ঘড়িতে অ্যালার্ম দেওয়ার দরকার হয় না। নিজে থেকেই ঘুম ভাঙে, আর অফ ডে থাকলে খানিকক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করেও দেখেছে সে, আর ঘুম আসে না। রাহাতের সঙ্গে থাকার সময় তার অফ ডে বলে কিছু ছিল না।
প্রতিদিন ভোরে উঠে দিন শুরু করতে হতো। শুক্রবার ছেলেকে নিয়ে যেতে হতো কবিতা আবৃত্তি শেখানোর ক্লাসে। শুধু শনিবার রাহাত অফিসের জন্য বের হয়ে গেলে অল্প কিছুটা সময় পাওয়া যেত, তখন বারান্দার গাছগুলোর একটু যত্ন করার ফুরসত পেত সে। আচ্ছা, বারান্দার চন্দ্রমল্লিকাগুলো কি এখনো আছে? আর অপরাজিতার ঝাড়টা? নাকি তার হাতে লাগানো গাছ বলে সব ফেলে দেওয়া হয়েছে? রাহাতের নতুন বউ কি গাছপালা পছন্দ করে?
আজ মঙ্গলবার রুমানার অফ ডে। ঘুমটা সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ার পর মিনিট দশেক বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে সে সিদ্ধান্ত নেয়, অযথা ঘুমানোর চেষ্টা না করে কিছুক্ষণ নদীর পাড় থেকে হেঁটে আসবে। দাঁত মেজে মুখ ধুয়ে জানালায় ঝোলানো স্পাইডার প্ল্যান্টে পানি দিতে দিতে তার মনে পড়ে বারান্দার গাছগুলোর কথা। রাহাতের নতুন বউ তার ছেলের যত্ন নিচ্ছে কি না, ঠিকমতো খেতেটেতে দিচ্ছে কি না, দুষ্টুমি করলে মারধর করে কি না, এসব না ভেবে সে ভাবছে বারান্দার গাছের কথা। সে কেমন মা?
ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে আসার খুব বেশি চেষ্টা সে করেনি, এটা ঠিক। রাহাত খরচ দিয়ে তার কাছে রায়ানকে রাখতে দিতে রাজি হয়নি। তার কাছে রাখতে চাইলে নিজের খরচে রাখতে হতো, সেটা এখন অ্যাফোর্ড করতে পারবে না সে। অযথা ইগোর বশবর্তী হয়ে বাচ্চাটাকে কষ্ট দিতে তার ইচ্ছা হয়নি। বেচারা একটা লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত। কিছুটা কম্প্রোমাইজ করা শেখানো যেত হয়তো, ইংলিশ কমোডের বদলে দেশি টয়লেট ব্যবহার করাও শেখানো যেত, কিন্তু সে জন্য রুমানার অন্তত একটা নিজস্ব বাসা থাকা দরকার। ছাত্রী মেসে বসবাস করে তো আর ছেলেকে নিজের কাছে রাখা সম্ভব নয়।
রায়ানকে নিয়ে ভাবা সে ছেড়ে দিয়েছে। এ জন্য নিজের ওপর জোর করতে হয়েছে অনেক। শুরুর দিকে রায়ানের একটা খেলনা গাড়ি, হটহুইলের সেট থেকে নেওয়া হলুদ রঙের একটা ছোট্ট স্পোর্টস কার ব্যাগে রেখে দিত সে। ছয় মাস গিয়ে সাত মাসে পড়ার পর সে গুনে দেখেছে—এর মধ্যে রায়ানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ তার হয়েছে মোটে চারবার। প্রতিবারই কয়েক দফা ফোন করার পর এখন না তখন, বিকেলে না রাতে, এখন রায়ান ঘুমাচ্ছে, রায়ান বাসায় নেই, পাশের বাসায় খেলতে গেছে ইত্যাদি নানা টালবাহানার পর একবার কথা বলতে পেরেছে।
প্রতিবারেই রায়ানের প্রশ্ন ছিল, সে কবে ফিরবে? ওর ধারণা, আম্মু আরেকটা পরীক্ষা দিতে গেছে, শেষ হলেই ফিরবে। তার সাড়ে চার বছরের জীবনের অভিজ্ঞতায় সে দেখেছে, আম্মু পরীক্ষা দিতে গেলেই কিছুদিন বাসার বাইরে থাকে। রুমানা প্রতিবারেই দেখেছে, ফোন রাখার পর তার পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যায়, জীবন অর্থহীন মনে হয়। একটা অন্তহীন কান্নার স্রোত কোথা থেকে এসে তাকে চেপে ধরে। এরপর সে সচেতন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে রায়ানকে ফোনে খোঁজা বাদ দিয়েছে। হটহুইলটাও আর ব্যাগে নিয়ে ঘোরে না এখন।
রুমমেটের একপাশে জমানো সবজির খোসাগুলো থেকে ম্যাগি নুডলসের মসলার প্যাকেট আর অন্যান্য প্লাস্টিক সরিয়ে একটা ব্যাগে ভরে নেয় রুমানা। মেস থেকে নদীর পাড়ের দিকে যাওয়ার পথে দুটো ঘোড়াকে অনেক দিন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে সে। বেচারারা ডাস্টবিন থেকে সবজির খোসা আর পচা ফলের সঙ্গে পলিথিন ও কাগজ খেয়ে ফেলে মাঝেমধ্যে।
মেসের যে দু-একজনের মেয়ের সঙ্গে তার আলাপ-পরিচয় আছে, তাদের কাছ থেকে সবজির খোসা চেয়ে নিয়ে আগেও খাইয়েছে সে ঘোড়াগুলোকে। সমস্যা হলো, প্রতিদিন একই জায়গায় থাকে না ঘোড়া দুটি—কোনো দিন মুসলিম গার্লস স্কুলের গেটে, কোনো দিন মুমিনুন্নিসা কলেজের দেয়াল ঘেঁষে। তার অবশ্য তাড়া নেই, এলোমেলো হাঁটতে হাঁটতে কোনো এক রাস্তায় হয়তো পেয়ে যাবে ঘোড়াদের।
রাস্তার ঘোড়াদের খেতে দিতে দেখলে লোকজন অবাক চোখে তাকায়, দু-একজন মন্তব্যও করে ফেলে, রুমানা সেসব পাত্তা দেয় না। একটাই সুবিধা, কলেজ রোডের এই রাস্তায় ছাত্রছাত্রীই বেশি। তারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, কে কী করছে, তা দেখার অবকাশ হয় না তাদের। যারা মন্তব্য করে, তারা ছাত্র নয়। বোরকায় ঢাকা ছিপছিপে রুমানাকে দেখে তারা ছাত্রী ভেবে নিয়েই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় হয়তো।
মেস থেকে বের হওয়ার সময় হালিমা খালার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তার। খালা তাকে দেখে একগাল হেসে ‘আমনের লাইগ্যা চুচা জমাইছি, ইট্টু খাড়ইন’ বলে সিঁড়িঘরের এক কোনা থেকে বিভিন্ন সবজির খোসাভরা একটা পলিথিন ব্যাগ দেয় তার হাতে। তার মানে রাস্তার ঘোড়াদের জন্য তার সবজির খোসা সংগ্রহের কথা ভালোই চাউর হয়েছে। ব্যাগটার ভেতরে একঝলক তাকিয়েই সে দেখে, সবজির খোসার সঙ্গে কিছু কাগজ আর অন্যান্য ময়লা আছে। ওগুলো আলাদা করে নিতে হবে। মন্দের ভালো, কারণ ডাস্টবিনে ব্যবহৃত কনডম, স্যানিটারি প্যাড, ডায়াপার থেকে বেছে সবজির খোসা খেতে ঘোড়াগুলোর কত কষ্ট হয়।
সবজির খোসাভরা পলিথিন ব্যাগ নিয়ে মেস থেকে বের হওয়ার সময় রুমানা দেখে, আবায়া বোরকা পরা একটা মেয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছেলের সঙ্গে চাপা স্বরে ঝগড়া করছে। মাঝে কিছুদিন অনলাইনে একটা পেজ খুলে কসমেটিকসের বিজনেস শুরু করেছিল সে। তখন জেনেছে, আগে যে রংটাকে হালকা গোলাপি বা পেঁয়াজি বলে জানত, সেই শেডটার নাম আসলে মভ। এই মেয়ের মতন একটা মভ রঙের বোরকা তারও আছে, সৌদি আরব থেকে আনা জিলবাব, উপহার দিয়েছিল তার এক মামাশ্বশুর—এক্স-মামাশ্বশুর। বিয়েতে কিংবা শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া কোনো কিছুই সঙ্গে আনবে না—এমন অভিমান দেখানোর বাস্তবতা রুমানার ছিল না।
মামাশ্বশুরের দেওয়া সৌদি বোরকা সে নিয়ে এসেছে, রাহাতের কিনে দেওয়া অনেক জামাকাপড়ের বদলে। ফলে রোজ বাইরে যাওয়ার সময় তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় না কী পরবে, সেটা কাচা আছে কি না, আয়রন করা হয়েছে কি না—যেকোনো একটা বোরকা পরে নিলেই চলে। তার সামাজিক অবস্থান, কাজ ও উপার্জনের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক এখন এটাই। ডেস্ক থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময় সে দেখেছে, এতগুলো পরতের কাপড় ভেদ করে ফেলতে চায় কোনো কোনো পুরুষের দৃষ্টি।
অথচ কিছু পুরুষ সম্পূর্ণই উল্টো। পায়ে ঘাওয়ালা একটা ঘোড়া আর তার জোড়ার আরেকটি ক্ষীণকায় ঘোড়াকে খুঁজতে খুঁজতে সে তেমন একটি লোকের দেখা পায়। লোকটি প্রায় রোজই সকালবেলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁত মাজে। কাউকে মুখভর্তি ফেনা নিয়ে ঘ্যাসঘ্যাস করে ব্রাশ করতে দেখাটা যে খুব অস্বস্তিকর, বিবমিষা উদ্রেককারী ব্যাপার, এ ধারণা অনেকেরই নেই।
লোকটার পরনে পরিষ্কার চেক ট্রাউজার। যে বাড়িটার সামনে সে রোজ দাঁড়িয়ে ব্রাশ করে, সেটাও বলতে গেলে আলিশান একটা বাড়ি। সামনের উঠানমতো জায়গায় ছোট ছোট ঘর তুলে দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এই এলাকার দু-তিন পুরুষের ধনীরা নাকি সাধারণত এমনই করে, বাবা কিংবা দাদার বানিয়ে যাওয়া রিয়েল এস্টেটের আয় দিয়ে জীবন চালাবে বলে নিজেরা কোনো কাজকর্ম করে না, বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে দাঁত মেজে নির্লিপ্তভাবে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থেকে একটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারলেই যেন চলে এদের। এই হাইপোথিসিস রুমানার নিজের নয়, এটা তার রুমমেটের ধারণা।
রুমানার রুমমেট মাত্র অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে, এখনই জীবন ও জগতের বহু কিছু সম্পর্কে তার খুব জোরালো ধারণা তৈরি হয়ে গেছে। কোনো কোনো ব্যাপারে তার বক্তব্য শুনলে মনে হয়, এরপর আর কোনো কথা চলতেই পারে না—এটা জেনেই সে বলছে। একদিন তার এক বান্ধবীকে সে বলছিল, ‘এইত্যা আইফুন লইয়া গুরা ছ্যাড়াইনগরে দেইখ্যা মনয় কুনহানের য্যান লাটসাবের আলুগুডা, আসলে ব্যাকটি ফহিন্নির পুত।’
এই বাক্যের মর্মার্থ বের করতে রুমানার যথেষ্ট সময় লেগেছিল তখন। মেয়েটিকে তার ভালোই লাগে, ব্যক্তিগত গল্প জিজ্ঞেস করেনি কখনো। এটা একটা বিরাট গুণ, রুমানার কাছে মনে হয়, একটা মফস্সল শহরে কলেজে পড়ে, টিউশনি করে, মেসে থেকে আর অবসর সময়ে হকার্স মার্কেটে ঘুরে জীবন কাটানো মেয়েরা খুব গ্রাম্য হবে—এমন ধরে নেওয়াটা হয়তো ভুল।
তার রুমমেটের মুখের ভাষাটাই শুধু আঞ্চলিক, নিত্যনতুন জামাকাপড় পাল্টানোর ঝামেলায় না গিয়ে সে-ও টিউশনিতে যাওয়ার সময় একটা আবায়া বোরকা পরে নেয়, কিন্তু তার আর কোনো আচরণেই গ্রাম্যতা নেই।
এ এলাকার মানুষ মাছ রান্না করার আগে ভাজে না, রুমানার অসুবিধা হয় খেতে, জানলা দিয়ে ছুড়ে একদিন বাউন্ডারি দেয়ালে বসা বিড়ালকে আধখাওয়া মাছ দিয়ে দিতে দেখে তার রুমমেট বলল, ‘আপু, এমনে দিলে বারে বারে আইব, পরে কেউয়ের খাওনে মুখ দিলে আপনের দুষ পড়ব, মাছ খাইবার মনে না চাইলে আমারে দিয়া দেইনয্যা।’ এর পর থেকে মেসের মিলে মাছ থাকলে সে রুমমেটের জন্য তুলে রাখে। হিটারে একার জন্য রান্না করে খাওয়া পোষায় না তার।
হাঁটতে হাঁটতে আর মুসলিম গার্লস কলেজের দেয়াল ঘেঁষে কৃষ্ণচূড়া, সোনাঝুরি আর অলকানন্দার চোখধাঁধানো রূপ দেখতে দেখতে সে টের পায়, অত্যধিক গরমে তার ভেতরে পরা সব কাপড় ঘেমে চুপসে আছে। শ্যাম্পু আর বডি স্প্রের ব্র্যান্ডও পাল্টাতে হয়েছে তাকে। হিজাবে ঢাকা চুলের গোড়া নরম হয়ে পড়ে যাচ্ছে বলে কেটেই ফেলেছে অনেকখানি।
কিছু তো আর করার নেই, একটা অদ্ভুত অচেনা শহরে একটা নতুন জীবন শুরু করতে এসেছে সে। এখন অনেক কিছুর সঙ্গেই খাপ খাইয়ে নিতে হবে। হয়তো মচমচে ভাজা ছাড়া মাছ খাওয়াও সে শিখে যাবে একসময়, অলস শহরের অলস মানুষদের উচ্চাশাহীন আলসেমি দেখেও আর বিস্মিত হবে না। ঈদগাহ মাঠের দিকে যেতে যেতে কোনো বাড়ির রান্নাঘর থেকে আসা গরুর মাংসের চনমনে গন্ধ তাকে একটু বিস্মিত করে যদিও, এত সকালে কে গরুর মাংস রান্না করছে? তার মনে পড়ে নিজের হাতে গোছানো রান্নাঘরটার কথা।
ছাঁকনি, চালুনি কিংবা কড়াইয়ের হাতল ভেঙে গেলে সে কৃষি মার্কেটে নিয়ে মেরামত করিয়ে আনত রাহাতকে না জানিয়েই। জানালেই বলবে, ফেলে দাও কিংবা বুয়াকে দিয়ে দাও। সে বিধবা মায়ের মেয়ে, জিনিস অপচয় করার নবাবি কোনোকালে শেখেনি। সংসারে দুই পয়সা বাঁচাতে পারলে নিজেরই লাভ। কারণ সংসারটা তার নিজেরই—অন্তত রুমানা তা-ই ভাবত।
চার্চের সামনে এসে ঘোড়া দুটিকে একসঙ্গেই পেয়ে যায় সে। হাঁটুতে ঘাওয়ালা ঘোড়াটা মূর্তির মতন নিশ্চল, সঙ্গীটি স্থির দাঁড়িয়ে লেজ নাড়ছে। ঘোড়াগুলোর সামনে পলিথিন থেকে উপুড় করে সবজির খোসাগুলো ফেলে আবার হাঁটতে থাকে সে। শুকিয়ে যাওয়া পুরুষ নামের নদের সামনে দাঁড়িয়ে একবার ভাবে, শেষবারের মতন রাহাতের নম্বরে একটা ফোন করবে কি না। শেষমেশ সিদ্ধান্ত পাল্টে ফোন থেকে সিমটা খুলে ফেলে দেয় সারা শহরের নোংরা জল বয়ে আনা নর্দমায়। ব্যাগ থেকে নতুন সিম কার্ড বের করে ভরে নেয় পুরোনো সেটে।
কাল অফিসে গিয়ে নতুন নম্বরটা দিয়ে দেবে। কেউ তাকে খোঁজে না, সে জানে। চাচাদের সংসারের এককোণে পড়ে থাকা মা মেয়ের প্রেম করে বিয়ে করা নিয়েই যথেষ্ট বিব্রত ছিলেন। এখন তালাকের পর আর পরিচয় দিতেই রাজি নন। বাকি থাকল রায়ান। বড় হয়ে যদি তার মাকে খুঁজে বের করতে ইচ্ছা করে, একটা উপায় সে নিশ্চয়ই বের করে নেবে। মোহাম্মদপুর থেকে, ছয় মাস আগের জীবন থেকে বের হয়ে একটা অপরিচিত ঘিঞ্জি শহরে চলে এসে তার মনে হচ্ছে, এ যেন আলোকবর্ষ দূর। আসলে তো মাত্র এক শ মাইল। আর এই ট্রুকলার আর এআইয়ের যুগে কেই-বা সম্পূর্ণ নিখোঁজ হয়ে যেতে পারে চাইলেই?