প্রিজন প্রিমিয়াম ডিল্যাক্স ট্যুর অ্যান্ড রিসোর্ট

বছরখানেক আগে বেশ বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে বুকিং দিয়ে দীর্ঘদিন তৃষিত চাতকের মতো সকরুণ অপেক্ষার পর ‘প্রিজন প্রিমিয়াম ডিল্যাক্স ট্যুর অ্যান্ড রিসোর্ট’-এর বহু কাঙ্ক্ষিত দুটি টিকিট হাতে এল। আমার স্ত্রী তো খুশিতে ডগমগ হয়ে দুই পায়ের ওপর এক চক্কর ঘুরে গান গেয়ে উঠলেন, ‘অনেক বৃষ্টি ঝরে তুমি এলে যেন এক মুঠো রোদ্দুর আমার দু হাত ভরে...’

‘আমরা তাহলে যাচ্ছি ...ট্যাঁ টেটে ট্যাঁ...’

আমি হাতের কাছে মুখ তুলে কাল্পনিক ভেঁপু বাজিয়ে দিলাম।

‘খুব মজা হবে, না গো!’ স্ত্রীর চোখ উত্তেজনায় চকচক করছে।

‘সে আর বলতে...’

আসলে ‘প্রিজন প্রিমিয়াম’-এর টিকিটপ্রত্যাশী লোকের সংখ্যা এত বেশি, এতই এর চাহিদা যে এর টিকিট পাওয়া অনেকটা মাটিতে দাঁড়িয়ে চাঁদ ধরার মতোই দুরূহ। আপনারা তো অনেকেই জানেন, বেশ কিছুদিন আগে আইন করে আমাদের দেশের সব কটি কারাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অপরাধ নেই, অপরাধী নেই, তো কারাগার দিয়ে কী হবে? তারপর কয়েদখানাগুলোকে রূপান্তরিত করা হয়েছে বিস্ময়কর রিসোর্টে। ছুটির দিনে বিনোদনাকাঙ্ক্ষী মানুষজন তাদের অবকাশ কাটাতে সাবেক জেলখানাগুলোতে বেড়াতে যায়।

এখন যেটা প্রিজন প্রিমিয়াম, সেটাই একসময় ছিল দেশের সবচেয়ে বড়, দুর্ভেদ্য, কুখ্যাত, হাই সিকিউরিটি কারাগার। এর বেশির ভাগ অংশ একেবারেই আগের মতো অবিকল রেখে দেওয়া হয়েছে। বন্দীদের অন্ধকার স্যাঁতসেঁতে ঘর, ইট-কংক্রিটের কর্কশ দেয়াল, মোটা লোহার শিকের নিষ্ঠুর দরজা-জানালা, সিমেন্টের এবড়োখেবড়ো ঠান্ডা মেঝে...।

বাকি অংশের পুরোনো কাঠামোটা ধরে রেখে খানিকটা সংস্কার করে বানানো হয়েছে আরামদায়ক বিলাসবহুল হোটেল। জমকালো-ঝলমলে যার অন্দরসজ্জা, বাইরেটা সাজানো হয়েছে নরম সবুজ ঘাসের লন আর সুগন্ধি রঙিন ফুলের বাগান দিয়ে।

আজ সকালে সেই মহার্ঘ টিকিটের বদৌলতে বউকে নিয়ে আমি সেই প্রিজন প্রিমিয়ামে বেড়াতে এসেছি। রিসেপশনে অনেকটা আগেকার দিনের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ ধরনের উর্দি পরে সদা হাস্য চঞ্চল যুবক-যুবতীরা ছোটাছুটি করে কাজ করছে। আসলে কয়েক দশক ধরে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত না হওয়ায় অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আর কোনো কাজ অবশিষ্ট নেই। নাগরিকদের সবাই-ই নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিটি আইন মেনে চলায় দেশের পথে-ঘাটে, ঘরে-বাইরে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, প্রবঞ্চনা, প্রতারণার বালাই নেই। দেশে একজনও গরিব, অভাবী মানুষ না থাকায় চুরিচামারি বা ছিনতাই-ডাকাতির মতো ঘটনাও অদৃশ্য হয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন একটা টিকা আবিষ্কার করেছেন, যেটি মানুষের মধ্য থেকে ঘৃণা, বিদ্বেষ, লোভ, ঈর্ষা, হিংসা এবং হিংস্রতার মনোভাব দূর করে দেয়। জন্মের পরপরই প্রতিটি মানবশিশুকে হাসপাতালেই বাধ্যতামূলকভাবে এই টিকা দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে খুনখারাবি বা মারামারি, কাটাকাটির মতো বীভৎস ঘটনার অবসান হয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটিকেই বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে সরকার।

রিসেপশনের চৌকস ছেলেটি তার মাথার সুদৃশ্য ক্যাপটি বাঁ হাতে ঠিকমতো বসিয়ে ডান হাতে আমাদের দিকে রুমের চাবি এগিয়ে দিল।

‘না, না, আমরা তো ওই পুরোনো অংশে যাওয়ার টিকিট কেটেছি।’

আমার স্ত্রী প্রায় চিৎকার করে উঠলেন।

‘সেটি কাল সকালে ম্যাডাম। একটু অপেক্ষা করতে হবে। যে গ্রুপটি ওখানে তিন দিন ধরে আছে, তারা বেরিয়ে গেলে পরে আপনাদের পালা।’

আমাদের আসলে একটুও তর সইছিল না। প্রবল চিত্তচাঞ্চল্যে সে রাতে দুজনের কারোরই ভালো করে ঘুম হলো না। ওরা কারাবাসের নিয়মকানুন লেখা একটা ব্রোশিওর দিয়েছিল, সেটাও ঠিকমতো পড়লাম না। প্রতীক্ষায় থাকলাম কখন আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ!

সকাল হতে না হতেই উর্দি পরা কয়েকজন মানুষ এসে আমার হাতে হাতকড়া পরিয়ে টেনেহিঁচড়ে একটা দরজা-জানালাবিহীন প্রিজন ভ্যানে প্রায় ৪০ জন মানুষের সঙ্গে ঠেসে ঢুকিয়ে দিল।

এত দিন শুধু এ রকম ভ্যানের গল্পই শুনেছি, আজ স্বচক্ষে দেখে আনন্দে শিহরিত হলাম।

ওফ, সেই রকম শক্ত ধাতব বডির গাড়ি, প্রায় ১০ ফুট উঁচু ইস্পাতের নীল ছাদ, ওপরের দিকে এক ফুট প্রস্থের লম্বালম্বি গবাক্ষের লোহার জালের ভেতর দিয়ে তেরছা হয়ে নকশাকাটা সূর্যের আলো ঢুকছে। কোনো ফ্যান বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্রের অত্যাচার নেই! বসার জন্য কোনো সিট নেই। তপ্ত লোহার বাক্সে আমরা ৪০ জন টিকিটধারী গা ঘেঁষাঘেঁষি করে স্টিম বাথ নেওয়ার মতো ঘামছি। আর ঘর্মাক্ত দেহে, ভেজা কণ্ঠে বলছি, ‘আহা কী মনোরম!’

আমার পাশের লোকটি ফিসফিস করে বলল, ‘শুনেছি কারাগারের ভেতরে আরও অ্যামেজিং লাগবে। বিষয়টা হবে জাহান্নামে বসবাসের মতো চ্যালেঞ্জিং!’

‘বাহ্‌! দারুণ!’ নাক থেকে ঠোঁটের ওপর গড়িয়ে পড়া এক ফোঁটা নোনতা ঘামের স্বাদ জিহ্বায় চেটে নিতে নিতে বললাম আমি।

আমার স্ত্রীকে লোহার ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে তোলা হয়েছে আরেকটা ভ্যানে। ধারণা করি, তারও এমনি শিহরণ জাগানো তৃপ্তিকর অনুভূতি হচ্ছে।

বেশ কিছুক্ষণ পর ভ্যান এসে থামল কারাগারের উঁচু অন্ধকার ফটকের সামনে। একসময় নাকি একে বলা হতো লাল দালান। সবার সঙ্গে আমিও ভ্যান থেকে লাফিয়ে নামলাম লাল দালানের সামনে। সবাইকে পানি খেতে দিল ওরা। দাঁড় করিয়ে রাখল অনেকক্ষণ। এটাই রীতি। তারপর একসময় লোহার ফটকের মধ্যে লাগানো ছোট দরজাটা খুট করে খুলে গেল। মাথা নিচু করে জেলে ঢুকতেই একটা শক্ত সহানুভূতিহীন নিষ্ঠুর হাত আমাকে ভেতরে টেনে নিল। এবার একে একে পরনের সব কাপড়চোপড় খুলে সারা দেহ তল্লাশি করে সঙ্গে যা যা ছিল, সব নিয়ে নিল ওরা। মুঠোফোন, মানিব্যাগ, ঘড়ি, চাবি—যা ছিল সব। এরপর কয়েদিদের সাদা-কালো ডোরাকাটা পোশাক পরিয়ে ঠেলে দিল আমদানিখানায়।

‘এখানে আপনাদের ইলিশের ফালির মতো শুতে হবে। মানে সারিবদ্ধভাবে, ডান থেকে বাঁ দিকে, যেভাবে একের পর এক ইলিশ মাছ সাজানো হয়, মাঝখানে কোনো ফাঁকা না রেখে, ঠিক সেইভাবে! সবচেয়ে পেছনের জনকে লাথি মেরে কারারক্ষক দেখবেন কোনো জায়গা ফাঁকা আছে কি না! প্রয়োজনে তিনি পাছায় দু-একটা বেতের বাড়িও দেবেন!’

ইউনিফর্ম পরা গাইড গম্ভীর গলায় নিরাবেগ কণ্ঠে হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিল।

‘ওয়াও! ফ্যান্টাস্টিক!’

আমার পাশের তরুণটির আনন্দিত কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম।

আমদানি ওয়ার্ডে ইলিশ ফালি ব্যবস্থায় সার বেঁধে শুয়ে চমৎকার গাঢ় ঘুম হলো আমার। সকালে নিজেকে আবিষ্কার করলাম অদ্ভুত এক অবস্থায়। দেখলাম আমার পা উঠে আছে আরেকজনের মাথার ওপর। এক দাড়িওয়ালার মাথা আরেক গোঁফওয়ালার ঘাড়ে, এক ভুঁড়িওয়ালার গায়ের ওপর উঠে গেছে আরেকজনের হ্যাংলা-পাতলা শরীর। সে এক দৃশ্য বটে! যেন প্রাচীনকালের শিল্পীর আঁকা তেলচিত্র! না দেখলে বিশ্বাসই হতো না আমার।

কিছুক্ষণ পরেই আমাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হলো একটা করে গোল রংচটা টিনের থালা আর মগ। হোয়াট আ অ্যান্টিক! মনটাই খুশি হয়ে উঠল। এবার লাইন ধরে খাবার সংগ্রহ। ওরা একটা রুটি ছুড়ে দিল প্লেটে, দেখতে ঠিক যেন খসখসে জিনসের কাপড় আর লোহার মতো শক্ত! (সত্যি! নরম তুলতুলে রুটি খেতে খেতে আমাদের মুখের রুচিই নষ্ট হয়ে গেছে!) সঙ্গে খানিকটা লাল গুড়। অপূর্ব লাগল খেতে!

টয়লেটের সামনে গিয়ে দেখি, ওয়াও! লম্বা লাইন। ১৩ জনের পরে আমার সিরিয়াল। এলাহি ভরসা, সময় না আসা পর্যন্ত নিশ্চয়ই চেপেচুপে আটকে রাখতে পারব। লাইন দ্রুতই এগোচ্ছে। কেউ একজন বেরোতে দেরি করলেই ধুপধাপ বাথরুমের দরজায় কিল মারা হচ্ছে।

একটা শ্যালো পরা চৌবাচ্চার ঠান্ডা পানি দিয়েই ৪০ জন গোসল করলাম।

দুপুরে হলুদ গোলা পানির মতো ট্যালটেলে অসাধারণ সুস্বাদু ডালের সঙ্গে মোটা চালের ভাত মাখিয়ে মুখে দিতেই দাঁতের নিচে কাঁকর পড়ল। আহ্! জীবনে প্রথমবারের মতো এই বিস্ময়কর ঘটনা ঘটল!

বিকেলে জেনানা মহলের দরজায় আমার স্ত্রীর আনন্দে উজ্জ্বল মুখখানা দেখতে পেলাম। চকচকে চোখে আবেগে গলা কাঁপিয়ে সে বলল, ‘জানো, এবারই প্রথম প্রাচীনকালের মতো চুলোচুলি করলাম! এক টুকরো সাবানের জন্য একজন পেছন থেকে থাবা দিল আমার মাথায়, আমিও তক্ষুনি ঘুরে টেনে ধরলাম তার চুলের গোছা! তারপর.. উফ্ কী যে এক্সাইটিং! ভাবতেই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে...’

‘হাউ সুইট! কারারক্ষীরা কিছু বলেনি তোমাদের?’

‘ওরাই তো থামাল শেষ পর্যন্ত! কয়েক ঘা লাঠির বাড়ি পড়ল পিঠে।’

‘এত টাকা খরচ করে টিকিট কেনাটা আমাদের তাহলে সার্থক হয়েছে বলো...।’

‘একদম, পয়সা উশুল!’

ঢং ঢং করে কারাগারের ঘণ্টা বাজল। তীক্ষ্ণ সুরে কারারক্ষীর হুইসেল বেজে উঠল। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে। এবার চারদেয়ালে ঘেরা গারদে বন্দী হওয়ার সময়। এক, দুই, তিন করে গুনে গুনে ঠেলে ঠেলে লকআপের ভেতরে ঢোকানো হলো আমাদের।

১৬ নম্বর সেলে জায়গা হলো আমার। খটাশ করে লোহার দরজাটা টেনে বন্ধ করে বিশাল একটা তালা ঝুলিয়ে, চাবিটা কোমরে গুঁজে হেলেদুলে বেরিয়ে গেল কারারক্ষী।

ঘরে বিছানা-বালিশ, টেবিল-চেয়ার কিছুই নেই। একটা খাঁ খাঁ শূন্যতা কক্ষময় ঘুরপাক খাচ্ছে। জেলখানার সম্বল পুরোনো কম্বলখানা মাটিতে পেতে হাতের দুটো তালুর ওপর মাথা রেখে চিত হয়ে শুয়ে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। সম্পূর্ণ একা। নিঃসঙ্গ। করিডরে জ্বালিয়ে রাখা একটা বাতি থেকে ম্লান আলো চুইয়ে আসছে আমার সেলে। নিশুতি রাতের থমথমে নির্জনতায় হঠাৎ শোনা গেল কারও ফুঁপিয়ে ওঠা কান্নার আওয়াজ। একসময় তা-ও থেমে গেল। পলেস্তারা খসে পড়া, জীর্ণ, পুরোনো মলিন ছাদের দিকে তাকিয়ে হাজার হাজার কয়েদির সম্মিলিত দীর্ঘশ্বাসের একটা ধাক্কা অনুভব করলাম আমার বুকে। কত মানুষের চাপা কান্না, কত স্বপ্নভঙ্গের ধ্বংসস্তূপ এই সেল। নিজের সাজানো-গোছানো নিখুঁত পরিপাটি জীবনের কথা মনে পড়ল। অর্থ, বিত্ত, স্বস্তি, নিরাপত্তা—সবই তো আছে তবু কেন একটা অপূর্ণতার বোধ রক্তের ভেতর অবিরাম খেলা করে! বুকের মধ্যে কেমন একটা হাহাকার দলা পাকিয়ে ওঠে! সেই হাহাকারকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে করতেই হঠাৎ দেখি ওপর থেকে বিষণ্ন বিবর্ণ ছাদটা যেন কালো মেঘের মতো ধীরে ধীরে নেমে আসছে আমার দিকে। প্রথমে মনে হলো চোখের ভুল, তারপর দেখি, না, সত্যিই! আরে, চাপা দিয়ে মেরে ফেলবে নাকি?

আতঙ্কিত হয়ে উঠে দাঁড়ালাম। দেহের সবটুকু শক্তি দিয়ে দুই হাত উঁচু করে ধরে ফেললাম নেমে আসা ছাদটাকে, ধরেই রাখলাম! মনে হলো এই যাত্রা বুঝি ছাদের পতন ঠেকানো গেছে।

কিন্তু ইট-সুরকির এই নিরেট ভারী ছাদকে দুই হাতে আর কতক্ষণ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব? একটু অসাবধান হলেই হয়তো হুড়মুড় করে ভেঙে গড়িয়ে পড়বে মাথার ওপর। সারা রাত দুই বাহু প্রসারিত করে পতনোন্মুখ ছাদের নেমে আসা ঠেকালাম।

ভোরের প্রথম সূর্যরশ্মি পৃথিবীতে পড়ার পরপরই, আমার হাত যখন ক্লান্তি আর অবসাদে ভেঙে পড়তে চাইছে, ঠিক তখনই ছাদ আবার ধীরে ধীরে তার আগের জায়গায় ফিরে গেল। যেন ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের একটা রাত শেষ হলো।

সকালের ঘণ্টা বাজল ঢং ঢং। আবার গণনা করে কয়েদিদের লকার থেকে বের করা হচ্ছে।

আমাদের প্রিজন প্রিমিয়ারের দুই রাতের প্যাকেজ শেষ হতে চলেছে। এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা শেষে কাল থেকে আবার সেই একঘেয়ে নিয়মতান্ত্রিক জীবন শুরু।

আমি বের হওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ালাম। কারারক্ষীর পোশাক পরা লোকটি তার হাতে ধরা একটা লিস্ট দেখে দেখে একেকজনকে গেটের বাইরে পাঠাচ্ছেন। আমার পালা এল।

‘আপনি, মিস্টার ইমতিয়াজ?’

মাথা নাড়লাম, ‘হ্যাঁ।’

‘এই লাইনে আসছেন কেন?’

‘মানে?’

‘আপনের তো ভাই যাবজ্জীবন। দণ্ডভোগ এখনো অনেক বাকি আছে। এই কে আছ, এনারে ভেতরে নিয়ে যাও। নেক্সট...’