বৈশাখের পঙক্তিমালা

আরবিশুর আবাহনী : খলিল মজিদ


আরবিশু শেষে সংক্রান্তি

আসে, বছরের শেষ ভ্রান্তি

মুছে দিতে কালবৈশাখীর

উদ্বোধনে আজ সে হাজির

হোক, জ্বালুক তার পুচ্ছিকা

নির্মূল হোক বিষকণিকা

উঠুক রোদ্দুর নববর্ষের

উড়ুক স্বপ্ন গণমানুষের।



ভ্রাতৃত্ব-বৈভবে বৈশাখ : মিশকাত উজ্জ্বল

পৌষের পাতাঝরা বিষণ্ণতার প্রহর শেষে

তৎপর ফাগুনের হরিৎ পল্লব

পদ্য লেখে রাঙা শিমুল-পলাশের আলপনায়।

চৈত্রদাহে কৃষ্ণচূড়ার ডালে উত্তুঙ্গ লৌহিত্যের আধিপত্য

ঈশান-নৈর্ঋত প্রকম্পিত করে যখন নামে প্রার্থিত বারিধারা

সজীবতায় প্রাণ পায় ধুলিধূসর ঊষর প্রান্তর, লোকালয়।

চারুশিল্পীর নির্ঘুম রাতের ইজেলে আঁকা লক্ষ্মীপ্যাঁচা,

রাজহংসী, ময়ূরপঙ্ক্ষী,

হাতিসমেত রাজপথ দখলে নেয়—

মঙ্গল শোভাযাত্রার নতুন সূর্যোদয়।

হিঁদু-মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধের সৌহার্দ্যের আবহে—

ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয় 'এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...'

ইলিশ-পান্তার মৌতাতে আদৃত

বাঙা‌লিয়ানা ভ্রাতৃ‌ত্ব-বৈভবের পয়লা বৈশাখ।



কাল্পনিক অনুভূতি : রাইসা মেহজাবীন স্নেহা

ইচ্ছাগুলো কি শুধুই ইচ্ছা?

সব কি মিথ্যা?

এই যে আমার ইচ্ছা করে তাকে নিয়ে,

সদ্য ফোটা ফুলের শিশিরের মতো নিষ্পাপ আলো দিতে,

ইচ্ছা করে পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় গিয়ে বসতে

এর কি কোনো মানে নেই?

এই যে আমার ইচ্ছা করে একরাশ বৃষ্টির পর

রংধনুর নীল রঙে বসে নীলাঞ্জনা হয়ে তাকে ছুঁতে,

ইচ্ছে করে বাতাসের মাঝে অদৃশ্য ধূলিকণার মতো

শুধু তাকেই স্পর্শ করতে,

ইচ্ছে করে পৃথিবীর সকল সজীবতা দিয়ে তাকেই ভালোবাসতে

এর কি কোনো প্রাপ্তি নেই?

শুধুই কল্পনার অনুভূতি!



ইস ইলিশ, কত গিলিস?
দিলগীর আলম টিপু


ইস ইলিশ, কত গিলিস

গিলে করছিস সাবাড়,

হেথায় বলিস, সেথায় বলিস

পাঁচ কেজি বারো হাজার!

আলু খুঁজিস, শুটকি খুঁজিস

খুঁজিস শুকনা মরিচ,

হাড্ডিসারা, খায় যে তারা

তুই কী ঝাল বুঝিস?

ভোর বেলাতে,সেই ঠেলাতে

বসে হিসাব কষিস,

এক থালা, পান্তা গলা

হলো হাজার পঁচিশ!

ইস ইলিশ, কত গিলিস

সব যে ভুলে গেছিস,

পাশের বাড়ি, অনাহারী

লকডাউনে মফিজ!