আয়নাঘরে রচিত কবিতা
আয়নাঘরের দেয়ালে কবিতা লেখা যায় না!
গুম-বন্দীদের হাতে কোনো কলম-কাগজ নেই
কম্পিউটার প্যাড নেই
কীভাবে কবিতা লেখা হয় আয়নাঘরে?
কিন্তু আয়নাঘরের দেয়ালে কবিতা আছে
গুম-বন্দীরা কাঁদতে কাঁদতে কি অশ্রু দিয়ে লিখেছে
সেই কবিতা, এবড়োখেবড়ো প্রাচীন দেয়ালে?
অশ্রুজল শুকিয়ে যায়
অশ্রুজলের কবিতারা হারিয়ে যায়
নোনাজলের কবিতা পাঠকের কাছে
আর পৌঁছুতে পারে না!
কিন্তু আয়নাঘরের দেয়ালে কী যেন কী লেখা আছে
হয়তো কোনো ফোন নাম্বার লেখা আছে—
সেই ফোন নাম্বারই কি রূপান্তরিত কবিতা?
আয়নাঘরের দেয়ালে ক্যালেন্ডার এঁকে
বারো মাসের দিন-তারিখ লেখা আছে;
কীভাবে লিখেছে, কারা লিখেছে, লিখেছে—
তার গুম হয়ে যাওয়ার ইতিবৃত্ত, দু-এক লাইন
মর্মন্তুদ ইতিহাস?
রক্তাক্ত জুলাইয়ের পর আমাদের জানা হয়—
নিজের হাতের আঙুল কামড়ে রক্ত বের করে
রক্তাক্ত আঙুল ঘষে দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়েছে
আর্তনাদ—সেই আর্তনাদই কি আয়নাঘরে রচিত কবিতা
আর আমরা সেই কবিতার অসহায়, ব্যথিত পাঠকমাত্র!