আফজাল হোসেনের কবিতা
প্রতিশোধ
ক্রমে ক্রমে আমাদের চোখগুলো নীরবে, অভিমানে অথবা ক্ষোভে
ঝাপসা হতে শুরু করেছে
ডাক্তার পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে পাল্টে দিচ্ছে কাচ
আমরা খোশমেজাজে কাচ দিয়ে দেখার আনন্দ নিয়ে ঘরে ফিরি
যা যা আমাদের ছিল, ছিল সবচেয়ে নিজের হয়ে
হাত পা মাথা মগজ নাক মুখ কান ইত্যাদি
বহুদিনের অযত্ন অমর্যাদায় একটু একটু করে পর হওয়া শুরু করেছে
অনেককাল আগে থেকেই সবাই ইশারা–ইঙ্গিতে জানান দিয়েছে—
দেখো, তোমরা যে বদলে যাচ্ছ—মোটেও ভালো লাগছে না আমাদের
কারও কথা কানে তুলিনি কেউই
যা যা যেমন করে দেখবার কথা ছিল, দেখিনি আমরা
উন্মত্তকালে আমরা বলেছি, শুনেছি ও চেয়েছি কাঁড়ি কাঁড়ি ভুল
কেবলই আলো ভালোবেসে বেসে বুনেছি, কিনেছি অন্ধকার
এসো, অন্ধকারে বসে এখন তাহলে হাহাকারের বানান মুখস্থ করি
পানকৌড়ি
পাখিটা এইখানে ডুব দিয়ে
ওইখানে ভেসে উঠে বলে, এই তো আমি
পানকৌড়ি দেখলে তোমার কথা মনে হয়ে যায়
একেবারে তোমার মতোই হুবহু
ঠিক তোমার মতোই চঞ্চল গ্রীবা
তোমার মতোই ছেলেমানুষি
এই আছি দেখো, এই আমি নেই
ডুব দেওয়া আর ভেসে ওঠার খেলা খেলতে খেলতে
হাসতে হাসতে হঠাৎ দেখি, কোথাও সে নেই
বিস্তীর্ণ জলে কোথাও নেই তার ঢেউ
খুঁজতে থাকি অবিরাম আর ভাবতে থাকি
চোখে বাঁধা আছে সমগ্র সীমানা
কোথায় আর যাবে, পেয়ে যাব তারে
সরল আশাই তো বাঁচিয়ে রাখে আমাদের প্রেম
পানকৌড়ি দেখলে এখনো
তোমার কথা মনে হয়ে যায়
মনে হয়, হারিয়ে যাওয়ার পাখি তুমি নও
তুমি আমার ডুব দিয়ে দিয়ে ভেসে ওঠা পাখি