প্রতারিতের তূষ্ণীভাব

ধূসর চুলের বয়সে

রাত্রিদিন কেমন যেন নিষ্ফল হয়ে যায়।

জীবন যখন নিরঞ্জন হয়ে যায়, তখন

তাকে ফলহীন অনাবশ্যক বলা যায়;

দারুণ দ্বিপ্রহরে সে আর হয় না কৃষ্ণচূড়া

শ্রাবণের বর্ষাদিনে সে আর নীপবনে ফোটে না ভুলেও:

জীবন তখন আর জীবনকে চিনতে পারে না,

জীবন তখন কাতর ঘাসের মতো জড়সড় হয়ে

কেমন যেন এক নিখোঁজ সংবাদের মতো বিনম৶;

অথচ লক্কড় লঞ্চের ইঞ্জিনটা

এ বয়সেও কোটি কোটি বুদ্‌বুদের নকশা আঁকে

মধুমতীর ঘোলা পানির অগাধ বুকে।

আসলে একবার যদি মৃত্যুর কথা ভাবো

তাহলে এ বিশ্বসংসার এতটাই নিরর্থক মনে হবে

যে সেখানে আসা আর যাওয়া যেমন,

যাওয়া আর আসাটাও ঠিক তেমনি পরিত্রাণ।

যখন নিশ্চিহ্নই হবে সকল চিহ্ন,

তখন চিহ্ন রাখারই কোনো মানে হয় না।

এতটা বছর তাহলে শুধু এক ব্যর্থ সময়ের

বাস্তুচ্যুত বাসিন্দার মতো

একটা নামহীন, স্পৃহাহীন, গৃহহীন পরিক্রমায়

বসবাস করে গেলাম এই উদ্বাস্তু শিবিরে?