>বোদা বর্ষার মতো সে প্রবেশ করল ঈষৎ যন্ত্রণাতে
সে ছাদের ঘর ভ্রুকুটি করেছে,
সেসব শাড়ি ঝড়ে উড়ে উড়ে বলেছে নালিশ করে দেবে
আকামানো খরখরে লালাময়, বিরোধী আবেগে...কবিতাটি বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায়ের। কবিখ্যাতির বাইরে বহতা ইদানীং পরিচিত হয়েছেন প্রাচীন সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধারের প্রকৃতি নির্ধারণ করার পদ্ধতি নিয়ে তাঁর লেখা গবেষণাপত্রের জন্য। সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধার নিয়ে তাঁর ৩৭ পাতার গবেষণাপত্র ‘ইন্টারোগেটিং ইন্ডাস ইনসক্রিপসনস টু আনর্যাভেল দেয়ার মেকানিজমস অব মিনিং কনভেনিয়ানস’ শীর্ষক লেখাটি নেচার ব্র্যান্ডের পত্রিকা ‘প্যালগ্রেভ কমিউনিকেশনস’-এর পঞ্চম ভলিউমে ৭৩ নম্বর আর্টিকেল হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে গত ১৬ জুলাই। জন্মসূত্রে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষ হলেও কর্মসূত্রে বহতা বসবাস করেন বেঙ্গালুরুতে। ই-মেইলে তাঁর সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রজত কান্তি রায়।
প্রথম আলো: ‘সময় নেই’—এই শব্দবন্ধকে বাঙালি প্রবাদের মতো ব্যবহার করে। আইটি প্রফেশনের মানুষ হয়ে কবিতা, সন্তান, সংসার এবং সর্বোপরি সিন্ধু লিপির মতো জটিল ব্যাপারগুলো নিয়ে মাতামাতি করার সময় বের করেন কীভাবে?
বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায়: প্রথমেই বলি, বাঙালি হিসেবে বাঙালির যাবতীয় দোষ-গুণ নিয়েই আমি, একদম সাধারণ বাঙালি। তাই জাতিনিন্দা করবও না, করার যোগ্যতাও নেই। ছোটবেলা থেকেই, পড়াশোনায় খুব ফাঁকিবাজ হলেও, বিজ্ঞানমনস্ক ছিলাম। নানা কারণে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ হয়নি, কারিগরিবিদ্যা পড়ে করে খাই। কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে কাজ না করতে পারার হুতাশ আর অতৃপ্তি ছিল সারা জীবন। সিন্ধু লিপি নিয়ে কাজটি করার একটি আকস্মিক সুযোগ যখন এল, তখন ইন্টারডিসিপ্লিনারি নানান পদ্ধতি প্রয়োগ করে কাজ করার মাধ্যমে সেই অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষাকে খানিকটা মিটিয়ে নিয়েছি, এ-ই মাত্র। সময়ের কথা যদি বলেন, কবিতার জন্য ঠিক সময় লাগে না আলাদা করে। জীবনের নানান অভিধাতে যে শব্দ ওঠে আত্মায়, তার শব্দটি যদি ধাতব তীক্ষ্ণ ‘ঠুং’ শব্দ হয়, তাহলে সেটি কবিতা, না হলে গদ্য। সে কবিতা সেই মুহূর্তে লিখে ফেলে সরে আসি তার থেকে। সংসার আর আমার শিশুপুত্র দেবাঙ্গ ওরফে বিরাজ নিজেদের দরকারি সময় আদায় করে নেয়। ছাড়ানছুড়োন নেই। সময় ছেড়ে দেয় খালি ঘুম। বহুদিন পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটানো অভ্যাস করেছি। মাঝখানে ১০ মাস চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে সর্বক্ষণ গবেষণার কাজও করেছি। এভাবেই পেরেছি এটুকু।
প্রথম আলো: তার মানে বলতে চাইছেন, কিছু একটা করতে চাইলে সেটার জন্য সময় বের করা সম্ভব?
বহতা: কোনো কোনো কাজ মানুষকে তার নিজের কাছে ফিরিয়ে দেয়। সে রকম কাজ এত তীব্র অধিকার নিয়ে মানুষকে ডাকতে পারে, সেখানে সময়, অর্থবিত্ত—সব ছেড়ে আসা যায়।
প্রথম আলো: আপনার গবেষণা বিষয়ে সংক্ষেপে কিছু বলুন।
বহতা: আমার গবেষণাকে তাই আমি দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছি। প্রথম ভাগ, যেটি ৯ জুলাই নেচার ব্র্যান্ডের জার্নাল ‘প্যালগ্রেভ কমিউনিকেশনস’-এ প্রকাশিত হলো, সেটি দুটি মূল জিনিস প্রমাণ করার চেষ্টা করে—১. সিন্ধু লিপিতে উৎকীর্ণ সিলমোহর আর মৃৎ-ট্যাবলেটগুলো আজকের দিনের স্ট্যাম্প, মুদ্রা, টোকেন ইত্যাদির সঙ্গে তুলনীয়। আর সিন্ধু লিপিতে লেখা বার্তাগুলো কোনোভাবেই আধুনিক ভাষায় যে রকম ফ্রিলি কম্পোজড ন্যারেটিভস লেখা হয় তা নয়। মুদ্রার বা স্ট্যাম্পের বিশেষ বিশেষ অংশে যেমন বিশেষ বিশেষ তথ্য দেওয়া থাকে, ঠিক সে রকমই এগুলোর বিশেষ বিশেষ স্থানে বিশেষ ধরনের বা শ্রেণির শব্দচিত্র থাকে, যারা ফাংশনালি এক রকমের। অর্থাৎ এই উৎকীর্ণ সিলমোহর আর ট্যাবলেটগুলো ফরমালাইজড ডেটা ক্যারিয়ারস, যাদের মধ্যে ‘ডকুমেন্ট স্পেসিফিক সিনট্যাক্স’ আর ‘লিঙ্গুইস্টিক সিনট্যাক্স’, এই দুই রকমের সিনট্যাক্স বা গঠনপদ্ধতি দেখা যায়।
২. দ্বিতীয়ত, এই সিন্ধু লিপিতে লেখা বার্তাগুলোর অধিকাংশ কেবলই ‘শব্দচিত্র’ সমাহারে লোগোগ্রাফিক্যালি লেখা। অর্থাৎ প্রায় ৯০ শতাংশ উৎসাহী মানুষ যেভাবে ‘বানান করে করে’ বা রেবাস পদ্ধতিতে এগুলো পড়ার চেষ্টা করেন, তাঁরা আমার মতে ভ্রান্ত। এমন নয়, এ কথা অন্য কেউ আগে একেবারেই বলেননি। পদ্মশ্রী ইরাভতম মহাদেবন, যিনি ভারতবর্ষে কম্পিউটার ব্যবহার করার প্রায় আদি যুগে, তিনিও এই লিপিকে লোগো গ্রাফিকই মনে করেন। কিন্তু মজার কথা এই যে আসকো পারপোলা, যিনি বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রগণ্য ইন্ডোলজিস্টদের একজন এবং অগাধ বিশাল পণ্ডিত, তিনিও কিন্তু ‘রেবাস পদ্ধতি’ ব্যবহার করেন এই লিপির পাঠোদ্ধারের জন্য। তাঁর মতে, কিছু কিছু প্রাচীন তামিল নাম, যেমন: ‘আরু-মিন’, ‘ভেল-মিন’ ইত্যাদি এই লিপিতে উৎকীর্ণ সিলমোহরগুলোয় লেখা আছে। একইভাবে ব্রায়ান ওয়েলস, যিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিন্ধু লিপি নিয়ে ডক্টরেট এবং এই সম্পর্কিত দু-দুটি বইয়ের লেখক, তিনিও ‘রেবাস পদ্ধতিতে’ একটি খরগোশের ছবিওয়ালা তাম্রফলকের উৎকীর্ণ লিপিতে খরগোশের জন্য ব্যবহৃত প্রাচীন তামিল শব্দ ‘কেভি-য়ান’ রেবাস পদ্ধতিতে পড়ে ফেলেছেন বলে দাবি করেন। অথচ মহাদেবনের কথা মানতে হলে এভাবে রেবাস পদ্ধতিতে এই শব্দগুলো পড়াই যায় না। আবার এঁদের কথা মানতে গেলে হয়তো খানিকটা ভুল প্রমাণিত হয় মহাদেবনের মূল পদ্ধতিটিই। এ অবস্থায়, আমার কাজটি বেশির ভাগ সিন্ধু লিপির বাক্যাংশে, তার চিহ্নদের শব্দচিত্র হওয়ার একটি অকাট্য প্রমাণ দিতে পেরেছে এবং বিভিন্ন লিপিচিহ্নের এক অতি প্রয়োজনীয় শ্রেণিকরণ করে নিয়েছে, বিভিন্ন লিপিকেন্দ্রিক তথ্য-প্রমাণের মাধ্যমে। আমি গ্রিক লিনিয়ার বি লিপির পাঠোদ্ধারের পথে অত্যন্ত প্রভাবশালী গবেষক এলিস কোবারের কর্মপদ্ধতির ভক্ত। তাঁর করে যাওয়া স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস, পরবর্তীকালে মাইকেল ভেনট্রিসের মাধ্যমে লিনিয়ার বি লিপির পাঠোদ্ধারের প্রথম সোপান ছিল। আমারও এই আশা যে আমার স্ট্রাকচারাল কাজটি, আগামী দিনে সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সদর্থক ভূমিকা নেবে। আর আশার কথা এই যে আমার এই গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে আমি নিজেও সেই লিপির আংশিক পাঠোদ্ধারের কাজে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছি, যে কাজটি প্রকাশিত হওয়ার টানেলে এখনো জায়মান।
প্রথম আলো: এই ব্যাপক ‘বাণিজ্যিক সময়ে’ সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধারের প্রক্রিয়ার মতো একটি জটিল এবং ‘ওল্ড ফ্যাশনের’ জিনিস নিয়ে আগ্রহী হলেন কেন?
বহতা: এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। গ্রিক লিনিয়ার বি লিপির পাঠোদ্ধার যিনি করেন, মাইকেল ভেন্ট্রিস, তিনিও কিন্তু আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। ইতিহাসবেত্তা বা ভাষাবিদ বা ক্ল্যাসিসিস্ট ছিলেন না। লিনিয়ার বি লিপিটি তাঁর কাছে একটি চ্যালেঞ্জিং ধাঁধা ছিল। এর পেছনের ইতিহাস নিয়ে আলাদা করে তেমন কৌতূহল ছিল না। আমার কাছেও সিন্ধু লিপি এমনই এক উত্তেজক ধাঁধা, যার সমাধানে ফোনেটিক্স, তৎসংক্রান্ত ফিজিওলজি এবং একাউস্টিক সায়েন্স, লিঙ্গুইস্টিকস, অঙ্ক, পুরাতত্ত্ব, ইতিহাস, প্রাচীন সভ্যতার অর্থনীতি, কম্পিউটারবিদ্যা এবং সর্বোপরি কমনসেন্স প্রয়োজন। যেমন: আগ্রহে মানুষ সুডোকু খেলে, শব্দ সন্ধান করে, তেমনি উদগ্র আগ্রহে আমি এই লিপির পাশে দিনের পর দিন বসে থাকি। জটিল বলেই মজা। ‘ওল্ড ফ্যাশন্ড’ কি না ভাবিনি। এখনো দেশ-বিদেশের কত পণ্ডিত মানুষ এই নিয়ে নিরলস গবেষণা করছেন তো! তাঁরাও এই বিষয়কে ‘ওল্ড ফ্যাশন্ড’ ভাবেন না বোধ হয়। প্রাচীন গম্ভীর সুরার মতো এর নেশাই আলাদা। অত্যন্ত জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হরপ্পা ডটকম তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।
প্রথম আলো: ‘ওল্ড ফ্যাশন’ বললাম, কারণ এখনকার ট্রেন্ড হলো বাণিজ্য। ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য কেউ ট্রেন্ডের বাইরে যেতে চাই না আমরা।
বহতা: আমার মনে হয়, বাণিজ্য সব সময়েই একটা ‘ট্রেন্ড’ ছিল। বাণিজ্য খুব প্রয়োজনীয় আর ভালো ব্যাপার। সিন্ধু সভ্যতার লোকজন ভীষণভাবে বাণিজ্যধর্মী ছিল কিন্তু। নানা জায়গায় কিছু বাণিজ্যিক সামগ্রীর ওপর মোনোপলি করায়ত্ত করতে তারা অনেক কাঠখড় পোড়াত, সেই পাঁচ হাজার বছর আগে। আবার সব সময়েই কিছু মানুষ অর্থনৈতিক সুবিধা ইত্যাদির বাইরে গিয়ে ভেবেছে। এখনো তার সংখ্যা কম নয় একেবারেই। সুইডেন, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি দেশে ঝাঁ-চকচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কত যে অধ্যাপক বৈদিক স্ক্রিপচারস নিয়ে নিরলস কাজ করে চলেছেন, তা ওয়েবসাইট একাডেমিয়া ডটএডু দেখে নিলেই বোঝা যাবে। ভারতবর্ষেও নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত কারিগরি বিদ্যায় শিক্ষিত ছাত্রছাত্রী আবার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে আসছেন ইন্টারভিউ দিয়ে, এত আমার নিজের চোখে দেখা।
প্রথম আলো: প্যালগ্রেভ কমিউনিকেশনসের মতো পত্রিকার রিভিউয়ারদের কাছ থেকে আপনার অভিসন্দর্ভ ‘ব্লাইন্ড রিভিউ’ পদ্ধতিতে স্বীকৃতি পেয়েছে। কেমন লাগছে ব্যাপারটা?
বহতা: রিভিউয়ারদের মতামত তো নাম করে উল্লেখনীয় ও নিয়মানুমত নয়। কারণ, এটি ‘ডাবল ব্লাইন্ড রিভিউ’, যেখানে গবেষক আর রিভিউয়ার একে অন্যের নামধাম কিচ্ছু জানবে না। কিন্তু বিশ্ববিশ্রুত পণ্ডিতেরই তো এসব জায়গায় ডাকে। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সম্মতি আদায় করে নেওয়া ভীষণ পরিতৃপ্তির ব্যাপার, যা খুব আত্মবিশ্বাস জোগায়, আমার মতো এই বিষয়ে অদীক্ষিত মানুষকে।
প্রথম আলো: সিন্ধু লিপি নিয়ে আপনার পূর্বসুরি গবেষকদের কাজকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন এখন?
বহতা: সিন্ধু সভ্যতা এবং তার লিপি নিয়ে অসংখ্য পণ্ডিত গবেষক যেসব ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে গেছেন এবং এখনো করে চলেছেন, সেসব না থাকলে তো আমাদের এই প্রজন্মের কাজ করা সম্ভবই হতো না। তামিল ব্রাহ্মী লিপি এবং সিন্ধু লিপির গবেষক, প্রয়াত পদ্মশ্রী ইরাভতম মহাদেবন যদি সিন্ধু সভ্যতার উৎকীর্ণ বস্তুগুলোকে নিয়ে একটি ডিজিটাইজড কর্পাস বা ডেটাবেইস না বানিয়ে রাখতেন সেইই ১৯৭৭ সালে, যদি বিশ্ববিশ্রুত ইন্ডোলজিস্ট আসকো পারপোলা না বানাতেন তাঁর অসাধারণ ফোটোগ্রাফিক কর্পাস—সিন্ধু সভ্যতার নানা আর্টিফ্যাক্টকে ফিল্ড ভিজিট না করেই চাক্ষুষ করার উপায় করে দিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করা গবেষক ব্রায়ান ওয়েলস যদি তাঁর কর্পাসটি না বানাতেন, যেখানে আরও কিছু নতুন আবিষ্কৃত লিপির অংশ স্থান পেয়েছে, তাহলে বাড়িতে বসে কম্পিউটারের সাহায্যে এই কাজ করতেই পারত না আমাদের মতো অনেক গবেষক। এ ছাড়া আরও আগের গবেষকেরা, পুরাতত্ত্ববিদেরা, ঐতিহাসিক এবং ভাষাবিদেরা, (যেমন: জন মার্শাল, জি আর হান্টার, গ্রেগরি পশেল, এম এস ভ্যাটস, বি বি লাল, আর এস বিস্ট, আলেক্সান্ডার কানিংহাম, মাইকেল জ্যানসেন, জে এফ জ্যারিগে এবং আরও কত কত যে পণ্ডিত!) যেসব কাজ করেছেন, কাজ প্রকাশ করেছেন, তা নিয়ে তর্ক করেছেন, তার ওপর নির্ভর করেছে পরের গবেষকদের কাজ। জোনাথন মার্ক কেনয়ার, যিনি এখন সিন্ধু সভ্যতার আর্কিওলজিস্টসের মধ্যে অগ্রগণ্য, তার কাজ বাদ দিয়ে আমি এই গবেষণা করতেই পারতাম না। এখনো অক্লান্তভাবে কাজ করে চলেছেন, খননকার্য করে চলেছেন বসন্ত শিন্ডে, কে কে ভান প্রমুখ কত আর্কিওলজিস্ট। অধুনা সিন্ধু লিপিকে নিয়ে গণিত এবং সংখ্যাতত্ত্ব ব্যবহার করে অসাধারণ অন্য রকমের কাজ করেছেন রণজয় অধিকারী, রাজেশ রাও, নিশা যাদব, ময়াঙ্ক ভাহিয়া, এম করভিঙ্ক প্রমুখ বিজ্ঞানী। আমি খুব খাপছাড়াভাবে নামগুলো করছি, কারণ দেড় শ বছরের গবেষণাকে কিছুতেই একটি অনুচ্ছেদে লেখা যায় না। তাঁদের অনেকেই গুরুস্থানীয়, নাম করলে কানে হাত দিতে হয়।
কিন্তু সিন্ধু লিপি নিয়ে সরাসরি যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের কাজের এক একটি অংশ হয়তো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ (যেমন: লিপিগুলো ডান দিক থেকে বাঁ দিকে লেখা হয়েছে, এটি নিজেই এক ভীষণ দরকারি আবিষ্কার), কিন্তু অন্য কিছু অংশ আমার মতে এম্পিরিক্যালি স্থিতিক্ষম বা নিষ্পাদনযোগ্য নয়। প্রায় ১০০ গবেষক এখন অবধি দাবি করেছেন যে তাঁরা সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধার করে ফেলেছেন। কিন্তু তাঁদের একজনের কথাও গবেষকসমাজে সর্বজনগ্রাহ্য হয়নি। যেমন অনেক ক্ষেত্রে, যিনি সংস্কৃত ভালো জানেন, তিনি বেমালুম সংস্কৃত ব্যবহার করে সব লিপি পড়ে ফেলছেন, যিনি তামিল ভালো জানেন, তিনি তামিলে পড়ে ফেলছেন সবকিছু। যিনি কন্নড় জানেন, তিনি আবার সিন্ধু লিপির সব শব্দে কন্নড় ভাষা খুঁজে পেয়েছেন—এমন দৃষ্টান্তও বিরল নয়। যেহেতু তাঁদের অনেকেই বিশ্ববরেণ্য ইন্ডোলজিস্ট, ভাষাবিদ এবং সমুদ্রের মতো তাঁদের পাণ্ডিত্য, নাম করে তাঁদের কাজের সম্পর্কে আমার আপত্তির কথা এই স্বল্প পরিসরে বললাম না। কিন্তু কিছু অংশ নিয়ে যদি আপত্তিই না থাকে, যদি অনেক কাজ বাকিই না থাকে, তাহলে আর এই কাজ করতে আসতাম কেন? সিন্ধু লিপির স্ট্রাকচারাল দিকের ওপরে করা পূর্বসুরিদের কাজ এবং তার সঙ্গে আমার কাজের মিল এবং তফাত আলোচনা করে আমার একটি প্রায় ছয় হাজার শব্দের ডকুমেন্ট এই পেপারের সঙ্গে সাপ্লিমেন্টারি ডকুমেন্ট-৩ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রথম আলো: নৃতত্ত্ব অথবা আর্কিওলজি বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া না করেও গবেষণার পেশাদারি মান অক্ষুণ্ন রাখলেন কীভাবে?
বহতা: এই প্রশ্নের দুটি উত্তর হয়। প্রথমত, প্রতিষ্ঠানের বাইরে তো বটেই, এমনকি ভেতরেও অধিকাংশ গবেষকই স্বশিক্ষিত। দ্বিতীয়ত, খুব খালি হয়ে, জন লকের ট্যাবুলা রাশা বা খালি শেলেটের মতো করে, যদি কোনো কাজের কাছে যাওয়া যায়—কোনো বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতের চশমা না পরে, যদি সৎভাবে সেই কাজকে নিয়ে যা যা জিজ্ঞাসা তা গুগলকে জিজ্ঞেস করা যায়, সেসব বিষয়ের অনেক বই পড়ে ফেলা যায় যদি মন খুলে, তাহলে সেই কাজই ঠিক দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আপনাকে। আমার ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে বোধ হয়। আমি এই কাজ করার সময়ে প্রথম দিকে কী পরিমাণ জাঙ্ক যে পড়েছি, তা বলার নয়। শুরুর দিকে, একটি ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে পলিনেশিয়ান লিপির সঙ্গে সিন্ধু লিপির যোগ আছে ভেবে পলিনেশিয়ান জাতির নানান ভাষার ব্যাকরণ থেকে শুরু করে তাদের পুরাণ পর্যন্ত পড়ে ফেলেছি। পরে প্রাচীন ইজিপশিয়ান ভাষার ব্যাকরণ, প্রাচীন ব্রাহুই ভাষার ব্যাকরণ, যা মনে হয়েছে, পড়ে দেখেছি। প্রাচীন মেসোপটমিয়ান ভাষায় লেখা পুরাণ, কাব্য, এসবও। তা বাদেও ভাষা নিয়ে কিছু গাণিতিক বিষয়, যা পড়তে, পড়ে একটু একটু করে বুঝতে খুব কষ্ট হয়েছে, সেসবও আছে পাঠতালিকায়। তা ছাড়া নানা প্রাচীন সভ্যতা নিয়ে, তাদের ইতিহাস, ভাষা ইত্যাদি নিয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ। কিছু কিনে, কিছু ‘জেএসটিওআর’-এর ফ্রি অ্যাকাউন্ট থেকে পড়ে। আস্তে আস্তে কাজটাই আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, কোনগুলো পড়তে হবে, কোনগুলো বাদ দিতে হবে, কী নিয়ে ভাবতে হবে, কতটুকু লিখতে হবে।
প্রথম আলো: এ গবেষণার পদ্ধতিবিদ্যা সম্পর্কে ধারণা দিন।
বহতা: গবেষণাপদ্ধতির মূল হলো আগে থেকে কোনো সমাধান ভেবে নিয়ে প্রবলেম স্টেটমেন্টকে জোর করে সেই সমাধানের মধ্যে দুমড়েমুচড়ে না ঢুকিয়ে দিয়ে প্রবলেম স্টেটমেন্টের দিকে অখণ্ড মনোযোগ দেওয়া। সৎভাবে। সিন্ধু লিপির ভেতরের প্যাটার্নগুলো, আর সিন্ধু লিপিতে উৎকীর্ণ বস্তুগুলোর পুরাতাত্ত্বিক কনটেক্সট অনেক প্রমাণ লুকিয়ে রেখেছে। শার্লক হোমসের মতো সেগুলো দেখতে পেতে হবে।
প্রথম আলো: ২০১৬ সালের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হলো। এটির উদ্দেশ্য ছিল সিন্ধু লিপির পাঠোদ্ধারের প্রকৃতি নির্ধারণ করা। দ্বিতীয় গবেষণাপত্র প্রকাশনার চেষ্টা চলছে, যেটির খসড়া সমাপ্ত এবং এটিও সিন্ধু লিপি নিয়ে। দ্বিতীয় গবেষণাপত্রে কী প্রমাণ করতে চাইছেন?
বহতা: দ্বিতীয় গবেষণাপত্র পাঠোদ্ধার নিয়ে। প্রথম গবেষণাপত্র খুঁজে দেখেছে, সিন্ধু লিপি কীভাবে অর্থ বহন করে। দ্বিতীয় গবেষণাপত্র খুঁজে দেখছে, সিন্ধু লিপি কী বিষয়ে অর্থবহন করে, কী কী বার্তা তাতে লেখা। প্রথমটি স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস। দ্বিতীয়টি সিম্যান্টিক অ্যানালাইসিস।
প্রথম আলো: সিন্ধু লিপি নিয়ে ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গি কী—অন্তত গবেষণা করতে গিয়ে আপনার পড়া এবং মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করে আপনি কী বুঝলেন?
বহতা: যে অর্থে অন্য কিছু গবেষণার ক্ষেত্রে সাঈদীয় (এডওয়ার্ড সাঈদ) বা পোস্টকলোনিয়াল তত্ত্বের অর্থে ‘ওরিয়েন্টালিজম’ কথাটি প্রযোজ্য, এ ক্ষেত্রে সেটি ঠিক সেভাবে হয়তো প্রযোজ্য নয়। ইউরোপিয়ান গবেষকেরা ততটাই শ্রদ্ধার সঙ্গে, অবজেকটিভ মানসিকতা নিয়ে এই বিষয়ে কাজ করেছেন এবং করছেন, যতটা প্রাচ্যের মানুষ।
প্রথম আলো: ইতিহাসবিদ রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে আপনি, মাঝখানে আরও কিছু বাঙালি পণ্ডিত রয়েছেন—সিন্ধু সভ্যতা নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় বাঙালির একটা ধারাবাহিকতা তৈরি হলো। আপনার নিজের মূল্যায়ন কী?
বহতা: বাপরে! কার সঙ্গে কার তুলনা! দেখুন, একটি মাত্র গবেষণাপত্র ছাপিয়ে, নিজের সঙ্গে এমন সব পণ্ডিতের নাম একই সারিতে রাখব, এত বড় মূর্খ আমি নই। আরও কত স্বনামধন্য বাঙালি এ নিয়ে কাজ করেছেন। করছেনও। ননীগোপাল মজুমদারের কথাই ধরুন না কেন (১৮৯৭-১৯৩৮), যিনি চাহ্নুদারোতে প্রায় ৬২টি সিন্ধু সভ্যতার সাইট আবিষ্কার করেন। সরাসরি ছাত্রী না হলেও, যাঁকে আমি গুরু বলে মনে করি, রণজয় অধিকারী, বাঙালি পদার্থবিদ, গণিতবিদ, তিনি আর তাঁর সহগবেষকেরা কেবল যে অঙ্কের মাধ্যমে সিন্ধু লিপির সঙ্গে ভাষার যোগ থাকার সম্ভাবনা প্রমাণ করেছেন তা-ই নয়, তিনি সম্প্রতি একটি গণিতভিত্তিক সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনও বানিয়েছেন, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কোনো নতুন লিপির নিদর্শন সরাসরি ডিজিটাল কর্পাসের অন্তর্ভুক্ত হবে, হিউম্যান ইন্টারভেনশন ছাড়াই। আমি তাঁদের সবার কাজের অনুপ্রেরণায় নতুন কিছু কাজ করার চেষ্টা করেছি মাত্র। আশা করি, ‘রাজেন্দ্র-সঙ্গমে দীন যথা যায় দূর তীর্থ দরশনে’ আরও কিছু উন্মোচক পথ হেঁটে যেতে পারব।
প্রথম আলো: সিন্ধু লিপি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
বহতা: সিন্ধু লিপি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনেক দিক দিয়ে। ১. যুক্তিযুক্তভাবে যতটুকু সম্ভব ঠিক ততটুকু পাঠোদ্ধারের চেষ্টা, কোনো আরোপিত বক্তব্য না রেখে, তথ্যপ্রমাণসহ। ২. সিন্ধু লিপির কোনো কোনো কর্পাসকে সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেশি সন্ধানযোগ্য (সার্চেবল) করে তোলা, ৩. বিভিন্ন এক্সকাভেশন রিপোর্টে থেকে যাওয়া সংশ্লিষ্ট মণিমাণিক্য জনসমক্ষে নিয়ে আসার চেষ্টা, ৪. এ-সম্বন্ধীয় গবেষণাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে সহজবোধ্য বই ইংরেজি ও বাংলায় লিখে ফেলা।
প্রথম আলো: সিন্ধু লিপি নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা পেলেন কীভাবে?
বহতা: বিজ্ঞানী রণজয় অধিকারী এবং তাঁর সহগবেষকেরা সিন্ধু লিপি নিয়ে যেভাবে ব্যতিক্রমী গণিতভিত্তিক কাজ করেছেন, তার সংবাদ পেয়েছিলাম ২০০৮ সালে। তার অনেক পরে ২০১৪ সালের মাঝামাঝির দিকে রণজয়ের সঙ্গে আমার স্বামীর আয়োজিত একটি সেমিনারের পার্টিতে আলাপ হয়। সিন্ধু লিপি নিয়ে তাঁর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাকে মুগ্ধ করে, প্রেরণা দেয়। ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে সন্তান, সংসার এবং জীবিকা সামলে নতুন করে অন্য কোনো বিষয়, যেমন: পদার্থবিদ্যা বা জীববিদ্যা নিয়ে যে পড়াশোনা করা যাবে না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে, এটা তত দিনে বুঝে নিয়েছিলাম। যেহেতু সিন্ধু লিপির গবেষণা কম্পুটেশনাল অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে করা সম্ভব, কোনো ওয়েটল্যাব লাগে না, কোনো অতি মূল্যবান যন্ত্র লাগে না, কেবল মগজাস্ত্র প্রয়োগ করলেই হলো। আমি নিজের অতৃপ্ত গবেষণা করার ইচ্ছা চরিতার্থ করতে সিন্ধু লিপিকে নিয়ে কাজ শুরু করি। প্রয়াত গবেষক কোবারের জীবনী পড়ে মুগ্ধ হই—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে লেখার কাগজটাগজ সহজে পাওয়া যেত না বলে যিনি লিনিয়ার বি লিপির গবেষণার জন্য নিজের কেনা সিগারেট প্যাকেট কেটে কেটে ১ লাখ ৮০ হাজার কার্ড বানিয়েছিলেন সেই লিপির নানান প্যাটার্ন টুকে রেখে তাদের বিশ্লেষণ করার জন্য। ভাবা যায়? আমি ভেবেছিলাম, তাহলে আজকের দিনে, কম্পিউটার প্রফেশনাল হয়ে আমি কেন পারব না। আমাকে তো দুই লাখ কাগজের কার্ড বানাতে হয় না সিন্ধু লিপির স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস করতে, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করলেই তো হয়। তারপর পদ্মশ্রী ইরাভতম মহাদেবনের মতো কিছু মানুষের উদারতা, স্নেহ, বইপত্র দিয়ে সাহায্য, এসব এগিয়ে যেতে, টিকে থাকতে মদদ দিয়েছে। আমি নিজের মতো করে কাজটি করলেও রণজয় আমাকে পত্রিকায় লেখা বের করার কৃৎকৌশল নিয়ে সুপরামর্শ দিয়েছেন, উৎসাহ জুগিয়েছেন। কোনো রকম সেন্সেশনালাইজ না করে বললাম সত্যিটা।
প্রথম আলো: আপনার জন্ম ও বেড়ে ওঠার দিনগুলো মনে পড়ে কি?
বহতা: নিশ্চয়ই মনে পড়ে। আমার বাবা, অমর্ত্য মুখোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক এবং ভীষণ সাহিত্যানুরাগী। মা রুবী মুখোপাধ্যায়ও সংসার সামলানো বাদে গল্প ও কবিতা লেখেন—মাঝেমধ্যেই খুব ভালো লেখেন। ছোটবেলায় আমাকে বিপুল পরিমাণ সাহিত্য পড়িয়েছেন তাঁরা। সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ পড়েছি ১১ কি ১২ বছর বয়সে। পড়াশোনা না করে ভীষণ গল্পের বই পড়তাম। খুব লিবারেল পরিবেশে বড় হয়েছি। ভাইয়ের সঙ্গে ভাব, ঝগড়া, খুনসুটি করে। সাধারণ, শুরুর দিকে অভাবী বাঙালি পরিবার। মায়ায় ঘেরা, আনন্দ-বিষাদে গড়া। আমার বাবার থেকেই হয়তো আমি কিছুটা উদ্ভট কাজ করার প্রবণতা পেয়েছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর সমাজচিন্তা নিয়ে বাবার কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেসের ফাউন্ডেশন সিরিজ থেকে বেরোনো বই ‘পলিটিকস সোসাইটি অ্যান্ড কলোনিয়ালিজম: অ্যান অলটারনেটিভ আন্ডারস্ট্যান্ডিং অব টেগোর রেসপন্সেস’ ছাড়াও ‘ইন্ডিয়া ইন রুশিয়ান ওরিয়েন্টালিজম: ট্রাভেল ন্যারেটিভস অ্যান্ড বিয়ন্ড’ (মনোহর পাবলিশার্স) নামের একটি বই বাবা লিখেছেন। এই বই লেখার প্রক্রিয়ায় অনেক ওরিজিন্যাল টেক্সটকে তিনি পড়েছেন রাশিয়ান ভাষা না জেনে, রাশিয়ান টেক্সটকে নানাভাবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে এবং হয়তো অন্য উপায়ে অনুবাদ করে। আর এসব করেছেন আমাদের জন্য সমস্ত দায়দায়িত্ব পালন করে, আমার ছেলেকে দিনের পর দিন স্কাইপে বা অন্য ভিডিও কলে বেবি সিটিং করে, গল্প বলে। তাই সংসারের থেকে সময় বের করে নিতে শেখা, নিজের ইচ্ছামতো অনর্থনৈতিক নানান শখ রাখা, কবিতাকে ভালোবাসা, এসবই হয়তো মা-বাবার থেকে জন্মসূত্রে এবং জীবনচর্যার ধরনে পাওয়া।
প্রথম আলো: ধন্যবাদ, বহতা।
বহতা: প্রথম আলোকেও ধন্যবাদ।
চিত্রের উৎস: Mukhopadhyay, Bahata Ansumali. ‘Interrogating Indus inscriptions to unravel their mechanisms of meaning conveyance. ’ Palgrave Communications 5, no.1 (2019):73.
মূল প্রবন্ধের জন্য দেখুন