ভাসানী কি ভারতে বন্দিজীবন যাপন করেছিলেন

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে পাকিস্তানি বাহিনী নারকীয় গণহত্যা শুরু করে। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন নৌকাযোগে, যমুনা হয়ে। পথিমধ্যে তাঁর সঙ্গী হন দুজন। তাঁদের একজন হলেন এ বইয়ের লেখক সাইফুল ইসলাম; যদিও তিনি তিনি ছিলেন ভাসানীর দলের বাইরের লোক, মস্কোপন্থী ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি চড়ে বসলেন ভাসানীর নৌকায়। ভাসানীর ভারতে অবস্থানকালে এই লেখক হয়ে উঠলেন সব সময়ের সহচর। আসাম, কলকাতা, কোচবিহার—সব জায়গায় সেই অস্থির সময়ে ভাসানীর সঙ্গী হলেন তিনি। বাইরের সব ধরনের যোগাযোগ রক্ষা করতে লাগলেন ভাসানীর হয়ে। মহান মুক্তিযুদ্ধকালে কাজ করলেন ভাসানীর একান্ত সচিব ও মুখপাত্র হিসেবে।

ভাসানীর ভারতে অবস্থানকাল নিয়ে পাঠকের নানা জিজ্ঞাসা—ভাসানী কি ভারতে বন্দিজীবন যাপন করেছেন? ভারত সরকার কি তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল? কিংবা সে সময়ের প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে তিনি কি কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন? এসব অমীমাংসিত প্রশ্নের বস্তুনিষ্ঠ উত্তর পাওয়া যাবে স্বাধীনতা ভারত ভাসানী বইয়ে।

প্রবাসী বাংলাদেশের সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ভাসানীর সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছিলেন। দেখা করেছিলেন প্রবাসী সরকারের মন্ত্রীদের অনেকেই। তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছিল নানা বিষয় নিয়ে। এসব ঘটনা লেখক সাইফুল ইসলাম কাছ থেকে দেখেছিলেন, সেই অভিজ্ঞতা তিনি বলেছেন এ বইয়ে।

উপন্যাসের মতো সুখপাঠ্য এ বই থেকে ‘রহস্যময়’ কিংবা ‘দুর্বোধ্য’ রাজনৈতিক হিসেবে মাওলানা ভাসানীর ব্যক্তিত্বের স্বরূপ সম্বন্ধে নানা ইশারা পাওয়া যায়।

আনিসুর রহমান

স্বাধীনতা ভারত ভাসানী

সাইফুল ইসলাম

প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা; প্রকাশকাল: আগস্ট ২০২৪; প্রচ্ছদ: মাসুক হেলাল; 

২৪৭ পৃষ্ঠা; দাম: ৫৫০ টাকা।