জুন মাসের সেই দিনপঞ্জিতে যা লিখেছিলেন মুনীর চৌধুরী
১৯৪৯ সালে তখনো ছিল জুন মাস। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে কারাবন্দি মুনীর চৌধুরী তাঁর প্রেমিকার উদ্দেশ্যে লিখছিলেন আবেগমথিত দিনপঞ্জি। একই বছরের ৯ মার্চ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। ততদিনে রাজনীতি ছেড়ে খুলনার দৌলতপুরে ব্রজলাল কলেজে ইংরেজির প্রভাষক পদে যোগ দিয়েছিলেন এই নাট্যকার। মুনীর চৌধুরীর অরাজনৈতিক জীবন যাপন করতে চাওয়ার পেছনে বড় কারণ ছিল লিলি মির্জার সঙ্গে তাঁর প্রেম। অভিনয় ও নৃত্যকলায় আগ্রহী এই তরুণীকে তিনি জীবনসঙ্গিনী করতে চেয়েছিলেন। ঘটনা সেদিকে গড়ানোর আগেই তিনি বন্দি হয়ে যান। এই দিনপঞ্জির সবকিছুই তাঁর প্রেমিকার উদ্দেশে নিবেদিত। পরে অবশ্য লিলি মির্জার সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হয় তিনি। তখন থেকে লিলি মির্জা পরিচিত হন লিলি চৌধুরী নামে। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে শহীদ হন মুনীর চৌধুরী। প্রথমা প্রকাশন মুনীর চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী লিলি চৌধুরীর সেই সময়ের দিনপঞ্জি নিয়ে ‘দিনপঞ্জি–মনপঞ্জি–ডাকঘর’ শিরোনামে একটি বই বের করেছিল বছর কয়েক আগে। পাঠক চাহিদা থাকায় সম্প্রতি আবার বইটির নতুন মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সেই বই থেকে এখানে থাকল মুনীর চৌধুরীর জুন মাসের দিনপঞ্জির কিছু অংশ, যেখানে উদ্ভাসিত হয়েছে প্রেমিক মুনীর চৌধুরীর অন্য এক অবয়ব। পাশাপাশি সেই সময়ের অবরুদ্ধ বাস্তবতার ছবিও এতে পাওয়া যায়।
১লা জুন। ১৯৪৯।
ঢাকা, সেন্ট্রাল জেল।
৯ মার্চ গ্রেপ্তার করেছে। সেই থেকেই এখানে। আর এক হপ্তা পর পুরো তিন মাস হবে। প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল একটা দিনপঞ্জি নিয়মিত লিখি। অভিনব অভিজ্ঞতা আর অফুরন্ত অবসর মিলে চাই কি একটা সত্যি সত্যি রসপুষ্ট বস্তুও সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে। লিখি লিখি করেও এত দিন কলম ধরতে পারিনি। এত দিন পরে আরম্ভ করছি বেশ একটা হালকা মুক্ত মন নিয়ে। কাব্য সৃষ্টি করার সচেতন উদ্দেশ্য মন থেকে একদম উঠে গেছে। অবশ্য শিল্পী-সাহিত্যিকের মন থেকে এই অবিচ্ছেদ্য সচেতনতা যতখানি বিলীন হওয়া সম্ভব ততখানিই। প্রকাশের নিপুণতার মোহে শিল্পীমাত্রই একটু-আধটু বিকারগ্রস্ত। ঠিক সত্যি কথাটি নিখুঁতভাবে প্রকাশ করার, অসহ্য বেদনায় নির্যাতিত হয়ে শেষ পর্যন্ত অক্ষমতাহেতুই হয়তো, প্রিয়জনের কাছেও অনিচ্ছা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যহীন সুন্দর মিছে কথাটি বলে ফেলে, তোমার কাছে লেখা আমার চিঠিতেও নিশ্চয় সে কলঙ্কের ছাপ আছে। যদিও কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে তোমাকে মিছে কথা শোনাবার পাপ যদি কোনো দিন করি—নিজেকে সেদিন ক্ষমা করতে পারব না। এখন মহানন্দে আছি এটুকু ভেবে যে আমার মিছে কথাও তুমি নিশ্চয়ই সব ঠিক করে বুঝে নিতে জানো, আমাকে ভালোবাসো বলেই জানো, আর এও হয়তো ধরে নাও যে দুজনেই সব জানি।
এত দিন কেন লিখতে শুরু করিনি তা বুঝতে চেষ্টা করছি, চেষ্টা করেও শুরু করতে পারিনি। দেহ বন্দী বলে মন পঙ্গু হয়ে থাকবে কেন—তার জবাব কিছুতেই দিতে পারিনি। শুধু উপলব্ধি করেছি যে বন্দী মানসিকতায় প্রতি পলে অনুপলে আমি অতিসচেতন, নির্যাতিত, ব্যাধিগ্রস্ত, আমার যে মন কোনো পরিস্থিতিতেই আগে কোনো দিন তার একচ্ছত্র স্বাধীন অধিকারের অপরাজেয় রাজদণ্ড একটুও কাঁপতে দেয়নি—শিউরে উঠে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম আমার সে রাজাধিরাজ মন ঢাকা সেন্ট্রাল জেলের বন্ধ কুঠুরিতে ঝরে ভেজা করুণ কুৎসিত বোকা কালো কাকের মতো কাঁদছে। আর তুমি কাছে নেই। এত দিন পরেও নেই। কবে থাকবে কেউ জানি না। কাজেই লেখা হয়নি। আরও কারণ ছিল, গৌণ। যা-ই লিখি না কেন এরা হয়তো ছাড়া পাবার সময় কেড়ে রেখে দেবে; অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে, নোংরা করে। তবে হয়তো একদিন ফেরত দিতেও পারে। তাও নিশ্চিন্ত নয়। লিখি কী করে?
আরও একটা কারণ ছিল—বেশ বড় কারণ। একটা দুরারোগ্য জেল ব্যাধি। যেকোনো দিন যেকোনো মুহূর্তে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনায় প্রতি রক্তকণিকায় একটা নিরবচ্ছিন্ন, বিক্ষুব্ধ, শক্তিক্ষয়া মত্ত কোলাহল! আমার আজকের পরিবর্তিত, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সত্তা সে বিষে জ্বলে-পুড়ে কুঁকড়ে নীল হয়ে আছে।
তবু আজ থেকে লিখতে শুরু করলাম। বিঘ্নগুলো জয় করেছি বললে একেবারে মিছে কথা বলা হবে।
সবকিছুই এখনো ছিন্নভিন্ন ক্ষতবিক্ষত। তোমার আঙুলে আঁকা, বিক্ষিপ্ত কাটাকুটিতে চিত্রিত, আমার নামের মতোই আমি এখন আছি। তবু লিখছি। লেখার কতগুলো নতুন কারণ আবিষ্কার করেছি তাই। সেগুলোকে আঁকড়ে ধরে লিখতে থাকব।
লিখব, কারণ তাতে আমার নিজস্ব স্বার্থ আছে অনেক। লিখলে সময় কাটবে প্রচুর। লিখতে লিখতে মাঝে মাঝে খুশি হয়েও উঠতে পারি নিছক শিল্পগত কোনো সাফল্যের উচ্ছ্বাসে। তা ছাড়া লেখার অভ্যাসটা রাখা ভালো। মনের মতো আঙুলগুলোও যদি কেউ মুচড়ে বিকল করে দিতে চায়—তাহলে তা সহ্য করব না আমি।
একটা খুব মিষ্টি উদ্দেশ্যও আছে। তুমি, তোমাকে কাছে পাওয়া, তোমাকেও কিছু দেওয়া। যা লিখব সবই তোমার। তোমাকেই লিখছি। তোকে, যা খুশি তাই লিখব। ভালো কথা, মন্দ কথা; কাব্য সাহিত্য গল্প; সমাজ, রাজনীতি, প্রেম; মন, আদর, শরীর...সব!
কান্তিদার একটা আকস্মিক উক্তি থেকেও অনেকখানি লিখবার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। জেল থেকে একবার বেরোলে পর কিছুতেই নাকি আর জেলের সব কথা মনে পড়তে চায় না। মনস্তত্ত্বটা নাকি বাইরের পৃথিবীর ছোঁয়াচ পেলেই লজ্জাবতীর পাতার মতো বুজে মিশে শেষ হয়ে যায়? শুনে ভয় হলো। বেরিয়ে যদি সব কথা তোমাকে শোনাতে না পারি? তাই ঠিক করেছি বন্দী মনটাকে অক্ষরে অক্ষরে বন্দী করে তোমার জন্য সঙ্গে করে নিয়ে বেরোব। আমার এই জীবনের এত গল্প তুমি শুনবে না—সে কী করে হয়? তোমার এই খাতাটা তোমারই রইল। বেরোলে পর আমি যদি দিতে না চাই, কেড়ে নিয়ো। স্বার্থপর শিল্পী হিসেবে জিতেনদার কথাটাও মনে ধরেছে। বলেছেন, জেলে আসাটা একটা বড় অভিজ্ঞতা, সাহিত্যিকদের জন্য রীতিমতো একটা সম্পদ। বিশেষ করে আমার মতো লোকের পক্ষে, যে লেখক হতে চায় অথচ একটা গতানুগতিক ক্ষয়িষ্ণু মামুলি উচ্চ মধ্যবিত্তের সন্তান; শান্তিদায়ক জীবন ছাড়া অন্য কিছু দেখেনি—কোনো রকম গভীর শোক বা আনন্দানুভূতিতেই যে একবারও সামগ্রিকভাবে আলোড়িত হয়ে ওঠেনি—তার জন্যে তো কথাই নেই। কৃপণের মতো এই কারা জীবনের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত মানসিকতাকে আমায় তাই সঞ্চয় করে রাখতে হবে—এক কণাও যাতে হারিয়ে না যায়। যা কিছু হয় লিখে রাখাই নাকি তার শ্রেষ্ঠ উপায়।
ভালো লাগছে। মাসের প্রথম দিনে লিখতে শুরু করলাম। ভোরবেলা চুল কেটেছি, দাড়ি কামিয়েছি। নখ ফেলতেও ভুলে যাইনি, গায়ে-মাথায় ফেনা তুলে, তোয়ালে ঘষে চান করেছি। সারা গায়ে পাউডার ঢেলে, তোমার দেওয়া বিস্কিটে জেলি মেখে খেতে খেতে এতদূর লিখলাম। রীতিমতো পরিচ্ছন্ন অনুভব করছি। এ কেয়ারের একটা কথা মনে পড়ল। তার অস্বস্তিটুকু এখনো আছে। কথাটা তোমাকে কিছুতেই বলতে পারব না। এত অশ্লীল যে তোমার তা শুনতে চাওয়াও অন্যায় হবে। যদিও প্রথম যেদিন কথাটা শুনি সেদিন আমি সুদ্ধ সেই উক্তির ইতর রসে, হেসে অস্থির—যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের রসজ্ঞান অটুট রাখার দেবতুল্য ক্ষমতা আছে ওই ছেলেটার!
একটা হয়তো—অপরাধ করেছি। কেন অপরাধ এবং অপরাধটা কী—কিছুই তোমায় বলব না। আমার সব কথাই কি তোমাকে বলা যায়? বেরিয়ে এসে তোমার জবাব শুনব এবং নিশ্চয়ই এ নিয়ে অনেক তর্কও করব। বোঝো আর নাই বোঝো—মানো আর নাই মানো।
দুপুর এগারটা
বুধবার।
আবার বোধ হয় একটা ঝড় উঠল। একবার এসেছিল গত মাসের মাঝামাঝি। রাজবন্দীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এক হপ্তা পর, ২৩ মে থেকে ভুখি হরতাল শুরু করবে। হয় দাবি পূরণ, না হয় মৃত্যুবরণ। মধ্যপথ কিছু থাকবে না। সব মিলে প্রায় পঞ্চাশজন হবে। ২০ মার্চ থেকে এরা সব্বাই সংগ্রামে নামবে—দুঃখময় কঠোর লড়াই! স্বেচ্ছায় অন্ন স্পর্শ করবে না কেউ, যত দিন না কতৃর্পক্ষ রাজনৈতিক বন্দীর দাবি মেনে নেবে।
এগারোই মার্চ থেকে এরা এর আগেও একবার ভুখি হরতাল করেছিল। স্থানীয় মুরব্বির প্রতিশ্রুতিতে মুগ্ধ হয়ে তারা অন্ন গ্রহণ করে। এবার তারা ঠিক করেছে ক্ষমতাহীন পদলোভী কোনো বান্দার ওয়াদাকেই তারা কোনো মূল্য দেবে না। সব্বাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মন থেকে ভয় দূর করে দাও: মাঝপথে শান্তিপূর্ণভাবে আবেদনে-নিবেদনে কতৃর্পক্ষের হৃদয় গলবে না। কাজেই এবার সব্বাইকে তৈরি হতে হবে মৃত্যুর জন্য। মরণ যদি নাও আসে তবু সম্ভাবনা আছে হরেক রকম কারাগারের সাজার। আইন অমান্য করে অন্নবস্তু প্রত্যাখ্যান করার অপরাধে বন্ধ কুঠুরিতে হাতে-পায়ে লোহার বেড়ি পরিয়ে দু-চার মাস ফেলে রাখতে পারে তোমাকে; যেকোনো দীর্ঘকালের জন্য মেহনতি কয়েদির জীবনকেও গ্রহণ করতে হতে পারে।
রাজবন্দীরা চায় না যে সরকার দেশকর্মীদের মধ্যে শ্রেণিবিভাগ করে কয়েদখানার মধ্যে কাউকে বেশি কাউকে কম সুবিধা দিক। যেমন: এমএ পাস, প্রফেসর, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তনয় আমি প্রথম শ্রেণির কয়েদি বলে সম্মানিত হব, সব রাজবন্দী তা হবে না। দ্বিতীয়ত, বন্দীদের অনেকেই আছেন যাঁরা জেলের বাইরে দুপয়সা উপার্জনও করতেন, সংসার চালাতেন। তাঁদের দাবি, রাজবন্দীর পারিবারিক মাসোহারা সরকারকে দিতেই হবে। তা ছাড়া তেল-সাবান, খেলাধুলার সুবিধা—সঙ্গে সাড়ে সাতটা আটটা অবধি কুঠুরির বাইরে খোলা প্রাঙ্গণে থাকার অধিকার—এসবও এদের মূল দাবির অন্তভুর্ক্ত। এসব সুখ-সুবিধা রাজবন্দীরা অনেক লড়াই করে, অনেক প্রাণ দান করে ইংরেজ শাসনের আমলেই অর্জন করেছিল। গত মার্চ মাসে এখানে ও ভারতেও নতুন আইন করে রাজবন্দীর এসব অধিকারকে গ্রাস করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুস্তানে বম্বে, লক্ষ্ণৌ, এলাহাবাদ, আসাম অনেক জায়গাতে রাজবন্দীরা সরকারের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ভুখি হরতাল শুরু করে দেয়। অনেক দাবিও ভারত সরকার মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে।
সরকার বলেছে, দেশপ্রেমিককে পরাধীন ভারতবর্ষে ভিনদেশি সরকার জনমতের ভয়ে যে সুযোগ-সুবিধা দান করত স্বাধীন স্বদেশি সরকার দেশদ্রোহীকে কারাগারে সে সম্মান কোনো দিন দান করবে না। নির্মম কঠোর শাস্তিই তার একমাত্র প্রাপ্য পুরস্কার।
জেল থেকে একবার বেরোলে পর কিছুতেই নাকি আর জেলের সব কথা মনে পড়তে চায় না। মনস্তত্ত্বটা নাকি বাইরের পৃথিবীর ছোঁয়াচ পেলেই লজ্জাবতীর পাতার মতো বুজে মিশে শেষ হয়ে যায়? শুনে ভয় হলো। বেরিয়ে যদি সব কথা তোমাকে শোনাতে না পারি? তাই ঠিক করেছি বন্দী মনটাকে অক্ষরে অক্ষরে বন্দী করে তোমার জন্য সঙ্গে করে নিয়ে বেরোব। আমার এই জীবনের এত গল্প তুমি শুনবে না—সে কী করে হয়?
রাজবন্দীরা বলেছে: মতবাদের কণ্ঠরোধ গুলি-গ্যাস-কারাগারে কোনো দিন সম্ভব হয়নি। হিটলারের পর চিয়াং তারই সাক্ষী। এদের প্রথম কথা: দোষ করে থাকি, বিচার করো! প্রকাশ্য বিচারালয়ে প্রমাণ করো প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে কী কাজ করে আমি দেশদ্রোহী সাব্যস্ত হলাম। দেশবাসীকে পরিষ্কার করে জানতে দাও, বুঝতে দাও আমার অপরাধ কী। বিনা বিচারে আটক করে রেখেছ আমাদের। কোনো সভ্য দেশে এমন আজগুবি কাণ্ড ঘটা উচিত নয়। কাজেই আমাদের দাবি তোমার কাছে আব্দার বলে মনে হলেও তা শুনতে হবে। মানতে হবে—আমার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের তদারক করতে হবে তোমাকে। যদি না করো তবে এই শুরু হলো ভুখি হরতাল, বন্দী কয়েদির লড়াই করার একমাত্র হাতিয়ার।
এই ধর্মঘটে হরেক রকম দল আছে, লোক আছে। কমিউনিস্ট, কংগ্রেস, মহাসভা, হিন্দু, মুসলমান, নাস্তিক, ছাত্র, কর্মী, চাকুরে, কিশোর, যুবক, মধ্যবয়সী, প্রায় বৃদ্ধ, প্রেমে পড়েনি, পড়ে হতাশ হয়েছে, বিয়ে করেনি, বিয়ে করবে, বিয়ে করেছে, ছেলেমেয়ের বাবা হতে যাচ্ছে, দুদিন পর হবে, ইতিমধ্যেই হয়ে আছে, স্বাস্থ্য খুবই ভালো, স্বাস্থ্য কোনো রকম, স্বাস্থ্য খুবই খারাপ—তারাও আছে এর মধ্যে।
প্রায় সবাই আছে। শুধু আমি নেই, আমি থাকব না। আমি থাকতে চাই না। ধর্মঘটের তিন দিন আগে এই কথাটা সবাইকে জানিয়ে দিলাম। লক্ষ্মীটি, মুক্তি পাবার পর তুমি আমায় বুঝিয়ে দিয়ো, আমি ঠিকই করেছি, অন্য কিছু আমি করতে পারতাম না।
প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘দিনপঞ্জি–মনপঞ্জি–ডাকঘর’ বইটি কিনতে অর্ডার করুন: prothoma.com