সুলতান স্মরণে শিল্পী ও নির্মাতারা

‘অন্ধ কুহক’, শিল্পী: তানহা জাফরীন

প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘অন্তর্দৃষ্টি’। আয়োজনটি করেছিল তন্মাত্র আর্টিস্ট গ্রুপ। চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর জন্মশতবর্ষ ঘিরে এ আয়োজনে ২১ জন শিল্পীর ছবি দেখা গেল নেইবারহুড শালা আর্ট স্পেস গ্যালারিতে।

শেখ মোহাম্মদ সুলতান বাংলাদেশের শিল্পকলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব। তাঁকে স্মরণ করে কোনো প্রদর্শনীতে শিল্পীদের একাত্ম হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এখানে চারুশিল্পীরা যেমন অংশ নিয়েছেন, তেমনি চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত যাঁরা—চিত্রনাট্যকার থেকে শুরু করে নির্মাতা, অনেকেই নিজের আঁকা ছবি নিয়ে হাজির হন। এ ঘটনা প্রদর্শনীটিকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে বৈকি! 

দীর্ঘ আয়তাকার গ্যালারিতে ছিল প্রিমা নাজিয়া আন্দালিবের অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা দুটি ছবি। ছবি দুটি আয়তনে ছোট হলেও এতে দৃঢ় কম্পোজিশন এবং রঙের ব্যবহার লক্ষণীয়। অন্যদিকে ছিল নবরজা রায়, সুলতানুল ইসলাম, রুবিনা নার্গিস, এস এম মিজানুর রহমান প্রমুখের উজ্জ্বল অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা চিত্র।

চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্রের সঙ্গে যুক্ত অনিক চন্দের দুটি কাজ ছিল প্রদর্শনীতে। তা ছাড়া নির্মাতা তানহা জাফরীন, জিয়াহুল হক বাপ্পী ও সাদিয়া খালিদ রীতির শিল্পকর্ম দৃষ্টি কেড়েছে অনেকের। বিশেষত তানহার ‘অন্ধ কুহক’ চিত্রকর্মে মানুষের চোখকে তিনি যেভাবে এঁকেছেন, তাতে অতিরঞ্জন আছে বটে; কিন্তু এই অতিরঞ্জনের কারণে ছবিটির দিকে তাকিয়ে মনটি বিষণ্ন হয়ে যায়। পাশাপাশি এ এইচ ঢালী তমালের রিলিফ প্রসেসের ‘কাক’ নামে প্রিন্ট, সৌরভ চৌধুরীর ‘এটার্নাল পিস’ দর্শককে আন্দোলিত করে। এখানে শ্রেষ্ঠ সাহার মৃৎশিল্পের তিনটি কাজ ছিল মনে রাখার মতো। 

প্রদর্শনীটিতে সাদা–কালো রঙে সুজয় সাহা সাদা সুলতানের একটি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন। আর অভিজিৎ কান্তি দাশের মাটি দিয়ে তৈরি করেছিলেন সুলতানের আবক্ষ ভাস্কর্য। দুটিই ছিল সুন্দর সংযোজন। গুলশানের আলোকির দ্বিতীয় তলায় ৮ নভেম্বর শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলেছে ১২ তারিখ পর্যন্ত। সমাপনী দিন সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হয় এস এম সুলতানকে নিবেদিত দুটি প্রামাণ্যচিত্র আদম সুরত জীবাশ্ম

গুলনাহার হাবিব