উপন্যাস নয়, ইতিহাস
১৯৭১-এর ডিসেম্বরের ৩ তারিখ। আমি ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে, রিকশায়। মাথার ওপর সাঁই সাঁই করে উড়ে গেল একটা ভারতীয় বিমান—খ্যাপা মোষের মতন। মুক্তিযুদ্ধের ওই সময়ে আমার একটুও ভয় লাগেনি। মনেই হয়নি, ওরা বম্বিং করতে পারে, ঢাকা শহর ছারখার করে দিতে পারে কিংবা আমি মারা যেতে পারি। সবকিছু ছাপিয়ে আমার মনে তখন উচ্চকিত ছিল স্বাধীনতার আশা। অনবরত মৃত্যুর গন্ধের মধ্যেও আমরা ঘাপটি মেরে পড়ে থেকেছি স্বাধীনতার লোভে। ঘটনাটি কি এখন অবিশ্বাস্য শোনাচ্ছে? আসলে এটাই সত্যি। মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়টাই ছিল এমন।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের ইতিহাস হলো সাধারণ মানুষের তিতিক্ষার ইতিহাস। এই যুদ্ধ নিছক সেনাবাহিনীর একক যুদ্ধ ছিল না, সবাইকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেছিল সর্বাত্মক জনযুদ্ধ। আর এই জনযুদ্ধকে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে দেখার বাসনা থেকেই আমার একেকটি মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আমার সাতটি উপন্যাসের জন্মই জনজীবন থেকে উঠে আসা ঘটনা ও চরিত্রগুলো নিয়ে। পেছন ফিরে আজ যখন উপন্যাসগুলোর দিকে তাকাই, মনে হয়, মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃতি যতটা, সবটুকু কি এক বা একাধিক উপন্যাসে ধরা সম্ভব? উত্তর হলো, না।
আমার মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসগুলোর প্রসঙ্গে প্রথমেই আসবে হাঙর নদী গ্রেনেড (প্রকাশকাল: ১৯৭৪)-এর কথা। মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমার লেখা প্রথম উপন্যাস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষক ছিলেন অধ্যাপক আবদুল হাফিজ, তিনি মুক্তিযোদ্ধাও। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে রেসকোর্সে যাওয়ার সময় আমি কেমন আছি জানতে স্যার এলেন আমার সায়েন্স ল্যাবরেটরি কলোনির বাসায়। তাঁর কাছ থেকে এক মায়ের গল্প শুনলাম, যিনি দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচানোর জন্য নিজের প্রতিবন্ধী সন্তানকে তুলে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে। ঘটনাটি যশোরের কালীগঞ্জের। এই ঘটনা এবং ওই মাকে নিয়ে স্যার আমাকে একটি গল্প লিখতে বললেন। আমিও প্রথমে ভেবেছিলাম, ছোটগল্পই লিখব। পরে মনে হলো, না, এই কাহিনির যে ব্যাপ্তি সেটি উপন্যাসের। হাঙর নদী গ্রেনেড শুরু করেছি বুড়ির শৈশব থেকে। বারো ভাইবোনের মধ্যে একটি মেয়ে সচেতনভাবে তার বাবাকে বলছে তার নামটি বদলে দিতে। বুড়ির প্রতিবাদের এই জায়গা থেকে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে নিজের সন্তানকে তুলে দেওয়া পর্যন্ত উপন্যাসটির পরিসর। একজন মা ভাবছেন, তাঁর নিজের সন্তানের বিনিময়ে দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচিয়ে দিলে তিনি স্বাধীনতা পাবেন। এই যে উৎসর্গ তিনি করলেন, এমন অসংখ্য উৎসর্গের বিনিময়েই তো আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বিজয়।
হাঙর নদী গ্রেনেড-এর অনেক পরে লিখলাম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দ্বিতীয় উপন্যাস যুদ্ধ (১৯৯৮)। ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের আমার খালাতো ভাই। তাঁর অগ্রজ আবু ইউসুফ ভাই আমাকে বললেন কামালপুর যুদ্ধের ঘটনা। তখনই মনে হয়েছিল, ১১ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধ এবং আশপাশের গ্রামে তার প্রভাবসহ নানা কিছু নিয়ে একটি উপন্যাস কি লেখা যায় না? শেষ পর্যন্ত সেই উপন্যাসটিই যুদ্ধ। উপন্যাসটির পরিকল্পনা অনেক পুরোনো, লিখতেও লেগেছে অনেক দিন। উপন্যাস রচনার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে বেশ কয়েকবারই আমি গিয়েছি কামালপুর ও মেঘালয়-সংলগ্ন এলাকায়। এই আখ্যানের কেন্দ্রেও জনজীবন—আছে একটি হিন্দু পরিবার। সেখানে এক বয়সী নারী, বায়ান্ন সালে যার স্বামী ভাষা আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে আর কোনো দিন ফিরে আসেনি, তবু সে তার সিঁদুর মোছে না। তার আশা, হয়তো স্বামী একদিন ফিরে আসবে। অথচ একাত্তরে যখন পাকিস্তানি সৈন্য আসছে, সে তার সিঁথি থেকে সিঁদুর মুছে ফেলল। হানাদারদের হাতে নির্যাতিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে সে তার বিশ্বাসকে বিসর্জন দিল। এমন অজস্র বিসর্জনের গল্প নিয়েই তো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।
উপন্যাসটি শুরু করেছি তারামন বিবিকে দিয়ে। তাঁর তালাক হয়ে গেছে। পুরো পরিবার মর্মাহত, অথচ তারামন আনন্দিত। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে যে পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে যাচ্ছে—এটা যেন তারই প্রতীকী সূত্রপাত। পরে তারামন বিবি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারামনের এক বন্ধু রেণু। উপন্যাসে তার গল্পটিও এনেছি। যুদ্ধ শেষে একদিকে রেণুর প্রেমিক পা হারিয়ে ফিরে আসছে, আর রেণু ফিরছে বাঙ্কার থেকে। একপর্যায়ে রেণু ছেলেটিকে বলে, ‘দেশের জন্য তুমি দিয়েছ পা, আমি দিয়েছি জরায়ু।’
সত্যিকার অর্থে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার লেখাগুলো ঠিক উপন্যাস নয়, ইতিহাস। এগুলো নারীর সাহস, শক্তি, মর্যাদাবোধের ইতিহাস। তখন আমাদের অনেক মা-ই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হয়তো অতটা শিক্ষিত ছিলেন না, কিন্তু স্বাধীনতা সম্পর্কে দিনে দিনে তৈরি হয়েছিল তাঁদের সচেতনতা।
এরপর বলতে হবে কাঠকয়লার ছবি (২০০১)-এর কথা। যুদ্ধশিশু ও চা-বাগান, মুক্তিযুদ্ধের সময় চা-শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন—এই প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি। স্বাধীনতাযুদ্ধে তো শুধু বাঙালিরাই অংশ নেয়নি, অন্যরাও দেশটিকে নিজের ভেবে আত্মত্যাগ করেছে। যেহেতু জনজীবন আমার একটি প্রিয় প্রসঙ্গ, প্রথমে ভেবেছিলাম মুক্তিযুদ্ধে চা-শ্রমিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আখ্যানটি লিখব। ১৯২১ সালে চা-শ্রমিকেরা শ্রীমঙ্গল থেকে রেললাইন ধরে চাঁদপুর হয়ে বাংলাদেশে আসে। ব্রিটিশ পুলিশ তখন গুলি চালায় ওদের ওপর—বিষয়টি অনেক দিন আমার মাথায় ছিল। পরে যুদ্ধশিশুর ব্যাপারটি এর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছি। মনে পড়ে, কাঠকয়লার ছবি লেখার সময় আমি চা-বাগানে গিয়েছি, কথা বলেছি চা-শ্রমিকদের সঙ্গে। এভাবে তাদের কাছ থেকে শোনা অভিজ্ঞতা এবং আমার কল্পনার মিশেলে লেখা হলো আখ্যানটি।
এখানে বলে রাখি, মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে উপন্যাসগুলো লেখার আগে আমি সাধ্যমতো অংশ নিয়েছি মাঠ সমীক্ষায়। কাঠকয়লার ছবি লেখার সময় যেমন চা-বাগানে গিয়েছি, কামালপুর গিয়েছি যুদ্ধ উপন্যাসটি লেখার সময়, তেমনি মাটি ও শস্যের বুনন (২০০১) লিখতে বসেও ছুটে গিয়েছি প্রত্যন্ত ধমশরে। এখানে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অনেকের বাস।
আমার এই উপন্যাসে আছে মুক্তিযুদ্ধকালে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অবদানের কথা। কাহিনিটি এগিয়েছে একটি চার্চ ও এক হাসপাতালকে ঘিরে। শুরুর পঞ্চাশ-ষাট পৃষ্ঠাজুড়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আবহ। পরে আছে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে নারীদের সংগ্রামের গল্প। বাস্তবিক অর্থে নারীর যুদ্ধ যে স্বাধীনতাযুদ্ধেই শেষ হয়নি, যুদ্ধোত্তরকালেও যে বিভিন্নভাবে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাদের, এটিই উঠে এসেছে উপন্যাসে।
নারী-পুরুষের লৈঙ্গিক সমতার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে ঘুমকাতুরে ঈশ্বর (২০০৪)-এ। একাত্তর সাল। একটি হত্যাকাণ্ডের পর পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে যায়। এ সময় একজন মুরব্বি মারা যায়। সেই পরিস্থিতিতে কয়েকজন নারী মিলে তার জানাজা পড়ে, তাকে কবর দেয়। এমন একটি পরিস্থিতিতে এটাই বাস্তব, আমি শুধু পরিস্থিতিটা কল্পনা করেছি। এমনটা না করলে কি মানবিক বোধটা আদৌ থাকে?
এখানে একটি ছেলের গল্পও আছে। সে মাছ ধরত। বিয়ে হয়েছে কিছুদিন। একবার মাছ ধরতে গিয়ে ভুলে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে যায় ওদের ট্রলার। ফলে কিছুদিন জেলে থাকতে হয় ছেলেটিকে। সে ফিরে আসার পর আর কোনো কাজ পায় না। তখন ছেলেটি তার বউকে বলে, ‘এক দিনের জন্য তোমার শরীরটা বিক্রি করো, আমি ভাত খাব।’
মুক্তিযুদ্ধের আখ্যানের পরম্পরায় এখানে আমি আসলে প্রথা ভাঙার কথাও বলতে চেয়েছি। যে পুরুষ তার বউকে বাজারের একটি ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে, তার উপার্জিত টাকা দিয়ে ভাত খাচ্ছে, তার জন্য এটি বাস্তবতা। অনেক ক্ষেত্রে সমাজ তো এই বাস্তবতা স্বীকার করে না। আহার জোগানোর জন্য যখন এই পেশাটির বিকল্প থাকে না, তখন কেন আমরা একে স্বীকৃতি দেব না, সহিষ্ণু হব না? একইভাবে কোনো বাঙালি নারীই স্বেচ্ছায় পাকিস্তানি সৈন্যদের কাছে যাননি। তাহলে কেন সমাজে তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি? কেন মুক্তিযুদ্ধের পরে বঙ্গবন্ধুকে বলতে হয়েছিল, বাবার নাম লিখতে না পারলে আমার নাম লেখো? ঘুমকাতুরে ঈশ্বর উপন্যাসে এ বিষয়গুলোর দেখা মিলবে নানান কল্পনা ও বাস্তবতার মোড়কে।
দিনের রশিতে গিটঠু (২০০৭) শুরু করেছি কুল্লাপাথর থেকে। কুল্লাপাথরে পঞ্চাশটি কবর নিয়ে একটি গণকবর আছে। উপন্যাসে দেখা যায়, আরজাতুন নেসা নামের এক নারী তাঁর স্বামীর লাশসহ অনান্য মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফন করেছেন। এ উপন্যাসের গল্প তাঁকে ঘিরে। এরপরে কাকন বিবি এসেছে। উপন্যাসটি শুরু হয়েছে কুল্লাপাথরের জীবনযাত্রা নিয়ে: মেয়েরা কী করছে, তাদের স্বামীরা কী করছে, রাজাকাররা কীভাবে আসছে। উপন্যাসের যে নায়িকা, সে একবার দেখে, এক বাড়ির ছাদের পাশে কার্নিশে কেউ ফেলে গেছে এক বাচ্চা মেয়েকে আর ওই মেয়েটিকে লক্ষ করছে, চারপাশে ওড়াউড়ি করছে কাক। তখন মেয়েটি ভাবছে, তাহলে কি বাঙ্কার এখনো শেষ হয়নি? এটি তো আরেক রকম বাঙ্কার! এসব নানা কিছুর মাধ্যমে এ উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীকী অর্থগুলো শেষাবধি হয়ে উঠছে জীবনযুদ্ধের বাস্তবতা।
গেরিলা যোদ্ধাদের নিয়ে লেখা উপন্যাস গেরিলা ও বীরাঙ্গনা (২০১৪)। এ উপন্যাসেও মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদানের বৃত্তান্ত বিধৃত হয়েছে। গল্পটি এগিয়েছে একটি বাড়িকে কেন্দ্র করে, যেখানে আসত মুক্তিযোদ্ধারা। উপন্যাসে রাজারবাগ পুলিশ লাইন নিয়ে একটি বড় অংশ আছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে রাবেয়া নামে একজন সুইপার ছিলেন। তাঁর কথা স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র-এর অষ্টম খণ্ডে আছে। এসবের সঙ্গে আমি যুক্ত করেছি আরও কিছু বিষয়। লিখেছি আরেকজন নারীর কথা, যাঁর শ্বশুর শান্তিবাহিনীতে ছিল। সে নিজের পুত্রবধূকে মিলিটারিদের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তী সময়ে রাবেয়ার সহায়তায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে পালাতে সক্ষম হন সেই নারী এবং তিনি প্রতিশোধও নেন। হ্যাঁ, এটিও সত্যি ঘটনা।
মূলত সত্যের নির্যাসই আমার উপন্যাসগুলোর ভিত্তিভূমি। সেই সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে, কখনো খানিকটা কল্পনার আশ্রয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। সাতটির মধ্যে একমাত্র যুদ্ধ উপন্যাসেই পুরোপুরি মুক্তিযুদ্ধের অনুষঙ্গ এনেছি আমি। এ ছাড়া অন্য উপন্যাসগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের সমান্তরালে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যুদ্ধও।
অনেকে বলেন, আমার মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কথাটি ঠিক। এ প্রসঙ্গে শুধু দু-চার কথার জবাব আছে আমার—বলতে দ্বিধা নেই, দু-একজন ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমাদের বেশির ভাগ লেখকই মুক্তিযুদ্ধকে দেখেছেন পুরুষতান্ত্রিক চোখে। আমরা মাত্র দুজন নারীকে বীর প্রতীক খেতাব দিয়েছি। নারী মুক্তিযোদ্ধারা কি আমাদের গল্প-উপন্যাসে যথার্থ অর্থে প্রতিভাত হয়েছেন?
আমার জীবনের একটি শ্রেষ্ঠ সময় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই মহান যুদ্ধকে পৌঁছে দেওয়ার তাগিদ থেকেও বিষয়টিকে আমি নানাভাবে এনেছি গল্প-উপন্যাসে। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টিকে পরের প্রজন্ম নিশ্চয়ই আরও ব্যাপক, বহুমাত্রিক চোখ দিয়ে দেখবে। মির্জা গালিবকে নিয়ে আমি যেমন যমুনা নদীর মুশায়েরা নামে উপন্যাস লিখেছি; প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়েও বিস্তর লেখা হচ্ছে। একইভাবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও পরবর্তী প্রজন্মের মানুষজন লিখবেন। হাঙর নদী গ্রেনেড উপন্যাসটি এখন দিল্লির রূপা পাবলিকেশন থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ হচ্ছে। এ ছাড়া জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তৃণা চট্টোপাধ্যায় অনুবাদ করছেন আমার কাঠকয়লার ছবি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আরও নানা কিছুও বর্তমানে অনূদিত হচ্ছে। এসবই প্রমাণ করে যে, বিশ্বসাহিত্য এখন আগ্রহী হচ্ছে আমাদের সাহিত্যের প্রতি, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি। আমি জানি, একদিন বিশ্বজুড়ে নানা রকম কাজ হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে।