যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ অঙ্গরাজ্যেই এখন করোনা

নিউইয়র্কে করোনাভাইরাস সতর্কতায় মাস্ক পরে ঘুরছে লোকজন। ছবি: এএফপি
নিউইয়র্কে করোনাভাইরাস সতর্কতায় মাস্ক পরে ঘুরছে লোকজন। ছবি: এএফপি

ভয়াবহ করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সব কটিতেই হানা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় প্রথম নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগী শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে সব কটি অঙ্গরাজ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গভর্নর জিম জাস্টিস প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা জানতাম, এটা আসছে।’


নিউইয়র্ক জানিয়েছে, সান ফ্রান্সসিসকো বে এলাকার মতো তারাও শহর অবরুদ্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। 


যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার এবং মারা গেছে ১০৫ জন। 


বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। মারা গেছে আট হাজারের মতো।

নিউইয়র্কের মেয়র বিল দে ব্লাসিও বলেন, তিনি দু-এক দিনের মধ্যে সেখানের ৮৫ লাখ বাসিন্দাকে ‘কোথাও আশ্রয়’ নিতে বলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। 


আর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে বিপুলসংখ্যক মানুষকে গৃহবন্দী হতে হবে, জরুরি জিনিস ও ওষুধ ছাড়া লোকজন বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না, কুকুর নিয়ে হাঁটা বা ব্যায়াম করার পাশাপাশি লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে বলা হবে। 


মেয়র ব্লাসিও বলেন, ‘এটা খুবই, খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত। এ ধরনের ঘটনায় আমরা আগে কখনো পড়িনি। নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে এমন দিন আসার কথা কখনো শুনিনি।’

সান ফ্রানসিসকো বে এলাকার ৬৭ লাখ বাসিন্দাকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত।


গতকাল ফ্লোরিডা আরও ১১টি অঙ্গরাজ্যের সঙ্গে যোগ দিয়ে বার ও রেস্তোরাঁ বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। 


মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরেরা চাইলে ভাইরাস উপদ্রুত এলাকায় অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে হোয়াইট হাউস সেনা সদস্যদের ডাকতে পারে। গতকাল হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনীদের প্রকৌশলী দল যেটি ম্যাশ (মোবাইল আর্মি সার্জিক্যাল হসপিটাল) নামে পরিচিত তাদের অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ বা যে হাসপাতালগুলো আছে, সেগুলোকে আরও সম্প্রসারণ করতে বলা হয়েছে।

মার্কিন সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগনের প্রধান মার্ক এসপের বলেছেন, স্বাস্থ্য বিভাগকে মার্কিন সেনারা ৫০ লাখ মাস্ক এবং দুই হাজার ভেন্টিলেটর সরবরাহ করতে পারবে। তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী বেসামরিক লোকজনের জন্য স্বীকৃত ১৪টি করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাবও খুলতে পারবে।

গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ–নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, ‘আপনারা জাতীয়ভাবে অবরুদ্ধ পদক্ষেপ নিতে পারেন। আশা করা যায়, এটার দরবার হবে না। এটা অনেক বড় একটা পদক্ষেপ।’


কোভিড-১৯ কে ‘চায়নিজ ভাইরাস’ উল্লেখ করে গত সোমবার তাঁর করা টুইট নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা তো চীন থেকেই এসেছে।’