ট্রাম্পের রানিংমেট হবেন নিকি হ্যালি?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচনে নিজের প্রচার বেশ জোরেশোরে শুরু করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স রানিংমেট হবেন কি না, সে ব্যাপারটি ট্রাম্প এখনো খোলাসা করেননি।
গত সপ্তাহে ফক্স টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ ব্যাপারে (রানিংমেট) ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়। জবাবে ট্রাম্প বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এখনো আসেনি। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে অনেক দেরি আছে। এখনই এ ব্যাপারে তাঁকে কিছু জিজ্ঞেস না করতে বলেন তিনি।
পেন্সকে বাদ দিয়ে সাউথ ক্যারোলাইনার সাবেক গভর্নর নিকি হ্যালিকে রানিংমেট করার জন্য ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে। ‘ডেমোক্র্যাটস ফর ট্রাম্প’ নামের একটি সংগঠনের পক্ষে নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি অ্যান্ড্রু স্টাইন দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, পেন্সের বদলে হ্যালিকে যদি রানিংমেট করা হয়, তা হলে ট্রাম্পের পক্ষে মধ্যবিত্ত ও শহুরে নারীদের সমর্থন পাওয়া সহজ হবে।
হ্যালিকে রানিংমেট হিসেবে মনোনীত করা হলে যেসব মধ্যপন্থী ও রিপাবলিকান মনোভাবাপন্ন নারী ভোটার, যাঁরা বর্তমানে ট্রাম্পের প্রতি বিরুদ্ধ মনোভাব পোষণ করেন, তাঁদের দলে ভেড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন স্টাইন।
স্টাইনের প্রস্তাবটি এমন এক সময়ে এল, যখন আরও এক নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন।
জনপ্রিয় উপদেশমূলক কলাম লেখক জিন ক্যারল অভিযোগ করেছেন, এখন থেকে ২০ বছর আগে ম্যানহাটনের এক ডিপার্টমেন্ট স্টোরে তাঁকে ধর্ষণ করেন ট্রাম্প। অন্ততপক্ষে দুজন বন্ধুকে তিনি সে সময়ই এই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন।
ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেছেন, এই নারী মোটেই তাঁর ‘টাইপ’ নয়।
অধিকাংশ ভাষ্যকার মনে করেন, হ্যালিকে রানিংমেট করা হলে ট্রাম্প সুবিধা পাবেন। নারী ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি যে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে, তা কিছুটা হলেও ঘোচানো সম্ভব হবে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প মাত্র ৪১ শতাংশ নারী ভোটারের সমর্থন পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পের সঙ্গে নারী ভোটারদের দূরত্ব আরও বেড়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পান মূলত নারী ভোটারদের ট্রাম্পবিরোধী মনোভাবের কারণেই।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত হ্যালি ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় প্রথম দুই বছর জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। সে সময়ই ভাবা হয়েছিল, তিনি হয় ২০২০ সালে ট্রাম্পের রানিংমেট হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। অথবা ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ট্রাম্প-হ্যালির (প্রেসিডেন্ট-রানিংমেট) নির্বাচনের সম্ভাবনা রিপাবলিকান মহলে বিপুল উৎসাহের সঞ্চার করেছে। রিপাবলিকান নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ আরিক উইয়ারসন সিএনএনের ওয়েবসাইটে এক নিবন্ধে বলেছেন, এই দুজন জুটি বাঁধলে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ট্রাম্পের বিজয় ঠেকানো অসম্ভব হবে।