বাক-এর বৈশাখ উদ্যাপন
‘নতুন নতুন সুরে, পুরোনোকে রেখো দূরে, আজ নতুন সুরে ধরো তান’ শিরোনামে আমেরিকার কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে উদ্যাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ। বাংলাদেশিদের সংগঠন বাংলাদেশি-আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্যাপন করে। গত ২৭ এপ্রিল কানেকটিকাটের হার্টপোর্টে বৈশাখী শোভাযাত্রাসহ উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় বাক বৈশাখী মেলা।
২৭ এপ্রিল বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠানটি চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। প্রবাসীদের এ মিলনমেলায় বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী ফাহমিদা নবী, শুভ্র দেবসহ স্থানীয় শিল্পীদের জমকালো পরিবেশনা ছাড়াও ছিল নাচ, গান, নাটক ও কবিতা আবৃত্তি। জমজমাট এ উৎসবে ছিল পান্তা-ইলিশসহ বাঙালি সব খাবারের আয়োজন। বরেণ্য শিল্পী ফাহমিদা নবী ও শুভ্র দেবের অনন্য পরিবেশনা উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
সংগঠনের সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলালের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা। বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. রিফাত উল্লাহ ও সৌদ আনোয়ার। ড. সাঈদুর রহমানকে বাকের পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাবেক সভাপতি ড. তামিম আহমেদ, বিজ্ঞানী ড. রিফাত উল্লাহ ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান কামাল সাঈদুর রহমানের জীবনী তুলে ধরেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা ও কার্যকরী কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজিজুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাকের সহসভাপতি ও উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক নূরুল আলম, সদস্যসচিব তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রহমান তুহিন প্রমুখ।
এদিকে বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে নানা রঙে সাজিয়ে তোলা হয় পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় বাংলাদেশি নানা ধরনের খাবার, পোশাক, জুয়েলারি, প্রসাধনসহ বিভিন্ন পণ্যের স্টল বসে। উৎসবে নামে প্রবাসীদের ঢল। স্টলগুলোয় ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবা প্রদান করে নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল। বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল চৌধুরী পারভীন সুলতানা, প্রথম সচিব মো. শামীম হোসেনসহ কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সেবা প্রদান করেন। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী পাসপোর্ট নবায়ন, নো-ভিসা রিকোয়ার্ডসহ বিভিন্ন কনস্যুলেট সেবা গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলা নববর্ষ উৎসব প্রিয় বাঙালিদের প্রাণের উৎসব। প্রবাস প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে প্রাণের এ সংস্কৃতি। তাঁরা বলেন, এ আয়োজন নতুন প্রজন্মের সঙ্গে বাংলাদেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি বড় সুযোগ।
উৎসবে দেশ ও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা সংগীত ও নাচ পরিবেশন করেন। আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ। সব শেষে সংগঠনের সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে অনুষ্ঠান আয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি ও দেশীয় পণ্যকে তুলে ধরার প্রয়াসে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক নূরুল আলম সবাইকে ধন্যবাদ জানান।