জন্মসনদ হবে লিঙ্গ নিরপেক্ষ

নতুন বছরে লিঙ্গ পরিচয়ের নতুন আইন কার্যকর হয়েছে নিউইয়র্কে। ১ জানুয়ারি থেকে চালু হওয়া আইনে শিশুর জন্ম সনদে ছেলে, মেয়ে বা নিরপেক্ষ লিঙ্গ ব্যবহার করা যাবে।
এর আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের মেল (এম) বা ফিমেল (এফ) অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করা হতো। এখন থেকে জন্ম নেওয়া শিশুর জন্মসনদে নিরপেক্ষ লিঙ্গের চিহ্ন (এক্স) ব্যবহার করা যাবে। আগের কোনো সনদেও কেউ কোনো লিঙ্গ শনাক্তকরণের চিহ্ন ইচ্ছে করলে বদলে নিতে পারবেন।
২০১৪ সাল থেকেই নিউইয়র্কে তৃতীয় লিঙ্গ বা সমলিঙ্গের লোকজন নিজের লিঙ্গ পরিচয় বদলে দিতে পারেন। এ জন্য ডাক্তারি সনদ ও হলফনামার প্রয়োজন হতো। এখন থেকে এর কিছুই লাগবে না। নিজে থেকে কেবল ঘোষণা দিতে হবে।

নগরীর মেয়র ডি ব্লাজিও বলেছেন, ট্রান্সজেন্ডারসহ বা লিঙ্গ পরিচয়ে কে কীভাবে শনাক্ত হবে, তা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার। প্রত্যেকেই তাঁর নিজস্ব মর্যাদায় পরিচিত হওয়ার সমান সুযোগ পাবে নিউইয়র্কে।
উল্লেখ্য, আমেরিকার আরও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যেও সাম্প্রতিক সময়ে লিঙ্গ পরিচয়ে এমন উদার আইন চালু করা হয়েছে। গত তিন দশকের টানা আন্দোলনের মাধ্যমে সমলিঙ্গের সমর্থক নাগরিক সংগঠনগুলো এ বিষয়টিকে তাদের অর্জন হিসেবে দেখছে।
সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে তার মা-বাবা চাইলে সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় হিসেবে ‘এক্স’ বেছে নিতে পারবেন। ১ জানুয়ারি নিউইয়র্ক নগরের স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন এ আইন কার্যকরের ঘোষণা দেয়। গত বছরের জুনে মেয়র বিল ডি ব্লাজিও ও নগর পরিষদের স্পিকার কোরি জনসন আইনটির প্রস্তাব করেন। একই বছরের অক্টোবরে আইনটি পাস হয় পরিষদে।
নগরীর স্বাস্থ্য বিভাগ এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা লিঙ্গ পরিচয় বদলাতে চাইলে এ বিষয়ে একটি নোটারি অ্যাফিডেভিট জমা দিতে হবে। সবার সহযোগিতার জন্য অ্যাফিডেভিটের একটি নমুনা অনলাইনে দেওয়া হয়েছে। জন্মসনদে এত দিন সাধারণভাবে লৈঙ্গিক পরিচয় লিখে দেওয়া হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ লক্ষ্য করেছে যে, জন্ম সনদে উল্লিখিত লিঙ্গ পরিচয়ের সঙ্গে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজের লৈঙ্গিক বোধটি মেলে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জন্ম সনদে পছন্দ মতো লৈঙ্গিক পরিচয় গ্রহণের সুযোগ রেখেছে বিভাগ।
এ বিষয়ে নগর পরিষদের স্পিকার কোরি জনসন বলেন, ‘অন্য কারও পক্ষে বলা সম্ভব নয় যে, আপনি কে। এটি নির্ধারণের একমাত্র এখতিয়ার ওই ব্যক্তিরই। এখন এই আইনের কারণে নিউইয়র্কের জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা নিজের পরিচয়টি নিজের চাওয়া মতো প্রকাশ করতে পারবে। এ আইন কার্যকরের জন্য আমি গর্বিত।’