ডুবে ডুবে সাঁকো তৈরি, গ্রামবাসীর মুখে হাসি
হঠাৎ বন্যা। এটা নতুন কিছু নয়। এমন হয় প্রতিবছরই। এ নিয়ে গ্রামবাসীর পূর্বপ্রস্তুতি থাকলেও এবার তেমন প্রস্তুতি ছিল না। প্রস্তুতি থাকবেই–বা কী করে, করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় জনমনে এক দুশ্চিন্তার ছাপ পড়েছে। তারা এখন খেয়ে–পরে বাঁচার তাগিদে ব্যস্ত।
বলছিলাম সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের চলাচলের প্রধান রাস্তাটি বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার কথা। জুন মাসের শেষ দিকে হুট করেই তলিয়ে যায় রাস্তাটি।
রাস্তাটি দীর্ঘকাল ধরে এমনই। বর্ষাকালে তলিয়ে যায় গ্রামের বিশেষ স্থানগুলো, যা এলাকাবাসীর জন্য চরম ভোগান্তির।
গ্রামবাসীকে এই চরম দুর্ভোগ থেকে বাঁচিয়ে তুলতে সচেতন ছাত্রসমাজ নতুন নকশা তৈরি করে। কীভাবে কী করা যায়, এ নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত। ২০১৫ সালের প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনের সবাই বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সংখ্যায় তাঁরা ৭১ জন। তাঁদের চোখেমুখে শুধু মানুষের কল্যাণের মনোভাব ভেসে ওঠে।
বন্যাকবলিত রাস্তাটি মানুষ চলাচলের উপযোগী করে তুলতে বাঁশের সাঁকো তৈরির সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। নিজেরাই যাবতীয় সরঞ্জাম জোগাড় করেন। পানিতে ডুবে ডুবে খুঁটি স্থাপন করে কঠোর পরিশ্রমের পরেই সাঁকোটি নির্মাণ করতে সফল হন তাঁরা। সাঁকোটির নির্মাণের মূল দায়িত্বে ছিলেন সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক মজনু মিয়া এবং সংগঠনের অন্য সদস্যরা।
সাঁকো নির্মাণের পর গ্রামবাসী বেজায় খুশি। সচেতন ছাত্রসমাজ সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এলাকার মুজিবুল নামের একজন বলেন, এই সাঁকো হওয়ার আগপর্যন্ত এ গ্রামের মানুষ নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছিল। কাপড় ভিজিয়ে সাঁতার কেটেই ওপারে যাওয়া লাগত। সচেতন ছাত্রসমাজের কর্মীদের উদ্যোগে সাঁকোটি হওয়ায় গ্রামের মানুষ উপকৃত হয়েছে অনেক।
স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ করে মানবসমাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সংগঠনটি। সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার একটি অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন সচেতন ছাত্রসমাজ। সমাজের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সচেতনতা এবং দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ অসংখ্য সামাজিক কাজ করে থাকে সংগঠনটি। করোনার এ সময়েও সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চালু রেখেছে তারা। বিগত কয়েক দিনে অসহায়দের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা মূল্যে অনলাইন পাঠদানের কর্মসূচি চালু রেখেছে।
*শিক্ষার্থী: বাংলা বিভাগ, বাঙলা কলেজ, মিরপুর